রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৫২৫
ভূমিকা অধ্যায়
অধ্যায় : ৫৭ অল্পেতুষ্টি, অন্যের কাছে চাওয়া বা আশা করা হতে নিজেকে রক্ষা করা, জীবনযাত্রায় মধ্যপন্থা ও মিতব্যয়ের প্রতি উৎসাহদান এবং অপ্রয়োজনে মানুষের কাছে চাওয়ার নিন্দা
দুনিয়ার নগদ অর্থবিত্তের উপর পরকালীন পুরস্কারকে প্রাধান্য দেওয়া
হাদীছ নং: ৫২৫
হযরত আমর ইবন তাগলিব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু মাল অথবা কয়েকজন বন্দী উপস্থিত করা হল। তিনি তা বণ্টন করলেন। তিনি কয়েক ব্যক্তিকে দিলেন এবং কয়েক ব্যক্তিকে দিলেন না। তারপর তাঁর কাছে (সংবাদ) পৌঁছল যে, যাদেরকে তিনি দেননি তারা অসন্তুষ্ট হয়েছে। সুতরাং তিনি আল্লাহ তা'আলার হাম্দ ও ছানা পাঠ করার পর বললেন, শোনো! আল্লাহর কসম, আমি কোনও ব্যক্তিকে দিই এবং কোনও ব্যক্তিকে দিই না। যাকে দিই না সে আমার কাছে ওই ব্যক্তির চেয়ে বেশি প্রিয়, যাকে দিয়ে থাকি। বস্তুত আমি তো এমনসব লোককেই দিই, যাদের অন্তরে অস্থিরতা ও দ্বিধাগ্রস্ততা আছে বলে লক্ষ করি। আর যাদের অন্তরে আল্লাহ তা'আলা ঐশ্বর্য ও কল্যাণ দিয়ে রেখেছেন, সেরকম লোকদেরকে আমি ঐ ঐশ্বর্য ও কল্যাণের উপর ন্যস্ত করি। আমর ইবন তাগলিব রাযি. তাদের একজন। আমর ইবন তাগলিব রাযি. বলেন, আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ কথার বিনিময়ে আমি একপাল লাল উটও গ্রহণ করতে পসন্দ করব না। -বুখারী
(সহীহ বুখারী : ৯২৩; মুসনাদে আহমাদ: ২০৬৭৩; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত : ৬০১০; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা: ১৩১৮২)
হাদীছ নং: ৫২৫
হযরত আমর ইবন তাগলিব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু মাল অথবা কয়েকজন বন্দী উপস্থিত করা হল। তিনি তা বণ্টন করলেন। তিনি কয়েক ব্যক্তিকে দিলেন এবং কয়েক ব্যক্তিকে দিলেন না। তারপর তাঁর কাছে (সংবাদ) পৌঁছল যে, যাদেরকে তিনি দেননি তারা অসন্তুষ্ট হয়েছে। সুতরাং তিনি আল্লাহ তা'আলার হাম্দ ও ছানা পাঠ করার পর বললেন, শোনো! আল্লাহর কসম, আমি কোনও ব্যক্তিকে দিই এবং কোনও ব্যক্তিকে দিই না। যাকে দিই না সে আমার কাছে ওই ব্যক্তির চেয়ে বেশি প্রিয়, যাকে দিয়ে থাকি। বস্তুত আমি তো এমনসব লোককেই দিই, যাদের অন্তরে অস্থিরতা ও দ্বিধাগ্রস্ততা আছে বলে লক্ষ করি। আর যাদের অন্তরে আল্লাহ তা'আলা ঐশ্বর্য ও কল্যাণ দিয়ে রেখেছেন, সেরকম লোকদেরকে আমি ঐ ঐশ্বর্য ও কল্যাণের উপর ন্যস্ত করি। আমর ইবন তাগলিব রাযি. তাদের একজন। আমর ইবন তাগলিব রাযি. বলেন, আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ কথার বিনিময়ে আমি একপাল লাল উটও গ্রহণ করতে পসন্দ করব না। -বুখারী
(সহীহ বুখারী : ৯২৩; মুসনাদে আহমাদ: ২০৬৭৩; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত : ৬০১০; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা: ১৩১৮২)
مقدمة الامام النووي
57 - باب القناعة والعَفاف والاقتصاد في المعيشة والإنفاق وذم السؤال من غير ضرورة
525 - وعن عمرو بن تَغْلِبَ - بفتح التاء المثناة فوق وإسكان الغين المعجمة وكسر اللام - رضي الله عنه: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - أُتِي بِمالٍ أَوْ سَبْيٍ فَقَسَّمَهُ، فَأعْطَى رِجَالًا، وَتَرَكَ رِجَالًا، فَبَلغَهُ أنَّ الَّذِينَ تَرَكَ عَتَبُوا، فَحَمِدَ اللهَ، ثُمَّ أثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: «أمَّا بَعْدُ، فَواللهِ إنِّي لأُعْطِي الرَّجُلَ وَأدَعُ الرَّجُلَ، وَالَّذِي أدَعُ أحَبُّ إلَيَّ مِنَ الَّذِي أُعْطِي، وَلَكِنِّي إنَّمَا أُعْطِي أقْوَامًا لِمَا أرَى في قُلُوبِهِمْ مِنَ الجَزَعِ وَالهَلَعِ، وَأَكِلُ أقْوَامًا إِلَى مَا جَعَلَ اللهُ في قُلُوبِهم مِنَ الغِنَى وَالخَيْرِ، مِنْهُمْ عَمْرُو بنُ تَغْلِبَ» قَالَ عَمْرُو بنُ تَغْلِبَ: فَوَاللهِ مَا أُحِبُّ أنَّ لِي بِكَلِمَةِ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - حُمْرَ النَّعَم. رواه البخاري. (1)
«الهَلَعُ»: هُوَ أشَدُّ الجَزَعِ، وقيل: الضَّجَرُ.
«الهَلَعُ»: هُوَ أشَدُّ الجَزَعِ، وقيل: الضَّجَرُ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
সামগ্রিকভাবে সাহাবায়ে কেরাম নিতান্তই গরীব ছিলেন। তাদের অধিকাংশেরই অর্থকষ্ট নিবারণের জন্য সাহায্যের প্রয়োজন থাকতই। তা সত্ত্বেও তারা কারও কাছে কিছু চাইতেন না। তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যখন গনীমত বা সদাকা-যাকাতের মাল আসত, তখন স্বাভাবিকভাবেই তা থেকে তাদের কিছু পাওয়ার আশা থাকত। এ হাদীছে একবারের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু মালামাল বা যুদ্ধবন্দীরূপে দাস-দাসী নিয়ে আসা হলে তিনি সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে তা বণ্টন করতে থাকেন। কিন্তু তিনি সকলকেই দিলেন না। কাউকে দিলেন এবং কাউকে বাদ রাখলেন। যারা বাদ পড়েছিলেন, তাদের মনে উদ্বেগ দেখা দিল। কী কারণে তাদের দেওয়া হল না? তবে কি তাদের মধ্যে কোনও কমতি আছে? এরূপ নানা ভাবনায় তারা কিছুটা মনঃক্ষুণ্ণও হলেন। বিষয়টা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কানে পৌঁছে গেল। তিনি তাদের ডাকলেন এবং তাদের সামনে পরিষ্কার করে দিলেন যে, যাদেরকে দিলেন কী কারণে দিলেন এবং যাদেরকে দিলেন না কী কারণে দিলেন না। তিনি এ কথাও বললেন যে, আমি যাকে দিই তার তুলনায় যাকে দিই না সে আমার কাছে বেশি প্রিয় হয়ে থাকে। তিনি বললেন-
وَلَكِنِّي إِنَّمَا أعْطِي أَقْوَامًا لِمَا أَرَى فِي قُلُوْبِهِمْ مِنَ الْجَزَعِ وَالْهَلَعِ (বস্তুত আমি তো এমনসব লোককেই দিই, যাদের অন্তরে অস্থিরতা ও দ্বিধাগ্রস্ততা আছে বলে লক্ষ করি)। অর্থাৎ যাদের ব্যাপারে আশঙ্কা হয় যে, না দিলে তারা অস্থির হয়ে পড়বে, অভাব- অনটনে ধৈর্য রক্ষা করতে পারবে না কিংবা বঞ্চিত হওয়ার কারণে অশান্ত হয়ে পড়বে, তাদেরকে দিয়ে থাকি, যাতে তারা অধৈর্য ও অশান্ত না হয়। এমনিভাবে ঈমানের উপর যাদের দৃঢ়তা আসেনি, এখনও পর্যন্ত কিছুটা অপূর্ণতা আছে, তাদেরকেও দিই, যাতে পুরোপুরিভাবে তারা দীনের উপর মজবুত হয়ে যায়।
وَأَكِلُ أَقْوَامًا إِلَى مَا جَعَلَ اللهُ فِي قُلُوبِهِمْ مِنَ الْغِنَى وَالْخَيْرِ (আর যাদের অন্তরে আল্লাহ তা'আলা ঐশ্বর্য ও কল্যাণ দিয়েছেন, সেরকম লোকদেরকে আমি সে অবস্থার উপর ন্যস্ত করি)। অর্থাৎ অন্তরে ঐশ্বর্য থাকার কারণে অর্থ-সম্পদের অভাবকে যারা বিশেষ গুরুত্ব দেয় না, যাদের অন্তরে আল্লাহ তা'আলার উপর পরিপূর্ণ ভরসা আছে এবং যারা পূর্ণ ঈমানদারও বটে, ঈমানের উপর মজবুতির কারণে দুনিয়ার উপর আখিরাতকেই অগ্রাধিকার দেয়, আমি তাদেরকে দেওয়ার বিশেষ প্রয়োজন মনে করি না। আমি তাদেরকে তাদের তাওয়াক্কুল ও ঈমানের পরিপক্কতার উপর ছেড়ে দিই।
এই বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদেরকে দেননি, তাদের ঈমান ও তাওয়াক্কুলের উপর নিজ আস্থা ব্যক্ত করেন এবং তাদেরকে আখিরাতের প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হতে অনুপ্রাণিত করেন।
যাদের প্রতি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর গভীর আস্থা থাকার কথা ব্যক্ত করেন, হযরত আমর ইবন তাগলিব রাযি.-ও তাদের একজন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ প্রশংসায় তিনি যারপরনাই খুশি হন। সুতরাং তিনি এই বলে নিজ অনুভূতি প্রকাশ করেন যে-
فَوَاللهِ مَا أُحِبُّ أَنَّ لِي بِكَلِمَةِ رَسُوْلِ اللَّهِ ﷺ حُمْرَ النَّعَمِ (আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ কথার বিনিময়ে আমি একপাল লাল উটও গ্রহণ করতে পসন্দ করব না)। অর্থাৎ আমাকে এ কথা বলার পরিবর্তে যদি আমাকে একপাল লাল উটও দেওয়া হতো, তবে তাও আমার পসন্দ হতো না। কেননা একপাল লাল উট যত দামিই হোক না কেন, তা সীমিত ও ক্ষণস্থায়ীই বটে। পক্ষান্তরে আমার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তা আমার ঈমানের পক্ষে সাক্ষ্য। ঈমানের বিনিময়ে আখিরাতে যে পুরস্কার পাওয়া যাবে, তা অসীম ও অফুরন্ত। তার সঙ্গে একপাল লাল উটের কোনও তুলনাই চলে না।
এর দ্বারা ধারণা পাওয়া যায় যে, সাহাবায়ে কেরাম দুনিয়ার বিপরীতে আখিরাতকে কতটা প্রাধান্য দিতেন এবং তারা দুনিয়ার সামান্য অর্থের উপর কতটা সন্তুষ্ট ছিলেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. যাকে অর্থসাহায্য না করলে অধৈর্য হয়ে পড়ার ভয় থাকে, তাকে সাহায্য করা চাই।
খ. অর্থসাহায্য করলে দীনের প্রতি অধিকতর আনুগত্য প্রকাশ করবে বলে যার ব্যাপারে আশা থাকে, তাকে অর্থসাহায্য করা কাম্য।
গ. আখিরাতের উচ্চমর্যাদা অনুসারে যে দুনিয়ায় সচ্ছলতা লাভ হবে-এমন কোনও কথা নেই।
ঘ. অর্থ-সম্পদের প্রতি স্বভাবগতভাবেই মানুষের আগ্রহ থাকে। কাজেই সে আগ্রহে কোনও দোষ নেই, যদি না তাতে সীমালঙ্ঘন করা হয়।
ঙ. অর্থ-সম্পদের কমতি থাকা বা কাঙ্ক্ষিত সম্পদ লাভে বঞ্চিত থাকা দুর্ভাগ্য নয়; বরং অনেক সময় তা ব্যক্তির পক্ষে কল্যাণকরই হয়ে থাকে।
চ. কারও কোনও কাজে যদি অন্যের মনে মন্দ ধারণা জন্মায়, তবে তা নিরসন করে দেওয়া উচিত।
وَلَكِنِّي إِنَّمَا أعْطِي أَقْوَامًا لِمَا أَرَى فِي قُلُوْبِهِمْ مِنَ الْجَزَعِ وَالْهَلَعِ (বস্তুত আমি তো এমনসব লোককেই দিই, যাদের অন্তরে অস্থিরতা ও দ্বিধাগ্রস্ততা আছে বলে লক্ষ করি)। অর্থাৎ যাদের ব্যাপারে আশঙ্কা হয় যে, না দিলে তারা অস্থির হয়ে পড়বে, অভাব- অনটনে ধৈর্য রক্ষা করতে পারবে না কিংবা বঞ্চিত হওয়ার কারণে অশান্ত হয়ে পড়বে, তাদেরকে দিয়ে থাকি, যাতে তারা অধৈর্য ও অশান্ত না হয়। এমনিভাবে ঈমানের উপর যাদের দৃঢ়তা আসেনি, এখনও পর্যন্ত কিছুটা অপূর্ণতা আছে, তাদেরকেও দিই, যাতে পুরোপুরিভাবে তারা দীনের উপর মজবুত হয়ে যায়।
وَأَكِلُ أَقْوَامًا إِلَى مَا جَعَلَ اللهُ فِي قُلُوبِهِمْ مِنَ الْغِنَى وَالْخَيْرِ (আর যাদের অন্তরে আল্লাহ তা'আলা ঐশ্বর্য ও কল্যাণ দিয়েছেন, সেরকম লোকদেরকে আমি সে অবস্থার উপর ন্যস্ত করি)। অর্থাৎ অন্তরে ঐশ্বর্য থাকার কারণে অর্থ-সম্পদের অভাবকে যারা বিশেষ গুরুত্ব দেয় না, যাদের অন্তরে আল্লাহ তা'আলার উপর পরিপূর্ণ ভরসা আছে এবং যারা পূর্ণ ঈমানদারও বটে, ঈমানের উপর মজবুতির কারণে দুনিয়ার উপর আখিরাতকেই অগ্রাধিকার দেয়, আমি তাদেরকে দেওয়ার বিশেষ প্রয়োজন মনে করি না। আমি তাদেরকে তাদের তাওয়াক্কুল ও ঈমানের পরিপক্কতার উপর ছেড়ে দিই।
এই বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদেরকে দেননি, তাদের ঈমান ও তাওয়াক্কুলের উপর নিজ আস্থা ব্যক্ত করেন এবং তাদেরকে আখিরাতের প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হতে অনুপ্রাণিত করেন।
যাদের প্রতি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর গভীর আস্থা থাকার কথা ব্যক্ত করেন, হযরত আমর ইবন তাগলিব রাযি.-ও তাদের একজন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ প্রশংসায় তিনি যারপরনাই খুশি হন। সুতরাং তিনি এই বলে নিজ অনুভূতি প্রকাশ করেন যে-
فَوَاللهِ مَا أُحِبُّ أَنَّ لِي بِكَلِمَةِ رَسُوْلِ اللَّهِ ﷺ حُمْرَ النَّعَمِ (আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ কথার বিনিময়ে আমি একপাল লাল উটও গ্রহণ করতে পসন্দ করব না)। অর্থাৎ আমাকে এ কথা বলার পরিবর্তে যদি আমাকে একপাল লাল উটও দেওয়া হতো, তবে তাও আমার পসন্দ হতো না। কেননা একপাল লাল উট যত দামিই হোক না কেন, তা সীমিত ও ক্ষণস্থায়ীই বটে। পক্ষান্তরে আমার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তা আমার ঈমানের পক্ষে সাক্ষ্য। ঈমানের বিনিময়ে আখিরাতে যে পুরস্কার পাওয়া যাবে, তা অসীম ও অফুরন্ত। তার সঙ্গে একপাল লাল উটের কোনও তুলনাই চলে না।
এর দ্বারা ধারণা পাওয়া যায় যে, সাহাবায়ে কেরাম দুনিয়ার বিপরীতে আখিরাতকে কতটা প্রাধান্য দিতেন এবং তারা দুনিয়ার সামান্য অর্থের উপর কতটা সন্তুষ্ট ছিলেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. যাকে অর্থসাহায্য না করলে অধৈর্য হয়ে পড়ার ভয় থাকে, তাকে সাহায্য করা চাই।
খ. অর্থসাহায্য করলে দীনের প্রতি অধিকতর আনুগত্য প্রকাশ করবে বলে যার ব্যাপারে আশা থাকে, তাকে অর্থসাহায্য করা কাম্য।
গ. আখিরাতের উচ্চমর্যাদা অনুসারে যে দুনিয়ায় সচ্ছলতা লাভ হবে-এমন কোনও কথা নেই।
ঘ. অর্থ-সম্পদের প্রতি স্বভাবগতভাবেই মানুষের আগ্রহ থাকে। কাজেই সে আগ্রহে কোনও দোষ নেই, যদি না তাতে সীমালঙ্ঘন করা হয়।
ঙ. অর্থ-সম্পদের কমতি থাকা বা কাঙ্ক্ষিত সম্পদ লাভে বঞ্চিত থাকা দুর্ভাগ্য নয়; বরং অনেক সময় তা ব্যক্তির পক্ষে কল্যাণকরই হয়ে থাকে।
চ. কারও কোনও কাজে যদি অন্যের মনে মন্দ ধারণা জন্মায়, তবে তা নিরসন করে দেওয়া উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)