রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৮৯
অধ্যায়ঃ ৪৮
নেককার, দুর্বল ও মিসকীনদের কষ্ট দেওয়া সম্পর্কে সতর্কীকরণ
অন্যায়ভাবে যে-কাউকে কষ্ট দেওয়া সম্পূর্ণ হারাম ও মহাপাপ। শুধু শুধু পশু-পাখিকেও কষ্ট দেওয়া জায়েয নয়। এমনকি পশু যবাহকালে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে যাতে অহেতুক বেশি কষ্ট দেওয়া না হয়। যারা নেককার ও সৎকর্মশীল, তাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমতের দৃষ্টি থাকে। তারা আল্লাহর ওলী। আল্লাহর ওলীকে কষ্ট দেওয়া অধিকতর কঠিন পাপ। এটা আল্লাহ তাআলাকেই কষ্ট দেওয়ার নামান্তর। এমনিভাবে যারা দুঃস্থ ও অসহায়, যাদের আল্লাহ ছাড়া কোনও সাহায্যকারী নেই, তাদেরকে কষ্ট দেওয়াও অপেক্ষাকৃত গুরুতর। কারণ যার কোনও সাহায্যকারী নেই, আল্লাহ তাআলাই তার সাহায্যকারী। আর আল্লাহ তাআলা যার সাহায্যকারী, তাকে কষ্ট দেওয়ার অর্থ নিজেকে আল্লাহর প্রতিপক্ষ বানিয়ে নেওয়া। যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহ তাআলার প্রতিপক্ষ বানাবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তার দুর্গতি কে ঠেকাবে? তাই মেহেরবান আল্লাহ বান্দাদের সাবধান করেছেন তারা যেন কিছুতেই দুঃস্থ, দুর্বল ও অসহায় লোকদের উত্যক্ত না করে, কোনওভাবেই তাদের কষ্ট না দেয়। এ সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে সুস্পষ্ট সতর্কবাণী আছে। ইমাম নববী রহ. এ অধ্যায়ে সে সম্পর্কিত কিছু আয়াত ও হাদীছ উল্লেখ করেছেন। নিচে তার বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা পেশ করা যাচ্ছে।
নেককার, দুর্বল ও মিসকীনদের কষ্ট দেওয়া সম্পর্কে সতর্কীকরণ বিষয়ক দু'টি আয়াত
এক নং আয়াত
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا
অর্থ : যারা মুমিন নর ও মুমিন নারীদেরকে বিনা অপরাধে কষ্ট দান করে, তারা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।৩১৯
ব্যাখ্যা
এ আয়াতটি নাযিল হয়েছে মুনাফিকদের সম্পর্কে। তারা পেছনে পেছনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, উম্মাহাতুল মুমিনীন এবং অন্যান্য মুসলিম নর-নারীর কুৎসা গাইত, তাদের নামে বিভিন্ন অপবাদ রটনা করত। বিভিন্ন রেওয়ায়েতে আছে, মুসলিম নারীগণ বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে বের হলে মুনাফিকরা তাদের উত্যক্ত করত। এ কারণে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে উত্তর দিত, আমরা তাদেরকে ভদ্র মহিলা বলে বুঝতে পারিনি; মনে করেছিলাম দাসী-বাঁদী হবে।
দাসী-বাঁদী হলেই উত্যক্ত করা যাবে, এটাও একরকম মুনাফিকী চরিত্রই। প্রকৃত মুমিন কাউকেই কষ্ট দেয় না। দাসী হলেও সে তাকে বোনের দৃষ্টিতে দেখে, তাকে মানবিক মর্যাদা দেয়।
যাহোক মুমিন নর-নারীকে কষ্ট দেওয়া কঠিন গুনাহ। অপবাদ রটানো অধিকতর কঠিন পাপ। আয়াতটি যদিও মুনাফিকদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, কিন্তু এর বার্তা সকলের জন্যই সাধারণ। কাজেই যারা নিজেদের খাঁটি মুমিন বলে বিশ্বাস করে, তাদেরও কর্তব্য মুমিন নারীকে কষ্টদান থেকে বিরত থাকা। অন্যথায় আখেরাতে কঠিন দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হবে।
দুই নং আয়াত
فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ (9) وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ (10)
অর্থ : সুতরাং যে ইয়াতীম, তুমি তার প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করো না। এবং যে সওয়াল করে, তাকে দাবড়ি দিও না।৩২০
ব্যাখ্যা
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াতীম ছিলেন। তাঁর জন্মের আগেই তাঁর পিতা আব্দুল্লাহর ইন্তিকাল হয়ে গিয়েছিল। দাদা আব্দুল মুত্তালিবের তত্ত্বাবধানে তাঁর লালন-পালন হয়েছিল। মাকেও হারিয়েছিলেন শৈশবেই । তখন তাঁর বয়স ছিল ৬ বছর। দাদা আব্দুল মুত্তালিবও তাঁর ৮ বছর বয়সকালে ইন্তিকাল করেন। তারপর তাঁর লালন- পালনের ভার পড়ে চাচা আবূ তালিবের উপর। আবূ তালিবও তেমন সচ্ছল ছিলেন না। কাজেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইয়াতীম অবস্থাটাও ছিল উপর্যুপরি কঠিন থেকে কঠিনতর। নবুওয়াতী জীবনের শুরুটা কেটেছে মক্কার কাফেরদের ঘোর শত্রুতার মুখে। মদীনা মুনাউওয়ারার আওস ও খাযরাজ গোত্র তাঁকে আমন্ত্রণ জানায়। তিনি তাদের কাছে চলে যান। এখন আনসারগণ তাঁর আত্মনিবেদিত সেবক। মক্কার ইয়াতীম ও গরীব বালককে আল্লাহ তাআলা এভাবেই পবিত্র মদীনায় এনে প্রতিষ্ঠা দান করেন এবং অর্থাভাবও দূর করে দেন, যদিও আমৃত্যু তিনি যুহুদ ও কৃচ্ছ্রতার জীবনই যাপন করেছেন।
যেহেতু এক সময় তিনি ইয়াতীম ছিলেন এবং ছিলেন অভাবগ্রস্তও, তাই তার শোকর আদায়ার্থে তাঁকে আদেশ করা হয়েছে যেন ইয়াতীম ও গরীবদের প্রতি দুর্ব্যবহার না করে মমত্বপূর্ণ আচরণ করেন।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন রহমাতুল-লিল-আলামীন। তিনি স্বভাবতই গরীব-দুঃখী ও বিধবা-ইয়াতীমের প্রতি সদয় আচরণ করতেন। তা সত্ত্বেও তাঁকে এ আদেশ করা হয়েছে বিষয়টার প্রতি অধিকতর গুরুত্ব আরোপের জন্য, যাতে তাঁর উম্মত এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র অবহেলা না করে।
যারা কোনওকালে ইয়াতীম ও গরীব ছিল, তাদের কর্তব্য অতীতদিনের কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতাবোধে উজ্জীবিত হওয়া এবং সে কৃতজ্ঞতার প্রকাশস্বরূপ ইয়াতীম ও গরীবদের প্রতি সহমর্মী থাকা। যারা অতীতে ইয়াতীম ও গরীব ছিল না, তাদেরও পিতা- মাতার আশ্রয়ে প্রতিপালিত হওয়া ও অভাবমুক্ত অবস্থায় বেড়ে ওঠার জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা কর্তব্য। সে শোকরের একটা অংশ এইও যে, তারা ইয়াতীম ও গরীবদের প্রতি সদা সহানুভূতিশীল থাকবে।
৩১৯. সূরা আহযাব (৩৩), আয়াত ৫৮
৩২০. সূরা দুহা (৯৩), আয়াত ৯, ১০
এ বিষয়ে বহু হাদীছ আছে। তার মধ্যে একটি হলো, পূর্ববর্তী অধ্যায়ে উদ্ধৃত হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীছ— “যে-কেউ আমার বন্ধুর সঙ্গে দুশমনি করে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা দিই।” এর ব্যাখ্যা পেছনের অধ্যায়ের ৩৮৬ ক্রমিক নম্বরে দেখুন।
আরেকটি হলো ইয়াতীমদের প্রতি সদয় আচরণ সম্পর্কিত অধ্যায়ে উদ্ধৃত হযরত সা'দ ইবন আবী ওয়াক্কাস রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীছ- “হে আবূ বকর! তুমি যদি তাদেরকে নারাজ করে থাক, তবে তুমি তোমার প্রতিপালককেই নারাজ করলে।” এর ব্যাখ্যা ৪র্থ খণ্ডের ২৬১ ক্রমিক নম্বরে দেখুন।
নেককার, দুর্বল ও মিসকীনদের কষ্ট দেওয়া সম্পর্কে সতর্কীকরণ
অন্যায়ভাবে যে-কাউকে কষ্ট দেওয়া সম্পূর্ণ হারাম ও মহাপাপ। শুধু শুধু পশু-পাখিকেও কষ্ট দেওয়া জায়েয নয়। এমনকি পশু যবাহকালে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে যাতে অহেতুক বেশি কষ্ট দেওয়া না হয়। যারা নেককার ও সৎকর্মশীল, তাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমতের দৃষ্টি থাকে। তারা আল্লাহর ওলী। আল্লাহর ওলীকে কষ্ট দেওয়া অধিকতর কঠিন পাপ। এটা আল্লাহ তাআলাকেই কষ্ট দেওয়ার নামান্তর। এমনিভাবে যারা দুঃস্থ ও অসহায়, যাদের আল্লাহ ছাড়া কোনও সাহায্যকারী নেই, তাদেরকে কষ্ট দেওয়াও অপেক্ষাকৃত গুরুতর। কারণ যার কোনও সাহায্যকারী নেই, আল্লাহ তাআলাই তার সাহায্যকারী। আর আল্লাহ তাআলা যার সাহায্যকারী, তাকে কষ্ট দেওয়ার অর্থ নিজেকে আল্লাহর প্রতিপক্ষ বানিয়ে নেওয়া। যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহ তাআলার প্রতিপক্ষ বানাবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তার দুর্গতি কে ঠেকাবে? তাই মেহেরবান আল্লাহ বান্দাদের সাবধান করেছেন তারা যেন কিছুতেই দুঃস্থ, দুর্বল ও অসহায় লোকদের উত্যক্ত না করে, কোনওভাবেই তাদের কষ্ট না দেয়। এ সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে সুস্পষ্ট সতর্কবাণী আছে। ইমাম নববী রহ. এ অধ্যায়ে সে সম্পর্কিত কিছু আয়াত ও হাদীছ উল্লেখ করেছেন। নিচে তার বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা পেশ করা যাচ্ছে।
নেককার, দুর্বল ও মিসকীনদের কষ্ট দেওয়া সম্পর্কে সতর্কীকরণ বিষয়ক দু'টি আয়াত
এক নং আয়াত
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا
অর্থ : যারা মুমিন নর ও মুমিন নারীদেরকে বিনা অপরাধে কষ্ট দান করে, তারা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।৩১৯
ব্যাখ্যা
এ আয়াতটি নাযিল হয়েছে মুনাফিকদের সম্পর্কে। তারা পেছনে পেছনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, উম্মাহাতুল মুমিনীন এবং অন্যান্য মুসলিম নর-নারীর কুৎসা গাইত, তাদের নামে বিভিন্ন অপবাদ রটনা করত। বিভিন্ন রেওয়ায়েতে আছে, মুসলিম নারীগণ বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে বের হলে মুনাফিকরা তাদের উত্যক্ত করত। এ কারণে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে উত্তর দিত, আমরা তাদেরকে ভদ্র মহিলা বলে বুঝতে পারিনি; মনে করেছিলাম দাসী-বাঁদী হবে।
দাসী-বাঁদী হলেই উত্যক্ত করা যাবে, এটাও একরকম মুনাফিকী চরিত্রই। প্রকৃত মুমিন কাউকেই কষ্ট দেয় না। দাসী হলেও সে তাকে বোনের দৃষ্টিতে দেখে, তাকে মানবিক মর্যাদা দেয়।
যাহোক মুমিন নর-নারীকে কষ্ট দেওয়া কঠিন গুনাহ। অপবাদ রটানো অধিকতর কঠিন পাপ। আয়াতটি যদিও মুনাফিকদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, কিন্তু এর বার্তা সকলের জন্যই সাধারণ। কাজেই যারা নিজেদের খাঁটি মুমিন বলে বিশ্বাস করে, তাদেরও কর্তব্য মুমিন নারীকে কষ্টদান থেকে বিরত থাকা। অন্যথায় আখেরাতে কঠিন দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হবে।
দুই নং আয়াত
فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ (9) وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ (10)
অর্থ : সুতরাং যে ইয়াতীম, তুমি তার প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করো না। এবং যে সওয়াল করে, তাকে দাবড়ি দিও না।৩২০
ব্যাখ্যা
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াতীম ছিলেন। তাঁর জন্মের আগেই তাঁর পিতা আব্দুল্লাহর ইন্তিকাল হয়ে গিয়েছিল। দাদা আব্দুল মুত্তালিবের তত্ত্বাবধানে তাঁর লালন-পালন হয়েছিল। মাকেও হারিয়েছিলেন শৈশবেই । তখন তাঁর বয়স ছিল ৬ বছর। দাদা আব্দুল মুত্তালিবও তাঁর ৮ বছর বয়সকালে ইন্তিকাল করেন। তারপর তাঁর লালন- পালনের ভার পড়ে চাচা আবূ তালিবের উপর। আবূ তালিবও তেমন সচ্ছল ছিলেন না। কাজেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইয়াতীম অবস্থাটাও ছিল উপর্যুপরি কঠিন থেকে কঠিনতর। নবুওয়াতী জীবনের শুরুটা কেটেছে মক্কার কাফেরদের ঘোর শত্রুতার মুখে। মদীনা মুনাউওয়ারার আওস ও খাযরাজ গোত্র তাঁকে আমন্ত্রণ জানায়। তিনি তাদের কাছে চলে যান। এখন আনসারগণ তাঁর আত্মনিবেদিত সেবক। মক্কার ইয়াতীম ও গরীব বালককে আল্লাহ তাআলা এভাবেই পবিত্র মদীনায় এনে প্রতিষ্ঠা দান করেন এবং অর্থাভাবও দূর করে দেন, যদিও আমৃত্যু তিনি যুহুদ ও কৃচ্ছ্রতার জীবনই যাপন করেছেন।
যেহেতু এক সময় তিনি ইয়াতীম ছিলেন এবং ছিলেন অভাবগ্রস্তও, তাই তার শোকর আদায়ার্থে তাঁকে আদেশ করা হয়েছে যেন ইয়াতীম ও গরীবদের প্রতি দুর্ব্যবহার না করে মমত্বপূর্ণ আচরণ করেন।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন রহমাতুল-লিল-আলামীন। তিনি স্বভাবতই গরীব-দুঃখী ও বিধবা-ইয়াতীমের প্রতি সদয় আচরণ করতেন। তা সত্ত্বেও তাঁকে এ আদেশ করা হয়েছে বিষয়টার প্রতি অধিকতর গুরুত্ব আরোপের জন্য, যাতে তাঁর উম্মত এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র অবহেলা না করে।
যারা কোনওকালে ইয়াতীম ও গরীব ছিল, তাদের কর্তব্য অতীতদিনের কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতাবোধে উজ্জীবিত হওয়া এবং সে কৃতজ্ঞতার প্রকাশস্বরূপ ইয়াতীম ও গরীবদের প্রতি সহমর্মী থাকা। যারা অতীতে ইয়াতীম ও গরীব ছিল না, তাদেরও পিতা- মাতার আশ্রয়ে প্রতিপালিত হওয়া ও অভাবমুক্ত অবস্থায় বেড়ে ওঠার জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা কর্তব্য। সে শোকরের একটা অংশ এইও যে, তারা ইয়াতীম ও গরীবদের প্রতি সদা সহানুভূতিশীল থাকবে।
৩১৯. সূরা আহযাব (৩৩), আয়াত ৫৮
৩২০. সূরা দুহা (৯৩), আয়াত ৯, ১০
এ বিষয়ে বহু হাদীছ আছে। তার মধ্যে একটি হলো, পূর্ববর্তী অধ্যায়ে উদ্ধৃত হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীছ— “যে-কেউ আমার বন্ধুর সঙ্গে দুশমনি করে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা দিই।” এর ব্যাখ্যা পেছনের অধ্যায়ের ৩৮৬ ক্রমিক নম্বরে দেখুন।
আরেকটি হলো ইয়াতীমদের প্রতি সদয় আচরণ সম্পর্কিত অধ্যায়ে উদ্ধৃত হযরত সা'দ ইবন আবী ওয়াক্কাস রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীছ- “হে আবূ বকর! তুমি যদি তাদেরকে নারাজ করে থাক, তবে তুমি তোমার প্রতিপালককেই নারাজ করলে।” এর ব্যাখ্যা ৪র্থ খণ্ডের ২৬১ ক্রমিক নম্বরে দেখুন।
ফজরের নামায আদায়কারীদেরকে আল্লাহপ্রদত্ত নিরাপত্তা এবং তাদেরকে কষ্ট দেওয়ার পরিণাম
হাদীছ নং : ৩৮৯
হযরত জুনদুব ইবন আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায আদায় করল, সে আল্লাহর যিম্মাদারীতে এসে যায়। সুতরাং (সাবধান!) আল্লাহ যেন তাঁর যিম্মাদারীর কোনও বিষয়ে তোমাদেরকে তলব না করেন। কেননা, তিনি তাঁর যিম্মাদারীর কোনও বিষয়ে যাকে তলব করবেন তাকে অবশ্যই পাকড়াও করবেন। তারপর তাকে উল্টোমুখী করে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন – মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৬৫৭; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২২২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৮৮১৪; মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদীছ নং ১৮২৫০; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৩৯৪৫; আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ১৬৫৫
হাদীছ নং : ৩৮৯
হযরত জুনদুব ইবন আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায আদায় করল, সে আল্লাহর যিম্মাদারীতে এসে যায়। সুতরাং (সাবধান!) আল্লাহ যেন তাঁর যিম্মাদারীর কোনও বিষয়ে তোমাদেরকে তলব না করেন। কেননা, তিনি তাঁর যিম্মাদারীর কোনও বিষয়ে যাকে তলব করবেন তাকে অবশ্যই পাকড়াও করবেন। তারপর তাকে উল্টোমুখী করে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন – মুসলিম।
সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৬৫৭; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২২২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৮৮১৪; মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদীছ নং ১৮২৫০; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৩৯৪৫; আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ১৬৫৫
48 - باب التحذير من إيذاء الصالحين والضعفة والمساكين
قال الله تعالى: {والذين يؤذون المؤمنين والمؤمنات بغير ما اكتسبوا فقد احتملوا بهتانا وإثما مبينا} [الأحزاب: 58]، وقال تعالى: {فأما اليتيم فلا تقهر وأما السائل فلا تنهر} [الضحى: 9 - 10].
وأما الأحاديث، فكثيرة منها:
حديث (1) أبي هريرة - رضي الله عنه - في الباب قبل هذا: «من عادى لي وليا فقد آذنته بالحرب».
ومنها حديث (2) سعد بن أبي وقاص - رضي الله عنه - السابق في باب ملاطفة اليتيم، وقوله (3) صلى الله عليه وسلم: «يا أبا بكر، لئن كنت أغضبتهم لقد أغضبت ربك».
قال الله تعالى: {والذين يؤذون المؤمنين والمؤمنات بغير ما اكتسبوا فقد احتملوا بهتانا وإثما مبينا} [الأحزاب: 58]، وقال تعالى: {فأما اليتيم فلا تقهر وأما السائل فلا تنهر} [الضحى: 9 - 10].
وأما الأحاديث، فكثيرة منها:
حديث (1) أبي هريرة - رضي الله عنه - في الباب قبل هذا: «من عادى لي وليا فقد آذنته بالحرب».
ومنها حديث (2) سعد بن أبي وقاص - رضي الله عنه - السابق في باب ملاطفة اليتيم، وقوله (3) صلى الله عليه وسلم: «يا أبا بكر، لئن كنت أغضبتهم لقد أغضبت ربك».
389 - وعن جندب بن عبد الله - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم: «مَنْ صَلَّى صَلاةَ الصُّبْحِ، فَهُوَ في ذِمَّةِ اللهِ، فَلاَ يَطْلُبَنَّكُمُ اللهُ مِنْ ذِمَّتِهِ بِشَيْءٍ، فَإنَّهُ مَنْ يَطْلُبُهُ مِنْ ذِمَّتِهِ بِشَيْءٍ يُدْرِكْهُ، ثُمَّ يَكُبُّهُ عَلَى وَجْهِهِ في نَارِ جَهَنَّمَ». رواه مسلم. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে ফজরের নামায আদায়কারীর মর্যাদা এবং তার সে মর্যাদা অবমাননাকারীর পরিণাম বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে যে- فَهُوَ فِي ذِمةِ اللَّه অর্থাৎ ফজরের নামায আদায়কারী আল্লাহ তাআলার যিম্মায় চলে যায়। আল্লাহর যিম্মায় চলে যাওয়ার অর্থ- আল্লাহ তাআলা তাকে নিরাপত্তা দান করেন। আল্লাহ তাআলা যাকে নিরাপত্তা দান করেন, প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য সে নিরাপত্তার মর্যাদা দেওয়া অর্থাৎ তার জান, মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা রক্ষা করা, কোনওভাবে তার কোনও ক্ষতি না করা। হাদীছটির পরবর্তী বাক্যে সে কথাই বলা হয়েছে যে- فَلا يطْلُبنَّكُمْ اللَّهُ مِنْ ذِمَّتِهِ بِشَيْءٍ ‘সুতরাং আল্লাহ যেন তাঁর যিম্মার ব্যাপারে তোমাদেরকে তলব না করেন'। অর্থাৎ তোমরা সে যিম্মাদারী ও নিরাপত্তা দানের অমর্যাদা করো না। যদি কর, তবে আল্লাহ তোমাদের তলব করবেন এবং তোমাদেরকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
তিরমিযী শরীফের বর্ণনায় আছে- فَلاَ تُخْفِرُوا اللهَ فِي ذِمَّتِهِ 'তোমরা আল্লাহপ্রদত্ত নিরাপত্তার ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করো না।[১]
এ হাদীছে যিম্মাদারী দ্বারা রূপকার্থে নামাযও বোঝানো হতে পারে, যেহেতু যিম্মাদারী তথা নিরাপত্তা নামায আদায়ের ফলস্বরূপ। এ হিসেবে হাদীছটির অর্থ হবে-তোমরা ফজরের নামায ত্যাগ করো না এবং এ নামায আদায়ের ব্যাপারে কোনওরকম শিথিলতা প্রদর্শন করো না। কেননা তা করলে আল্লাহ ও তোমাদের মধ্যকার প্রতিশ্রুতি ভেঙে যাবে। পরিণামে আল্লাহ তা'আলা তোমাদেরকে তলব করবেন । আর আল্লাহ তাআলা যাকে তলব করবেন এবং যাকে তাঁর প্রদত্ত দায়িত্বে অবহেলার কারণে পাকড়াও করবেন, তাকে অবশ্যই জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।
ফজরের নামাযের এ গুরুত্বের কারণ- তুলনামূলকভাবে এ নামায আদায় করা বেশি কঠিন। ঘুম থেকে উঠে এ নামায আদায় করতে অলসতা লাগে। তা সত্ত্বেও যারা এ নামায আদায় করে, বলা যায় তারা কেবল ইখলাসের কারণেই তা আদায় করে। আর যারা মুখলিস তারা আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে।
অথবা এ গুরুত্বের কারণ হচ্ছে, ফজরের নামায আদায় করা হয় দিনের শুরুতে। এ সময় মানুষ তাদের নিত্যদিনের নানা প্রয়োজনে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ব্যতিব্যস্ততার মধ্যেও যারা আগে নামায পড়ে নেয়, তারা যেন দুনিয়ার উপর আখেরাতকে প্রাধান্য দিয়েই তা করে। স্বাভাবিকভাবেই যারা ফজরের নামাযে এরূপ যত্নবান থাকে, তারা অন্যান্য নামায আদায়েও কোনওরূপ অবহেলা করবে না। সুতরাং তারা যাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সবটা সময় নির্বিঘ্নে নামায পড়তে পারে, তাই আল্লাহ তাআলা তাদেরকে নিরাপত্তা দান করেন, যা রক্ষা করা সকলের কর্তব্য।
ইমাম তীবী রহ. فَلا يطْلُبنَّكُمْ -এর ব্যাকরণ ও অলঙ্কারগত বিশ্লেষণ করে বলেন, সুতরাং এর অর্থ হচ্ছে, যে ব্যক্তি ফজরের নামায পড়ল সে আল্লাহর যিম্মাদারীতে চলে গেল। সুতরাং তোমরা কোনওকিছু দিয়ে তার ক্ষতি করো না, তা যত তুচ্ছই হোক না কেন। কেননা তোমরা তার কোনও ক্ষতি করলে আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করবেন । তিনি পাকড়াও করলে তোমরা তাঁর কাছ থেকে পালাতে পারবে না। তিনি চারদিক থেকে তোমাদের বেষ্টন করে ফেলবেন।
ইবন হাজার হাইতামী রহ. মিশকাত শরীফের ভাষ্যগ্রন্থে বলেন, যারা ফজরের নামায আদায় করে, যা কিনা অবশিষ্ট চার ওয়াক্ত নামায যথাযথ আদায়ের পক্ষে সহায়ক, কেউ যাতে তাদের কোনওরকম ক্ষতি না করে সেজন্য এ হাদীছটি একটি কঠোর সতর্কবাণী। এতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কেউ তাদের কোনও ক্ষতি করলে পরিণামে তাকে কঠিন লাঞ্ছনা ও কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
ইমাম শা‘রানী রহ. ‘আল-হাউযুল মাওরূদ' গ্রন্থে বলেন, হাজ্জাজ ইবন ইয়ূসুফ অত্যন্ত নিষ্ঠুর শাসক হওয়া সত্ত্বেও কাউকে যখন তার কাছে ধরে আনা হত তখন তিনি তাকে জিজ্ঞেস করতেন, তুমি ফজরের নামায পড়েছ? যদি সে পড়েছে বলে জানাত, তখন এ হাদীছের সতর্কবাণীর প্রতি লক্ষ করে তাকে নিরাপদে মুক্তি দিয়ে দিতেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা ফজরের নামাযের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। কাজেই এ নামা আদায়ে বিন্দুমাত্র গড়িমসি করা উচিত নয়।
খ. যে ব্যক্তি ফজরের নামায আদায় করে সে যেহেতু আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পেয়ে যায়, তাই তার যে-কোনওরকম ক্ষতি করা হতে বিরত থাকা প্রত্যেক মুমিনের অবশ্যকর্তব্য।
[১] জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২২২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৫৮৯৮
তিরমিযী শরীফের বর্ণনায় আছে- فَلاَ تُخْفِرُوا اللهَ فِي ذِمَّتِهِ 'তোমরা আল্লাহপ্রদত্ত নিরাপত্তার ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করো না।[১]
এ হাদীছে যিম্মাদারী দ্বারা রূপকার্থে নামাযও বোঝানো হতে পারে, যেহেতু যিম্মাদারী তথা নিরাপত্তা নামায আদায়ের ফলস্বরূপ। এ হিসেবে হাদীছটির অর্থ হবে-তোমরা ফজরের নামায ত্যাগ করো না এবং এ নামায আদায়ের ব্যাপারে কোনওরকম শিথিলতা প্রদর্শন করো না। কেননা তা করলে আল্লাহ ও তোমাদের মধ্যকার প্রতিশ্রুতি ভেঙে যাবে। পরিণামে আল্লাহ তা'আলা তোমাদেরকে তলব করবেন । আর আল্লাহ তাআলা যাকে তলব করবেন এবং যাকে তাঁর প্রদত্ত দায়িত্বে অবহেলার কারণে পাকড়াও করবেন, তাকে অবশ্যই জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।
ফজরের নামাযের এ গুরুত্বের কারণ- তুলনামূলকভাবে এ নামায আদায় করা বেশি কঠিন। ঘুম থেকে উঠে এ নামায আদায় করতে অলসতা লাগে। তা সত্ত্বেও যারা এ নামায আদায় করে, বলা যায় তারা কেবল ইখলাসের কারণেই তা আদায় করে। আর যারা মুখলিস তারা আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে।
অথবা এ গুরুত্বের কারণ হচ্ছে, ফজরের নামায আদায় করা হয় দিনের শুরুতে। এ সময় মানুষ তাদের নিত্যদিনের নানা প্রয়োজনে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ব্যতিব্যস্ততার মধ্যেও যারা আগে নামায পড়ে নেয়, তারা যেন দুনিয়ার উপর আখেরাতকে প্রাধান্য দিয়েই তা করে। স্বাভাবিকভাবেই যারা ফজরের নামাযে এরূপ যত্নবান থাকে, তারা অন্যান্য নামায আদায়েও কোনওরূপ অবহেলা করবে না। সুতরাং তারা যাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সবটা সময় নির্বিঘ্নে নামায পড়তে পারে, তাই আল্লাহ তাআলা তাদেরকে নিরাপত্তা দান করেন, যা রক্ষা করা সকলের কর্তব্য।
ইমাম তীবী রহ. فَلا يطْلُبنَّكُمْ -এর ব্যাকরণ ও অলঙ্কারগত বিশ্লেষণ করে বলেন, সুতরাং এর অর্থ হচ্ছে, যে ব্যক্তি ফজরের নামায পড়ল সে আল্লাহর যিম্মাদারীতে চলে গেল। সুতরাং তোমরা কোনওকিছু দিয়ে তার ক্ষতি করো না, তা যত তুচ্ছই হোক না কেন। কেননা তোমরা তার কোনও ক্ষতি করলে আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করবেন । তিনি পাকড়াও করলে তোমরা তাঁর কাছ থেকে পালাতে পারবে না। তিনি চারদিক থেকে তোমাদের বেষ্টন করে ফেলবেন।
ইবন হাজার হাইতামী রহ. মিশকাত শরীফের ভাষ্যগ্রন্থে বলেন, যারা ফজরের নামায আদায় করে, যা কিনা অবশিষ্ট চার ওয়াক্ত নামায যথাযথ আদায়ের পক্ষে সহায়ক, কেউ যাতে তাদের কোনওরকম ক্ষতি না করে সেজন্য এ হাদীছটি একটি কঠোর সতর্কবাণী। এতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কেউ তাদের কোনও ক্ষতি করলে পরিণামে তাকে কঠিন লাঞ্ছনা ও কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
ইমাম শা‘রানী রহ. ‘আল-হাউযুল মাওরূদ' গ্রন্থে বলেন, হাজ্জাজ ইবন ইয়ূসুফ অত্যন্ত নিষ্ঠুর শাসক হওয়া সত্ত্বেও কাউকে যখন তার কাছে ধরে আনা হত তখন তিনি তাকে জিজ্ঞেস করতেন, তুমি ফজরের নামায পড়েছ? যদি সে পড়েছে বলে জানাত, তখন এ হাদীছের সতর্কবাণীর প্রতি লক্ষ করে তাকে নিরাপদে মুক্তি দিয়ে দিতেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা ফজরের নামাযের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। কাজেই এ নামা আদায়ে বিন্দুমাত্র গড়িমসি করা উচিত নয়।
খ. যে ব্যক্তি ফজরের নামায আদায় করে সে যেহেতু আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পেয়ে যায়, তাই তার যে-কোনওরকম ক্ষতি করা হতে বিরত থাকা প্রত্যেক মুমিনের অবশ্যকর্তব্য।
[১] জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২২২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৫৮৯৮
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
