রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৩৭
পিতা-মাতার অবাধ্যতা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার নিষিদ্ধতা
বড় বড় চারটি গুনাহ
হাদীছ নং : ৩৩৭
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন্ আমর ইবনুল আস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মহাপাপ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্যতা করা, নরহত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা -বুখারী।সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৬৭৫; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩০২১; নাসাঈ, হাদীছ নং ৪০১১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৬৮৮৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৫৬৩; তবারানী, আল-মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৩৫০; বায়হাকী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৫৮৫০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৫১৭
হাদীছ নং : ৩৩৭
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন্ আমর ইবনুল আস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মহাপাপ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্যতা করা, নরহত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা -বুখারী।সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৬৭৫; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৩০২১; নাসাঈ, হাদীছ নং ৪০১১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৬৮৮৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫৫৬৩; তবারানী, আল-মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৩৫০; বায়হাকী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৫৮৫০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ২৫১৭
41 - باب تحريم العقوق وقطيعة الرحم
337 - وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما، عن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «الكَبَائِرُ: الإشْرَاكُ بالله، وَعُقُوقُ الوَالِدَيْنِ، وَقَتْلُ النَّفْس، وَاليَمِينُ الغَمُوسُ». رواه البخاري. (1)
«اليمين الغموس»: التي يحلفها كاذبًا عامدًا، سميت غموسًا؛ لأنها تغمس الحالِفَ في الإثم.
«اليمين الغموس»: التي يحلفها كاذبًا عامدًا، سميت غموسًا؛ لأنها تغمس الحالِفَ في الإثم.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বোচ্চ স্তরের চারটি গুনাহের কথা উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে 'আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করা' ও 'পিতা-মাতার অবাধ্যতা করা' এ গুনাহদুটির উল্লেখ পূর্বের হাদীছেও আছে। সেখানে এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য। অপর দু'টি হচ্ছে নরহত্যা ও মিথ্যা কসম।
অন্যায় নরহত্যা
قتل النفس (নরহত্যা) অর্থাৎ শরীআতসম্মত কারণ ছাড়া কাউকে হত্যা করা অতি ভয়ানক পাপ, তাতে যে ব্যক্তিকে হত্যা করা হলো সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম, পুরুষ হোক বা নারী, শিশু হোক বা বয়স্ক এবং স্বাধীন ব্যক্তি হোক বা গোলাম। শরীআত কেবল চার শ্রেণীর লোককে হত্যা করার অনুমতি দেয়। ক. কেউ কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করলে শাস্তিস্বরূপ তাকেও হত্যা করা হবে। খ. কোনও মুসলিম ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে গেলে অর্থাৎ ইসলাম পরিত্যাগ করলে প্রথমে তাকে তাওবা করতে বলা হবে, সে তাওবা করতে সম্মত না হলে তাকেও হত্যা করা হবে। গ. কোনও বিবাহিত নর-নারী ব্যভিচার করলে তাদেরকেও হত্যা করা হবে। ঘ. জিহাদকালে অনুসলিম ব্যক্তিকে যুদ্ধক্ষেত্রে বা বন্দী অবস্থায় হত্যা করা।
এর মধ্যে প্রথম তিন শ্রেণীর লোককে হত্যা করা হবে শাস্তিস্বরূপ। বলাবাহুল শাস্তিদান করার অধিকার কেবলই সরকারের বা আদালতের। তাই এরূপ হত্যা কেবলই আদালতের এখতিয়ারাধীন থাকবে। অন্য কেউ এ শাস্তি আরোপ করার অধিকার রাখে না। কেউ তা করলে অন্যায় নরহত্যারূপে গণ্য হবে।
ইসলামে অন্যায় নরহত্যা সম্পূর্ণ নিষেধ। এটা কঠিনতম পাপ। কুরআন মাজীদে ইরশাদ وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ 'আর আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন, তাকে যথার্থ কারণ ছাড়া হত্যা করো না।১৩৩
অন্যত্র ইরশাদ مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا “কেউ যদি কাউকে হত্যা করে এবং তা অন্য কাউকে হত্যা করার কারণে কিংবা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তারের কারণে না হয়, তবে সে যেন সমস্ত মানুষকে হত্যা করল।১৩৪
আরও ইরশাদ হয়েছে وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا “যে ব্যক্তি কোনও মুসলিমকে জেনেশুনে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম, যাকে সে সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তার প্রতি গযব নাযিল করবেন ও তাকে লানত করবেন। আর আল্লাহ তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।১৩৫
মিথ্যা কসম করা
اليمين الغموس (ইচ্ছাকৃত মিথ্যা কসম করা)। যেমন কেউ অতীতে কোনও একটি কাজ করেছে, কিন্তু অন্যের কাছে তা অস্বীকার করে এবং বলে আমি তা করিনি। এখন সে যদি এ কথাটি আল্লাহর নামে এভাবে কসম করে বলে যে, আল্লাহর কসম, আমি তা করিনি, তবে এটি ইচ্ছাকৃত মিথ্যা কসম (ইয়ামীনে গামূস)। এটি কঠিন পাপ। মিথ্য বলা এমনিতেই পাপ, তার উপর আবার আল্লাহর নামে কসম করে বলা। এতে দ্বিগুণ পাপ হলো। সাধারণত এরূপ কসম করা হয় অন্যায় স্বার্থসিদ্ধির জন্য। এটা আরেক পাপ। এতে করে অন্যের অধিকারও খর্ব করা হয়। তাই এ হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়ামীনে গামূসকে সর্বাপেক্ষা বড় পাপের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। এ ব্যাপারে কুরআন মাজীদে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلًا أُولَئِكَ لَا خَلَاقَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
'যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার ও নিজেদের কসমের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, আখেরাতে তাদের কোনও অংশ নেই। আর আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে (সদয় দৃষ্টিতে) তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না। তাদের জন্য থাকবে কেবল যন্ত্রণাময় শাস্তি।১৩৬
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন من خلف يمين صبر ليقتطع بها مال امرئ مسلم، لقي الله وهو عليه غضبان যে ব্যক্তি কোনও মুসলিমের সম্পদ গ্রাস করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা কসম করে, সে (কিয়ামতের দিন) আল্লাহর সঙ্গে এমনভাবে সাক্ষাত করবে যে, তিনি তার প্রতি ক্রুদ্ধ থাকবেন।১৩৭
এ ক্ষেত্রে বিধান হলো তাওবা করা। তাওবা ছাড়া এটা মাফ হয় না। তবে হানাফী মাযহাব অনুযায়ী এরূপ কসমের কোনও কাফফারা নেই। যেহেতু কাফ্ফারা নেই তাই খাঁটিমনে তাওবা করা উচিত, অন্যথায় জাহান্নামের কঠিন শাস্তি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
কসমের প্রকারভেদ ও বিধান
কসম তিন প্রকার। এক তো গেল ইচ্ছাকৃত মিথ্যা কসম বা ইয়ামীনে গামূস। দ্বিতীয় হলো নিরর্থক কসম (ইয়ামীনে লাগব)। এটা দুই রকম
ক. অনিচ্ছাকৃতভাবে কসম করে ফেলা। কেউ কোনও কথা বলতে গিয়ে বলে ফেলল, আল্লাহর কসম, আমি এরূপ করেছি। কিন্তু তার কসম করার ইচ্ছা ছিল না; অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে এটা এসে গেছে।
খ. ইচ্ছাকৃতভাবেই কসম করা, কিন্তু যে কথার উপর কসম করেছে তা নিজ ধারণা অনুযায়ী সত্য হলেও বাস্তবে সত্য নয়। যেমন কসমকারীর ধারণা সে অতীতে কোনও একটি কাজ করেছে। সে তার এ ধারণা অনুযায়ী অন্যের কাছে বলার সময় কসম করে বলল, আল্লাহর কসম, আমি অমুক কাজটি করেছি। তার ধারণা সে সত্যই বলেছে। বাস্তবিকপক্ষে তা সত্য নয়; তার ধারণাটি ভুল। ইয়ামীনে লাগব বা নিরর্থক কসম যেহেতু অনিচ্ছাকৃত হয় বা ইচ্ছাকৃত হলেও ভুল ধারণার ভিত্তিতে হয়, তাই এরে কোনও গুনাহ হয় না এবং এ কসমের কারণে তার কোনও কাফ্ফারাও দিতে হবে না।
আর তৃতীয় হচ্ছে ইয়ামীনে মুন' আকিদাহ। অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে ভবিষ্যতের কোনও বিষয়ে আল্লাহর নামে কসম করে বলা যে, আমি তা করব কিংবা করব না। এরূপ কসম রক্ষা করা অবশ্যকর্তব্য। ইচ্ছাকৃত ভঙ্গ করা গুনাহ। আল্লাহ তাআলা বলেন وَلَا تَنْقُضُوا الْأَيْمَانَ بَعْدَ تَوْكِيدِهَا وَقَدْ جَعَلْتُمُ اللَّهَ عَلَيْكُمْ كَفِيلًا ‘শপথকে দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ করো না, যখন তোমরা আল্লাহকে নিজেদের উপর সাক্ষী বানিয়ে নিয়েছ।১৩৮
এরূপ কসম ইচ্ছাকৃত ভঙ্গ করলে সেজন্য তাওবা করা জরুরি এবং কাফ্ফারাও দিতে হবে। ভুলে ভেঙ্গে গেলে গুনাহ হয় না বটে, তবে কাফ্ফারা দেওয়া জরুরি। যদি এরকম কসম করার পর দেখা যায় শরীআতের দৃষ্টিতে যে বিষয়ে কসম করেছে তার বিপরীতটাই করা উত্তম, তবে সে ক্ষেত্রে কসম ভাঙ্গা যাবে, কিন্তু কাফ্ফারা দিতে হবে।। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে من حلف على يمين، فرأى غيرها خيرا منها، فليأتها، وليكفر عن يمينه 'যে ব্যক্তি কোনও কসম করে, তারপর দেখতে পায় যে তার বিপরীতটাই তারচে উত্তম, তবে সে যেন সেই উত্তমটি করে এবং তার কসমের জন্য কাফ্ফারা দেয়।১৩৯
কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللَّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَكِنْ يُؤَاخِذُكُمْ بِمَا عَقَّدْتُمُ الْأَيْمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ ذَلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
“আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য পাকড়াও করবেন না। কিন্তু তোমরা যে শপথ পরিপক্কভাবে করে থাক, সেজন্য তিনি তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন। সুতরাং তার কাফফারা হলো, দশজন মিসকীনকে মধ্যম ধরনের খাবার দেবে, যা তোমরা তোমাদের পরিবারবর্গকে খাইয়ে থাক। অথবা তাদেরকে বস্ত্র দান করবে কিংবা একজন গোলাম আযাদ করবে। তবে কারও কাছে যদি (এসব জিনিসের মধ্য হতে কিছুই) না থাকে, সে তিন দিন রোযা রাখবে। এটা তোমাদের শপথের কাফফারা, যখন তোমরা শপথ করবে (এবং তারপর তা ভেঙ্গে ফেলবে)। তোমরা নিজেদের শপথকে রক্ষা করো। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের সামনে নিজ আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা আদায় কর।১৪০
ইমাম নববী রহ. বলেন اليمين الغموس التي يحلفها كاذبا عامدا، سميت غموسا؛ لأنها تغمس الحالف في الإثم ‘ইয়ামীনে গামূস বলা হয় ওই কসমকে, যার কসমকারী ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা কথার উপর কসম করে। এটা গামূস বলা হয় এ কারণে যে, এ কসম কসমকারী ব্যক্তিকে মিথ্যার মধ্যে ডুবিয়ে দেয়।
الغموس অর্থ নিমজ্জিত করা। اليمين অর্থ কসম। মিথ্যা কসমের কারণে মানুষ একের পর এক নানা গুনাহে লিপ্ত হতে থাকে। যেন সে গুনাহের মধ্যে সম্পূর্ণ ডুবে যায়। পরিণামে এটা তার জাহান্নামের গর্তে নিমজ্জিত হওয়ারও কারণ হবে। এ কারণেই মিথ্যা কসমের নাম ইয়ামীনে গামূস অর্থাৎ নিমজ্জিতকারী শপথ। কথিত আছে, জাহিলী যুগে লোকে যখন কোনও বিষয়ে শপথ করত, তখন কোনও পেয়ালায় রক্ত, মদ, পানি, ছাই ইত্যাদি রেখে তার মধ্যে প্রত্যেক শপথকারী হাত ডুবিয়ে দিত। এর দ্বারা বোঝানো উদ্দেশ্য হত যে, তারা এ শপথের উপর অবিচল থাকবে, কখনও ভঙ্গ করবে না। তাই এরকমের শপথকে ইয়ামীনে গামূস বলা হতো। কালক্রমে শব্দটি বিশেষভাবে মিথ্যা কসমের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল কোনও কোনও গুনাহ অন্যান্য গুনাহ'র তুলনায় বেশি বড়। এরকম গুনাহ'র ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জরুরি।
খ. আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা যেহেতু সর্বাপেক্ষা বেশি কঠিন গুনাহ, যার পরিণাম স্থায়ী জাহান্নামবাস, তাই প্রত্যেকের সাবধান থাকা চাই যাতে তার দ্বারা কোনও অবস্থায়ই শিরকী গুনাহ না হয়ে যায়।
গ. পিতা-মাতার অবাধ্যতা করা সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহের একটি। তাই আমাদেরকে এরূপ গুনাহ থেকে অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে।
ঘ. অন্যায় নরহত্যা অতি ভয়ংকর পাপ। কোনও মুসলিম ব্যক্তি এটা করতে পারে না।
ঙ. মিথ্যা কসম করাও সর্বোচ্চ পর্যায়ের গুনাহ, যা ব্যক্তিকে পাপে ডোবায়, জাহান্নামে নিমজ্জিত করে।
১৩৩. সূরা আন'আম (৬), আয়াত ১৫১
১৩৪. সূরা মায়িদা (৫), আয়াত ৩২
১৩৫. সূরা নিসা (৪), আয়াত ৯৩
১৩৬. সূরা আলে ইমরান (৩), আয়াত ৭৭
১৩৭. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৫৪৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১১০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৪২১২; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা, হাদীছ নং ২২১৪৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫০৮৫; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৬৪০; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২০৭০৫; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৪৯৬
১৩৮. সূরা নাহল (১৬), আয়াত ৯১
১৩৯. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৬৫০; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৩২৭৪; সুনানে নাসাঈ, হাদীস নং ৩৭৮৫; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ২১০৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৬৯০৭ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ১২৩০৩; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪৩৪৭ তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৮৭৩
১৪০. সূরা মায়িদা (৫), আয়াত ৮৯
অন্যায় নরহত্যা
قتل النفس (নরহত্যা) অর্থাৎ শরীআতসম্মত কারণ ছাড়া কাউকে হত্যা করা অতি ভয়ানক পাপ, তাতে যে ব্যক্তিকে হত্যা করা হলো সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম, পুরুষ হোক বা নারী, শিশু হোক বা বয়স্ক এবং স্বাধীন ব্যক্তি হোক বা গোলাম। শরীআত কেবল চার শ্রেণীর লোককে হত্যা করার অনুমতি দেয়। ক. কেউ কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করলে শাস্তিস্বরূপ তাকেও হত্যা করা হবে। খ. কোনও মুসলিম ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে গেলে অর্থাৎ ইসলাম পরিত্যাগ করলে প্রথমে তাকে তাওবা করতে বলা হবে, সে তাওবা করতে সম্মত না হলে তাকেও হত্যা করা হবে। গ. কোনও বিবাহিত নর-নারী ব্যভিচার করলে তাদেরকেও হত্যা করা হবে। ঘ. জিহাদকালে অনুসলিম ব্যক্তিকে যুদ্ধক্ষেত্রে বা বন্দী অবস্থায় হত্যা করা।
এর মধ্যে প্রথম তিন শ্রেণীর লোককে হত্যা করা হবে শাস্তিস্বরূপ। বলাবাহুল শাস্তিদান করার অধিকার কেবলই সরকারের বা আদালতের। তাই এরূপ হত্যা কেবলই আদালতের এখতিয়ারাধীন থাকবে। অন্য কেউ এ শাস্তি আরোপ করার অধিকার রাখে না। কেউ তা করলে অন্যায় নরহত্যারূপে গণ্য হবে।
ইসলামে অন্যায় নরহত্যা সম্পূর্ণ নিষেধ। এটা কঠিনতম পাপ। কুরআন মাজীদে ইরশাদ وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ 'আর আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন, তাকে যথার্থ কারণ ছাড়া হত্যা করো না।১৩৩
অন্যত্র ইরশাদ مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا “কেউ যদি কাউকে হত্যা করে এবং তা অন্য কাউকে হত্যা করার কারণে কিংবা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তারের কারণে না হয়, তবে সে যেন সমস্ত মানুষকে হত্যা করল।১৩৪
আরও ইরশাদ হয়েছে وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا “যে ব্যক্তি কোনও মুসলিমকে জেনেশুনে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম, যাকে সে সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তার প্রতি গযব নাযিল করবেন ও তাকে লানত করবেন। আর আল্লাহ তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।১৩৫
মিথ্যা কসম করা
اليمين الغموس (ইচ্ছাকৃত মিথ্যা কসম করা)। যেমন কেউ অতীতে কোনও একটি কাজ করেছে, কিন্তু অন্যের কাছে তা অস্বীকার করে এবং বলে আমি তা করিনি। এখন সে যদি এ কথাটি আল্লাহর নামে এভাবে কসম করে বলে যে, আল্লাহর কসম, আমি তা করিনি, তবে এটি ইচ্ছাকৃত মিথ্যা কসম (ইয়ামীনে গামূস)। এটি কঠিন পাপ। মিথ্য বলা এমনিতেই পাপ, তার উপর আবার আল্লাহর নামে কসম করে বলা। এতে দ্বিগুণ পাপ হলো। সাধারণত এরূপ কসম করা হয় অন্যায় স্বার্থসিদ্ধির জন্য। এটা আরেক পাপ। এতে করে অন্যের অধিকারও খর্ব করা হয়। তাই এ হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়ামীনে গামূসকে সর্বাপেক্ষা বড় পাপের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। এ ব্যাপারে কুরআন মাজীদে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلًا أُولَئِكَ لَا خَلَاقَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
'যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার ও নিজেদের কসমের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, আখেরাতে তাদের কোনও অংশ নেই। আর আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে (সদয় দৃষ্টিতে) তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না। তাদের জন্য থাকবে কেবল যন্ত্রণাময় শাস্তি।১৩৬
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন من خلف يمين صبر ليقتطع بها مال امرئ مسلم، لقي الله وهو عليه غضبان যে ব্যক্তি কোনও মুসলিমের সম্পদ গ্রাস করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা কসম করে, সে (কিয়ামতের দিন) আল্লাহর সঙ্গে এমনভাবে সাক্ষাত করবে যে, তিনি তার প্রতি ক্রুদ্ধ থাকবেন।১৩৭
এ ক্ষেত্রে বিধান হলো তাওবা করা। তাওবা ছাড়া এটা মাফ হয় না। তবে হানাফী মাযহাব অনুযায়ী এরূপ কসমের কোনও কাফফারা নেই। যেহেতু কাফ্ফারা নেই তাই খাঁটিমনে তাওবা করা উচিত, অন্যথায় জাহান্নামের কঠিন শাস্তি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
কসমের প্রকারভেদ ও বিধান
কসম তিন প্রকার। এক তো গেল ইচ্ছাকৃত মিথ্যা কসম বা ইয়ামীনে গামূস। দ্বিতীয় হলো নিরর্থক কসম (ইয়ামীনে লাগব)। এটা দুই রকম
ক. অনিচ্ছাকৃতভাবে কসম করে ফেলা। কেউ কোনও কথা বলতে গিয়ে বলে ফেলল, আল্লাহর কসম, আমি এরূপ করেছি। কিন্তু তার কসম করার ইচ্ছা ছিল না; অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে এটা এসে গেছে।
খ. ইচ্ছাকৃতভাবেই কসম করা, কিন্তু যে কথার উপর কসম করেছে তা নিজ ধারণা অনুযায়ী সত্য হলেও বাস্তবে সত্য নয়। যেমন কসমকারীর ধারণা সে অতীতে কোনও একটি কাজ করেছে। সে তার এ ধারণা অনুযায়ী অন্যের কাছে বলার সময় কসম করে বলল, আল্লাহর কসম, আমি অমুক কাজটি করেছি। তার ধারণা সে সত্যই বলেছে। বাস্তবিকপক্ষে তা সত্য নয়; তার ধারণাটি ভুল। ইয়ামীনে লাগব বা নিরর্থক কসম যেহেতু অনিচ্ছাকৃত হয় বা ইচ্ছাকৃত হলেও ভুল ধারণার ভিত্তিতে হয়, তাই এরে কোনও গুনাহ হয় না এবং এ কসমের কারণে তার কোনও কাফ্ফারাও দিতে হবে না।
আর তৃতীয় হচ্ছে ইয়ামীনে মুন' আকিদাহ। অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে ভবিষ্যতের কোনও বিষয়ে আল্লাহর নামে কসম করে বলা যে, আমি তা করব কিংবা করব না। এরূপ কসম রক্ষা করা অবশ্যকর্তব্য। ইচ্ছাকৃত ভঙ্গ করা গুনাহ। আল্লাহ তাআলা বলেন وَلَا تَنْقُضُوا الْأَيْمَانَ بَعْدَ تَوْكِيدِهَا وَقَدْ جَعَلْتُمُ اللَّهَ عَلَيْكُمْ كَفِيلًا ‘শপথকে দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ করো না, যখন তোমরা আল্লাহকে নিজেদের উপর সাক্ষী বানিয়ে নিয়েছ।১৩৮
এরূপ কসম ইচ্ছাকৃত ভঙ্গ করলে সেজন্য তাওবা করা জরুরি এবং কাফ্ফারাও দিতে হবে। ভুলে ভেঙ্গে গেলে গুনাহ হয় না বটে, তবে কাফ্ফারা দেওয়া জরুরি। যদি এরকম কসম করার পর দেখা যায় শরীআতের দৃষ্টিতে যে বিষয়ে কসম করেছে তার বিপরীতটাই করা উত্তম, তবে সে ক্ষেত্রে কসম ভাঙ্গা যাবে, কিন্তু কাফ্ফারা দিতে হবে।। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে من حلف على يمين، فرأى غيرها خيرا منها، فليأتها، وليكفر عن يمينه 'যে ব্যক্তি কোনও কসম করে, তারপর দেখতে পায় যে তার বিপরীতটাই তারচে উত্তম, তবে সে যেন সেই উত্তমটি করে এবং তার কসমের জন্য কাফ্ফারা দেয়।১৩৯
কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
لَا يُؤَاخِذُكُمُ اللَّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَكِنْ يُؤَاخِذُكُمْ بِمَا عَقَّدْتُمُ الْأَيْمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ ذَلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
“আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য পাকড়াও করবেন না। কিন্তু তোমরা যে শপথ পরিপক্কভাবে করে থাক, সেজন্য তিনি তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন। সুতরাং তার কাফফারা হলো, দশজন মিসকীনকে মধ্যম ধরনের খাবার দেবে, যা তোমরা তোমাদের পরিবারবর্গকে খাইয়ে থাক। অথবা তাদেরকে বস্ত্র দান করবে কিংবা একজন গোলাম আযাদ করবে। তবে কারও কাছে যদি (এসব জিনিসের মধ্য হতে কিছুই) না থাকে, সে তিন দিন রোযা রাখবে। এটা তোমাদের শপথের কাফফারা, যখন তোমরা শপথ করবে (এবং তারপর তা ভেঙ্গে ফেলবে)। তোমরা নিজেদের শপথকে রক্ষা করো। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের সামনে নিজ আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা আদায় কর।১৪০
ইমাম নববী রহ. বলেন اليمين الغموس التي يحلفها كاذبا عامدا، سميت غموسا؛ لأنها تغمس الحالف في الإثم ‘ইয়ামীনে গামূস বলা হয় ওই কসমকে, যার কসমকারী ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা কথার উপর কসম করে। এটা গামূস বলা হয় এ কারণে যে, এ কসম কসমকারী ব্যক্তিকে মিথ্যার মধ্যে ডুবিয়ে দেয়।
الغموس অর্থ নিমজ্জিত করা। اليمين অর্থ কসম। মিথ্যা কসমের কারণে মানুষ একের পর এক নানা গুনাহে লিপ্ত হতে থাকে। যেন সে গুনাহের মধ্যে সম্পূর্ণ ডুবে যায়। পরিণামে এটা তার জাহান্নামের গর্তে নিমজ্জিত হওয়ারও কারণ হবে। এ কারণেই মিথ্যা কসমের নাম ইয়ামীনে গামূস অর্থাৎ নিমজ্জিতকারী শপথ। কথিত আছে, জাহিলী যুগে লোকে যখন কোনও বিষয়ে শপথ করত, তখন কোনও পেয়ালায় রক্ত, মদ, পানি, ছাই ইত্যাদি রেখে তার মধ্যে প্রত্যেক শপথকারী হাত ডুবিয়ে দিত। এর দ্বারা বোঝানো উদ্দেশ্য হত যে, তারা এ শপথের উপর অবিচল থাকবে, কখনও ভঙ্গ করবে না। তাই এরকমের শপথকে ইয়ামীনে গামূস বলা হতো। কালক্রমে শব্দটি বিশেষভাবে মিথ্যা কসমের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল কোনও কোনও গুনাহ অন্যান্য গুনাহ'র তুলনায় বেশি বড়। এরকম গুনাহ'র ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জরুরি।
খ. আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা যেহেতু সর্বাপেক্ষা বেশি কঠিন গুনাহ, যার পরিণাম স্থায়ী জাহান্নামবাস, তাই প্রত্যেকের সাবধান থাকা চাই যাতে তার দ্বারা কোনও অবস্থায়ই শিরকী গুনাহ না হয়ে যায়।
গ. পিতা-মাতার অবাধ্যতা করা সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহের একটি। তাই আমাদেরকে এরূপ গুনাহ থেকে অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে।
ঘ. অন্যায় নরহত্যা অতি ভয়ংকর পাপ। কোনও মুসলিম ব্যক্তি এটা করতে পারে না।
ঙ. মিথ্যা কসম করাও সর্বোচ্চ পর্যায়ের গুনাহ, যা ব্যক্তিকে পাপে ডোবায়, জাহান্নামে নিমজ্জিত করে।
১৩৩. সূরা আন'আম (৬), আয়াত ১৫১
১৩৪. সূরা মায়িদা (৫), আয়াত ৩২
১৩৫. সূরা নিসা (৪), আয়াত ৯৩
১৩৬. সূরা আলে ইমরান (৩), আয়াত ৭৭
১৩৭. সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৪৫৪৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১১০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৪২১২; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা, হাদীছ নং ২২১৪৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীছ নং ৫০৮৫; তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীছ নং ৬৪০; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ২০৭০৫; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৪৯৬
১৩৮. সূরা নাহল (১৬), আয়াত ৯১
১৩৯. সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৬৫০; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ৩২৭৪; সুনানে নাসাঈ, হাদীস নং ৩৭৮৫; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ২১০৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৬৯০৭ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীছ নং ১২৩০৩; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীছ নং ৪৩৪৭ তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৮৭৩
১৪০. সূরা মায়িদা (৫), আয়াত ৮৯
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
