রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৩০৯
প্রতিবেশীর হক এবং তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার উপদেশ
প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার গুরুত্ব
হাদীছ নং : ৩০৯
হযরত আবূ শুরাইহ রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালো কথা বলে নয়ত চুপ থাকে – মুসলিম।৪৪ বুখারী এর অংশবিশেষ বর্ণনা করেছেন।
৪৪ সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৪৮; সুনানে ইবনু মাজাহ, হাদীছ নং ৩৬৭২; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৫৮৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৬৩৭০; সুনানে দারিমী; তবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫০১; বায়হাকী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৯১৭৮; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৫৬৮; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩০০১
হাদীছ নং : ৩০৯
হযরত আবূ শুরাইহ রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালো কথা বলে নয়ত চুপ থাকে – মুসলিম।৪৪ বুখারী এর অংশবিশেষ বর্ণনা করেছেন।
৪৪ সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৪৮; সুনানে ইবনু মাজাহ, হাদীছ নং ৩৬৭২; মুসনাদুল হুমাইদী, হাদীছ নং ৫৮৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ১৬৩৭০; সুনানে দারিমী; তবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, হাদীছ নং ৫০১; বায়হাকী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৯১৭৮; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ৪৫৬৮; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ, হাদীছ নং ৩০০১
39 - باب حق الجار والوصية بِهِ
309 - وعن أَبي شُرَيْح الخُزَاعيِّ - رضي الله عنه: أن النَّبيّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «مَنْ كَانَ يُؤمِنُ بِاللهِ وَاليَومِ الآخِرِ، فَلْيُحْسِنْ إِلَى جَارِهِ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ باللهِ وَاليَومِ الآخِرِ، فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، [ص:118] وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَاليَومِ الآخِرِ، فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَسْكُتْ». رواه مسلم بهذا اللفظ، وروى البخاري بعضه. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটি আগের হাদীছটির প্রায় অনুরূপ। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, আগের হাদীছে বলা হয়েছিল- যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষদিবসে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর এ হাদীছে বলা হয়েছে- যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষদিবসে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে। প্রথমটি অপেক্ষা দ্বিতীয়টি উচ্চতর নৈতিকতা।
কষ্টদান হতে বিরত থাকা প্রাথমিক পর্যায়ের নৈতিকতা। এটা তো সকলের করতেই হবে। না করলে গুনাহ হয়। পক্ষান্তরে সদ্ব্যবহার করা যেমন হাসিমুখে কথা বলা, হাদিয়া-তোহফা দেওয়া ইত্যাদি আবশ্যিক কাজ নয়। এসব না করলে গুনাহ হয় না, কিন্তু করলে ছাওয়াব পাওয়া যায়। কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকাটা বিশেষ প্রশংসনীয় কিছু নয়, যেহেতু তা বাধ্যতামূলক। পক্ষান্তরে সদাচরণ করা একটি প্রশংসনীয় কাজ। এটা ব্যক্তি তার উন্নত চরিত্র ও মহত্ত্ব থেকেই করে থাকে।
কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকা যেহেতু প্রাথমিক পর্যায়ের চরিত্র, তাই এ সম্পর্কিত হাদীছটি প্রথমে আনা হয়েছে। আর ভালো ব্যবহার করা যেহেতু মহত্ত্ব ও উচ্চতর চরিত্র, তাই এটি পরে আনা হয়েছে।
এমনিতেও লাভ ও লোকসানের মধ্যে প্রথম কাজ হলো লোকসান থেকে বাঁচার চেষ্টা, তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ে লাভের চিন্তা করা। এমনিভাবে প্রথম কাজ অনিষ্ট থেকে বাঁচা এবং তারপর কল্যাণলাভে মনোযোগী হওয়া।
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া ও তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার বিষয়ও এরকমই। কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা হচ্ছে ক্ষতি অর্থাৎ গুনাহ হতে বাঁচা। আর তার প্রতি সদাচরণ করা হলো উপকারলাভ ও ছাওয়াব অর্জন করা। এ হিসেবে প্রথম হাদীছটি আগে আনা আর আলোচ্য হাদীছটি পরে আনা যথার্থ হয়েছে।
মহান সাহাবীগণ তো বটেই, তাবি'ঈন ও তাবে তাবি'ঈনসহ এ উম্মতের পূর্বসুরীগণ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ শিক্ষা অনুসরণে সদা সচেষ্ট থাকতেন। তাঁদের প্রতিবেশীগণ তাঁদের পক্ষ হতে এতটাই নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবনযাপন করতে পারত যে, সে মহান ব্যক্তিবর্গের প্রতিবেশী হতে পেরে তারা নিজেদেরকে গর্বিত বোধ করতেন। তাদের কাছে সে প্রতিবেশিত্ব ছিল অমূল নি'আমত। হযরত সাঈদ ইবনুল আস রাযি. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তাঁর এক প্রতিবেশী বিশেষ প্রয়োজনে তার বাড়িটি বিক্রি করতে মনস্থ করল। ক্রেতা বাড়িটির দাম বলল এক লক্ষ দিরহাম। সে বলল, ঠিক আছে, এটা বাড়ির দাম হলো। এখন বল, তুমি সা'ঈদের প্রতিবেশিত্বের দাম কী দেবে? হযরত সাঈদ ইবনুল আস রাযি. এ কথাটি জানতে পেরে প্রতিবেশীর কাছে এক লক্ষ দিরহাম পাঠিয়ে দিলেন এবং তাকে সে বাড়িতেই থাকতে বললেন । এরকমই হয় প্রতিবেশীর সঙ্গে সত্যিকার মুসলিমের আচরণ।
হাদীছটির শিক্ষা
ক. সেই ব্যক্তিই পরিপূর্ণ মুমিন, যে তার প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে ।
খ. হাদীছটির অন্যান্য শিক্ষা এর আগের হাদীছে বর্ণিত হয়েছে।
কষ্টদান হতে বিরত থাকা প্রাথমিক পর্যায়ের নৈতিকতা। এটা তো সকলের করতেই হবে। না করলে গুনাহ হয়। পক্ষান্তরে সদ্ব্যবহার করা যেমন হাসিমুখে কথা বলা, হাদিয়া-তোহফা দেওয়া ইত্যাদি আবশ্যিক কাজ নয়। এসব না করলে গুনাহ হয় না, কিন্তু করলে ছাওয়াব পাওয়া যায়। কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকাটা বিশেষ প্রশংসনীয় কিছু নয়, যেহেতু তা বাধ্যতামূলক। পক্ষান্তরে সদাচরণ করা একটি প্রশংসনীয় কাজ। এটা ব্যক্তি তার উন্নত চরিত্র ও মহত্ত্ব থেকেই করে থাকে।
কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকা যেহেতু প্রাথমিক পর্যায়ের চরিত্র, তাই এ সম্পর্কিত হাদীছটি প্রথমে আনা হয়েছে। আর ভালো ব্যবহার করা যেহেতু মহত্ত্ব ও উচ্চতর চরিত্র, তাই এটি পরে আনা হয়েছে।
এমনিতেও লাভ ও লোকসানের মধ্যে প্রথম কাজ হলো লোকসান থেকে বাঁচার চেষ্টা, তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ে লাভের চিন্তা করা। এমনিভাবে প্রথম কাজ অনিষ্ট থেকে বাঁচা এবং তারপর কল্যাণলাভে মনোযোগী হওয়া।
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া ও তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার বিষয়ও এরকমই। কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা হচ্ছে ক্ষতি অর্থাৎ গুনাহ হতে বাঁচা। আর তার প্রতি সদাচরণ করা হলো উপকারলাভ ও ছাওয়াব অর্জন করা। এ হিসেবে প্রথম হাদীছটি আগে আনা আর আলোচ্য হাদীছটি পরে আনা যথার্থ হয়েছে।
মহান সাহাবীগণ তো বটেই, তাবি'ঈন ও তাবে তাবি'ঈনসহ এ উম্মতের পূর্বসুরীগণ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ শিক্ষা অনুসরণে সদা সচেষ্ট থাকতেন। তাঁদের প্রতিবেশীগণ তাঁদের পক্ষ হতে এতটাই নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবনযাপন করতে পারত যে, সে মহান ব্যক্তিবর্গের প্রতিবেশী হতে পেরে তারা নিজেদেরকে গর্বিত বোধ করতেন। তাদের কাছে সে প্রতিবেশিত্ব ছিল অমূল নি'আমত। হযরত সাঈদ ইবনুল আস রাযি. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তাঁর এক প্রতিবেশী বিশেষ প্রয়োজনে তার বাড়িটি বিক্রি করতে মনস্থ করল। ক্রেতা বাড়িটির দাম বলল এক লক্ষ দিরহাম। সে বলল, ঠিক আছে, এটা বাড়ির দাম হলো। এখন বল, তুমি সা'ঈদের প্রতিবেশিত্বের দাম কী দেবে? হযরত সাঈদ ইবনুল আস রাযি. এ কথাটি জানতে পেরে প্রতিবেশীর কাছে এক লক্ষ দিরহাম পাঠিয়ে দিলেন এবং তাকে সে বাড়িতেই থাকতে বললেন । এরকমই হয় প্রতিবেশীর সঙ্গে সত্যিকার মুসলিমের আচরণ।
হাদীছটির শিক্ষা
ক. সেই ব্যক্তিই পরিপূর্ণ মুমিন, যে তার প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে ।
খ. হাদীছটির অন্যান্য শিক্ষা এর আগের হাদীছে বর্ণিত হয়েছে।
রিয়াযুস সালিহীন,মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম


বর্ণনাকারী: