রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ২৭২
ইয়াতীম, কন্যাসন্তান, সর্বপ্রকার দুর্বল, গরীব-মিসকীন ও দুস্থ লোকদের প্রতি সদয় আচরণ, তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন এবং তাদের সঙ্গে নম্র-কোমল আচরণ প্রসঙ্গ
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক দুর্বলদের মূল্যায়ন
হাদীছ নং : ২৭২
হযরত আবুদ দারদা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমরা আমার জন্য দুর্বলদের সন্ধান কর। তোমাদেরকে তো তোমাদের দুর্বলদের অসিলায়ই সাহায্য ও রিযিক দেওয়া হয়ে থাকে – আবু দাউদ।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২৫৯৪; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩১৭৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২১৭৩১; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৬৩৮৮; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪০৬২
হাদীছ নং : ২৭২
হযরত আবুদ দারদা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমরা আমার জন্য দুর্বলদের সন্ধান কর। তোমাদেরকে তো তোমাদের দুর্বলদের অসিলায়ই সাহায্য ও রিযিক দেওয়া হয়ে থাকে – আবু দাউদ।
সুনানে আবূ দাউদ, হাদীছ নং ২৫৯৪; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৩১৭৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২১৭৩১; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ৬৩৮৮; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ, হাদীছ নং ৪০৬২
33 - باب ملاطفة اليتيم والبنات وسائر الضعفة والمساكين والمنكسرين والإحسان إليهم والشفقة عليهم والتواضع معهم وخفض الجناح لهم
272 - وعن أَبي الدَّرداءِ عُويمر - رضي الله عنه - قَالَ: سمعتُ رَسُولَ الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «ابْغُوني الضُّعَفَاء، فَإنَّمَا تُنْصَرُونَ وتُرْزَقُونَ، بِضُعَفَائِكُمْ». رواه أَبُو داود بإسناد جيد (1).
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে ইরশাদ করেন- ابْغُونِي الضُّعَفَاءَ (তোমরা আমার জন্য দুর্বলদের সন্ধান কর)। ابْغُونِي শব্দটি আদেশমূলক ক্রিয়াপদ। এর উৎপত্তি হয়তো بغية থেকে, নয়তো ابغاء থেকে। প্রথম অবস্থায় ابْغُونِي- এর আলিফে যের হবে, দ্বিতীয় অবস্থায় যবর। প্রথম অবস্থায় অর্থ হবে- আমার জন্য সন্ধান কর। আর দ্বিতীয় অবস্থায় অর্থ হবে- সন্ধানকার্যে তোমরা আমাকে সাহায্য কর। কেন তাদেরকে সন্ধান করা হবে, পরবর্তী বাক্যে এর জবাব দেওয়া হয়েছে।
তিনি ইরশাদ করেন- إِنَّمَا تُنْصَرُونَ وَتُرْزَقُونَ بِضُعَفَائِكُمْ (তোমাদেরকে তো তোমাদের দুর্বলদের অসিলায়ই সাহায্য ও রিযিক দেওয়া হয়ে থাকে)। অর্থাৎ দুর্বলগণ যেহেতু তোমাদের মধ্যে থাকে, সে কারণে অথবা তোমরা যেহেতু তাদের দায়িত্ব পালন কর, তার প্রতিদানে কিংবা তাদের দুআর বরকতে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে সাহায্য করেন ও রিযিক দিয়ে থাকেন। দুর্বল হওয়ায় তাদের যেহেতু নিজ শক্তি- ক্ষমতার উপর ভরসা থাকে না, তাই সকল কাজে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করে পরিপূর্ণ ইখলাসের সঙ্গে তারা আল্লাহ তাআলার সাহায্য কামনা করে। ফলে তাদের দুআ কবুলও হয়ে থাকে। সুতরাং তাদেরকে আমার বড় প্রয়োজন। তোমরা তাদেরকে খুঁজে খুঁজে আমার কাছে নিয়ে আসবে, যাতে তাদের দ্বারা আমরা সকলে উপকৃত হতে পারি এবং তাদের অসিলায় আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক ও সাহায্য লাভ করতে পারি।
তাদেরকে খুঁজে নিয়ে আসার একটা কারণ তাদের প্রয়োজন মেটানোও। কোথায় কোন্ দুর্বল আছে, তা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একার পক্ষে খুঁজে বের করা কঠিন। তাই তিনি এ ব্যাপারে সকলের সাহায্য চেয়েছেন, যাতে তাদের প্রয়োজনীয় সাহায্য করা যায় আর এর প্রতিদানে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সাহায্য ও রিযিক লাভ হয়।
এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছে, প্রত্যেক এলাকার অক্ষম ও দুর্বলদের সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করা সে এলাকার সক্ষম ও শক্তিমানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। তারা নিজেরা সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সাহায্য তো করবেই, সেইসঙ্গে সরকারও যাতে তাদের নিয়মিত সহযোগিতা দান করতে পারে, সে লক্ষ্যে এ কর্তব্য গুরুত্বের সঙ্গেই পালন করা চাই।
কোনও কোনও বর্ণনায় ابْغُونِي الضُّعَفَاءَ এর স্থানে ابْغُونِي في الضُّعَفَاءَ আছে। সে হিসেবে অর্থ হবে- তোমরা আমাকে দুর্বলদের মধ্যে সন্ধান কর। অর্থাৎ তোমরা তাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখবে, তাদের সবরকম হক আদায় করবে এবং কথায় ও কাজে তাদের সঙ্গে প্রীতিকর আচরণ করবে। এভাবে তোমরা তাদের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন করতে পারলে আমারও সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন করতে পারবে। সারকথা, তাদের সন্তুষ্টি ও নৈকট্যের মধ্যে আমার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য নিহিত রয়েছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. সমাজের যারা দুর্বল শ্রেণী, আপন আপন সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা করে যাওয়া চাই। এটা আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্তুষ্টিলাভে সহায়ক।
খ. দুর্বল শ্রেণীকে অবহেলা করতে নেই। কেননা তাদের অসিলায়ই আল্লাহ তাআলা রিযিক ও সাহায্য দান করে থাকেন।
গ. দুর্বলদেরকে নিজেরা সাহায্য করার পাশাপাশি তারা যাতে সরকারি সহযোগিতাও পেতে পারে, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা চাই।
তিনি ইরশাদ করেন- إِنَّمَا تُنْصَرُونَ وَتُرْزَقُونَ بِضُعَفَائِكُمْ (তোমাদেরকে তো তোমাদের দুর্বলদের অসিলায়ই সাহায্য ও রিযিক দেওয়া হয়ে থাকে)। অর্থাৎ দুর্বলগণ যেহেতু তোমাদের মধ্যে থাকে, সে কারণে অথবা তোমরা যেহেতু তাদের দায়িত্ব পালন কর, তার প্রতিদানে কিংবা তাদের দুআর বরকতে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে সাহায্য করেন ও রিযিক দিয়ে থাকেন। দুর্বল হওয়ায় তাদের যেহেতু নিজ শক্তি- ক্ষমতার উপর ভরসা থাকে না, তাই সকল কাজে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করে পরিপূর্ণ ইখলাসের সঙ্গে তারা আল্লাহ তাআলার সাহায্য কামনা করে। ফলে তাদের দুআ কবুলও হয়ে থাকে। সুতরাং তাদেরকে আমার বড় প্রয়োজন। তোমরা তাদেরকে খুঁজে খুঁজে আমার কাছে নিয়ে আসবে, যাতে তাদের দ্বারা আমরা সকলে উপকৃত হতে পারি এবং তাদের অসিলায় আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক ও সাহায্য লাভ করতে পারি।
তাদেরকে খুঁজে নিয়ে আসার একটা কারণ তাদের প্রয়োজন মেটানোও। কোথায় কোন্ দুর্বল আছে, তা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একার পক্ষে খুঁজে বের করা কঠিন। তাই তিনি এ ব্যাপারে সকলের সাহায্য চেয়েছেন, যাতে তাদের প্রয়োজনীয় সাহায্য করা যায় আর এর প্রতিদানে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সাহায্য ও রিযিক লাভ হয়।
এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছে, প্রত্যেক এলাকার অক্ষম ও দুর্বলদের সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করা সে এলাকার সক্ষম ও শক্তিমানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। তারা নিজেরা সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সাহায্য তো করবেই, সেইসঙ্গে সরকারও যাতে তাদের নিয়মিত সহযোগিতা দান করতে পারে, সে লক্ষ্যে এ কর্তব্য গুরুত্বের সঙ্গেই পালন করা চাই।
কোনও কোনও বর্ণনায় ابْغُونِي الضُّعَفَاءَ এর স্থানে ابْغُونِي في الضُّعَفَاءَ আছে। সে হিসেবে অর্থ হবে- তোমরা আমাকে দুর্বলদের মধ্যে সন্ধান কর। অর্থাৎ তোমরা তাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখবে, তাদের সবরকম হক আদায় করবে এবং কথায় ও কাজে তাদের সঙ্গে প্রীতিকর আচরণ করবে। এভাবে তোমরা তাদের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন করতে পারলে আমারও সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন করতে পারবে। সারকথা, তাদের সন্তুষ্টি ও নৈকট্যের মধ্যে আমার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য নিহিত রয়েছে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. সমাজের যারা দুর্বল শ্রেণী, আপন আপন সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা করে যাওয়া চাই। এটা আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্তুষ্টিলাভে সহায়ক।
খ. দুর্বল শ্রেণীকে অবহেলা করতে নেই। কেননা তাদের অসিলায়ই আল্লাহ তাআলা রিযিক ও সাহায্য দান করে থাকেন।
গ. দুর্বলদেরকে নিজেরা সাহায্য করার পাশাপাশি তারা যাতে সরকারি সহযোগিতাও পেতে পারে, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: