রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ১৭৯
নেককাজ ও তাকওয়া-পরহেযগারীতে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা।
চলতিপথে কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে করণীয় এবং নাবালেগের হজ্জ প্রসঙ্গ
হাদীছ নং : ১৭৯
হযরত ইবন ‘আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাওহা নামক স্থানে একটি কাফেলার সাক্ষাৎ পেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কারা? তারা বলল, আমরা মুসলিম। তারপর তারা পাল্টা প্রশ্ন করল, আপনি কে? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ। তখন এক মহিলা একটি শিশুকে তাঁর সামনে উঁচু করে ধরে জিজ্ঞেস করল, এর কি হজ্জ হয়? তিনি বললেন, হাঁ, আর ছাওয়াব তোমার -মুসলিম।(সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৩৩৬; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৯২৪; সুনানে নাসাঈ,হাদীছ নং ২৬৪৫)
হাদীছ নং : ১৭৯
হযরত ইবন ‘আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাওহা নামক স্থানে একটি কাফেলার সাক্ষাৎ পেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কারা? তারা বলল, আমরা মুসলিম। তারপর তারা পাল্টা প্রশ্ন করল, আপনি কে? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ। তখন এক মহিলা একটি শিশুকে তাঁর সামনে উঁচু করে ধরে জিজ্ঞেস করল, এর কি হজ্জ হয়? তিনি বললেন, হাঁ, আর ছাওয়াব তোমার -মুসলিম।(সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ১৩৩৬; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ৯২৪; সুনানে নাসাঈ,হাদীছ নং ২৬৪৫)
21 - باب في التعاون على البر والتقوى
179 - وعن ابن عباس رضي الله عنهما: أنَّ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - لَقِيَ رَكْبًا بالرَّوْحَاءِ (1)، فَقَالَ: «مَنِ القَوْمُ؟» قالوا: المسلمون، فقالوا: من أنتَ؟ قَالَ: «رَسُول الله»، فرفعت إِلَيْه امرأةٌ صبيًا، فَقَالَتْ: ألِهَذَا حَجٌّ؟ قَالَ: «نَعَمْ، وَلَكِ أجْرٌ». رواه مسلم. (2)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
'রাওহা' মদীনা মুনাওয়ারার নিকটবর্তী একটি স্থানের নাম। বিদায় হজ্জের সময় এখানে একটি কাফেলার সঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখা হয়। আবূ দাউদ শরীফের বর্ণনায় আছে, তিনি প্রথমে তাদেরকে সালাম দিলেন। তারপর তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের অভ্যাস ছিল কোনও ব্যক্তি বা কোনও দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তিনি প্রথমে তাদের পরিচয় নিতেন। এ ক্ষেত্রেও তাই করলেন। তারা নিজেদের পরিচয় দিল এবং জানাল যে, তারা মুসলিম। কিন্তু তিনি কে তা তারা চিনতে পারেনি। হতে পারে এ সাক্ষাৎ হয়েছিল রাতের বেলা। তাই অন্ধকারে তাঁকে চিনতে পারেনি। এমনও হতে পারে যে, দিনের বেলায়ই সাক্ষাৎ হয়েছিল, কিন্তু এর আগে তারা তাঁকে কখনও দেখেনি। হয়তো নিজ এলাকায় বসেই তারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল। মদীনা মুনাওয়ারায় এসে নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ হয়নি। যাহোক, তিনি নিজ পরিচয় দিয়ে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ। তিনি নিজ নাম না বলে রাসূলুল্লাহ বললেন, কারণ এটাই তাঁর বড় পরিচয়।
কাফেলার লোকজন যখন তাঁকে চিনতে পারল তখন জনৈকা মহিলা, যার সঙ্গে তার শিশুপুত্র ছিল, সে তার শিশুপুত্রটিকে উঁচু করে ধরে জিজ্ঞেস করল, সে হজ্জ করলে তা হবে কি না। নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানালেন যে, তার হজ্জ হবে, তবে ছাওয়াব পাবে তার মা। মায়ের কথা বলেছেন এজন্য যে, সে তার মায়ের সঙ্গেই ছিল। সুতরাং পিতার সঙ্গে আসলে পিতাই ছাওয়াব পাবে। যদি পিতামাতা উভয়ের সঙ্গে আসে, তবে উভয়ই ছাওয়াবের অধিকারী হবে। অবশ্য এটা তখন, যখন শিশুটি এত ছোট হয় যে, হজ্জের কার্যাবলী কিছুই বোঝে না। ফলে সঙ্গে বাবা-মা যেই থাকে তাকেই তার সবকিছু করে দিতে হয়। এমনকি তার পক্ষে ইহরামও তাদেরকেই বাঁধতে হয়। তো শিশু যেহেতু নিজে নিজে হজ্জের কিছুই করতে পারে না, তার পক্ষ থেকে তার বাবা-মা তা করে দেয়, তাই হজ্জ শিশুর পক্ষ থেকে হলেও তা হয় যেহেতু বাবা-মায়ের সহযোগিতায়, তাই এর ছাওয়াব তাদের আমলনামায় লেখা হয়। কিন্তু সে যদি অত ছোট না হয়; বরং বুঝদার শিশু হয়, তবে নিজে ইহরাম বাঁধবে এবং নফল হজ্জ হিসেবে সে ছাওয়াবের অধিকারী হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তার নাম-পরিচয় জেনে নেওয়া চাই। কোনও কোনও হাদীছ দ্বারা জানা যায়, এটা পারস্পরিক মহব্বত বৃদ্ধির পক্ষে সহায়ক।
খ, কেউ নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তা বলতে কুণ্ঠাবোধ করা উচিত নয়।
গ. সাক্ষাৎকালে অন্য কথাবার্তার আগে সালাম দেওয়া সুন্নত।
ঘ. কোথাও কোনও আলেমের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে সে সাক্ষাৎকে আল্লাহ তা'আলার এক নি'আমত মনে করা এবং যতটুকু সম্ভব তার কাছ থেকে দীন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করা চাই।
ঙ. নাবালেগ শিশু কোনও নেককাজ করলে তাতে তার ছাওয়াব হয়। 'উলামায়ে কিরাম এ ব্যাপারে একমত যে, তার দ্বারা কোনও নাজায়েয কাজ হয়ে গেলে তাতে তার গুনাহ হয় না।
কাফেলার লোকজন যখন তাঁকে চিনতে পারল তখন জনৈকা মহিলা, যার সঙ্গে তার শিশুপুত্র ছিল, সে তার শিশুপুত্রটিকে উঁচু করে ধরে জিজ্ঞেস করল, সে হজ্জ করলে তা হবে কি না। নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানালেন যে, তার হজ্জ হবে, তবে ছাওয়াব পাবে তার মা। মায়ের কথা বলেছেন এজন্য যে, সে তার মায়ের সঙ্গেই ছিল। সুতরাং পিতার সঙ্গে আসলে পিতাই ছাওয়াব পাবে। যদি পিতামাতা উভয়ের সঙ্গে আসে, তবে উভয়ই ছাওয়াবের অধিকারী হবে। অবশ্য এটা তখন, যখন শিশুটি এত ছোট হয় যে, হজ্জের কার্যাবলী কিছুই বোঝে না। ফলে সঙ্গে বাবা-মা যেই থাকে তাকেই তার সবকিছু করে দিতে হয়। এমনকি তার পক্ষে ইহরামও তাদেরকেই বাঁধতে হয়। তো শিশু যেহেতু নিজে নিজে হজ্জের কিছুই করতে পারে না, তার পক্ষ থেকে তার বাবা-মা তা করে দেয়, তাই হজ্জ শিশুর পক্ষ থেকে হলেও তা হয় যেহেতু বাবা-মায়ের সহযোগিতায়, তাই এর ছাওয়াব তাদের আমলনামায় লেখা হয়। কিন্তু সে যদি অত ছোট না হয়; বরং বুঝদার শিশু হয়, তবে নিজে ইহরাম বাঁধবে এবং নফল হজ্জ হিসেবে সে ছাওয়াবের অধিকারী হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তার নাম-পরিচয় জেনে নেওয়া চাই। কোনও কোনও হাদীছ দ্বারা জানা যায়, এটা পারস্পরিক মহব্বত বৃদ্ধির পক্ষে সহায়ক।
খ, কেউ নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তা বলতে কুণ্ঠাবোধ করা উচিত নয়।
গ. সাক্ষাৎকালে অন্য কথাবার্তার আগে সালাম দেওয়া সুন্নত।
ঘ. কোথাও কোনও আলেমের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে সে সাক্ষাৎকে আল্লাহ তা'আলার এক নি'আমত মনে করা এবং যতটুকু সম্ভব তার কাছ থেকে দীন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করা চাই।
ঙ. নাবালেগ শিশু কোনও নেককাজ করলে তাতে তার ছাওয়াব হয়। 'উলামায়ে কিরাম এ ব্যাপারে একমত যে, তার দ্বারা কোনও নাজায়েয কাজ হয়ে গেলে তাতে তার গুনাহ হয় না।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
