রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ

ভূমিকা অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬৫
সুন্নত ও তার আদবসমূহ রক্ষায় যত্নবান থাকার আদেশ।
হাশরের ময়দানের বিভীষিকা ও বিদ‘আতের পরিণাম
হাদীছ নং: ১৬৫

হযরত ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমাদের মধ্যে নসীহত করতে দাঁড়ালেন। তিনি বললেন, হে লোকসকল! তোমাদেরকে আল্লাহর কাছে সমবেত করা হবে খালি পায়ে, নগ্ন শরীরে, খতনাবিহীন অবস্থায়। আল্লাহ তা'আলা বলেন-
كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ (104)
'আমি পুনরায় তাকে সৃষ্টি করব, যেভাবে প্রথমবার সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম। এটা এক প্রতিশ্রুতি, যা পূরণ করার দায় আমার। আমি তা অবশ্যই করব।'[সূরা আম্বিয়া, আয়াত : ১০৪]
শোন, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে ব্যক্তিকে কাপড় পরানো হবে তিনি ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। জেনে রেখ, আমার উম্মতের কিছু লোককে ধরে এনে বাম দিকে (অর্থাৎ জাহান্নামের দিকে) নিয়ে যাওয়া হবে।
তখন আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক! এরা তো আমার সঙ্গী!! তখন বলা হবে, আপনি জানেন না তারা আপনার পর কী কী নতুন কাজ করেছে। আমি তখন আল্লাহর নেক বান্দা (‘ঈসা আলাইহিস সালাম)-এর মত বলব-
وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ فَلَمَّا تَوَفَّيْتَنِي كُنْتَ أَنْتَ الرَّقِيبَ عَلَيْهِمْ وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ (117) إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ (118)
“এবং যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম, ততদিন আমি তাদের অবস্থা সম্পর্কে অবগত ছিলাম। তারপর আপনি যখন আমাকে তুলে নিয়েছেন তখন আপনি স্বয়ং তাদের তত্ত্বাবধায়ক থেকেছেন। বস্তুত আপনি সবকিছুর সাক্ষী। যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি দেন, তবে তারা তো আপনারই বান্দা। আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন, তবে নিশ্চয়ই আপনিই মহাপরাক্রান্ত,প্রজ্ঞাময়।'[সুরা মায়িদা, আয়াত: ১১৭-১১৮)
আমাকে বলা হবে, আপনি তাদেরকে ছেড়ে আসার পর তারা ক্রমাগত তাদের (দীন থেকে) পেছনগামী থেকেছে -বুখারী ও মুসলিম। (সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৩৩৪৯; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৬০: জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৪২৩; নাসাঈ, হাদীছ নং ২০৮৭)
16 - باب في الأمر بالمحافظة على السنة وآدابها
165 - العاشر: عن ابن عباس رضي الله عنهما، قَالَ: قَامَ فِينَا رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - بِمَوعِظَةٍ، فَقَالَ: «يَا أيُّهَا النَّاسُ، إنَّكُمْ مَحْشُورونَ إِلَى الله تَعَالَى حُفَاةً عُرَاةً غُرْلًا {كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ} [الأنبياء: 103] ألا وَإنَّ أَوَّلَ الخَلائِقِ يُكْسَى يَومَ القِيَامَةِ إبراهيمُ - صلى الله عليه وسلم - ألا وَإِنَّهُ سَيُجَاءُ بِرجالٍ مِنْ أُمَّتي فَيُؤخَذُ بِهِمْ ذَاتَ الشَّمالِ، فَأَقُولُ: يَا رَبِّ أصْحَابِي. فَيُقَالُ: إنَّكَ لاَ تَدْرِي مَا أحْدَثُوا بَعْدَكَ. فَأقُولُ كَما قَالَ العَبدُ الصَّالِحُ: {وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ} إِلَى قولِهِ: {العَزِيزُ الحَكِيمُ} [المائدة: 117 - 118] (1) فَيُقَالُ لِي: إنَّهُمْ لَمْ يَزَالُوا مُرْتَدِّينَ عَلَى أعْقَابِهِمْ مُنْذُ فَارَقْتَهُمْ (2)». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ. (3)
«غُرْلًا»: أي غَيرَ مَخْتُونِينَ.

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে হাশরের বিভীষিকাময় অবস্থার কথা বর্ণিত হয়েছে। হাশরের উন্মুক্ত ময়দানে সমস্ত মানুষকে একত্র করা হবে। কারও পায়ে জুতা থাকবে না, শরীরে কাপড় থাকবে না এবং সকলেই থাকবে খতনাবিহীন অবস্থায়। অর্থাৎ দুনিয়ায় মানুষ যেভাবে জন্ম নেয়, হুবহু সেরকমই সকলের হাশর হবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআন মাজীদের একটি আয়াত দ্বারাও এটা প্রমাণ করেছেন। আয়াতে বলা হয়েছেঃ-
كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ
আমি পুনরায় তাকে সৃষ্টি করব, যেভাবে প্রথমবার সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম। এটা এক প্রতিশ্রুতি, যা পূরণ করার দায় আমার। আমি তা অবশ্যই করব। (সূরা আম্বিয়া (২১), আয়াত ১০৪) এর সারকথা হচ্ছে, মানুষ মায়ের পেট থেকে যেমন দুনিয়ায় আসে, কবরের পেট থেকেও তেমনি হাশরের ময়দানে উঠে আসবে। এর দ্বারা যেমন পুনরুত্থানের বিষয়টি প্রমাণিত হয়, তেমনি পুনরুত্থান কী অবস্থায় হবে তাও জানা যায়। যখন কুরআন নাযিল হয়, তখন একদল মানুষ মৃত্যুর পর আবার জীবিত হওয়াকে অস্বীকার করত। তারা বলত -
إِنْ هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا وَمَا نَحْنُ بِمَبْعُوثِينَ
অর্থ : জীবন তো এই ইহজীবনই, আর কিছু নয়। (এখানেই) আমরা মরি ও বাঁচি।আমাদেরকে ফের জীবিত করা যাবে না। (সূরা মু'মিনূন (২৩), আয়াত ৩৭)

তারা কেবল জীবিত হওয়াকে অস্বীকার করেই ক্ষান্ত হত না, এটাকে অসম্ভবও মনে করত। কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াতে তার জবাব দেওয়া হয়েছে এবং জানানো হয়েছে, কবর থেকে কেবল জীবিত করে উঠানো হবে তা-ই নয়; বরং তার সবটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসহ দুনিয়ায় যেমন ছিল হুবহু তেমনি জীবিত করা হবে। এমনকি আঙ্গুলের মাথাগুলোও তার জটিল ও সূক্ষ্ম রেখাসহ জীবিত করে তোলা হবে।

এ আয়াতও বলছে, মায়ের গর্ভ থেকে শিশু যেভাবে জন্ম নেয়, তেমনি করে আল্লাহ পরিপূর্ণ শরীরে পুনর্জীবিত করবেন। এ বিষয়ে কেউ যেন কোনওরূপ সন্দেহ পোষণ না করে—তাই আল্লাহ তা'আলা দৃঢ়তার সাথে বলেছেন, এটা আমার ওয়াদা এবং এটা আমি করেই ছাড়ব।

আজকালও এক শ্রেণীর লোক আছে, যারা মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত হওয়াকে অস্বীকার করে। এটা আল্লাহ তা'আলার কুদরত ও ক্ষমতা সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর ক্ষমতাকে নিজেদের অতি সীমিত শক্তির সাথে তুলনা করে। আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে হিদায়াত নসীব করুন।

এ হাদীছে বলা হয়েছে, হাশরের ময়দানে সকলে নগ্ন অবস্থায় থাকবে। এ কথা শুনে আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. চরম উদ্বেগ বোধ করেন এবং বলে ওঠেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! নারী-পুরুষ সকলে একে অন্যের চোখের সামনে নগ্ন অবস্থায় থাকবে? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে আশ্বস্ত করে বললেন, হে আয়েশা! ব্যাপারটা এরচেয়েও অনেক বেশি কঠিন। ওদিকে কারও ভ্রূক্ষেপ করার অবকাশই হবে না। (সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৬৫২৭: সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ২৮৫৯; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ২০৮৪; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪২৭৬)

কুরআন মাজীদে সেদিনকার বিভীষিকা সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছেঃ-
يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ وَصَاحِبَتِهِ وَبَنِيهِ لِكُلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ
অর্থ : (তা ঘটবে সেই দিন), যেদিন মানুষ তার ভাই থেকেও পালাবে এবং নিজ পিতা-মাতা থেকেও এবং নিজ স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি থেকেও। (কেননা) সেদিন তাদের প্রত্যেকের এমন দুশ্চিন্তা দেখা দেবে, যা তাকে অন্যের থেকে ব্যস্ত করে রাখবে। (সূরা আবাসা (৮০), আয়াত ৩৪-৩৭) সেদিনের ওই কঠিন পরিস্থিতিতে আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাঁর রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দান করুন- আমীন।

এ হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানিয়েছেন, হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম পোশাক পরিধান করানো হবে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে। এটা তাঁর এক বিশেষত্ব। আল্লাহ তাআলা একেক নবীকে একেক বিশেষত্ব দান করেছেন। সে বিশেষত্ব দ্বারা কারও অন্যদের ওপর সাধারণ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জিত হয় না। কাজেই এ হাদীছের ভিত্তিতে কারও মনে এই খটকা জাগার অবকাশ নেই যে, তবে কি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আমাদের নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ? এই খটকার অবকাশ নেই এ কারণে যে, এটা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের একটা বিশেষ ফযীলত। সাধারণ ও সামগ্রিকভাবে সমস্ত নবী-রাসূলের ওপর আখিরী নবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফযীলত প্রমাণিত আছে। দুনিয়ায়ও তিনি সমস্ত আদম সন্তানের সায়্যিদ ও নেতা, যাঁর নবুওয়াত কিয়ামত পর্যন্ত সারা বিশ্বের সকল মানুষের জন্য ব্যাপক। এবং কিয়ামতেও তিনি সকলের নেতারূপে ভূমিকা রাখবেন। সেদিন কেবল তাঁকেই মহা শাফা'আতের অনুমতি দেওয়া হবে, যে শাফা'আতের পর আল্লাহ তা'আলা বিচারকার্য শুরু করবেন। এ শাফা'আত করার হিম্মত অন্য কোনও নবীর হবে না। সুতরাং নবী রাসূলগণের মধ্যে তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ।

তারপর নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানান যে, তাঁর একদল উম্মতকে বাম পথ অর্থাৎ‍ জাহান্নামের পথে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে। তা দেখে তিনি বলে উঠবেন, হে আল্লাহ! এরা যে আমার সাহাবী। অর্থাৎ এই বলে তিনি তাদের জন্য সুপারিশ করবেন। কিন্তু তাঁকে বলা হবে, আপনি জানেন না, আপনি তাদের ছেড়ে চলে আসার পর কী কী নতুন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছিল। তারা ক্রমাগত তাদের দীন ছেড়ে পেছন দিকে চলতে থাকে।

নতুন নতুন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়ার দ্বারা ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড তথা শিরক ও বিদ'আত বোঝানো হয়েছে।এরকম কাজে লিপ্ত হওয়ার পরিণাম জাহান্নামের শাস্তি। জাহান্নামের পথকে 'বাম দিকের পথ' বলা হয়। যাদেরকে ধরে এ পথে নিয়ে যাওয়া হবে, এ হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে নিজ সাহাবী বলে পরিচয় দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে সুপরিচিত সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে কারও দ্বারাই এ জাতীয় কোনও কাজ ঘটেনি।

সে হিসেবে প্রশ্ন ওঠে, তিনি ‘সাহাবী' বলে কাদেরকে বুঝিয়েছেন? ইতিহাসপাঠে জানা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের পর বিভিন্ন বেদুঈন গোত্র ও এক শ্রেণীর নওমুসলিম মুরতাদ হয়ে গিয়েছিল। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাযি. তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছিলেন। এ হাদীছের ইঙ্গিত তাদের দিকেই। তারা যেহেতু প্রথমে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, সেদিকে লক্ষ করে দয়ালু নবী তাদেরকে সাহাবী বলে উল্লেখ করেছেন, যাতে আল্লাহ তা'আলা নিজ রহমতে তাদেরকে ক্ষমা করেন।

এমনও হতে পারে যে, এর দ্বারা পরবর্তীকালীন মুসলিমদের বোঝানো হয়েছে, যারা মৌলিকভাবে ঈমান ও ইসলামের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও নানারকম বিদ'আতী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকে এবং নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নতের অনুসরণে গাফিল থেকে অন্যান্য জাতির অনুকরণ অনুসরণে গা ভাসিয়ে দেয়, যা দীন থেকে একধরনের 'ইরতিদাদ' ও পেছন দিকে চলাই বটে। মূল ঈমান ও ইসলামের কারণে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে সাহাবী নামে অভিহিত করেছেন, যা দ্বারা পারিভাষিক সাহাবী বোঝানো উদ্দেশ্য নয়; বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে আভিধানিক অর্থে সঙ্গী বা অনুসারী বোঝানো। তারা এই অর্থে তাঁর সঙ্গী যে, তিনি যে দীন রেখে গেছেন তাতে তারা বিশ্বাসী। এ বিশ্বাসের সঙ্গে মৃত্যু হলে বিদ'আতী কর্মকাণ্ডের কারণে প্রথমে তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। আর সে কারণেই তাদেরকে ধরে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। নির্ধারিত শাস্তি ভোগের পর তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভ করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে তাদের মৃত্যু যদি ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে না হয়, তবে তারা অনন্তকাল জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন- আমীন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. ইসলামের একটি মৌলিক বিশ্বাস হচ্ছে মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত হওয়া। এ হাদীছটি দ্বারাও তার সত্যতা প্রমাণিত হয়। কোনও ঈমানদারের এ ব্যাপারে সন্দেহ করা উচিত নয়।

খ. এ হাদীছ দ্বারা হাশরের ময়দান যে কতটা বিভীষিকাময় তা জানা যায়। সে কঠিন সময়ে আমরা যাতে আল্লাহর রহমতের ছায়া পেতে পারি, সে আশায় আমাদের কর্তব্য ইহজগতে তাঁর বাধ্যগত বান্দা হয়ে থাকা।

গ. বিদ'আতী কর্মকাণ্ডকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। কেননা তার পরিণাম জাহান্নামের শাস্তি।

ঘ. এ হাদীছ দ্বারা জানা যায় উম্মতের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরদ ও মমতা কত গভীর। তাঁর দরদী মনের শাফা'আত লাভ করার একমাত্র উপায় তাঁর সুন্নতের অনুসরণে সচেষ্ট থাকা। আমরা যেন সে চেষ্টায় অবহেলা না করি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)