রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং:
অধ্যায় : ৩ সবর।
৩৪। দৃষ্টিশক্তি লোপের প্রতিদান
হযরত আনাস রাযি. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আমি যখন আমার বান্দাকে তার দুই প্রিয়বস্তু দ্বারা পরীক্ষা করি আর সে তাতে সবর অবলম্বন করে, তখন তার বিনিময়ে আমি তাকে জান্নাত দান করি। দুই প্রিয়বস্তু দ্বারা তিনি দুই চোখ বোঝাচ্ছেন – বুখারী, ৫৬৫৩।
হযরত আনাস রাযি. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আমি যখন আমার বান্দাকে তার দুই প্রিয়বস্তু দ্বারা পরীক্ষা করি আর সে তাতে সবর অবলম্বন করে, তখন তার বিনিময়ে আমি তাকে জান্নাত দান করি। দুই প্রিয়বস্তু দ্বারা তিনি দুই চোখ বোঝাচ্ছেন – বুখারী, ৫৬৫৩।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
চোখ মানুষের অমূল্য সম্পদ। এমনিতে তো মানুষের প্রত্যেকটা অঙ্গই আল্লাহ তা'আলার মহাদান। হাত, পা, নাক, কান প্রভৃতি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কোনওটিই তুচ্ছ নয়। এর যে-কোনও একটির অভাবে মানুষকে অশেষ কষ্ট-ক্লেশ ভোগ করতে হয়। একেকটি অঙ্গ দ্বারা মানুষ হাজারও রকমের উপকার লাভ করে। তাছাড়া একেকটি অঙ্গ তার বিশেষ সৌন্দর্যও বটে। তবে সবগুলো অঙ্গের ভেতর চোখের আলাদা এক মূল্য আছে। আছে এর বহু বিচিত্র ব্যবহার। নানাবিধ উপকার। অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজে লাগানোর পেছনেও এ অঙ্গের বিশেষ ভূমিকা আছে। আবার মানবসৌন্দর্যেরও অন্যতম প্রধান নিদর্শন তার চোখ । তাই মানুষ এ অঙ্গকে অতিশয় ভালোবাসে । তাই হাদীছে এর নামই দেওয়া হয়েছে 'হাবীবা' (মানবপ্রেয়সী)।
যেহেতু চোখ মানুষের সর্বাপেক্ষা বেশি প্রিয় অঙ্গ, তাই এটা হারালে তার কষ্ট ও বেদনাও সর্বাপেক্ষা বেশি হয়। আর সে কারণেই এ ক্ষেত্রে সবরের ফযীলতও অনেক বেশি । আল্লাহ তা'আলা অনেক সময় বান্দাকে এর দ্বারা পরীক্ষা করেন। পরীক্ষা কঠিনই বটে। আল্লাহ তা'আলা চান এ কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বান্দা বিপুল ফযীলতের অধিকারী হয়ে যাক। এ হাদীছে তো বলা হয়েছে যে, দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে সবর করলে আল্লাহ তা'আলা তার বিনিময়ে তাকে জান্নাত দান করেন। অপর এক হাদীছে আছে-
"মানুষের জন্যে সর্বাপেক্ষা কঠিন মসিবত হল দীন চলে যাওয়া। তারপর সর্বাপেক্ষা কঠিন বিপদ দৃষ্টিশক্তি হারানো। যে ব্যক্তি তার দৃষ্টিশক্তি হারানোর পরীক্ষায় পড়ে যায় আর তাতে সবর করতে থাকে যাবত না আল্লাহ তা'আলার সংগে সাক্ষাত হয়, সে আল্লাহ তা'আলার সংগে যখন সাক্ষাত করবে, তখন তার কোনও হিসাব নেওয়া হবে না।”
অপর এক হাদীছে আছে- “আমি যখন আমার বান্দার প্রিয় দুই বস্তু (চোখ) নিয়ে নেই, যার প্রতি সে খুবই আসক্ত, তখন তার জন্যে জান্নাত ছাড়া অন্য কোনও পুরস্কারে আমি সন্তুষ্ট হই না, যদি সে তাতে আমার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে।”
সুতরাং কারও দৃষ্টিশক্তি লোপ পেলে উল্লিখিত ফযীলতের দিকে লক্ষ করে তার কর্তব্য ধৈর্যধারণ করা। অন্যদেরও উচিত এ ফযীলতের কথা বলে তাকে সান্ত্বনা যোগানো। মনে রাখতে হবে, চোখ হারানোটা আল্লাহর আযাব নয়; বরং প্রিয় বান্দার জন্যে তাঁর বিশেষ রহমত। তাবি'ঈ আবূ যিলাল ইব্ন হিলাল শৈশবে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, একবার আমি হযরত আনাস ইবন মালিক রাযি.-এর কাছে গেলে তিনি আমাকে কাছে ডেকে নিলেন। তারপর বললেন, তোমার দৃষ্টিশক্তি করে লোপ পেয়েছে? আমি বললাম, শৈশবকালে। তিনি বললেন, আমি কি তোমাকে সুখবর দেব? বললাম, অবশ্যই। তখন তিনি আমাকে এ হাদীছটি শোনালেন যে, আমি আমার যে বান্দার প্রিয় দুই বস্ত্র কেড়ে নিই, তার প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারাও সবরের ফযীলত জানা গেল।
খ. কারও দৃষ্টিশক্তি লোপ পেলে তার কর্তব্য একে একটি নি'আমত গণ্য করা এবং আখিরাতের মহাপ্রতিদান তথা বিনা হিসেবে জান্নাত লাভের আশায় সবর অবলম্বন করা।
গ. এ শিক্ষাও পাওয়া গেল যে, মু'মিনের পক্ষে যে-কোনও মসিবতের ভেতরেই মহাকল্যাণ নিহিত থাকে, সবরের মাধ্যমে যা অর্জিত হয়।
যেহেতু চোখ মানুষের সর্বাপেক্ষা বেশি প্রিয় অঙ্গ, তাই এটা হারালে তার কষ্ট ও বেদনাও সর্বাপেক্ষা বেশি হয়। আর সে কারণেই এ ক্ষেত্রে সবরের ফযীলতও অনেক বেশি । আল্লাহ তা'আলা অনেক সময় বান্দাকে এর দ্বারা পরীক্ষা করেন। পরীক্ষা কঠিনই বটে। আল্লাহ তা'আলা চান এ কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বান্দা বিপুল ফযীলতের অধিকারী হয়ে যাক। এ হাদীছে তো বলা হয়েছে যে, দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে সবর করলে আল্লাহ তা'আলা তার বিনিময়ে তাকে জান্নাত দান করেন। অপর এক হাদীছে আছে-
"মানুষের জন্যে সর্বাপেক্ষা কঠিন মসিবত হল দীন চলে যাওয়া। তারপর সর্বাপেক্ষা কঠিন বিপদ দৃষ্টিশক্তি হারানো। যে ব্যক্তি তার দৃষ্টিশক্তি হারানোর পরীক্ষায় পড়ে যায় আর তাতে সবর করতে থাকে যাবত না আল্লাহ তা'আলার সংগে সাক্ষাত হয়, সে আল্লাহ তা'আলার সংগে যখন সাক্ষাত করবে, তখন তার কোনও হিসাব নেওয়া হবে না।”
অপর এক হাদীছে আছে- “আমি যখন আমার বান্দার প্রিয় দুই বস্তু (চোখ) নিয়ে নেই, যার প্রতি সে খুবই আসক্ত, তখন তার জন্যে জান্নাত ছাড়া অন্য কোনও পুরস্কারে আমি সন্তুষ্ট হই না, যদি সে তাতে আমার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে।”
সুতরাং কারও দৃষ্টিশক্তি লোপ পেলে উল্লিখিত ফযীলতের দিকে লক্ষ করে তার কর্তব্য ধৈর্যধারণ করা। অন্যদেরও উচিত এ ফযীলতের কথা বলে তাকে সান্ত্বনা যোগানো। মনে রাখতে হবে, চোখ হারানোটা আল্লাহর আযাব নয়; বরং প্রিয় বান্দার জন্যে তাঁর বিশেষ রহমত। তাবি'ঈ আবূ যিলাল ইব্ন হিলাল শৈশবে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, একবার আমি হযরত আনাস ইবন মালিক রাযি.-এর কাছে গেলে তিনি আমাকে কাছে ডেকে নিলেন। তারপর বললেন, তোমার দৃষ্টিশক্তি করে লোপ পেয়েছে? আমি বললাম, শৈশবকালে। তিনি বললেন, আমি কি তোমাকে সুখবর দেব? বললাম, অবশ্যই। তখন তিনি আমাকে এ হাদীছটি শোনালেন যে, আমি আমার যে বান্দার প্রিয় দুই বস্ত্র কেড়ে নিই, তার প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারাও সবরের ফযীলত জানা গেল।
খ. কারও দৃষ্টিশক্তি লোপ পেলে তার কর্তব্য একে একটি নি'আমত গণ্য করা এবং আখিরাতের মহাপ্রতিদান তথা বিনা হিসেবে জান্নাত লাভের আশায় সবর অবলম্বন করা।
গ. এ শিক্ষাও পাওয়া গেল যে, মু'মিনের পক্ষে যে-কোনও মসিবতের ভেতরেই মহাকল্যাণ নিহিত থাকে, সবরের মাধ্যমে যা অর্জিত হয়।
