আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৪- আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৭৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ৬১৬৪
৩২৫৭. কাউকে ‘ওয়াইলাকা’ বলা।
৫৭৩৩। আবুল হাসান মুহাম্মাদ ইবনে মুকাতিল (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খেদমতে এসে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ ওয়াইলাকা (আফসোস তোমার জন্য), এরপর সে বলল, আমি রমযানের মধ্যেই দিনের বেলায় আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ একটা গোলাম আযাদ করে দাও। সে বললঃ আমার কাছে তা নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি লাগাতার দু’মাস রোযা পালন কর। সে বললঃ আমি এতেও সক্ষম নই। তিনি বললেনঃ তবে তুমি ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াও। লোকটি বললঃ আমি এর সামর্থ রাখি না। তখন নবী (ﷺ) এর খিদমতে এক ঝুড়ি খেজুর এলো। তখন তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং সাদ্‌কা করে দাও। সে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! তা কি আমার পরিবার ব্যতীত অন্যকে দেব? সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ, মদীনার উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার চেয়ে অভাবী আর কেউ নেই। তখন নবী (ﷺ) এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তার পার্শ্বের দাঁত পর্যন্ত প্রকাশ পেল। তিনি বললেনঃ তবে তা তুমিই নিয়ে যাও।
باب مَا جَاءَ فِي قَوْلِ الرَّجُلِ وَيْلَكَ
6164 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الحَسَنِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَجُلًا أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ، قَالَ: «وَيْحَكَ» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى أَهْلِي فِي رَمَضَانَ، قَالَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: مَا أَجِدُهَا، قَالَ: «فَصُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لاَ أَسْتَطِيعُ، قَالَ: «فَأَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا» قَالَ: مَا أَجِدُ، فَأُتِيَ بِعَرَقٍ، فَقَالَ: «خُذْهُ فَتَصَدَّقْ بِهِ» فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَعَلَى غَيْرِ أَهْلِي، فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، مَا بَيْنَ طُنُبَيْ المَدِينَةِ أَحْوَجُ [ص:39] مِنِّي، فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ، قَالَ: «خُذْهُ» تَابَعَهُ يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، وَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ: «وَيْلَكَ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রমযানে রোযা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।

কাফফারা আদায়ের নিয়ম
একটি রোযার জন্য দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখতে হবে। রোযা রাখতে সক্ষম না হলে ৬০ জন ফকির-মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৪

কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে রোযা রাখতে হবে। পেছনের রোযাগুলো কাফফারার রোযা হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে অসুবিধা নেই।

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘যার উপর কাফফারা হিসাবে দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখা জরুরি সে যদি মাঝে অসুস্থ হওয়ার কারণে রোযা রাখতে না পারে, তাহলে আবার নতুন করে রোযা রাখা শুরু করবে।’-আলমুহাল্লা ৪/৩৩১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/১৯৬

#সংগৃহীত
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)