ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার
৪. যাকাতের অধ্যায়
হাদীস নং: ১২৪৫
সা'-এর পরিমাপ
(১২৪৫) তাবিয়ি ইবরাহীম নাখয়ি বলেন, আমরা উমার রা.র সা'টি পরিমাপ করলাম। আমরা দেখলাম যে তা হাজ্জাজ ইবন ইউসুফের সা'-এর অনুরূপ ছিল । আর হিজাজি সা' তাদের নিকট বাগদাদি হিসাবে আট রতল ছিল।
عن إبراهيم قال: عيرنا صاع عمر رضي الله عنه فوجدناه حجاجيا والحجاجي عندهم ثمانية أرطال بالبغدادي
হাদীসের ব্যাখ্যা:
অনুরূপ মতামত তাহাবি মুসা ইবন তালহা থেকেও সঙ্কলিত করেছেন । তাহাবি বলেন, সা’র পরিমাপের ক্ষেত্রে এই বর্ণনাটিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য । অপরপক্ষে মালিক ইবন আনাস রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, খলীফা আব্দুল মালিক ইবন মারওয়ান (রাজত্বকাল ৬৫-৮৬ হি.) উমার রা.র সা’র পরিমাপ জানতে বিভিন্ন মানুষের কাছে প্রশ্ন ও অনুসন্ধান করে জানেন যে, তার পরিমাপ ছিল ৫ রতল ও এক রতলের এক তৃতীয়াংশ। তাহাবি বলেন, মালিকের বর্ণনার চেয়ে ইবরাহীম নাখয়ি ও মুসা ইবন তালহার বর্ণনার উপর নির্ভর করাই উত্তম। কারণ তাদের বর্ণনার প্রকৃত ভিত্তি আছে আর আব্দুল মালিকের অনুসন্ধানের প্রকৃত ভিত্তি নেই। আল্লাহই ভালো জানেন। সা’র পরিমাপের বিষয়ে কিছু হাদীস ওযুর অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।**
সা' বাংলাদেশের বেতের ‘কাঠা' জাতীয় একপ্রকারের পরিমাপ একক, যা আরবদেশের সর্বত্র ব্যবহার করা হত। বিভিন্ন এলাকার ‘সা'র আকৃতির মধ্যে কিছু পার্থক্য ছিল। প্রত্যেক এলাকার মুসলিমগণ নিজনিজ এলাকার
সা' ব্যবহার করে যাকাত ইত্যাদি আদায় করতেন। দ্বিতীয় হিজরি শতকে যখন ফকীহগণ এসকল পরিমাপ সূক্ষ্ম ও নির্ভু গবে নির্ধারণ করতে চাইলেন তখন মতবিরোধ দেখা দিল। দ্বিতীয় হিজরি শতকের শেষ দিকে ও পরবর্তী সময়ে কুফা ও ইরাকের অন্যান্য অঞ্চলে যে 'সা' ব্যবহৃত হত তার আকৃতি ছিল একটু বড় । হাজ্জাজ ইবন ইউসুফ এই সা’র প্রচলন করেন। এতে ৮ রতল পরিমাণ দ্রব্যের সংকুলান হত। অপরপক্ষে এ সময়ে মদীনা শরীফ ও হিজাজের অন্যান্য অঞ্চলে ব্যবহৃত 'সা'র আকৃতি কিছুটা ছোট ছিল। এর পরিমাপ ছিল প্রায় সোয়া ৫ রতল (৫ রতল ও এক রতলের এক তৃতীয়াংশ)। ইমাম আবু হানীফা রাহ. ও তার অনুসারীগণ ইরাকি ‘সা'র উপর নির্ভর করেছেন। এজন্য ইমাম আবু হানীফা রাহ. ও তার অধিকাংশ অনুসারীর মতে আট 'রতল'-এ এক 'সা' হয়। অন্য তিন ইমাম: ইমাম মালিক, শাফিয়ি, আহমাদ রাহ., হানাফি মাযহাবের ইমাম আবু ইউসুফ ও অন্য অনেক ইমাম ও ফকীহ মদীনার প্রচলিত ‘সা'র উপর নির্ভর করেছেন। তাদের মতানুসারে এক 'সা' সমান পাঁচ 'রতল' ও এক রতলের একতৃতীয়াংশ। 'রতল' একটি অতি প্রাচীন আরব দেশীয় পরিমাপ-একক আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে এর পরিমাপ নির্ধারণ করা হত। ইসলামি পরিমাপ ব্যবস্থায় মূলত ‘ইরাকি রতল'কে মূল একক ধরা হয়। ইরাকি রতলের আধুনিক পরিমাপ সম্পর্কে বিভিন্ন গবেষকের বর্ণনায় কিছুটা বৈপরীত্য দেখা গেলেও মোটামুটিভাবে অধিকাংশ আধুনিক গবেষকের বর্ণনা মতে এক 'রতল' আধুনিক ম্যাট্রিক পদ্ধতির ওজনে ৪১২.১ গ্রাম। তাহলে ইমাম আবু হানীফা রাহর মতানুসারে এক সা' হল: ৩,২৯৬.৮ গ্রাম। অপরপক্ষে ইমাম আবু ইউসুফ, মালিক, শাফিয়ি ও আহমাদ রাহ. র মতে এক সা' হবে ২,১৭৫ গ্রাম। (অনুবাদক)
সা' বাংলাদেশের বেতের ‘কাঠা' জাতীয় একপ্রকারের পরিমাপ একক, যা আরবদেশের সর্বত্র ব্যবহার করা হত। বিভিন্ন এলাকার ‘সা'র আকৃতির মধ্যে কিছু পার্থক্য ছিল। প্রত্যেক এলাকার মুসলিমগণ নিজনিজ এলাকার
সা' ব্যবহার করে যাকাত ইত্যাদি আদায় করতেন। দ্বিতীয় হিজরি শতকে যখন ফকীহগণ এসকল পরিমাপ সূক্ষ্ম ও নির্ভু গবে নির্ধারণ করতে চাইলেন তখন মতবিরোধ দেখা দিল। দ্বিতীয় হিজরি শতকের শেষ দিকে ও পরবর্তী সময়ে কুফা ও ইরাকের অন্যান্য অঞ্চলে যে 'সা' ব্যবহৃত হত তার আকৃতি ছিল একটু বড় । হাজ্জাজ ইবন ইউসুফ এই সা’র প্রচলন করেন। এতে ৮ রতল পরিমাণ দ্রব্যের সংকুলান হত। অপরপক্ষে এ সময়ে মদীনা শরীফ ও হিজাজের অন্যান্য অঞ্চলে ব্যবহৃত 'সা'র আকৃতি কিছুটা ছোট ছিল। এর পরিমাপ ছিল প্রায় সোয়া ৫ রতল (৫ রতল ও এক রতলের এক তৃতীয়াংশ)। ইমাম আবু হানীফা রাহ. ও তার অনুসারীগণ ইরাকি ‘সা'র উপর নির্ভর করেছেন। এজন্য ইমাম আবু হানীফা রাহ. ও তার অধিকাংশ অনুসারীর মতে আট 'রতল'-এ এক 'সা' হয়। অন্য তিন ইমাম: ইমাম মালিক, শাফিয়ি, আহমাদ রাহ., হানাফি মাযহাবের ইমাম আবু ইউসুফ ও অন্য অনেক ইমাম ও ফকীহ মদীনার প্রচলিত ‘সা'র উপর নির্ভর করেছেন। তাদের মতানুসারে এক 'সা' সমান পাঁচ 'রতল' ও এক রতলের একতৃতীয়াংশ। 'রতল' একটি অতি প্রাচীন আরব দেশীয় পরিমাপ-একক আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে এর পরিমাপ নির্ধারণ করা হত। ইসলামি পরিমাপ ব্যবস্থায় মূলত ‘ইরাকি রতল'কে মূল একক ধরা হয়। ইরাকি রতলের আধুনিক পরিমাপ সম্পর্কে বিভিন্ন গবেষকের বর্ণনায় কিছুটা বৈপরীত্য দেখা গেলেও মোটামুটিভাবে অধিকাংশ আধুনিক গবেষকের বর্ণনা মতে এক 'রতল' আধুনিক ম্যাট্রিক পদ্ধতির ওজনে ৪১২.১ গ্রাম। তাহলে ইমাম আবু হানীফা রাহর মতানুসারে এক সা' হল: ৩,২৯৬.৮ গ্রাম। অপরপক্ষে ইমাম আবু ইউসুফ, মালিক, শাফিয়ি ও আহমাদ রাহ. র মতে এক সা' হবে ২,১৭৫ গ্রাম। (অনুবাদক)
