আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৬৩- পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
হাদীস নং: ৫৪২১
আন্তর্জাতিক নং: ৫৮৩৯
৩০৮৮. চর্মরোগের কারণে পুরুষের জন্য রেশমী কাপড়ের অনুমতি।
৫৪২১। মুহাম্মাদ (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) যুবায়র ও আব্দুর রহমান (রাযিঃ) কে তাদের চর্মরোগের কারণে রেশমী কাপড় পরার অনুমতি দিয়েছিলেন।
باب مَا يُرَخَّصُ لِلرِّجَالِ مِنَ الْحَرِيرِ لِلْحِكَّةِ
5839 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: «رَخَّصَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلزُّبَيْرِ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ فِي لُبْسِ الحَرِيرِ، لِحِكَّةٍ بِهِمَا»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ইসলাম তার যাবতীয় বিধানে সহুলতের প্রতি লক্ষ রেখেছে। এক তো ইসলাম মানুষকে এমন কোনও বিধান দেয়নি, যা পালন করা তাদের সাধ্যাতীত বা অনেক বেশি কঠিন। তারপর আবার যে বিধানই দিয়েছে তাতে মানুষের ওজর বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ওজরের কারণে কোনও কোনও বিধান হয় সহজ করা হয়েছে, নয়তো মওকুফই করে দেওয়া হয়েছে। সফর অবস্থায় নামায কসর করা এবং রোযা অন্য সময় রাখার সুযোগ দেওয়া সহুলতের নিদর্শন। মহিলাদের তাদের ঋতুকালীন নামায পরে কাযাও করতে হয় না। সম্পূর্ণ মওকুফ। ওজর থাকলেও সর্বাবস্থায় সকল হুকুম পালন করতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা আমাদের শরী'আতে নেই। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোনও সংকীর্ণতা আরোপ করেননি। (সূরা হজ্জ, আয়াত ৭৮)
অন্যত্র ইরশাদ-
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا
'আল্লাহ কারও উপর তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব অর্পণ করেন না।' (সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৬)
সুতরাং কারও শরীরে যদি চুলকানি থাকে আর সে কারণে রেশমী কাপড় ছাড়া অন্য কোনও কাপড় পরা তার জন্য কঠিন হয়ে যায়, তবে তার জন্য এ সহুলত রাখা হয়েছে যে, সে রেশমী পোশাক পরতে পারবে। ওজরের কারণে রেশমী পোশাক পরিধানের নিষিদ্ধতা তার জন্য মওকুফ রাখা হয়েছে। হযরত যুবায়র ইবনুল আউওয়াম রাযি. ও হযরত আব্দুর রহমান ইবন আওফ রাযি.-এর শরীরে চুলকানি ছিল। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদেরকে রেশমী পোশাক পরার অবকাশ দান করেন। এ অবকাশ যে-কোনও চর্মরোগীর জন্য প্রযোজ্য। যদি কোনও চর্মরোগীর অন্য পোশাক পরিধান করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, তবে সে রেশমী পোশাক পরতে পারবে। বিষয়টি কেবল চর্মরোগের জন্যই নির্দিষ্ট নয়। চর্মরোগ একটা ওজর। কাজেই অন্য কোনও ওজর পাওয়া গেলেও সে ক্ষেত্রে এ অবকাশ প্রযোজ্য হবে। যেমন কেউ যদি শীত ও তাপ নিবারণের জন্য অন্য কোনও পোশাকের ব্যবস্থা করতে না পারে আর তার কাছে রেশমী পোশাক থাকে, তবে সেও রেশমী পোশাক ব্যবহার করতে পারবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. শরী'আতের যাবতীয় বিধানে মানুষের ওজর-অজুহাত বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
খ. চর্মরোগ বা অন্য কোনও ওজর থাকলে রেশমী কাপড় ব্যবহারের অবকাশ রয়েছে।
وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোনও সংকীর্ণতা আরোপ করেননি। (সূরা হজ্জ, আয়াত ৭৮)
অন্যত্র ইরশাদ-
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا
'আল্লাহ কারও উপর তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব অর্পণ করেন না।' (সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৬)
সুতরাং কারও শরীরে যদি চুলকানি থাকে আর সে কারণে রেশমী কাপড় ছাড়া অন্য কোনও কাপড় পরা তার জন্য কঠিন হয়ে যায়, তবে তার জন্য এ সহুলত রাখা হয়েছে যে, সে রেশমী পোশাক পরতে পারবে। ওজরের কারণে রেশমী পোশাক পরিধানের নিষিদ্ধতা তার জন্য মওকুফ রাখা হয়েছে। হযরত যুবায়র ইবনুল আউওয়াম রাযি. ও হযরত আব্দুর রহমান ইবন আওফ রাযি.-এর শরীরে চুলকানি ছিল। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদেরকে রেশমী পোশাক পরার অবকাশ দান করেন। এ অবকাশ যে-কোনও চর্মরোগীর জন্য প্রযোজ্য। যদি কোনও চর্মরোগীর অন্য পোশাক পরিধান করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, তবে সে রেশমী পোশাক পরতে পারবে। বিষয়টি কেবল চর্মরোগের জন্যই নির্দিষ্ট নয়। চর্মরোগ একটা ওজর। কাজেই অন্য কোনও ওজর পাওয়া গেলেও সে ক্ষেত্রে এ অবকাশ প্রযোজ্য হবে। যেমন কেউ যদি শীত ও তাপ নিবারণের জন্য অন্য কোনও পোশাকের ব্যবস্থা করতে না পারে আর তার কাছে রেশমী পোশাক থাকে, তবে সেও রেশমী পোশাক ব্যবহার করতে পারবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. শরী'আতের যাবতীয় বিধানে মানুষের ওজর-অজুহাত বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
খ. চর্মরোগ বা অন্য কোনও ওজর থাকলে রেশমী কাপড় ব্যবহারের অবকাশ রয়েছে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
