ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার
৩. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৭২
জুমুআ ও দুই ঈদের সালাতে সশব্দে পাঠ
(৫৭২) নু'মান ইবন বাশীর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দুইঈদে এবং জুমুআয় সূরা আ'লা ও সূরা গাশিয়াহ পাঠ করতেন ।
عن النعمان بن بشير رضي الله عنه قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقرأ في العيدين وفي الجمعة بسبح اسم ربك الأعلى وهل أتاك حديث الغاشية
হাদীসের ব্যাখ্যা:
মুক্তাদী কর্তৃক ইমামের জুমআহ এবং উভয় ঈদের নামাযের কিরাত শ্রবণ করা থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূলুল্লাহ স. জুমআহ এবং উভয় ঈদের নামাযে সশব্দে কুরআন পাঠ করেছেন। এ আমলের ব্যতিক্রম তিনি কখনো করেছেন মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অতএব, উভয় ঈদের নামাযে ইমামের জন্য উচ্চস্বরে কুরআন পড়া জরুরী।
ঈদ ও জুমআ একদিনে হলে উভয় নামাযই পড়তে হবেঃ
উপরিউক্ত সহীহ, মারফু’ হাদীস ও এ হাদীস( أَخْبَرَنَا أَبُو سَعْدٍ الْمَالِينِيُّ، أنبأ أَبُو أَحْمَدَ بْنُ عَدِيٍّ الْحَافِظُ، ثنا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ يُونُسَ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي سَمِينَةَ، ثنا زِيَادُ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ رُفَيْعٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: اجْتَمَعَ عِيدَانِ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنَّهُ قَدْ اجْتَمَعَ عِيدُكُمْ هَذَا وَالْجُمُعَةُ، وَإِنَّا مُجَمِّعُونَ، فَمَنْ شَاءَ أَنْ يُجَمِّعَ فَلْيُجَمِّعْ , فَلَمَّا صَلَّى الْعِيدَ جَمَّعَ (رواه البيهقى فى السنن الكبرى)
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রসূল স.-এর যুগে একবার দুই ঈদ অর্থাৎ জুমআ এবং ঈদ একদিনে একত্রিত হলো। অতঃপর রসূল স. ইরশাদ করলেন: তোমাদের ঈদ আর জুমআ একত্রিত হয়েছে। আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো। যে ব্যক্তি জুমআ পড়তে চায় সে পড়ুক। অতঃপর ঈদের নামাযও পড়লেন এবং জুমআর নামাযও পড়লেন। (সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী-৬২৮৭)
দ্বারা বুঝা গেলো যে, জুমআর দিন ঈদ হলেও রসূল স. জুমআর নামায ছাড়েননি। বরং দৃঢ়তার সাথে বলেছেন যে, আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, জুমআর দিন ঈদ হলেও জুমআর নামায পড়তে হয়।
তবে উপরিউক্ত হাদীসে রসূল স. ইরশাদ করেছেন যে, ‘আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো’। এখানে আমরা শব্দ রসূল স. দ্বারা কাদেরকে বুঝিয়েছেন আর কাদেরকে জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দিয়েছেন তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এক শ্রেণির মানুষ সাধারণ জনতাকে ব্যাপকভাবে জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দেয়া শুরু করেছে। তাদের ভাষ্য এই যে, জুমআর দিন ঈদ হলে জুমআর নামায পড়া লাগে না। অথচ রসূল স. এ হাদীসে দৃঢ়তার সাথে বলেছেন যে, আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো। অবশ্য যাদেরকে তিনি জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দিলেন তারা কারা সে প্রশ্নের জবাবে অনুরূপ অর্থে বর্ণিত বুখারী শরীফের একটি হাদীস পেশ করা যেতে পারে। উক্ত বর্ণনায় হযরত উসমান রা. বলেন, فَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يَنْتَظِرَ الجُمُعَةَ مِنْ أَهْلِ العَوَالِي فَلْيَنْتَظِرْ، وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يَرْجِعَ فَقَدْ أَذِنْتُ لَهُ “আওয়ালীবাসীদের মধ্যে থেকে যারা জুমআর জন্য অপেক্ষা করতে চায় তারা যেন অপেক্ষা করে। আর যে ফিরে যেতে চায় আমি তাকে অনুমতি দিচ্ছি”। (বুখারী-৫১৭৩) শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি ইমাম ত্বহাবী তাঁর মুশকিলুল আছার কিতাবে এবং ইমাম বায়হাকী তাঁর সুনানুল কুবরা কিতাবেও উল্লেখ করেছেন। এ হাদীসের ভাষা থেকে পরিস্কার বুঝা যায় যে, রসূল স. যাদেরকে জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দিয়েছিলেন তারা মদীনা শহরের বাইরে অবস্থিত ‘আওয়ালী’ নামক গ্রাম্য অঞ্চলের বাসিন্দা যাদের উপর জুমআ ও ঈদের নামায আদায়ের বিধান নেই। আওয়ালীর বাসিন্দাদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় ঈদের নামাযে শরিক হওয়ার জন্য মদীনায় এসেছিলো তারা ঈদের নামায শেষ করে বাড়ীতে গিয়ে আবার জুমআর নামাযের জন্য মদীনায় আসতে চাইলে তাদের দিন কেটে যাবে শুধু যাওয়া আসা করতে করতে। অথচ তাদের উপর জুমআর নামায জরুরী নয়। এ কারণে রসূল স. তাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে এ ঘোষণা দিয়েছেন। এ হাদীসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেন, فَظَاهِرُ الْحَدِيثِ فِي كَوْنِهِمْ مِنْ أَهْلِ الْعَوَالِي أَنَّهُمْ لَمْ يَكُونُوا مِمَّنْ تَجِبُ عَلَيْهِمُ الْجُمُعَةُ لِبُعْدِ مَنَازِلِهِمْ عَنِ الْمَسْجِدِ হাদীসের শব্দ مِنْ أَهْلِ الْعَوَالِي (আওয়ালীর বাসিন্দা) দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, হযরত উসমান রা. যাদেরকে জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দিয়েছিলেন মদীনা থেকে দূরে বসবাস করার কারণে তাদের উপর এমনিতেই জুমআর নামায জরুরী ছিলো না। (ফাতহুল বারী উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায়) আর রসূল স.-এর ভাষ্য إِنَّا مُجَمِّعُونَ আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো’ বলে মদীনা শহরে বসবাসরত ব্যক্তিদের অবস্থা বুঝিয়েছেন যে, যাদের উপর জুমআর নামায অন্য সময় আবশ্যক ঈদের দিন জুমআ হলেও তাদের জন্য তা আবশ্যক থাকবে। এ হাদীসের ঘোষণা হযরত উসমান রা.-এর নিজের তরফ থেকে হলেও ইবাদাত সংক্রানত্ম বিষয়ে সাহাবায়ে কিরামের কথা বা কাজ বিধানগতভাবে রসূল স.-এর কথা ও কাজ হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ ধরে নেয়া হয় যে, এটা তিনি রসূল স. থেকে শুনে বলেছেন। রসূল স.-এর এ ঘোষণাকে পুঁজি করে মদীনায় বসবাসকারী কোন সাহাবা ঈদের দিনে জুমআর নামায পড়েননি বলে কোন সহীহ হাদীসের বর্ণনা আমার সন্ধানে মেলেনি। শুধুমাত্র হযরত আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের রা.-এর আমল পাওয়া যায় যে, জুমআর দিনে ঈদ হলে তিনি ঈদের নামায দেরি করে জুমআর সাথে একত্রে দু’রাকাত আদায় করতেন। ভিন্নভাবে জুমআর নামায পড়তেন না। আর হযরত ইবনে আব্বাস রা. নিজে এমনটা না করলেও এটাকে সমর্থন করেছেন বলে সহীহ হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে যেহেতু হযরত উসমান রা.-এর আমল রসূল স.-এর নির্দেশ ও আমলের অনুরূপ তাই আমরা ঐ আমলের বিপরীতে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রা.-এর এ আমল গ্রহণ করতে পারি না। অতএব, যাদের উপর জুমআর নামায অন্য সময় আবশ্যক ঈদের দিন জুমআ হলেও তাদের জন্য তা আবশ্যক থাকবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিলস্নাতুহু: ২/১৪২০)
উলেস্নখ্য, “গ্রাম্য অঞ্চলের বাসিন্দা; যাদের উপর জুমআ ও ঈদের নামায আদায়ের বিধান নেই” বলে ঐ সকল গ্রাম বুঝানো হয়ে থাকে যেখানে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা তাদের প্রতিনিধি নেই এবং মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যায় না। গভীর জঙ্গল বা পাহাড়ী এলাকা ছাড়া এ ধরণের গ্রামের অসিত্মত্ব এখন খুঁজে পাওয়া দুস্কর। এ ধরণের গ্রাম্য অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য জুমআ ও ঈদের নামায জরুরী না হওয়ার বিষয়ে দেখুন- আব্দুর রায্যাক-৫১৭৭, ইবনে আবি শাইবা: ৫১০০, ৫১০১ ও ৫১০৩ নাম্বার হাদীসে।
ঈদ ও জুমআ একদিনে হলে উভয় নামাযই পড়তে হবেঃ
উপরিউক্ত সহীহ, মারফু’ হাদীস ও এ হাদীস( أَخْبَرَنَا أَبُو سَعْدٍ الْمَالِينِيُّ، أنبأ أَبُو أَحْمَدَ بْنُ عَدِيٍّ الْحَافِظُ، ثنا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ يُونُسَ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي سَمِينَةَ، ثنا زِيَادُ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ رُفَيْعٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: اجْتَمَعَ عِيدَانِ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنَّهُ قَدْ اجْتَمَعَ عِيدُكُمْ هَذَا وَالْجُمُعَةُ، وَإِنَّا مُجَمِّعُونَ، فَمَنْ شَاءَ أَنْ يُجَمِّعَ فَلْيُجَمِّعْ , فَلَمَّا صَلَّى الْعِيدَ جَمَّعَ (رواه البيهقى فى السنن الكبرى)
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রসূল স.-এর যুগে একবার দুই ঈদ অর্থাৎ জুমআ এবং ঈদ একদিনে একত্রিত হলো। অতঃপর রসূল স. ইরশাদ করলেন: তোমাদের ঈদ আর জুমআ একত্রিত হয়েছে। আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো। যে ব্যক্তি জুমআ পড়তে চায় সে পড়ুক। অতঃপর ঈদের নামাযও পড়লেন এবং জুমআর নামাযও পড়লেন। (সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী-৬২৮৭)
দ্বারা বুঝা গেলো যে, জুমআর দিন ঈদ হলেও রসূল স. জুমআর নামায ছাড়েননি। বরং দৃঢ়তার সাথে বলেছেন যে, আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, জুমআর দিন ঈদ হলেও জুমআর নামায পড়তে হয়।
তবে উপরিউক্ত হাদীসে রসূল স. ইরশাদ করেছেন যে, ‘আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো’। এখানে আমরা শব্দ রসূল স. দ্বারা কাদেরকে বুঝিয়েছেন আর কাদেরকে জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দিয়েছেন তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এক শ্রেণির মানুষ সাধারণ জনতাকে ব্যাপকভাবে জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দেয়া শুরু করেছে। তাদের ভাষ্য এই যে, জুমআর দিন ঈদ হলে জুমআর নামায পড়া লাগে না। অথচ রসূল স. এ হাদীসে দৃঢ়তার সাথে বলেছেন যে, আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো। অবশ্য যাদেরকে তিনি জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দিলেন তারা কারা সে প্রশ্নের জবাবে অনুরূপ অর্থে বর্ণিত বুখারী শরীফের একটি হাদীস পেশ করা যেতে পারে। উক্ত বর্ণনায় হযরত উসমান রা. বলেন, فَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يَنْتَظِرَ الجُمُعَةَ مِنْ أَهْلِ العَوَالِي فَلْيَنْتَظِرْ، وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يَرْجِعَ فَقَدْ أَذِنْتُ لَهُ “আওয়ালীবাসীদের মধ্যে থেকে যারা জুমআর জন্য অপেক্ষা করতে চায় তারা যেন অপেক্ষা করে। আর যে ফিরে যেতে চায় আমি তাকে অনুমতি দিচ্ছি”। (বুখারী-৫১৭৩) শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি ইমাম ত্বহাবী তাঁর মুশকিলুল আছার কিতাবে এবং ইমাম বায়হাকী তাঁর সুনানুল কুবরা কিতাবেও উল্লেখ করেছেন। এ হাদীসের ভাষা থেকে পরিস্কার বুঝা যায় যে, রসূল স. যাদেরকে জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দিয়েছিলেন তারা মদীনা শহরের বাইরে অবস্থিত ‘আওয়ালী’ নামক গ্রাম্য অঞ্চলের বাসিন্দা যাদের উপর জুমআ ও ঈদের নামায আদায়ের বিধান নেই। আওয়ালীর বাসিন্দাদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় ঈদের নামাযে শরিক হওয়ার জন্য মদীনায় এসেছিলো তারা ঈদের নামায শেষ করে বাড়ীতে গিয়ে আবার জুমআর নামাযের জন্য মদীনায় আসতে চাইলে তাদের দিন কেটে যাবে শুধু যাওয়া আসা করতে করতে। অথচ তাদের উপর জুমআর নামায জরুরী নয়। এ কারণে রসূল স. তাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে এ ঘোষণা দিয়েছেন। এ হাদীসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেন, فَظَاهِرُ الْحَدِيثِ فِي كَوْنِهِمْ مِنْ أَهْلِ الْعَوَالِي أَنَّهُمْ لَمْ يَكُونُوا مِمَّنْ تَجِبُ عَلَيْهِمُ الْجُمُعَةُ لِبُعْدِ مَنَازِلِهِمْ عَنِ الْمَسْجِدِ হাদীসের শব্দ مِنْ أَهْلِ الْعَوَالِي (আওয়ালীর বাসিন্দা) দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, হযরত উসমান রা. যাদেরকে জুমআর নামায না পড়ার অনুমতি দিয়েছিলেন মদীনা থেকে দূরে বসবাস করার কারণে তাদের উপর এমনিতেই জুমআর নামায জরুরী ছিলো না। (ফাতহুল বারী উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায়) আর রসূল স.-এর ভাষ্য إِنَّا مُجَمِّعُونَ আমরা অবশ্যই জুমআ পড়বো’ বলে মদীনা শহরে বসবাসরত ব্যক্তিদের অবস্থা বুঝিয়েছেন যে, যাদের উপর জুমআর নামায অন্য সময় আবশ্যক ঈদের দিন জুমআ হলেও তাদের জন্য তা আবশ্যক থাকবে। এ হাদীসের ঘোষণা হযরত উসমান রা.-এর নিজের তরফ থেকে হলেও ইবাদাত সংক্রানত্ম বিষয়ে সাহাবায়ে কিরামের কথা বা কাজ বিধানগতভাবে রসূল স.-এর কথা ও কাজ হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ ধরে নেয়া হয় যে, এটা তিনি রসূল স. থেকে শুনে বলেছেন। রসূল স.-এর এ ঘোষণাকে পুঁজি করে মদীনায় বসবাসকারী কোন সাহাবা ঈদের দিনে জুমআর নামায পড়েননি বলে কোন সহীহ হাদীসের বর্ণনা আমার সন্ধানে মেলেনি। শুধুমাত্র হযরত আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের রা.-এর আমল পাওয়া যায় যে, জুমআর দিনে ঈদ হলে তিনি ঈদের নামায দেরি করে জুমআর সাথে একত্রে দু’রাকাত আদায় করতেন। ভিন্নভাবে জুমআর নামায পড়তেন না। আর হযরত ইবনে আব্বাস রা. নিজে এমনটা না করলেও এটাকে সমর্থন করেছেন বলে সহীহ হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে যেহেতু হযরত উসমান রা.-এর আমল রসূল স.-এর নির্দেশ ও আমলের অনুরূপ তাই আমরা ঐ আমলের বিপরীতে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রা.-এর এ আমল গ্রহণ করতে পারি না। অতএব, যাদের উপর জুমআর নামায অন্য সময় আবশ্যক ঈদের দিন জুমআ হলেও তাদের জন্য তা আবশ্যক থাকবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিলস্নাতুহু: ২/১৪২০)
উলেস্নখ্য, “গ্রাম্য অঞ্চলের বাসিন্দা; যাদের উপর জুমআ ও ঈদের নামায আদায়ের বিধান নেই” বলে ঐ সকল গ্রাম বুঝানো হয়ে থাকে যেখানে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা তাদের প্রতিনিধি নেই এবং মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যায় না। গভীর জঙ্গল বা পাহাড়ী এলাকা ছাড়া এ ধরণের গ্রামের অসিত্মত্ব এখন খুঁজে পাওয়া দুস্কর। এ ধরণের গ্রাম্য অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য জুমআ ও ঈদের নামায জরুরী না হওয়ার বিষয়ে দেখুন- আব্দুর রায্যাক-৫১৭৭, ইবনে আবি শাইবা: ৫১০০, ৫১০১ ও ৫১০৩ নাম্বার হাদীসে।
