আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৮- নামাযের ওয়াক্তের বিবরণ

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৫৬২
৩৬৯। মাগরিবের ওয়াক্ত।
৫৩৫। আদম (রাহঃ) ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) (মাগরিব ও ইশার) সাত রাকআত ও (যোহর ও আসরের) আট রাক'আত একসাথে আদায় করেছেন।*

*হাদীসটির ভাষা ব্যতিক্রম ও বিশেষ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এর মানে এ রকম নয় যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যোহর ও আসরের নামায একসাথে একই ওয়াক্তে এবং মাগরিব ও ইশার নামায একসাথে একই ওয়াক্তে আদায় করেছেন, যেমনটি কেউ কেউ মনে করে থাকেন। এরূপ মনে করার সুযোগ এ কারণে নেই যে, আল্লাহ্ তা'আলা প্রত্যেক নামাযকে সুনির্দিষ্ট ওয়াক্তে আদায় করাকেই ফরয করেছেন। ইরশাদ হয়েছে- “নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করা মু'মিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য" (৪:১০৩)।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এ আদেশ অনুযায়ী সর্বদা প্রত্যেক নামাযকে তার নির্ধারিত সময়েই আদায় করতেন। 'আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) বলেন: “যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই তাঁর শপথ, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কখনো কোন নামাযকে তার অন্য ওয়াক্তে আদায় করেননি। ব্যতিক্রম কেবল (হজ্জের সময়ে) আরাফা-মুযদালিফা” (বুখারী, খ-১, পৃ-২২৮; মুসলিম, খ-১, পৃ-৪১৭)।
এ কারণেই হানাফীগণ বলেন যে, হজ্জের সময়ে আরাফা ও মুযদালিফা ছাড়া অন্য কোথাও কখনো দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে এক ওয়াক্তে আদায় করা জায়িয নয়। তারা এ হাদীসের ব্যাখ্যা দান করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যোহরের নামায যোহরের ওয়াক্তের শেষপ্রান্তে এবং আসরের নামায আসরের ওয়াক্তের একদম শুরুর দিকে আদায় করেন। ফলে উভয় নামায খুব কাছাকাছি সময়ে আদায় করা হয়েছে। বর্ণনাকারী একেই যোহর ও আসরের আট রাক'আত নামায একত্রে আদায় করেছেন- শব্দে ব্যক্ত করেছেন। একই ব্যাখ্যা মাগরির ও ইশার সাত রাকআতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এ ব্যাখ্যাও হাদীস দ্বারাই প্রমাণিত । যেমন হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক দুই নামায একত্রে আদায় করা সম্পর্কিত হাদীস বর্ণিত আছে, কিন্তু সে একত্রীকরণ কিভাবে হত নিজ আমল দ্বারাই তিনি তা দেখিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং সালিম (রাহঃ) বলেন, “সফরে হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ)-এর যখন ব্যস্ততা দেখা দিত, মাগরিবের তিন রাক'আত আদায়ের পর সামান্য একটু দেরি করতেন। তারপর যখন পশ্চিমাকাশের লালিমা অস্ত যেত, অমনি ইশার নামায আদায় করতেন” (বুখারী: হাদীস নং- ১১০৯; আবু দাউদ : ১২১২)। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, উভয় নামায আপাতদৃষ্টিতে একত্র করা হত বটে, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তা আদায় করা হত আপন আপন ওয়াক্তে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন