মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

২৬. পবিত্র কুরআনের তাফসীর অধ্যায়

হাদীস নং: ৫০৭
পবিত্র কুরআনের তাফসীর
হাদীস নং-৫০৭

হযরত আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) রিওয়ায়েত করেন। পবিত্র কুরআনের আয়াতঃ فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ আয়াতে دُخَان (ধোঁয়া) এবং يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرَى (পাকড়াও) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পবিত্র যুগে সমাপ্ত হয়েছে।
عَنِ الْهَيْثَمِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «قَدْ مَضَى الدُّخَانُ وَالْبَطْشَةُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

دُخَان এবং بَطْشَة সম্পর্কে একটি মত হযরত আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, তাঁর মতে উভয় আযাব (ধোঁয়া ও পাকড়াও) নবী করীম (সা)-এর যুগে শেষ হয়ে গেছে। বর্ণিত হাদীস এর সমর্থনে রয়েছে। বুখারী শরীফে বর্ণিত পূর্ণ ঘটনা এই যে, পর্যায়ক্রমে কুরায়শদের নাফরমানীর কারণে আঁ হযরত (সা) তাদের উপর বদ দু'আ করেন। তখন আল্লাহ্ তাআলা তাদের উপর দূর্ভিক্ষ ছড়িয়ে দেন। ফলে অনেক লোক মৃত্যুবরণ করে এবং মানুষ হাড় ও মৃতদেহ খেয়ে জীবন ধারণ করে। দুর্বলতা ও অসুস্থতার কারণে প্রত্যেকেই আকাশে ধোঁয়া দেখতে থাকে। পবিত্র কুরআনে ঐ অবস্থার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে: ………. يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ
এরপর হযরত আবদুল্লাহ (রা) পরের আয়াত উল্লেখ করে স্বীয় মতামত পেশ করেছেন, إِنَّا كَاشِفُو الْعَذَابِ قَلِيلًا إِنَّكُمْ عَائِدُونَ (যদি এ আযাব পরকালে আগমণ করে, তাহলে পরকালের আযাব কখন দূরীভূত হবে এবং তা কখন স্বীয় অবস্থায় ফিরে যাবে ?) সুতরাং এক দল হযরত আবদুল্লাহ (রা)-এর সাথে একমত পোষণ করেন। যেমন মুজাহিদ, আবুল আলীয়া, ইবরাহীম নখঈ, দিহহাক, আতিয়াল আওফী (র) ও অন্যান্যগণ। ইব্ন জারীর (র) এই মত পছন্দ করেন। মোল্লা আলী ক্বারীও স্বীয় মুসনাদের শরাহর মধ্যে এ মাযহাবকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
দ্বিতীয় মতের সম্পর্ক ইব্ন আব্বাস (রা)-এর প্রতি। তিনি বলেছেন: উভয় আযাব কিয়ামতের দিন দেয়া হবে। ইব্ন কাসীর এ ধারণার সাথে একমত এবং তাঁদের মাযহাবের স্বপক্ষে مُبِينٍ শব্দ দ্বারা দলীল দিয়েছেন। অথচ হযরত আবদুল্লাহ-এর রিওয়ায়েতের উপর তা শুধু একটি ধারণা ও সন্দেহযুক্ত বিষয়। অতঃপর يَغْشَى النَّاسَ এর দ্বারা দলীল পেশ করা হয়। এরদ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, এ আযাব সমস্ত কাফিরের উপর সমানভাবে প্রযোজ্য, শুধু মক্কার মুশরিকদের উপর নয়। কিন্তু আয়াতের পূর্বাপর বর্ণনা হযরত আবদুল্লাহর মাযহাবের দলীল পেশ করে থাকে।
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ৫০৭ | মুসলিম বাংলা