মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

২৩. অপরাধ ও সাজার অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৮৬
অপরাধের বর্ণনা
হাদীস নং- ৪৮৬

হযরত জাবির (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: আহতকারী থেকে কিসাস গ্রহণ করা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আহত ব্যক্তির ক্ষত ভাল না হয়।
عَنِ الشَّعْبِيِّ، عُنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يُسْتَفَادُ مِنَ الْجِرَاحِ حَتَّى تَبْرَأَ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

যখন কোন ব্যক্তি কাউকে আহত করে তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত তার ক্ষত ভাল না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আহতকারী থেকে কিসাস গ্রহণ করা যাবে না। এ মাসয়ালার ব্যাপারেও ইমাম আবূ হানীফা, ইমাম মালিক, ইমাম আহমদ এবং ইমাম শাফিঈ (র)-এর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
ইমাম শাফিঈ (র)-এর মত আহত করার পরই আহতকারী থেকে বদলা বা কিসাস আদায় করতে হবে। কেননা এতে কিসাসের কারণ পাওয়া গিয়েছে। তাই এখন বিলম্বের প্রয়োজন নেই।
তিনি এটাকে নিহত ব্যক্তির কিসাসের উপর অনুমান করেছেন যে, এতে বিধান এরূপই রয়েছে।
কিন্তু উল্লেখিত অন্যান্য আয়িম্মা এ মত পোষণ করেন যে, ক্ষত অবস্থায় সাথে সাথে কিসাস গ্রহণ করা যাবে না, বরং ক্ষত ভাল হওয়ার অপেক্ষা করতে হবে। তাঁদের ধারণা বা মত কয়েকটি যুক্তিপূর্ণ কারণের উপর নির্ভর করে। তাঁরা বলেন, ক্ষত বা যখমের মারাত্মক বা হালকা হওয়ার ব্যাপারে শেষ ফল বা অবস্থার দ্বারা উপলব্ধি করা যায় কিন্তু বর্তমান অবস্থার দ্বারা নয়। যে ক্ষত এখন সামান্য ও হালকা দৃষ্টিগোচর হয়, যদি তা ভবিষ্যতে মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং আহত ব্যক্তির জীবনায়ূ শেষ হয়ে যায়, তাহলে আহতকারী ব্যক্তি তার হত্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এটাও সম্ভব যে, জখম একটি সীমায় পৌঁছে ভাল হয়ে যাবে। এটা বর্ণনার একটি দিক। অন্যদিকে রিওয়ায়েতও এর সমর্থন করে। দারে কুতনী এবং বায়হাকী হযরত জাবির (রা) থেকে হাদীস বর্ণনা করেন যে, জখমের পরিমাণ ঠিক করতে হবে। এরপর এক বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অতঃপর বাস্তব অবস্থা জেনে তদনুযায়ী ফয়সালা দিতে হবে। দারে কুতনীর রিওয়ায়েতের সূত্রে ইয়াযিদ ইব্ন আয়ায এটাকে পরিত্যক্ত (متروك) বলে হাদীসকে مجروح বা সন্দেহযুক্ত করে ফেলেন। বায়হাকীর সনদের সূত্রের মধ্যে ইব্ন লাহইয়া রয়েছেন। তিনি তাঁকে সন্দেহজনক বলে চিহ্নিত করেছেন অথচ তিনি সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত। যাক, আমরা একথা বলছি যে, মাযহাবের দলীল হিসেবে প্রমাণের জন্য হযরত শা'বীর সূত্রে বর্ণিত ইমাম আবূ হানীফা (র) বর্ণিত হাদীস কোন অংশে কম নয়।