মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
২২. আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৮২
আত্মাকে নরমকারী কথাবার্তা
হাদীস নং- ৪৮২
হযরত আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা অনবরত তিন দিন তিন রাত্র কখনো পেটপুরে তৃপ্তি সহকারে রুটি খেতে পারিনি। এমনি অবস্থায় হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) আমাদের থেকে বিদায় গ্রহণ করেন। অভাব-অনটন সর্বদা আমাদেরকে আচ্ছাদিত করে রাখে। অবশেষে হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) আমাদের থেকে চির বিদায় গ্রহণ করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণের পর দুনিয়া আমাদের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল।
কোন কোন বর্ণনায় صبت علينا صبا এর পরিবর্তে صب الدنيا علينا صبا উল্লেখ রয়েছে।
কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে যে, মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর পরিবার-পরিজন তিন দিন অনবরত কখনো পেটপুরে তৃপ্তি সহকারে গমের রুটি খেতে পারেননি।
হযরত আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা অনবরত তিন দিন তিন রাত্র কখনো পেটপুরে তৃপ্তি সহকারে রুটি খেতে পারিনি। এমনি অবস্থায় হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) আমাদের থেকে বিদায় গ্রহণ করেন। অভাব-অনটন সর্বদা আমাদেরকে আচ্ছাদিত করে রাখে। অবশেষে হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) আমাদের থেকে চির বিদায় গ্রহণ করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণের পর দুনিয়া আমাদের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল।
কোন কোন বর্ণনায় صبت علينا صبا এর পরিবর্তে صب الدنيا علينا صبا উল্লেখ রয়েছে।
কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে যে, মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর পরিবার-পরিজন তিন দিন অনবরত কখনো পেটপুরে তৃপ্তি সহকারে গমের রুটি খেতে পারেননি।
عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الْأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «مَا شَبِعْنَا ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيهَا مِنْ خُبْزٍ مُتَتَابِعًا، حَتَّى فَارَقَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدُّنْيَا، وَمَازَالَتِ الدُّنْيَا عَلَيْنَا عَسِرَةً، حَتَّى فَارَقَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدُّنْيَا، فَلَمَّا فَارَقَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدُّنْيَا صُبَّتْ عَلَيْنَا صَبًّا» ، وَفِي رِوَايَةٍ: «صَبَّ الدُّنْيَا عَلَيْنَا صَبًّا» .
وَفِي رِوَايَةٍ: «مَا شَبِعَ آلُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مَتَوَالِيَةٍ مِنْ خُبْزِ الْبُرِّ»
وَفِي رِوَايَةٍ: «مَا شَبِعَ آلُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مَتَوَالِيَةٍ مِنْ خُبْزِ الْبُرِّ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটির সঙ্গে অপর একটি বর্ণনাকে সাংঘর্ষিক মনে হয়। তাতে বলা হয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারবর্গকে এক বছরের খাবার একসঙ্গে দিয়ে দিতেন। সে হিসেবে তো তাদের উপোস থাকার কথা নয়। অথচ এ হাদীছে বলা হয়েছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওফাত পর্যন্ত কখনও পরপর দু'দিন যবের রুটিও পেট ভরে খেতে পাননি?
প্রকৃতপক্ষে উভয়ের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কেননা বনূ নাযীর ও খায়বারের সম্পত্তি হাতে আসার পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারবর্গের এক বছরের খাবার দিয়ে দিতেন বটে, কিন্তু তা যে এক বছর জমা থাকত এমন নয়। কেননা যখনই কোনও মেহমান আসত কিংবা অন্য কোনও জরুরত দেখা দিত, তখন তা থেকেই খরচ করতেন। আর মেহমান তো নিয়মিতই তাঁর কাছে আসত। বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিবর্গ দলে দলেই তাঁর কাছে আসতে থাকত। তাদেরকে খাওয়ানো ছাড়াও বিদায়কালে তাদের পাথেয়ও দিয়ে দিতেন। তাতে দেখা যেত এক বছরের খাবার অল্প দিনেই শেষ হয়ে যেত। আর সে কারণেই তাদেরকে প্রায়ই অনাহারে দিন কাটাতে হতো।
বস্তুত তাঁর এ কৃচ্ছতা ছিল ইচ্ছাজনিত। আল্লাহ তা'আলা তো তাঁকে এই এখতিয়ার দিয়েওছিলেন যে, তিনি চাইলে মক্কার পাহাড়গুলোকে তাঁর জন্য সোনায় পরিণত করে দেওয়া হবে এবং তিনি যখন যেখানে যাবেন তা তার সঙ্গে চলতে থাকবে। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। দারিদ্র্যকেই বেছে নিয়েছেন। তারপরও যখন যা হাতে আসত তাতে অন্যদের প্রাধান্য দিতেন।
তাঁর এ কর্মপন্থার মূল কারণ ছিল দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তি। তাঁর চোখে দুনিয়া ছিল অতি তুচ্ছ। দুনিয়া ও দুনিয়ার যাবতীয় আসবাব-উপকরণ তাঁর কাছে এমনকিছু মূল্যবান ছিল না, যার আকাঙ্ক্ষা করা যেতে পারে। এ জীবনপদ্ধতি দ্বারা তিনি উম্মতকেও দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত থাকার উৎসাহ যুগিয়েছেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. অভাব-অনটনে কাতর হতে নেই। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো অভাবের জীবনই বেছে নিয়েছিলেন।
খ. আমরা যে নিয়মিত দু'বেলা খাবার পাচ্ছি, সেজন্য প্রাণভরে শোকর আদায় করা উচিত। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গ অনাহারের কত কষ্টই না সহ্য করেছেন!
প্রকৃতপক্ষে উভয়ের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কেননা বনূ নাযীর ও খায়বারের সম্পত্তি হাতে আসার পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারবর্গের এক বছরের খাবার দিয়ে দিতেন বটে, কিন্তু তা যে এক বছর জমা থাকত এমন নয়। কেননা যখনই কোনও মেহমান আসত কিংবা অন্য কোনও জরুরত দেখা দিত, তখন তা থেকেই খরচ করতেন। আর মেহমান তো নিয়মিতই তাঁর কাছে আসত। বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিবর্গ দলে দলেই তাঁর কাছে আসতে থাকত। তাদেরকে খাওয়ানো ছাড়াও বিদায়কালে তাদের পাথেয়ও দিয়ে দিতেন। তাতে দেখা যেত এক বছরের খাবার অল্প দিনেই শেষ হয়ে যেত। আর সে কারণেই তাদেরকে প্রায়ই অনাহারে দিন কাটাতে হতো।
বস্তুত তাঁর এ কৃচ্ছতা ছিল ইচ্ছাজনিত। আল্লাহ তা'আলা তো তাঁকে এই এখতিয়ার দিয়েওছিলেন যে, তিনি চাইলে মক্কার পাহাড়গুলোকে তাঁর জন্য সোনায় পরিণত করে দেওয়া হবে এবং তিনি যখন যেখানে যাবেন তা তার সঙ্গে চলতে থাকবে। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। দারিদ্র্যকেই বেছে নিয়েছেন। তারপরও যখন যা হাতে আসত তাতে অন্যদের প্রাধান্য দিতেন।
তাঁর এ কর্মপন্থার মূল কারণ ছিল দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তি। তাঁর চোখে দুনিয়া ছিল অতি তুচ্ছ। দুনিয়া ও দুনিয়ার যাবতীয় আসবাব-উপকরণ তাঁর কাছে এমনকিছু মূল্যবান ছিল না, যার আকাঙ্ক্ষা করা যেতে পারে। এ জীবনপদ্ধতি দ্বারা তিনি উম্মতকেও দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত থাকার উৎসাহ যুগিয়েছেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. অভাব-অনটনে কাতর হতে নেই। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো অভাবের জীবনই বেছে নিয়েছিলেন।
খ. আমরা যে নিয়মিত দু'বেলা খাবার পাচ্ছি, সেজন্য প্রাণভরে শোকর আদায় করা উচিত। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গ অনাহারের কত কষ্টই না সহ্য করেছেন!
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
