মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

১৭. ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান

হাদীস নং: ৩৩৯
দরের উপর দর করা নিষিদ্ধ
হাদীস নং- ৩৩৯

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) এবং হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন: কোন ব্যক্তি যেন তার ভাই-এর দরের উপর দর না করে এবং তার ভাই-এর বিবাহের পয়গামের উপর পয়গাম প্রেরণ না করে। আর এরূপ নারীকে বিবাহ না করবে যার ফুফু বা খালা তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আব্দ্ধ। কোন নারী যেন তার বোনের তালাকের কামনা না করে যাতে তার থালা বা পেয়ালার দ্রব্য নিজের উপর ফিরে আসে। কেননা তার রিযিকদাতা আল্লাহ তা'আলা। পাথর নিক্ষেপ করে বিক্রি করো না এবং যখন শ্রমিক নিয়োগ কর, তখন পারিশ্রমিক বলে দাও।
عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مَنْ لَا أَتَّهِمُ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ: «لَا يَسْتَامُ الرَّجُلُ عَلَى سَوْمِ أَخِيهِ، وَلَا يَنْكِحُ عَلَى خِطْبَةِ أَخِيهِ، وَلَا تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ عَلَى عَمَّتِهَا وَخَالَتِهَا، وَلَا تَسْأَلُ الْمَرْأَةُ طَلَاقَ أُخْتِهَا، لِتَكْفَأَ مَا فِي صَحْفَتِهَا، فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ رَازِقُهَا، وَلَا تَبَايَعُوا بِإِلْقَاءِ الْحَجَرِ، وَإِذَا اسْتَأْجَرْتَ أَجِيرًا فَأَعْلِمْهُ أَجْرَهُ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীসে কোন কোন মাসয়ালার অংশবিশেষ বর্ণনা করা হয়েছে যা সামাজিক জীবনে প্রত্যহ সামনে এসে থাকে। হাদীসে প্রথম দরের উপর দর করার নিষেধ রয়েছে। তা হলো এই যে, দু' ব্যক্তির মধ্যে কোন একটি দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের কথাবার্তা হয়ে উভয়ে সম্মত হয়েছে। অর্থাৎ বিক্রেতা বিক্রির জন্য সম্মত হয়ে উভয়ের মধ্যে মূল্য নির্ধারণ হয়েছে, শুধু লেনদেন বাকী আছে। এ সময় কারো পক্ষে দরদাম করে তার ভাই-এর ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি করা জায়েয নয়। যদি ক্রয়-বিক্রয়ের কথাবার্তা চূড়ান্ত পর্যায়ে না পৌঁছে থাকে, তা হলে কয়েকজনে নরদাম করা অবৈধ নয়। সুতরাং নিলামে বিক্রি জায়েয আছে।
দ্বিতীয়ত, বিবাহের পয়গামের উপর পয়গাম বা ঘটক প্রেরণ করা এ সময় বৈধ নয় যখন উভয় পক্ষ কথাবার্তা বলে সম্মত হয়েছে, শুধু আকদ বাকী রয়েছে। এ অবস্থায় বিবাহের জন্য হস্তক্ষেপ করা নিষিদ্ধ। কিন্তু উভয়পক্ষ যদি সম্মত না হয়ে থাকে, তা হলে একই সময় বিভিন্ন পয়গাম বা বার্তা প্রেরণ করা যায়। এতে কোন দোষ নেই। যেমন ফাতিমা বিনতে কায়েসের জন্য একই সময় মুআবিয়া ও আবি জাহম-এর পক্ষ থেকে বিবাহের পয়গাম আসে। কিন্তু নবী করীম (সা) এটাকে খারাপ বা দূষণীয় বলেননি। অবশেষে হযরত উসামা (রা)-এর সাথে বিবাহের সিদ্ধান্ত হয়।
তৃতীয়ত, স্বীয় বোনের তালাক কামনা করার পদ্ধতি হলো এই যেমন একজন অপরিচিত নারী অপর কোন নারীর সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য প্রত্যক্ষ করে হিংসার বশবর্তী হয়ে তার স্বামীকে উদ্বুদ্ধ করে যে, তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে, যাতে খোরপোষ এবং জীবন-জীবিকার অন্যান্য আসবাবপত্র তালাক প্রদত্ত নারীর পরিবর্তে তার অধিকারে এসে যায়। এটাকেই আঁ হযরত (সা) উদাহরণ স্বরূপ অপরের থালার দ্রব্য নিজের থালায় ঢালার কথা বলেছেন। এটা জায়েয নয়। কেননা রিযিকদাতা একমাত্র আল্লাহ। রিযিকের আশংকায় বা দরিদ্রতার চিন্তায় এরূপ করা অনুচিত।
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ৩৩৯ | মুসলিম বাংলা