মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
১৫. শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
হাদীস নং: ৩১৩
মদ্যপান এবং চুরির শাস্তির বর্ণনা
হাদীস নং- ৩১৩
হযরত ইয়াহইয়া (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ)-এর নিকট এক ব্যক্তি তার নেশাগ্রস্থ ভ্রাতুষ্পুত্রকে নিয়ে আগমণ করেন। তখন সে নেশার কারণে অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। তাঁর নির্দেশে নেশাগ্রস্থ ব্যক্তিকে জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত বন্দী করে রাখা হলো। অতঃপর হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) চাবুক আনতে বললেন এবং তার ফলের থোকা কেটে ফেললেন, এরপর এগুলো নরম করলেন।এবার জল্লাদকে ডেকে তার চামড়ার উপর চাবুক মারার নির্দেশ করেন এবং বললেন, মারার সময় নিজের হাত এতটুকু উঠাবে যাতে তোমার বগল দেখা না যায়। ইয়াহইয়া (রাহঃ) বলেন, স্বয়ং আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) চাবুক গণনার জন্য বসেন এবং আশিটি চাবুক মারার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তখন ঐ বৃদ্ধ লোকটি (মদ্যপানকারীর চাচা) বলল, হে আবু আব্দুর রহমান, আল্লাহর কসম! সে হলো আমার ভাতিজা, তাকে ছাড়া আমার কোন সন্তান নেই। হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) বললেন, তুমি চাচা হিসেবে অত্যন্ত খারাপ, তুমি ইয়াতীমের অভিভাবক হয়েছ। আল্লাহর কসম! তুমি তাকে বাল্যকালে না আদব শিক্ষা দিয়েছ, না প্রাপ্ত বয়সে তার দোষত্রুটি গোপন রেখেছ।
ইয়াহইয়া (রাহঃ) বলেন, অতঃপর হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করে বলেন, ইসলামে সর্বপ্রথম এক চোরের উপর শাস্তির বিধান প্রয়োগ করা হয়। ঐ চোরকে নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণে যখন ঐ চোর দোষী প্রমাণিত হয়, তখন আঁ হযরত (ﷺ) বলেন, তাকে নিয়ে যাও এবং চুরির অপরাধে তার হাত কেটে দাও। যখন তাকে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন হুযূর (ﷺ)-এর চেহারা মুবারকের রংয়ে পরিবর্তন দেখা দেয়। উপস্থিত কোন একজন আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মনে হয় এ কাজটি আপনার উপর অত্যন্ত কঠিন হয়েছে? তিনি বললেন : কেন কঠিন হবে না, তোমরা নিজের ভাই-এর ব্যাপারে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ে যাও ? লোকজন আরয করলো, তাকে কি ছেড়ে দেয়া যায় না? তিনি বললেন: তাকে আমার কাছে নিয়ে আসার পূর্বে কি তোমরা এটা করতে পারলে না? কেননা ইমাম বা নেতার কাছে যখন কোন অপরাধী শাস্তির যোগ্য হয়ে যায়, তখন তাকে মুক্তি দেয়া তার জন্য জায়েয ও বৈধ নয়। এরপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন “তোমাদের উচিৎ ক্ষমা করে দেয়া এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়া।"
হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে অপর এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি তার নেশাগ্রস্থ ভাতিজাকে নিয়ে তাঁর নিকট আগমণ করে। তখন তিনি নির্দেশ প্রদান করেন যে, তাকে জোরে নাড়া দাও; এবং দেখ তার থেকে মদের গন্ধ পাওয়া যায় কিনা। তিনি তাকে বন্দী করার নির্দেশ দিলেন। যখন তার নেশা দূরীভূত হয়, তখন তিনি তাকে ডাকলেন এবং একটি চাবুক আনার জন্য বললেন এবং তাঁর নির্দেশে থোকা কেটে ফেলা হলো।... হাদীসের শেষ পর্যন্ত।
হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে অপর এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, ইসলামের প্রারম্ভে অপরাধের কারণে যে শাস্তির প্রদান করা হয়, তাহলো এই যে, নবী করীম (ﷺ)-এর খিদমতে একজন চোরকে উপস্থিত করা হয়। (সাক্ষ্য-প্রমাণে অপরাধ সাব্যস্ত হওয়ায়) তাঁর নির্দেশে চোরের হাত কর্তন করা হয়। যখন চোরকে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন সাহাবায়ে কিরাম আঁ হযরত (ﷺ)-এর পবিত্র চেহারার দিকে লক্ষ্য করে দেখতে পান যে, তাঁর চেহারা মুবারক কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। কোন একজন বললেন, হে আল্লাহর রাসূল। এ নির্দেশ কি আপনার উপর কঠিন কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এটা কি আমার উপর কষ্টদায়ক নয় যে, তোমরা স্বীয় ভাই-এর বিরুদ্ধে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ে যাও? সবাই আরয করল, আমরা কি তাকে শান্তি দেব না? ছযূর (ﷺ) বললেন, আমার নিকট নিয়ে আসার পূর্বে তোমরা কি এটা করতে পারলে না? কেননা ইমাম বা নেতার সামনে যখন শাস্তিযোগ্য কোন বিষয় উত্থাপন করা হয়, তখন এটা বাস্তবায়ন না করে মুক্তি দেয়া কখনো উচিৎ নয়। অতঃপর এ আয়াত তিলাওয়াত করেন। وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا....الآية
হযরত ইয়াহইয়া (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ)-এর নিকট এক ব্যক্তি তার নেশাগ্রস্থ ভ্রাতুষ্পুত্রকে নিয়ে আগমণ করেন। তখন সে নেশার কারণে অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। তাঁর নির্দেশে নেশাগ্রস্থ ব্যক্তিকে জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত বন্দী করে রাখা হলো। অতঃপর হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) চাবুক আনতে বললেন এবং তার ফলের থোকা কেটে ফেললেন, এরপর এগুলো নরম করলেন।এবার জল্লাদকে ডেকে তার চামড়ার উপর চাবুক মারার নির্দেশ করেন এবং বললেন, মারার সময় নিজের হাত এতটুকু উঠাবে যাতে তোমার বগল দেখা না যায়। ইয়াহইয়া (রাহঃ) বলেন, স্বয়ং আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) চাবুক গণনার জন্য বসেন এবং আশিটি চাবুক মারার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তখন ঐ বৃদ্ধ লোকটি (মদ্যপানকারীর চাচা) বলল, হে আবু আব্দুর রহমান, আল্লাহর কসম! সে হলো আমার ভাতিজা, তাকে ছাড়া আমার কোন সন্তান নেই। হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) বললেন, তুমি চাচা হিসেবে অত্যন্ত খারাপ, তুমি ইয়াতীমের অভিভাবক হয়েছ। আল্লাহর কসম! তুমি তাকে বাল্যকালে না আদব শিক্ষা দিয়েছ, না প্রাপ্ত বয়সে তার দোষত্রুটি গোপন রেখেছ।
ইয়াহইয়া (রাহঃ) বলেন, অতঃপর হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করে বলেন, ইসলামে সর্বপ্রথম এক চোরের উপর শাস্তির বিধান প্রয়োগ করা হয়। ঐ চোরকে নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণে যখন ঐ চোর দোষী প্রমাণিত হয়, তখন আঁ হযরত (ﷺ) বলেন, তাকে নিয়ে যাও এবং চুরির অপরাধে তার হাত কেটে দাও। যখন তাকে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন হুযূর (ﷺ)-এর চেহারা মুবারকের রংয়ে পরিবর্তন দেখা দেয়। উপস্থিত কোন একজন আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মনে হয় এ কাজটি আপনার উপর অত্যন্ত কঠিন হয়েছে? তিনি বললেন : কেন কঠিন হবে না, তোমরা নিজের ভাই-এর ব্যাপারে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ে যাও ? লোকজন আরয করলো, তাকে কি ছেড়ে দেয়া যায় না? তিনি বললেন: তাকে আমার কাছে নিয়ে আসার পূর্বে কি তোমরা এটা করতে পারলে না? কেননা ইমাম বা নেতার কাছে যখন কোন অপরাধী শাস্তির যোগ্য হয়ে যায়, তখন তাকে মুক্তি দেয়া তার জন্য জায়েয ও বৈধ নয়। এরপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন “তোমাদের উচিৎ ক্ষমা করে দেয়া এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়া।"
হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে অপর এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি তার নেশাগ্রস্থ ভাতিজাকে নিয়ে তাঁর নিকট আগমণ করে। তখন তিনি নির্দেশ প্রদান করেন যে, তাকে জোরে নাড়া দাও; এবং দেখ তার থেকে মদের গন্ধ পাওয়া যায় কিনা। তিনি তাকে বন্দী করার নির্দেশ দিলেন। যখন তার নেশা দূরীভূত হয়, তখন তিনি তাকে ডাকলেন এবং একটি চাবুক আনার জন্য বললেন এবং তাঁর নির্দেশে থোকা কেটে ফেলা হলো।... হাদীসের শেষ পর্যন্ত।
হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে অপর এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, ইসলামের প্রারম্ভে অপরাধের কারণে যে শাস্তির প্রদান করা হয়, তাহলো এই যে, নবী করীম (ﷺ)-এর খিদমতে একজন চোরকে উপস্থিত করা হয়। (সাক্ষ্য-প্রমাণে অপরাধ সাব্যস্ত হওয়ায়) তাঁর নির্দেশে চোরের হাত কর্তন করা হয়। যখন চোরকে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন সাহাবায়ে কিরাম আঁ হযরত (ﷺ)-এর পবিত্র চেহারার দিকে লক্ষ্য করে দেখতে পান যে, তাঁর চেহারা মুবারক কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। কোন একজন বললেন, হে আল্লাহর রাসূল। এ নির্দেশ কি আপনার উপর কঠিন কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এটা কি আমার উপর কষ্টদায়ক নয় যে, তোমরা স্বীয় ভাই-এর বিরুদ্ধে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ে যাও? সবাই আরয করল, আমরা কি তাকে শান্তি দেব না? ছযূর (ﷺ) বললেন, আমার নিকট নিয়ে আসার পূর্বে তোমরা কি এটা করতে পারলে না? কেননা ইমাম বা নেতার সামনে যখন শাস্তিযোগ্য কোন বিষয় উত্থাপন করা হয়, তখন এটা বাস্তবায়ন না করে মুক্তি দেয়া কখনো উচিৎ নয়। অতঃপর এ আয়াত তিলাওয়াত করেন। وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا....الآية
عَنْ يَحْيَى، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَتَاهُ رَجُلٌ بِابْنِ أَخٍ لَهُ نَشْوَانَ، قَدْ ذَهَبَ عَقْلُهُ، فَأَمَرَ بِهِ، فَحُبِسَ حَتَّى إِذَا صَحَا وَأَفَاقَ عَنِ السُّكْرِ، دَعَا بِالسَّوْطِ فَقَطَعَ ثَمَرَتَهُ وَرَقَّهُ، وَدَعَا جَلَّادًا؛ فَقَالَ: اجْلِدْهُ عَلَى جِلْدِهِ، وَارْفَعْ يَدَكَ فِي حَدِّكَ وَلَا تَبْدُ ضَبْعَيْكَ، قَالَ: وَأَنْشَأَ عَبْدُ اللَّهِ يَعُدُّ حَتَّى أَكْمَلَ ثَمَانِينَ جَلْدَةً خَلَّى سَبِيلَهُ، فَقَالَ الشَّيْخُ: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَاللَّهِ إِنَّهُ لَابْنُ أَخِي، وَمَالِي وَلَدٌ غَيْرَهُ، فَقَالَ: شَرُّ الْعَمِّ وَالِي الْيَتِيمِ، أَنْتَ كُنْتَ، وَاللَّهِ مَا أَحْسَنْتَ أَدَبَهُ صَغِيرًا، وَلَا سَتَرْتَهُ كَبِيرًا، قَالَ: ثُمَّ أَنْشَأَ يُحَدِّثُنَا، فَقَالَ: إِنَّ أَوَّلَ حَدٍّ أُقِيمَ فِي الْإِسْلَامِ لِسَارِقٍ أُتِيَ بِهِ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا قَامَتْ عَلَيْهِ الْبَيِّنَةُ، قَالَ: انْطَلِقُوا بِهِ، فَاقْطَعُوهُ فَلَمَّا انْطَلَقَ بِهِ نَظَرَ إِلَى وَجْهِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَأَنَّمَا سُفَّ عَلَيْهِ وَاللَّهِ الرَّمَادُ، فَقَالَ بَعْضُ جُلَسَائِهِ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَكَأَنَّ هَذَا قَدِ اشْتَدَّ عَلَيْكَ؟ قَالَ: " وَمَا يَمْنَعُنِي أَنْ لَا يَشْتَدَّ عَلَيَّ، أَنْ تَكُونُوا أَعْوَانَ الشَّيْطَانِ عَلَى أَخِيكُمْ، قَالُوا: فَلَوْلَا خَلَّيْتَ سَبِيلَهُ، قَالَ: أَفَلَا كَانَ هَذَا قَبْلَ أَنْ تَأْتُونِي بِهِ، فَإِنَّ الْإِمَامَ إِذَا انْتَهَى إِلَيْهِ حَدٌّ، فَلَيْسَ لِأَحَدٍ أَنْ يُغَلِّطَهُ، قَالَ: ثُمَّ تَلَا: {وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا} [النور: 22] "، وَفِي رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَجُلًا أَتَى بِابْنِ أَخٍ لَهُ سَكْرَانَ، فَقَالَ: تَرْتِرُوهُ وَمَزْمِزُوهُ وَاسْتَنْكِهُوهُ، فَوَجَدُوا مِنْهُ رِيحَ شَرَابٍ، فَلَمَّا صَحَا دَعَا بِهِ وَدَعَا بِسَوْطٍ، فَأَمَرَ بِهِ فَقُطِعَتْ ثَمَرَتُهُ. . . وَذَكَرَ الْحَدِيثَ.
وَفِي رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: إِنَّ أَوَّلَ حَدٍّ أُقِيمَ فِي الْإِسْلَامِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُتِيَ بِسَارِقٍ فَأَمَرَ بِهِ فَقُطِعَتْ يَدُهُ، فَلَمَّا انْطَلَقَ بِهِ نَظَرَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَأَنَّمَا يُسَفُّ فِي وَجْهِهِ الرَّمَادُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَأَنَّهُ شَقَّ عَلَيْكَ، فَقَالَ: " أَلَا يَشُقُّ عَلَيَّ أَنْ تَكُونُوا أَعْوَانًا لِلشَّيْطَانِ عَلَى أَخِيكُمْ؟ قَالُوا: أَفَلَا تَدَعُهُ؟ أَفَلَا كَانَ هَذَا قَبْلَ أَنْ يُؤْتَى بِهِ، إِنَّ الْإِمَامَ إِذَا رُفِعَ إِلَيْهِ الْحَدُّ، فَلَيْسَ يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَدَعَهُ حَتَّى يُمْضِيَهُ، ثُمَّ تَلَا {وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا} [النور: 22] . . . . . . الْآيَةَ "
وَفِي رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: إِنَّ أَوَّلَ حَدٍّ أُقِيمَ فِي الْإِسْلَامِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُتِيَ بِسَارِقٍ فَأَمَرَ بِهِ فَقُطِعَتْ يَدُهُ، فَلَمَّا انْطَلَقَ بِهِ نَظَرَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَأَنَّمَا يُسَفُّ فِي وَجْهِهِ الرَّمَادُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَأَنَّهُ شَقَّ عَلَيْكَ، فَقَالَ: " أَلَا يَشُقُّ عَلَيَّ أَنْ تَكُونُوا أَعْوَانًا لِلشَّيْطَانِ عَلَى أَخِيكُمْ؟ قَالُوا: أَفَلَا تَدَعُهُ؟ أَفَلَا كَانَ هَذَا قَبْلَ أَنْ يُؤْتَى بِهِ، إِنَّ الْإِمَامَ إِذَا رُفِعَ إِلَيْهِ الْحَدُّ، فَلَيْسَ يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَدَعَهُ حَتَّى يُمْضِيَهُ، ثُمَّ تَلَا {وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا} [النور: 22] . . . . . . الْآيَةَ "
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হযরত ইব্ন মাসউদ (রা) বর্ণিত হাদীসে আঁ হযরত (সা)-এর বাস্তব কার্যক্রমে (আমল) বিভিন্ন শিক্ষণীয় বিষয় এবং দীনি ফায়দা লুক্কায়িত আছে। যেমন হযরত ইব্ন মাসউদ (রা)-এর হাদীস দ্বারা শরীয়তের এ মাসয়ালা জানা যায় যে, নেশাগ্রস্থ ব্যক্তিকে জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত শাস্তি প্রদান করা যাবে না। তাকে বন্দী করে নেশার ভাব সম্পূর্ণ দূর না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কেননা নেশা অবস্থায় শাস্তি প্রদান করা হলে নেশাগ্রস্থ ব্যক্তি ব্যথা অনুভব করবে না। আর ব্যথা অনুভব না হলে এর শিক্ষা লাভ করবে কিভাবে? ভবিষ্যতে অন্যায় ও অপরাধ থেকে বিরত রাখাই হলো শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্য।
দ্বিতীয়ত নেশার এ পরিমাণ দ্বারা শাস্তি ওয়াজিব হওয়ার পরিমাণও ধারণা করা যায় এবং তা হলো এই যে, নেশাগ্রস্থ এ অবস্থায় পৌঁছবে যাতে তার জ্ঞান ও চিন্তা-চেতনা সমস্ত কিছু লোপ পায়।
তৃতীয়ত নেশাগ্রস্থকে কোড়া বা চাবুক দ্বারা মারতে হবে এবং এর অগ্রভাগ কেটে দিতে হবে যাতে এটা আরো সরু হয়ে যায়, দোর্রার আকৃতি ধারণ করে। খেজুরের ডাল অথবা জুতার দ্বারা এ শাস্তি প্রদান করা যাবে না। অবশ্য মদ হারাম হওয়ার সূচনালগ্নে এভাবে শাস্তি প্রদান করা হতো কিন্তু পরে তা রহিত হয়ে যায় এবং শাস্তির জন্য চাবুকের ব্যবহার প্রচলিত হয়। এমনিভাবে প্রথমত চাবুক দ্বারা চল্লিশটি বেত মারা হতো, পরে এটাও রহিত হয়ে যায়। হযরত উমর (রা)-এর খিলাফতকালে চাবুকের আশিটি আঘাত নির্ধারণ করা হয়।
চতুর্থত খালি শরীরের উপর শাস্তি প্রদান করতে হবে, কাপড়ের উপর নয়।
পঞ্চম হলো, চাবুক মারার সময় জল্লাদ উপরের দিকে হাত উঠিয়ে মারবে, হাত নীচু করে মারবে না। কেননা এতে আঘাত হালকাভাবে লাগে।
ষষ্ঠ হলো, হাত এতটুকু উঠাবে না, যাতে বগল দৃষ্ট হয়।
সপ্তমত অভিভাবক ও মুরুব্বীদের কর্তব্য হলো ছোটদের লালন পালন করা এবং তাদেরকে চারিত্রিক ও দীনি শিক্ষা প্রদান করা। যদি তারা তাদের এ দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে আল্লাহর নিকট তারা অভিযুক্ত ও শাস্তির যোগ্য হবে।
অষ্টমত যদি নেশাগ্রস্থের মুখ থেকে মদের গন্ধ আসে, তাহলে শাস্তি প্রদানের জন্য এ প্রমাণই যথেষ্ট।
নবম, বিচারকের শাস্তির দ্বারা অপরাধীর ব্যথা অনুভব করতে হবে, শাস্তি প্রদানে প্রশ্রয় বা পক্ষপাতিত্ব করা উচিৎ হবে না।
দশম, নেতা বা বিচারকের সামনে অপরাধীকে উপস্থাপন করার পূর্বে জনগণের উচিৎ যতটুকু সম্ভব ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা।
একাদশ, যখন অপরাধীর বিষয়টি নেতা বা বিচারকের সামনে উপস্থাপন করা হয় এবং সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হয় কিন্তু সহানুভূতির কোন উপায় না থাকে, তা হলে তাকে ক্ষমা করে দেয়া অথবা বিচারে অনীহা প্রকাশ করা বিচারকের কোনমতেই উচিৎ হবে না।
দ্বিতীয়ত নেশার এ পরিমাণ দ্বারা শাস্তি ওয়াজিব হওয়ার পরিমাণও ধারণা করা যায় এবং তা হলো এই যে, নেশাগ্রস্থ এ অবস্থায় পৌঁছবে যাতে তার জ্ঞান ও চিন্তা-চেতনা সমস্ত কিছু লোপ পায়।
তৃতীয়ত নেশাগ্রস্থকে কোড়া বা চাবুক দ্বারা মারতে হবে এবং এর অগ্রভাগ কেটে দিতে হবে যাতে এটা আরো সরু হয়ে যায়, দোর্রার আকৃতি ধারণ করে। খেজুরের ডাল অথবা জুতার দ্বারা এ শাস্তি প্রদান করা যাবে না। অবশ্য মদ হারাম হওয়ার সূচনালগ্নে এভাবে শাস্তি প্রদান করা হতো কিন্তু পরে তা রহিত হয়ে যায় এবং শাস্তির জন্য চাবুকের ব্যবহার প্রচলিত হয়। এমনিভাবে প্রথমত চাবুক দ্বারা চল্লিশটি বেত মারা হতো, পরে এটাও রহিত হয়ে যায়। হযরত উমর (রা)-এর খিলাফতকালে চাবুকের আশিটি আঘাত নির্ধারণ করা হয়।
চতুর্থত খালি শরীরের উপর শাস্তি প্রদান করতে হবে, কাপড়ের উপর নয়।
পঞ্চম হলো, চাবুক মারার সময় জল্লাদ উপরের দিকে হাত উঠিয়ে মারবে, হাত নীচু করে মারবে না। কেননা এতে আঘাত হালকাভাবে লাগে।
ষষ্ঠ হলো, হাত এতটুকু উঠাবে না, যাতে বগল দৃষ্ট হয়।
সপ্তমত অভিভাবক ও মুরুব্বীদের কর্তব্য হলো ছোটদের লালন পালন করা এবং তাদেরকে চারিত্রিক ও দীনি শিক্ষা প্রদান করা। যদি তারা তাদের এ দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে আল্লাহর নিকট তারা অভিযুক্ত ও শাস্তির যোগ্য হবে।
অষ্টমত যদি নেশাগ্রস্থের মুখ থেকে মদের গন্ধ আসে, তাহলে শাস্তি প্রদানের জন্য এ প্রমাণই যথেষ্ট।
নবম, বিচারকের শাস্তির দ্বারা অপরাধীর ব্যথা অনুভব করতে হবে, শাস্তি প্রদানে প্রশ্রয় বা পক্ষপাতিত্ব করা উচিৎ হবে না।
দশম, নেতা বা বিচারকের সামনে অপরাধীকে উপস্থাপন করার পূর্বে জনগণের উচিৎ যতটুকু সম্ভব ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা।
একাদশ, যখন অপরাধীর বিষয়টি নেতা বা বিচারকের সামনে উপস্থাপন করা হয় এবং সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হয় কিন্তু সহানুভূতির কোন উপায় না থাকে, তা হলে তাকে ক্ষমা করে দেয়া অথবা বিচারে অনীহা প্রকাশ করা বিচারকের কোনমতেই উচিৎ হবে না।
