মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৮. বিবাহ-শাদীর অধ্যায়

হাদীস নং: ২৭৮
মহিলাদের মলদ্বারে সঙ্গম করা হারাম
হাদীস নং- ২৭৮

হযরত আবু যর (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ মহিলাদের মলদ্বারে সঙ্গম করা হারাম।
عَنْ حُمَيْدٍ الْأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِتْيَانُ النِّسَاءِ نَحْوَ الْمَحَايِشِ حَرَامٌ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীসের দ্বারা মহিলাদের মলদ্বারে সঙ্গম করা হারাম করা হয়েছে। পরবর্তী হাদীসে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ব্যবহারিক ও যুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকেও এ কাজ অত্যন্ত অশ্লীল ও অপসন্দনীয়। প্রত্যেক সুস্থ ও বিবেকবান মানুষ এটাকে ঘৃণা করে থাকে এবং কদর্যপূর্ণ ও স্বাদহীন মনে করে থাকে। আল্লামা ইবন কায়্যিম (র) এর অনিষ্টকর দিকগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এগুলোর মধ্যে ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে কিছু এখানে উল্লেখ করা হলো। এরদ্বারা প্রতীয়মান হবে যে, এটা কিরূপ গর্হিত কাজ।
প্রথমতঃ এটা ময়লা ও দূর্গন্ধময় বস্তু বের হওয়ার স্থান। সঙ্গমের স্বাদ আস্বাদনের সাথে এ ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত বস্তুর সম্পর্ক তো দূরের কথা, এ অবস্থা থেকে মানুষ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতাই তালাশ করে থাকে। শরীয়তের নির্দেশ ছাড়াও প্রত্যেক পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র ব্যক্তি স্বভাবগতভাবেই এর থেকে মুক্ত থাকতে চায়। এ কারণেই ঋতুবর্তী মহিলার সাথে সঙ্গম করা হারাম করা হয়েছে। কেননা কদর্য ও ময়লা বস্তু বের হওয়া কে পসন্দ করবে?
দ্বিতীয়তঃ সঙ্গম পুরুষের উপর নারীর একটি অধিকার, যা আদায় করা ওয়াজিব। এ অবস্থায় ঐ অধিকার বিনষ্ট হয়ে থাকে।
তৃতীয়তঃ প্রকৃতি এ স্থান ঐ কাজের জন্য তৈরি করেনি। সুতরাং এ কাজে অগ্রগামী বা উদ্বুদ্ধ হওয়া স্রষ্টার সৃষ্টির সাথে বিরুদ্ধাচরণ করারই নামান্তর।
চতুর্থতঃ চিকিৎসকদের মতামত হলো এই যে, মলদ্বারে সঙ্গম করা পুরুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কেননা যোনীর মধ্যে এক আকর্ষণ রয়েছে যা পুরুষাঙ্গ থেকে বীর্য শোষণ করে নেয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত আরামদায়ক ও শান্তির কারণ হয়ে থাকে। অপরপক্ষে মলদ্বারের এ বৈশিষ্ট্য নেই। এতে কিছু বের করার ক্ষমতা আছে কিন্তু আকর্ষণ ও শোষণের ক্ষমতা নেই।
তাই এ অবস্থায় বীর্যের কিছু অংশ পুরুষাঙ্গের ভিতর থেকে যায় যা অনেক রোগের কারণ হয়ে থাকে এবং স্বভাব ও চরিত্রের অনিষ্টের কারণ হয়ে থাকে।
পঞ্চমতঃ এ অবস্থায় শিরার উপর অস্বাভাবিক জোর পড়ে থাকে যা শিরার জন্য ক্ষতিকর। এ ছাড়াও আরো অনেক অনিষ্টতা রয়েছে। সুতরাং এ সমস্ত অনিষ্টের দিকে লক্ষ্য রেখেই শরীয়ত এ কুকর্মের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ২৭৮ | মুসলিম বাংলা