মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৪. নামায অধ্যায়
হাদীস নং: ১৬৫
নামায কিসের দ্বারা ভঙ্গ হয় এবং কিসের দ্বারা ভঙ্গ হয় না।
১৬৫। হযরত আসওয়াদ ইবনে ইয়াযীদ হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে ঐ বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যা দ্বারা (নামাযীদের সামনে দিয়ে অতিক্রম করার ফলে) নামায ভঙ্গ হয়ে যায়। তিনি বললেন, হে ইরাকবাসী! তোমরা মনে করেছ গাধা, কুকুর ও বিড়াল (নামাযীদের) সামনে দিয়ে অতিক্রম করলে নামায ভঙ্গ হয়ে যায়। সম্ভবত তোমরা আমাদেরকে (মহিলাদের) তাদের সাথে মিলিয়ে দিয়েছ। যতটুকু সম্ভব নামাযের সামনে দিয়ে যাতায়াতকারীকে বাধা প্রদান কর। কেননা নবী করীম (ﷺ) নামায আদায় করতেন এবং আমি তাঁর পাশে শুয়ে থাকতাম। তাঁর কাপড়ের একটি অংশ আমার উপর পড়ে থাকত।
عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الْأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ عَمَّا يَقْطَعُ الصَّلَاةَ، فَقَالَتْ: يَا أَهْلَ الْعِرَاقِ، تَزْعُمُونَ أَنَّ الْحِمَارَ وَالْمَرْأَةَ وَالْكَلْبَ وَالسِّنَّوْرُ يَقْطَعُونَ الصَّلَاةَ، قَرَنْتُمُونَا بِهِمْ، ادْرَأْ مَا اسْتَطَعْتَ، «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي وَأَنَا نَائِمَةٌ إِلَى جَنْبِهِ، عَلَيْهِ ثَوْبٌ جَانِبُهُ عَلَيَّ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
উপরোক্ত বিষয়ে সহীহ মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, আঁ হযরত (সা) বলেছেনঃনামাযীর সামনে যদি সুতরা (سترة) না থাকে, তা হলে মহিলা, গাধা ও কাল কুকুর সামনে নিয়ে অতিক্রম করলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। এই হাদীসের দৃষ্টিকোণ থেকে জাহিরীয়াসের মাযহাৰ হলো এই যে, এগুলো নামাযীদের সামনে দিয়ে অতিক্রা করা নামায ভঙ্গের কারণ। ইমাম আবু হানীফা (র), ইমাম মালিক (র) এবং ইমাম শাফিঈ (র)-এর মাযহাব এর বিরোধী। ইমাম আহমদ (র) মহিলা ও গাধার ব্যাপারে কোন চূড়ান্ত ফয়সালা বা সিদ্ধান্ত প্রদান করেন নি, তবে কুকুরকে নামায ভঙ্গের কারণ বলে মতামত পেশ করেছেন। মূলত এটাই হলো ইমামগণের মধ্যে মতানৈক্যের মূল কারণ।
এবার ইমামগণের দলীল নিয়ে আলোচনা করা যায়। যে হাদীসের দ্বারা উপরোক্ত তিনজন ইমাম নামায ভঙ্গের হাদীসের রহিত হওয়া বা এর ব্যাখা (تاويل) করে থাকেন, তাঁদের সামনে হাদীসের বিপরীতে অন্যান্য সহীহ হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। এগুলো সহীহ ছয় কিতাবের মধ্যে সামান্য শাব্দিক পার্থক্যের সাথে হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসগুলোর মধ্যে অন্যতম। যার মধ্যে কারো কোন সমালোচনা নেই। এই হাদীসে মহিলাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত ফয়সালা পেশ করা হয়েছে যে, কোন মহিলার নামাযরত ব্যক্তির পাশে অবস্থান বা যাতায়াতের কারণে নামায ভঙ্গ হয় না। হুযূর (সা)-এর আমল এ বিষয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। গাধা সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সহীহ হাদীস বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেন: আমি একবার এমন সময় আঁ হযরত (সা)-এর দরবারে আগমণ করলাম যখন তিনি নামায আদায় করছিলেন, তখন আমি কাতারের সামনে গাধাটি ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু এর প্রতি তিনি কোন গুরুত্ব দেননি।
এবার কুকুর সম্পর্কে আলোচনা করা যায়। নামায ভঙ্গের হাদীসে কুকুরের বর্ণনা امرأة وحمار (মহিলা ও গাধা)-এর উপর করা হয়েছে। সুতরাং এই সংযোগের (عطف) কারণে কুকুরের বিধানও মহিলা এবং গাধা সম্পর্কীয় বিধানের আওতাভুক্ত হয়েছে। ইমাম আহমদ (র) নামায ভঙ্গ না হওয়ার হাদীসের প্রতি লক্ষ্য রেখে মহিলা ও গাধার ব্যাপারে চূড়ান্ত নির্দেশ প্রদান করতে পারেননি। অবশ্য কুকুর সম্পর্কে যেহেতু তিনি কোন বিরোধী হাদীস দেখতে পাননি, তাই তিনি কুকুরের কারণে নামায ভঙ্গের ব্যাপারে মতামত পেশ করেছেন। আল্লামা ইবনুল জাওয়ী এর গূঢ় রহস্য সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। অন্যান্য আইম্মায়ে কিরাম হাদীসে নামায ভঙ্গের দ্বারা নামাযে ভীতি ও একাগ্রতা দূরীভূত হওয়াকে বুঝিয়েছেন, প্রকৃতই নামায ভঙ্গ হওয়া নয়।
এবার ইমামগণের দলীল নিয়ে আলোচনা করা যায়। যে হাদীসের দ্বারা উপরোক্ত তিনজন ইমাম নামায ভঙ্গের হাদীসের রহিত হওয়া বা এর ব্যাখা (تاويل) করে থাকেন, তাঁদের সামনে হাদীসের বিপরীতে অন্যান্য সহীহ হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। এগুলো সহীহ ছয় কিতাবের মধ্যে সামান্য শাব্দিক পার্থক্যের সাথে হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত হাদীসগুলোর মধ্যে অন্যতম। যার মধ্যে কারো কোন সমালোচনা নেই। এই হাদীসে মহিলাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত ফয়সালা পেশ করা হয়েছে যে, কোন মহিলার নামাযরত ব্যক্তির পাশে অবস্থান বা যাতায়াতের কারণে নামায ভঙ্গ হয় না। হুযূর (সা)-এর আমল এ বিষয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। গাধা সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সহীহ হাদীস বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেন: আমি একবার এমন সময় আঁ হযরত (সা)-এর দরবারে আগমণ করলাম যখন তিনি নামায আদায় করছিলেন, তখন আমি কাতারের সামনে গাধাটি ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু এর প্রতি তিনি কোন গুরুত্ব দেননি।
এবার কুকুর সম্পর্কে আলোচনা করা যায়। নামায ভঙ্গের হাদীসে কুকুরের বর্ণনা امرأة وحمار (মহিলা ও গাধা)-এর উপর করা হয়েছে। সুতরাং এই সংযোগের (عطف) কারণে কুকুরের বিধানও মহিলা এবং গাধা সম্পর্কীয় বিধানের আওতাভুক্ত হয়েছে। ইমাম আহমদ (র) নামায ভঙ্গ না হওয়ার হাদীসের প্রতি লক্ষ্য রেখে মহিলা ও গাধার ব্যাপারে চূড়ান্ত নির্দেশ প্রদান করতে পারেননি। অবশ্য কুকুর সম্পর্কে যেহেতু তিনি কোন বিরোধী হাদীস দেখতে পাননি, তাই তিনি কুকুরের কারণে নামায ভঙ্গের ব্যাপারে মতামত পেশ করেছেন। আল্লামা ইবনুল জাওয়ী এর গূঢ় রহস্য সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। অন্যান্য আইম্মায়ে কিরাম হাদীসে নামায ভঙ্গের দ্বারা নামাযে ভীতি ও একাগ্রতা দূরীভূত হওয়াকে বুঝিয়েছেন, প্রকৃতই নামায ভঙ্গ হওয়া নয়।
