মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৪. নামায অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬১
হযরত আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম (ﷺ) সূরায়ে সাদ (ص)-এ সিজদা করেছেন।
১৬১।হযরত আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম (ﷺ) সূরায়ে সাদ (ص)-এ সিজদা করেছেন।
عن أبي حنيفة، عن سماك بن حرب، عن عياض الأشعري، عن أبي موسى: أن النبي صلى الله عليه وسلم سجد في ص.

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত দাউদ আলাইহিস সালামের অনুসরণ করে হুযূর (সা) এই সিজদা আদায় করেছেন। ইমাম আবূ হানীফা (র) এবং ইমাম মালিক (র) এই আয়াতকে সিজদার আয়াত হিসেবে গ্রহণ করেছেন । কিন্তু ইমাম শাফিঈ (র) তা আয়াত হিসেবে গ্রহণ করেন নি। তিনি বুখারী শরীফে হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বর্ণিত হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করেছেন। এতে বলা হয়েছে, সূরায়ে সাদ (ص) -এর সিজদা আবশ্যকীয় নয়। দ্বিতীয়তঃ আবূ দাউদে হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রা) বর্ণিত হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা) খুতবা পড়ার সময় সূরায়ে সাদ (ص) তিলাওয়াত করেন এবং সিজদা আদায় করেন। সাহাবায়ে কিরাম (রা) ও সিজদা আদায় করেন। পুনরায় তিনি একই আয়াত তিলাওয়াত করেন। তখন সাহাবায়ে কিরাম সিজদার জন্য তৈরি হলেন, অতঃপর হুযূর (সা) বলেন, এটা তো ছিল নবীর তওবা। কিন্তু উপরোক্ত দু'হাদীসের দ্বারা সুস্পষ্টভাবে মাযহাব প্রমাণিত হয় না। আবশ্যকীয় (عزائم) না হওয়ার অর্থ ফরযের মধ্যে গণ্য নয়; বরং ওয়াজিব হিসেবে গণ্য- যা শুকরিয়া হিসেবে হযরত দাউদ আলাইহিস সালামের ইকতিদা (اقتداء) বা অনুসরণে ওয়াজিব হয়েছে। তৃতীয়তঃ হাদীসে যে সিজদার কথা বলা হয়েছে, এটা হলো নবী করীম (সা)-এর সিজদা, এটাও এর ওয়াজিব হওয়াকে বাতিল করে না। কেননা সমস্ত ফরয এবং ওয়াজিবসমূহ আল্লাহর নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্যই ফরয বা ওয়াজিব করা হয়েছে। সুতরাং এটা এগুলোর মধ্যে একটি। ইমাম আবূ হানীফা (র) ইমাম আহমদ (র)-এর হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করেছেন। তিনি বকর ইবনে আবদুল্লাহ আল-মুযনী (র)-এর সূত্রে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে সূরায়ে সাদ (ص) লিখছিলাম। যখন সিজদার আয়াতে পৌঁছলাম, তখন দেখতে পেলাম যে, দোয়াত-কলম সহ যা কিছু আশেপাশে বিদ্যমান ছিল, সমস্ত কিছুই মাথানত করে সিজদা দিচ্ছে। এই ঘটনা আমি হুযূর (সা)-এর নিকট বর্ণনা করি। এরপর থেকে আঁ হযরত (সা) সিজদা করতে থাকেন। এরদ্বারা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত ঘটনার পর সিজদার এই আমল অব্যাহত থাকে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ১৬১ | মুসলিম বাংলা