মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৪. নামায অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬০
সাহু সিজদার (ভুলের সিজদা) বিবরণ
১৬০। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার যোহর অথবা আসর নামায পড়ালেন এবং এতে কিছু হ্রাস অথবা বৃদ্ধি করেন। যখন তিনি নামায শেষ করলেন এবং সালাম ফিরালেন তখন তাঁর নিকট আরয করা হলো, হযরত! নামাযে কি কোন নতুন আহকাম জারী হলো, না কি হুযুর (ﷺ) ভুলে গিয়েছেন? তখন তিনি ইরশাদ করেন : আমিও তোমাদের মত ভুলে যাই। সুতরাং আমাকে যখন ভুলিয়ে দেওয়া হয়, তখন তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। অতঃপর তিনি কিবলার দিকে মুখ করে ভুলের জন্য দুটি সিজদা আদায় করেন এবং এতে তাশাহহুদ পাঠ করেন। এরপর ডানে ও বামে সালাম ফিরান।
عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى صَلَاةً إِمَّا الظُّهْرَ وَإِمَّا الْعَصْرَ، فَزَادَ أَوْ نَقَصَ، فَلَمَّا فَرَغَ وَسَلَّمَ، فَقِيلَ: أَحَدَثَ فِي الصَّلَاةِ شَيْءٌ أَمْ نَسِيتَ؟ قَالَ: «إِنِّي أَنْسَى كَمَا تَنْسَوْنَ، فَإِذَا نَسِيتُ فَذَكِّرُونِي، ثُمَّ حَوَّلَ وَجْهَهُ إِلَى الْقِبْلَةِ، فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ وَتَشَهَّدَ فِيهَا، ثُمَّ سَلَّمَ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

উপরোক্ত হাদীসে একটি প্রশ্ন হতে পারে যে, হুযূর (সা) কথা বলার পর কিভাবে সাহু সিজদা আদায় করলেন? কেননা নামাযের মধ্যে কথাবার্তা বলা জায়েয নেই, এরদ্বারা নামায ফাসেদ হয়ে যায়। সিজদায়ে সাহুর পরিবর্তে নামায পুনরায় আদায় করতে হয়। এর জওয়াব হলো এই যে, এ ঘটনা ঐ সময়ের, যখন নামাযে কথা বলা জায়েয ছিল। এরদ্বারা নামায ফাসেদ হতো না। হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রা)-এর হাদীসে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। ইমাম শাফিঈ (র) বলেছেন: হুযূর (সা) ইচ্ছাকৃত নয়; বরং ভুলে কথা বলেছেন; ভুলে কথা বলা জায়েয। কিন্তু ইমাম শাফিঈ (র)-এর এই বর্ণনা সঠিক নয়। কেননা যদি নবী করীম (সা)-এর এই কথা বলাকে ভুল হিসেবে গণ্য করা হয়, যুলইয়াদাইন (ذو اليدين) অথবা অন্যান্য সাহাবীগণ যখন কথা বলেন, তাহলে তখন তাঁদের নামায দ্বিতীয়বার আদায় করা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়। অথচ হুযূর (সা) তাঁদেরকে পূনর্বার নামায আদায় করার নির্দেশ দান করেননি। এখানে একটি প্রশ্ন হতে পারে যে, তাঁদের নামাযও পুনরায় আদায় করার প্রয়োজন ছিল কিন্তু মুকতাদী যেহেতু ইমামের আওতাধীন, তাই তাঁদের নামাযে কোন ত্রুটি হয়নি। এ অবস্থায় ইমামের নামায ত্রুটিমুক্ত ও পবিত্র থাকে। কেননা মুকতাদীর নামায ফাসেদ হওয়ার কারণে ইমামের নামায় ফাসেদ হয় না, শুধু মুকতাদীর নামাযই ফাসেদ হয়ে থাকে।