মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৪. নামায অধ্যায়

হাদীস নং: ১৩০
জারজ সন্তান, ক্রীতদাস ও গ্রাম্য লোকের নামাযে ইমাম হওয়া
১৩০। ইবরাহীম (রাহঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন যে, জারজ সন্তান, ক্রীতদাস
(গোলাম) এবং গ্রাম্য লোক যদি পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করতে পারে, তা হলে সে নামাযে লোকদের ইমামতি করতে পারবে।
حَمَّادٌ، عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: «يَؤُمُّ الْقَوْمَ وَلَدُ الزِّنَا وَالْعَبْدُ وَالْأَعْرَابِيُّ إِذَا قَرَأَ الْقُرْآنَ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীসের দ্বারা এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, পবিত্র কুরআনের তিলাওয়াত না জানলে জারজ সন্তান, ক্রীতদাস ও গ্রাম্য লোকের ইমামত জায়েয নয়। ইমামতের জন্য বিশেষভাবে ইলম, ফযীলত, তাকওয়া ও বুযর্গী অত্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু এগুলো অধিকাংশই তাদের মধ্যে পাওয়া যায় না। তাই তাদের ইমামত মাকরূহ থেকে মুক্ত নয়। জারজ সন্তানের নীচু বংশ এবং সম্মান ও মর্যাদার দিক দিয়ে অধম হওয়ার কারণে অধিকাংশ সময় নম্রতা ও অদ্রতা অর্জন করতে পারে না। তারা শিক্ষার আলো এবং তাকওয়া থেকে দূরে থাকে। যদি সে শিক্ষার আলো ও জ্ঞানলাভ করতে সক্ষম হয়, তা হলে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে সে নিঃসংকোচে ইমামতের দায়িত্ব পালন করতে পারবে। শিক্ষার আলো ও জ্ঞানার্জন তার বংশগত দুর্বলতা দূরীকরণের জন্য যথেষ্ট। কেননা পবিত্র কুরআনের আয়াত وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى এর দৃষ্টিকোণ থেকে প্রত্যেকেই নিজের কৃত পাপের জন্য দায়ী হয়ে থাকে। অন্যের পাপের বোঝা তার কাঁধে চাপানো যায় না। অথবা যেমন ক্রীতদাস। এই দাসত্ব বৃত্তির জন্য সে শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিত থাকে। এমনিভাবে তাকওয়া অর্জন থেকেও দূরে থাকে। যদি সে শিক্ষা লাভ ও তাকওয়া অর্জন করতে পারে, তাহলে তার এই গোলামী দাসত্ব ইমামতের জন্য বাধা নয়। শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্য হলো জাহালত বা মূর্খতা এবং সবচেয়ে সৌভাগ্য হলো ইলম ও তাকওয়া অর্জন করা। সাধারণত গ্রাম্য লোক ইলম ও তাকওয়া অর্জন থেকে বঞ্চিত থাকে। যদি সে ইলম ও তাকওয়া অর্জন করতে সক্ষম হয়, তা হলে যে কোন অবস্থায় তার ইমামত জায়েয হবে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান