মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৪. নামায অধ্যায়
হাদীস নং: ১২২
ইমামের সংক্ষিপ্তভাবে নামায আদায় করা
১২২। হযরত ইবরাহীম (রাহঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবন
মাসউদ (রাযিঃ), হযরত হুযায়ফা (রাযিঃ), হযরত আবু মুসা (রাযিঃ) সহ বেশ কয়েকজন সাহাবায়ে কিরাম (রাযিঃ) কোন এক বাড়িতে একত্রিত হলেন। এ সময় নামাযের জন্য ইকামত বলা হলো। সবই বাড়ির মালিককে বললেন, জনাব! আপনি (ইমামতির জন্য) সামনে অগ্রসর হোন। কিন্তু তিনি এতে অস্বীকৃতি জানিয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-কে বলেন, হে আবু আব্দুর রহমান। আপনি (ইমাম হওয়ার জন্য) সামনে অগ্রসর হোন। অবশেষে তিনি সামনে অগ্রসর হলেন এবং সংক্ষিপ্তভাবে কিন্তু পূর্ণাঙ্গভাবে রুকু-সিজদার সাথে নামায আদায় করেন। যখন তিনি নামায শেষ করেন, তখন সাথীগণ বললেন, আবু আব্দুর রহমান রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামায উত্তমরূপে স্মরণ রেখেছেন। (অর্থাৎ কিরাআত সংক্ষিপ্ত কিন্তু রুকু ও সিজ পূর্ণাঙ্গ)।
মাসউদ (রাযিঃ), হযরত হুযায়ফা (রাযিঃ), হযরত আবু মুসা (রাযিঃ) সহ বেশ কয়েকজন সাহাবায়ে কিরাম (রাযিঃ) কোন এক বাড়িতে একত্রিত হলেন। এ সময় নামাযের জন্য ইকামত বলা হলো। সবই বাড়ির মালিককে বললেন, জনাব! আপনি (ইমামতির জন্য) সামনে অগ্রসর হোন। কিন্তু তিনি এতে অস্বীকৃতি জানিয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-কে বলেন, হে আবু আব্দুর রহমান। আপনি (ইমাম হওয়ার জন্য) সামনে অগ্রসর হোন। অবশেষে তিনি সামনে অগ্রসর হলেন এবং সংক্ষিপ্তভাবে কিন্তু পূর্ণাঙ্গভাবে রুকু-সিজদার সাথে নামায আদায় করেন। যখন তিনি নামায শেষ করেন, তখন সাথীগণ বললেন, আবু আব্দুর রহমান রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামায উত্তমরূপে স্মরণ রেখেছেন। (অর্থাৎ কিরাআত সংক্ষিপ্ত কিন্তু রুকু ও সিজ পূর্ণাঙ্গ)।
عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: كَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ، وَحُذَيْفَةُ، وَأَبُو مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، وَغَيْرُهُمْ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اجْتَمَعُوا فِي مَنْزِلٍ، فَجَعَلُوا يَقُولُونَ: تَقَدَّمْ يَا فُلَانُ، فَأَبَى، فَقَالَ: تَقَدَّمْ أَنْتَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، فَتَقَدَّمَ " فَصَلَّى بِهِمْ صَلَاةً خَفِيفَةً وَجِيزَةً، أَتَمَّ الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ.
فَلَمَّا انْصَرَفَ، قَالَ الْقَوْمُ: لَقَدْ حَفِظَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ صَلَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
فَلَمَّا انْصَرَفَ، قَالَ الْقَوْمُ: لَقَدْ حَفِظَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ صَلَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এই হাদীসে কয়েকটি মাসয়ালা রয়েছে। প্রথমত মুকতাদীদের প্রতি লক্ষ্য রেখে হুযূর (সা) নিজেও ক্ষিপ্তভাবে নামায আদায় করতেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে এভাবে নামার আদায় করার জন্য নির্দেশ দান করতেন। এরূপভাবে নামায পড়ানোর উপর তিনি অসন্তুষ্ট হতেন যার দ্বারা মুকতাদীগণ বিরক্তিবোধ করে এবং নামাযকে বোঝা মনে করে। যার ফলে লোকজন জামাআতে নামায আদায় করতে পিছু হটে থাকে। ইবনে মাজাহ্ হযরত আবু মাসউস আনসারী (রা) থেকে একই বিষয়ের উপর হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, এক ব্যক্তি হুযুর (সা)-এর দরবারে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক ব্যক্তির কারণে ফজর নামাযের জামাআতে অংশগ্রহণ করতে পারি না। কেননা তিনি নামায দীর্ঘ করে থাকেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি হুযূর (সা)-কে ঐ দিনের চেয়ে অধিক কখনো অসন্তুষ্ট হতে দেখিনি। তিনি বলেছেন: হে লোকসকল! তোমরা লোকদের মনে নামাযের ব্যাপারে ঘৃণা সৃষ্টি করছ। তোমরা যখন কেউ নামাযে ইমামতি করবে, তখন নামায সংক্ষিপ্ত কর। কেননা মুকতাদীদের মধ্যে কেউ বৃদ্ধ এবং কেউ বিশেষ কাজের লোকও থাকতে পারে। এমনিভাবে আঁ হযরত (সা) একবার দীর্ঘ নামায পড়ানোর কারণে হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (রা)-কে হুঁশিয়ারী প্রদান করেন।
উপরোক্ত ঘটনার দ্বারা এটা প্রতীয়মান হয় যে, ঘরের মধ্যে অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম (রা) ছিলেন। কিন্তু ইমামতের জন্য হযরত ইবন মাসউদ (রা)-কে নির্বাচন করা হয়। কেননা ইমামতের জন্য ইলমে ফিকহ জানতে হবে। উপস্থিত সকলের মধ্যে হযরত ইবনে মাসউদ (রা) ইলমে ফিকহ সম্পর্কে সবচেয়ে বিজ্ঞ ছিলেন বলে তাঁকে ইমামতের দায়িত্ব প্রদান করা হয় অধিকন্তু চার খলীফার পরে তাঁকেই ইলমে ফিকহ সম্পর্কে সবচেয়ে বিজ্ঞ বলা হয় থাকে। এই ঘটনার দ্বারা এটাও প্রতীয়মান হয় যে, মুক্ততাদীদের অবস্থা বিবেচনা করে নামায সংক্ষিপ্ত করা হলেও নামাযের অন্যান্য আরকান অত্যন্ত ধীরে ও বিনয়ের সাথে আদায় করতে হবে। তাই বর্ণিত হাদীসে فصلى صلوة خفيفةএর সাথে أتم الركوع والسجود বলা হয়েছে।
উপরোক্ত ঘটনার দ্বারা এটা প্রতীয়মান হয় যে, ঘরের মধ্যে অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম (রা) ছিলেন। কিন্তু ইমামতের জন্য হযরত ইবন মাসউদ (রা)-কে নির্বাচন করা হয়। কেননা ইমামতের জন্য ইলমে ফিকহ জানতে হবে। উপস্থিত সকলের মধ্যে হযরত ইবনে মাসউদ (রা) ইলমে ফিকহ সম্পর্কে সবচেয়ে বিজ্ঞ ছিলেন বলে তাঁকে ইমামতের দায়িত্ব প্রদান করা হয় অধিকন্তু চার খলীফার পরে তাঁকেই ইলমে ফিকহ সম্পর্কে সবচেয়ে বিজ্ঞ বলা হয় থাকে। এই ঘটনার দ্বারা এটাও প্রতীয়মান হয় যে, মুক্ততাদীদের অবস্থা বিবেচনা করে নামায সংক্ষিপ্ত করা হলেও নামাযের অন্যান্য আরকান অত্যন্ত ধীরে ও বিনয়ের সাথে আদায় করতে হবে। তাই বর্ণিত হাদীসে فصلى صلوة خفيفةএর সাথে أتم الركوع والسجود বলা হয়েছে।
