মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৩. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৫
মোযার উপর মাসেহ করা
৫৫। হযরত শুরাইহ (রাহঃ) বলেন, আমি হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি কি মোযার উপর মাসেহ করতে পারব ? [অর্থাৎ হুযূর (ﷺ) থেকে কি এর প্রমাণ আছে যে, আমিও এরূপ করতে পারব ? হযরত আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, তুমি হযরত আলী (রাযিঃ)-এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞাসা কর। কেননা তিনি নবী (ﷺ)-এর সাথে সফর করতেন। হযরত শুরাইহ্ (রাহঃ) বলেন, অতঃপর আমি হযরত আলী (রাযিঃ)-র নিকট এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন, তুমি (মোযার উপর) মাসেহ কর।
عَنِ الْحَكَمِ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ شُرَيْحٍ، قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: " أَمْسَحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ؟ قَالَتِ: ائْتِ عَلِيًّا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَاسْأَلْهُ، فَإِنَّهُ كَانَ يُسَافِرُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ شُرَيْحٌ: فَأَتَيْتُ عَلِيًّا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ لِي: امْسَحْ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

মোযার উপর মাসেহ করা সম্পর্কে হাদীস মুতাওয়াতিরের সীমা পর্যন্ত পৌঁছেছে। কেউ কেউ বলেছেন ঃ এ হাদীসের বর্ণনাকারীর সংখ্যা আশি পর্যন্ত পৌঁছেছে। এঁদের মধ্যে আশারায়ে মুবাশ্শারাও রয়েছেন। তাই পূর্ববর্তীদের মধ্যে কেউ এর মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টি করেননি। অবশ্য ইমাম মালিক (র) থেকে একটি দুর্বল রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে যে, তিনি মুকীমের (বাড়িতে অবস্থানকারী) জন্য মোযার উপর মাসেহ করা জায়েয মনে করেননি। ইমাম আবূ হানীফা (র) বলেন, মোযার উপর মাসেহ করা আমি তখনও জায়েয মনে করিনি, যতক্ষণ না এ বিষয়ের উপর হাদীস ও আসার আমার নিকট দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
হিদায়ার গ্রন্থকার বলেছেনঃ মাসেহ সম্পর্কে হাদীস যেহেতু মশহুর, তাই মাসেহ্ অমান্যকারী হলো বিদআতী। আল্লামা কারখী (র) বলেন, আমি এই ব্যাপারে কুফরীর ভয় করে থাকি। ইমাম আবূ হানীফা (র) বলেন, আল্লাহর বাণীঃ يريد الله بكم اليسر ولا يريد بكم العسر এর দ্বারা মোযার উপর মাসেহ জায়েয করে বান্দার উপর এক বিরাট করুণা ও সহজ পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন এবং এটাকে সুন্নত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। যে ইচ্ছা করে পা ধৌত করে উযূর সওয়াব লাভ করবে। যে ইচ্ছা করে, মাসেহ করে উপকারিতা লাভ করবে এবং সুন্নতের সওয়াবও লাভ করবে। বরং উলামায়ে কিরাম লিখেছেন, যদি মানুষ খারিজী ও রাফিজীদের বিরোধিতা করতে ইচ্ছা করে, তাহলে তাদের মুকাবিলার জন্য মাসেহ করলে এতে পা ধৌত করার চেয়ে বেশি সওয়াব লাভ করবে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন