মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৩. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৮
মিসওয়াক ব্যবহারের নির্দেশ
৪৮। হযরত জাফর ইবনে আবী তালিব (রাযিঃ) বলেন, সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে কয়েকজন নবী করীম (ﷺ)-এর খেদমতে হাযির হলেন। তিনি বললেনঃ তোমাদের কি হয়েছে যে, আমি তোমাদের দাঁত হলুদ দেখছি? তোমরা মিসওয়াক কর। যদি আমি আমার উম্মতের উপর এটা কঠোর মনে না করতাম তাহলে প্রত্যেক নামাযে মিসওয়াক করার নির্দেশ প্রদান করতাম।
অন্য এক রিওয়ায়েতে এরূপ বর্ণিত আছে যে, আমি দেখছি, তোমরা আমার নিকট আসছ অথচ তোমাদের দাঁত হলুদ দেখা যাচ্ছে, তোমরা মিসওয়াক কর। যদি আমি আমার উম্মতের উপর এটা কঠোর মনে না করতাম, তাহলে প্রত্যেক নামায বা প্রত্যেক উযূর সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ প্রদান করতাম।
অন্য এক রিওয়ায়েতে এরূপ বর্ণিত আছে যে, আমি দেখছি, তোমরা আমার নিকট আসছ অথচ তোমাদের দাঁত হলুদ দেখা যাচ্ছে, তোমরা মিসওয়াক কর। যদি আমি আমার উম্মতের উপর এটা কঠোর মনে না করতাম, তাহলে প্রত্যেক নামায বা প্রত্যেক উযূর সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ প্রদান করতাম।
عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ الرَّدَّادِ، عَنْ تَمَّامٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ، أَنَّ نَاسًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلُوا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: «مَا لِي أَرَاكُمْ قُلْحًا؟ اسْتَاكُوا، فَلَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لَأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ عِنْدَ كُلِّ صَلَاةٍ» ، وَفِي رِوَايَةٍ: «مَالِي أَرَاكُمْ تَدْخُلُونَ عَلَيَّ قُلْحًا؟ اسْتَاكُوا، فَلَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لَأَمَرْتُهُمْ أَنْ يَسْتَاكُوا عِنْدَ كُلِّ صَلَاةٍ، أَوْ عِنْدَ كُلِّ وُضُوءٍ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ইমাম মালিক, ইমাম আহমদ, ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ সবাই এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। মিসওয়াক করা ওয়াজিব নয়; এ হাদীসের দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়। মিসওয়াক করা মুস্তাহাবে মুয়াক্কাদা। বিশেষ করে যখন দাঁত হলুদ থাকে, মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয় অথবা নিদ্রা থেকে এইমাত্র জাগ্রত হয়েছে এবং নামায আদায়ের ইচ্ছা করে, তখন উযূ করার সময় মিসওয়াক করতে হবে।
যে সমস্ত রিওয়ায়েতে عِنْدَ كُلِّ وَضُوْءٍ বর্ণিত হয়েছে, সেখানে এর প্রকৃত অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেক উর্দূর সময় মিসওয়ার্ক করতে হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মতামত। এবার যে সমস্ত রিওয়ায়েতে عِنْدَ كُلِّ صَلَاةٍ বর্ণিত হয়েছে, এর ব্যাখ্যা হলো এই যে, প্রতি নামাযের জন্য যে উযূ করা হয়, ঐ উযূর সর্ময় মিসওয়াক করতে হবে। কেননা হযরত (সা)-এর আদেশের উদ্দেশ্য হলো এই যে, তিনি বলেন, আমার দৃষ্টিতে মিসওয়াকের মধ্যে যথেষ্ট উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু মিসওয়াক ওয়াজিব হলে তোমাদের উপর যে কষ্ট হবে, যেমন কখনো তোমাদের নিকট মিসওয়াক থাকবে, আবার কখনো থাকবে না, কখনো তোমরা সফরে থাকবে, কখনো বাড়িতে থাকবে; কখনো সুস্থ থাকবে, আবার কখনো অসুস্থ থাকবে। মোটকথা, সর্বক্ষণ তোমাদের নিকট মিসওয়াক থাকবে না।
সুতরাং ওয়াজিব আদায় না করলে এজন্য তোমাদের উপর শান্তি আসবে। যেহেতু আমি তোমাদের উপর কোন কষ্ট হোক এটা পছন্দ করি না, তাই এর জন্য ওয়াজিব হিসেবে নির্দেশ প্রদান করি না। সুতরাং এখানে হুযূর (সা) উম্মতের সহজ পন্থাকে সামনে রেখে বিষয়টি বিবেচনা করছেন। যদি عِنْدَ كُلِّ صَلَاةٍ এর প্রকৃত অর্থ অনুযায়ী প্রত্যেক নামাযের সময় মিসওয়াক করতে হয়, তাহলে উপরোক্ত জটিলতা দেখা দিবে। এছাড়া যদি এক উযু দ্বারা চার ওয়াক্ত নামায আদায় করতে হয়, তাহলে চারবার মিসওয়াক করতে হবে এবং এর ফলে অবশ্যই দাঁত থেকে রক্ত প্রবাহিত হবে। উযূর মধ্যে পানি রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে থাকে। কিন্তু নামাযে এটা সম্ভব নয়। সুতরাং এ অসুবিধাসমূহকে সামনে রেখে عِنْدَ كُلِّ وَضُوْءٍ এর রিওয়ায়েত অধিক গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। ঐভাবে নাসাঈ, ইবনে হিব্বান, ইবনে খুযায়মা, হাকেম স্বীয় সহীহ গ্রন্থসমূহে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
যে সমস্ত রিওয়ায়েতে عِنْدَ كُلِّ وَضُوْءٍ বর্ণিত হয়েছে, সেখানে এর প্রকৃত অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেক উর্দূর সময় মিসওয়ার্ক করতে হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মতামত। এবার যে সমস্ত রিওয়ায়েতে عِنْدَ كُلِّ صَلَاةٍ বর্ণিত হয়েছে, এর ব্যাখ্যা হলো এই যে, প্রতি নামাযের জন্য যে উযূ করা হয়, ঐ উযূর সর্ময় মিসওয়াক করতে হবে। কেননা হযরত (সা)-এর আদেশের উদ্দেশ্য হলো এই যে, তিনি বলেন, আমার দৃষ্টিতে মিসওয়াকের মধ্যে যথেষ্ট উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু মিসওয়াক ওয়াজিব হলে তোমাদের উপর যে কষ্ট হবে, যেমন কখনো তোমাদের নিকট মিসওয়াক থাকবে, আবার কখনো থাকবে না, কখনো তোমরা সফরে থাকবে, কখনো বাড়িতে থাকবে; কখনো সুস্থ থাকবে, আবার কখনো অসুস্থ থাকবে। মোটকথা, সর্বক্ষণ তোমাদের নিকট মিসওয়াক থাকবে না।
সুতরাং ওয়াজিব আদায় না করলে এজন্য তোমাদের উপর শান্তি আসবে। যেহেতু আমি তোমাদের উপর কোন কষ্ট হোক এটা পছন্দ করি না, তাই এর জন্য ওয়াজিব হিসেবে নির্দেশ প্রদান করি না। সুতরাং এখানে হুযূর (সা) উম্মতের সহজ পন্থাকে সামনে রেখে বিষয়টি বিবেচনা করছেন। যদি عِنْدَ كُلِّ صَلَاةٍ এর প্রকৃত অর্থ অনুযায়ী প্রত্যেক নামাযের সময় মিসওয়াক করতে হয়, তাহলে উপরোক্ত জটিলতা দেখা দিবে। এছাড়া যদি এক উযু দ্বারা চার ওয়াক্ত নামায আদায় করতে হয়, তাহলে চারবার মিসওয়াক করতে হবে এবং এর ফলে অবশ্যই দাঁত থেকে রক্ত প্রবাহিত হবে। উযূর মধ্যে পানি রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে থাকে। কিন্তু নামাযে এটা সম্ভব নয়। সুতরাং এ অসুবিধাসমূহকে সামনে রেখে عِنْدَ كُلِّ وَضُوْءٍ এর রিওয়ায়েত অধিক গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। ঐভাবে নাসাঈ, ইবনে হিব্বান, ইবনে খুযায়মা, হাকেম স্বীয় সহীহ গ্রন্থসমূহে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
