আশ-শামাঈলুল মুহাম্মাদিয়্যাহ- ইমাম তিরমিযী রহঃ

শামাইলে নববীর পরিচ্ছেদসমূহ

হাদীস নং:
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর হুলিয়া মুবারক (দৈহিক গঠন)
৭।আহমদ ইবন ’আব্দা আয-যাব্বী আল-বসরী ইবন হুজর, আবু জাফর মুহাম্মাদ ইবনুল হুসায়ন (রা.) আলী ইবন আবু তালিব (রা.) এর বংশধর ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর শারীরিক গঠন বর্ণনাকালে বলতেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অত্যধিক দীর্ঘকায়ও ছিলেন না এবং পরস্পরের মধ্যে প্রবিষ্ট মাংসপেশীযুক্ত খর্বাকৃতিরও ছিলেন না। বরং তিনি তাঁর গোত্র ও সমাজের লোকদের মধ্যে মধ্যমাকৃতির ছিলেন। তাঁর কেশ মুবারক অধিক কোঁকড়ানো কিংবা একেবারে সোজা ছিল না। বরং তাঁর কেশ মুবারক কিছুটা কোঁকড়ানো ছিল। তাঁর দেহ মুবারক নাদুস-নুদুস ও মুখমণ্ডল ফোলা-ফাঁপা ছিল না (কিংবা ছিপছিপে পাতলাগোছের ছিল না)। তাঁর চেহারা মুবারক সম্পূর্ণ গোলাকার ছিল না, তবে সামান্য গোলাকার ভাব ছিল। তিনি ছিলেন শুভ্র ও লোহিত বর্ণ বিশিষ্ট দেহের অধিকারী। তাঁর নয়নতারা অত্যন্ত কাল ছিল এবং চক্ষুদ্বয়ের পাঁপড়ির চুল দীর্ঘ ছিল। অস্থি গ্রন্থিগুলো এবং দুই কাঁধের মিলনস্থল ছিল উন্নত ও সুস্পষ্ট। হাত-পা ছিল লোমশূন্য। পশমের একটি সরু রেখা বক্ষ থেকে নাভিস্থল পর্যন্ত প্রলম্বিত ছিল। হাতের তালু, পায়ের তলা এবং হাত-পায়ের আঙ্গুলগুলো ছিল মাংসল ও মোটা গোছের। হ্যাঁটার সময় এমনভাবে দৃঢ়পদে পা তুলে হ্যাঁটতেন যেন নিম্নস্থানে নামছেন। যখন কোন দিকে তাকাতেন তখন সম্পূর্ণভাবেই দৃষ্টি ফেলতেন। তাঁর দুই কাঁধের মিলনস্থলে নবুওয়াতের মোহর ছিল। তিনি ছিলেন সর্বশেষ নবী (ﷺ)। মনের দিক দিয়ে তিনি ছিলেন লোকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা, জিহবার দিক দিয়ে সর্বাধিক সত্যবাদী, আচার-ব্যবহারে অত্যধিক কোমল এবং আত্মীয়তা ও সখ্যতা রক্ষার ব্যাপারে সর্বাধিক দয়াপ্রবণ। যে কেউ তাঁকে হঠাৎ করে দেখত, তারই ভক্তি-শ্রদ্ধা মিশ্রিত ভয়ের সঞ্চার হতো। যে কেউ পরিচিতিব্যপদেশে তাঁকে সম্বোধন করতো, তাঁর প্রতি অনুরাগী হয়ে পড়তো। তাঁর সম্পর্কে সাক্ষাতদানকারীমাত্রই বলে উঠবে, তাঁর অনুরূপ কাউকে আমি পূর্বে দেখিনি এবং পরেও দেখিনি।’ আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহমত বর্ষণ করুন এবং তাঁকে নিরাপত্তা দান করুন।

আবু ঈসা (ইমাম তিরমিযী) (রাহঃ) বলেন, আমি আবু জাফর মুহাম্মাদ ইবন হুসায়ন (রাহঃ)-কে বলতে
শুনেছি তিনি বলেন যে, আমি নবী (ﷺ)-এর গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা প্রসঙ্গে আসমা’ঈ (রাহঃ)-কে
বলতে শুনেছি الممغط অর্থ অতি দীর্ঘকায়। তিনি আরও বলেন, আমি এক বেদুঈনকে বলতে শুনেছি تمعط في نشابته সে তার ধনুক (-এর ছিলা) জোরে টেনে ধরেছে। المتردد যারা বেঁটে হওয়ার কারণে একে অন্যের মধ্যে প্রবিষ্ট হয় অর্থাৎ দৃঢ় থেকে যাকে চেনা যায় না। القطط অতিশয় কোঁকড়ানো الرجل হালকা কোঁকড়ানো। المطهم মাংসল ভারী দেহ।المكلثم গোলাকৃতির মুখমণ্ডল।المشرب রক্তিমাভ সাদা।الادعج চোখের তারা ঘোর কাল, দীর্ঘ পলক, الكتد স্কন্দদ্বয় মাংসল। المسر بة খেজুর শাখার ন্যায় বুক হতে নাভি পর্যন্ত পশমের শুরু রেখা প্রলম্বিত ছিল। الشثنকষ্টপুষ্ট আঙ্গুলসমূহ । التقلع দৃঢ় পদে পথ চলা।انحدرنا তুমি নিম্নে অবতরণ করলে বলে থাকে। (সাবুব)صبوب বা (সাবার) صبب এ নামলাম। المشاش বলে বর্ণনাকারী ’মুশাশ’ অর্থ কাঁধ ও বাহুর সংযোগস্থল বুঝিয়েছেন। العشرة অর্থ সঙ্গ, আর العشير .অর্থ সঙ্গী-সাথী।

البداهة অর্থ আকস্মিক ঘটা। আমি যদি কারও কাছে কোন বিষয় আকস্মিকভাবে পেশ করি তাহলে বলা হয় بداهته بامر।
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ الْبَصْرِيُّ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، وَأَبُو جَعْفَرٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْحُسَيْنِ وَهُوَ ابْنُ أَبِي حَلِيمَةَ، وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ، قَالُوا: حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ مَوْلَى غُفْرَةَ قَالَ: حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدٍ مِنْ وَلَدِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ: كَانَ عَلِيٌّ إِذَا وَصَفَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ بِالطَّوِيلِ الْمُمَّغِطِ، وَلَا بِالْقَصِيرِ الْمُتَرَدِّدِ، وَكَانَ رَبْعَةً مِنَ الْقَوْمِ، لَمْ يَكُنْ بِالْجَعْدِ الْقَطَطِ، وَلَا بِالسَّبْطِ، كَانَ جَعْدًا رَجِلًا، وَلَمْ يَكُنْ بِالْمُطَهَّمِ وَلَا بِالْمُكَلْثَمِ، وَكَانَ فِي وَجْهِهِ تَدْوِيرٌ أَبْيَضُ مُشَرَبٌ، أَدْعَجُ الْعَيْنَيْنِ، أَهْدَبُ الْأَشْفَارِ، جَلِيلُ الْمُشَاشِ وَالْكَتَدِ، أَجْرَدُ ذُو مَسْرُبَةٍ، شَثْنُ الْكَفَّيْنِ وَالْقَدَمَيْنِ، إِذَا مَشَى تَقَلَّعَ كَأَنَّمَا يَنْحَطُّ فِي صَبَبٍ، وَإِذَا الْتَفَتَ الْتَفَتَ مَعًا، بَيْنَ كَتِفَيْهِ خَاتَمُ النُّبُوَّةِ، وَهُوَ خَاتَمُ النَّبِيِّينَ، أَجْوَدُ النَّاسِ صَدْرًا، وَأَصْدَقُ النَّاسِ لَهْجَةً، وَأَلْيَنُهُمْ عَرِيكَةً، وَأَكْرَمُهُمْ عِشْرَةً، مَنْ رَآهُ بَدِيهَةً هَابَهُ، وَمَنْ خَالَطَهُ مَعْرِفَةً أَحَبَّهُ، يَقُولُ نَاعِتُهُ: لَمْ أَرَ قَبْلَهُ وَلَا بَعْدَهُ مِثْلَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ". قَالَ أَبُو عِيسَى: سَمِعْتُ أَبَا جَعْفَرٍ مُحَمَّدَ بْنَ الْحُسَيْنِ يَقُولُ: سَمِعْتُ الْأَصْمَعِيَّ يَقُولُ فِي تَفْسِيرِ صِفَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " الْمُمَّغِطُ: الذَّاهِبُ طُولًا ". وَقَالَ: " سَمِعْتُ أَعْرَابِيًّا يَقُولُ فِي كَلَامِهِ: تَمَغَّطَ فِي نَشَّابَتِهِ أَيْ مَدَّهَا مَدًّا شَدِيدًا. وَالْمُتَرَدِّدُ: الدَّاخِلُ بَعْضُهُ فِي بَعْضٍ قِصَرًا. وَأَمَّا الْقَطَطُ: فَالشَّدِيدُ الْجُعُودَةِ. وَالرَّجُلُ الَّذِي فِي شَعْرِهِ حُجُونَةٌ: أَيْ تَثَنٍّ قَلِيلٌ. وَأَمَّا الْمُطَهَّمُ فَالْبَادِنُ الْكَثِيرُ اللَّحْمِ. وَالْمُكَلْثَمُ: الْمُدَوَّرُ الْوَجْهِ. وَالْمُشَرَبُ: الَّذِي فِي بَيَاضِهِ حُمْرَةٌ. وَالْأَدْعَجُ: الشَّدِيدُ سَوَادِ الْعَيْنِ. وَالْأَهْدَبُ: الطَّوِيلُ الْأَشْفَارِ. وَالْكَتَدُ: مُجْتَمِعُ الْكَتِفَيْنِ وَهُوَ الْكَاهِلُ. وَالْمَسْرُبَةُ: هُوَ الشَّعْرُ الدَّقِيقُ الَّذِي كَأَنَّهُ قَضِيبٌ مِنَ الصَّدْرِ إِلَى السُّرَّةِ. وَالشَّثْنُ: الْغَلِيظُ الْأَصَابِعِ مِنَ الْكَفَّيْنِ وَالْقَدَمَيْنِ. وَالتَّقَلُّعُ: أَنْ يَمْشِيَ بِقُوَّةٍ. وَالصَّبَبُ الْحُدُورُ، نَقُولُ: انْحَدَرْنَا فِي صَبُوبٍ وَصَبَبٍ. وَقَوْلُهُ: جَلِيلُ الْمُشَاشِ يُرِيدُ رُءُوسَ الْمَنَاكِبِ. وَالْعِشْرَةُ: الصُّحْبَةُ، وَالْعَشِيرُ: الصَّاحِبُ. وَالْبَدِيهَةُ: الْمُفَاجَأَةُ، يُقَالُ: بَدَهْتُهُ بِأَمْرٍ أَيْ فَجَأْتُهُ "
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
শামাঈলে তিরমিযী - হাদীস নং ৭ | মুসলিম বাংলা