আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ
১৮- বিবিধ প্রসঙ্গ।
হাদীস নং: ৯৫৫
- বিবিধ প্রসঙ্গ।
মেহমানদারি করা।
৯৫৫ । আবু শুরায়হ্ আল-কাবী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর ঈমান রাখে সে যেন তার মেহমানের আদর-যত্ন করে। সে এক রাত ও একদিন তার মেহমানদারি করবে। আর মেহমানদারি তিন দিনের বেশী নয়। এর পরও মেহমানদারি করা হলে তা সদাকা হিসাবে গণ্য হবে। আতিথ্য প্রদর্শনকারীর কষ্ট হতে পারে, এরূপ পরিমাণ সময় তার বাড়ীতে মেহমানের অবস্থান করা বৈধ নয় ।
الابواب الجامعة
بَابُ: حَقِّ الضِّيَافَةِ
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْكَعْبِيِّ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، جَائِزَتُهُ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ، وَالضِّيَافَةُ ثَلاثَةُ أَيَّامٍ، فَمَا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ صَدَقَةٌ، وَلا يَحِلُّ لَهُ أَنْ يَثْوِيَ عِنْدَهُ حَتَّى يُحْرِجَهُ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাজের হুকুমদানের আগে আল্লাহ ও শেষদিবসে বিশ্বাসের বরাত দিয়েছেন। অর্থাৎ যার এ বিশ্বাস আছে তার এ বিষয়টি পালনে যত্নবান থাকা একান্ত কর্তব্য।
ঈমানের মূল স্তম্ভ সাতটি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ফিরিশতাদের প্রতি বিশ্বাস, আসমানী কিতাবের প্রতি বিশ্বাস, রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস, শেষদিবসের প্রতি বিশ্বাস, তাকদীরে বিশ্বাস এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের উপর বিশ্বাস। এ হাদীছে তার মধ্যে মাত্র দু'টি অর্থাৎ আল্লাহ ও শেষদিবসের প্রতি বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর কারণ এ দু'টির উপর যার বিশ্বাস আছে, বাকি পাঁচটিতে বিশ্বাস আপনা-আপনিই তার উপর অবধারিত হয়ে যায়। শরীআতের যাবতীয় বিধানের ভিত্তি মূলত এ দু'টি বিশ্বাসের উপরই। কেননা যার আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে এবং আখেরাতের হিসাব-নিকাশেরও ভয় আছে, সেই তো শরীআত মেনে চলতে সচেষ্ট থাকবে। এরূপ বিশ্বাস থাকলেই সে আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসূলের শিক্ষার দ্বারস্থ হবে। নবী-রাসূলের শিক্ষার উৎস আসমানী কিতাব, যা তাঁরা ফিরিশতাদের মাধ্যমে লাভ করে থাকেন। সুতরাং বিশ্বাসীগণ আসমানী কিতাব ও ফিরিশতাদের উপরও ঈমান রাখবে। আসমানী কিতাবের উপর বিশ্বাস থাকলে তাতে বর্ণিত কোনওকিছুর উপরই অবিশ্বাস করার সুযোগ থাকে না। ফলে তাকদীর ও পুনরুত্থানে বিশ্বাসও অবধারিত হয়ে যায়। ব্যস এভাবে আল্লাহ ও শেষদিবসের বিশ্বাস অন্যসবকিছুর বিশ্বাসকেও অবধারিত করে।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন من كان يؤمن بالله واليوم الآخر فليكرم ضيفه (যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষদিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তার কর্তব্য অতিথির প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা)। অতিথি গরীব-ধনী, আত্মীয়-অনাত্মীয় যেই হোক না কেন তাকে খুশিমনে গ্রহণ করা চাই। এমন কোনও আচরণ তার সঙ্গে করা যাবে না, যা অতিথির পক্ষে মর্যাদাকর নয়। সুতরাং মেজবানের কর্তব্য তার সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাত করা, নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী তার জন্য ভালো মেহমানদারীর ব্যবস্থা করা, সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে ভালো জায়গায় থাকতে দেওয়া, তার ওযূ-গোসলের প্রতি লক্ষ রাখা, তাকে সঙ্গ দেওয়া, বিদায়কালে তাকে এগিয়ে দেওয়া, সম্ভব হলে তার পথখরচা দিয়ে দেওয়া ইত্যাদি। কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, তার প্রতি সম্মানজনক আচরণের একটি হলো অতিথি যেখানে বসবে, নিজে তার চেয়ে একটু নিচে বসা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. যে ব্যক্তি নিজেকে মুমিন বলে বিশ্বাস করে তার কর্তব্য অতিথির সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করা।
ঈমানের মূল স্তম্ভ সাতটি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ফিরিশতাদের প্রতি বিশ্বাস, আসমানী কিতাবের প্রতি বিশ্বাস, রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস, শেষদিবসের প্রতি বিশ্বাস, তাকদীরে বিশ্বাস এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের উপর বিশ্বাস। এ হাদীছে তার মধ্যে মাত্র দু'টি অর্থাৎ আল্লাহ ও শেষদিবসের প্রতি বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর কারণ এ দু'টির উপর যার বিশ্বাস আছে, বাকি পাঁচটিতে বিশ্বাস আপনা-আপনিই তার উপর অবধারিত হয়ে যায়। শরীআতের যাবতীয় বিধানের ভিত্তি মূলত এ দু'টি বিশ্বাসের উপরই। কেননা যার আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে এবং আখেরাতের হিসাব-নিকাশেরও ভয় আছে, সেই তো শরীআত মেনে চলতে সচেষ্ট থাকবে। এরূপ বিশ্বাস থাকলেই সে আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসূলের শিক্ষার দ্বারস্থ হবে। নবী-রাসূলের শিক্ষার উৎস আসমানী কিতাব, যা তাঁরা ফিরিশতাদের মাধ্যমে লাভ করে থাকেন। সুতরাং বিশ্বাসীগণ আসমানী কিতাব ও ফিরিশতাদের উপরও ঈমান রাখবে। আসমানী কিতাবের উপর বিশ্বাস থাকলে তাতে বর্ণিত কোনওকিছুর উপরই অবিশ্বাস করার সুযোগ থাকে না। ফলে তাকদীর ও পুনরুত্থানে বিশ্বাসও অবধারিত হয়ে যায়। ব্যস এভাবে আল্লাহ ও শেষদিবসের বিশ্বাস অন্যসবকিছুর বিশ্বাসকেও অবধারিত করে।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন من كان يؤمن بالله واليوم الآخر فليكرم ضيفه (যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষদিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তার কর্তব্য অতিথির প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা)। অতিথি গরীব-ধনী, আত্মীয়-অনাত্মীয় যেই হোক না কেন তাকে খুশিমনে গ্রহণ করা চাই। এমন কোনও আচরণ তার সঙ্গে করা যাবে না, যা অতিথির পক্ষে মর্যাদাকর নয়। সুতরাং মেজবানের কর্তব্য তার সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাত করা, নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী তার জন্য ভালো মেহমানদারীর ব্যবস্থা করা, সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে ভালো জায়গায় থাকতে দেওয়া, তার ওযূ-গোসলের প্রতি লক্ষ রাখা, তাকে সঙ্গ দেওয়া, বিদায়কালে তাকে এগিয়ে দেওয়া, সম্ভব হলে তার পথখরচা দিয়ে দেওয়া ইত্যাদি। কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, তার প্রতি সম্মানজনক আচরণের একটি হলো অতিথি যেখানে বসবে, নিজে তার চেয়ে একটু নিচে বসা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. যে ব্যক্তি নিজেকে মুমিন বলে বিশ্বাস করে তার কর্তব্য অতিথির সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করা।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)