আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ

১- পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩০
আগুনে পাকানো জিনিস খেলে উযু নষ্ট হয় কিনা
৩০। বনু হারিছার মুক্তদাস বুশাইর ইবনে ইয়াসার (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। সুয়াইদ ইবনে নুমান (রাযিঃ) তাকে অবহিত করেন যে, তিনি খায়বারের যুদ্ধের বছর রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর সাথে (খায়বার অভিযানে) বের হন। তারা খায়বারের নিকটবর্তী এলাকা আস-সাহবায় পৌঁছে রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর সাথে আসরের নামায পড়েন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ খাবার চাইলেন । তাঁর সামনে ছাতু (ভাজা ছোলা, যব প্রভৃতির গুঁড়া) পেশ করা হলো। তিনি তা পানিতে গোলানোর নির্দেশ দিলেন এবং তাই করা হলো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ তা খেলেন এবং আমরাও খেলাম। অতঃপর তিনি মাগরিবের নামাযের জন্য উঠে কুল্লি করলেন এবং আমরাও কুল্লি করলাম। অতঃপর তিনি নামায পড়েন কিন্তু উযু করেননি।*
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমরা এই মতই গ্রহণ করেছি যে, আগুনে পাকানো খাবার খেলে (নতুন করে) উযু করার প্রয়োজন নেই (তাতে উযু নষ্ট হয় না), বরং নাপাকির কারণে উযুর প্রয়োজন হয়। আর যে কোন প্রকারের খাদ্য, তা আগুন স্পর্শ করুক বা না করুক তা গ্রহণ করলে পুনরায় উযু করতে হবে না। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ)-এরও এই মত।

* একদল আলেমের মতে আগুনে পাকানো খাবার খেলে উযু নষ্ট হয়ে যায় এবং পুনরায় উযু করতে হয়। যেসব হাদীসে এ ধরনের খাবার গ্রহণ করলে উযু করার নির্দেশ রয়েছে, তারা নিজেদের মতের স্বপক্ষে তা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সর্বাধিক সংখ্যক ফিকহবিদের মতে আগুনে পাকানো খাবার খেলে উযু নষ্ট হয় না বা পুনর্বার উযু করার প্রয়োজন নেই। রাসূলুল্লাহ ﷺ - এর শেষ জীবনের কর্মপন্থা এবং খোলাফায়ে রাশেদুনের কর্মপন্থা তাই প্রমাণ করে। উযুর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত হাদীসের জওয়াবে শেষোক্ত মতের ফিকহবিদগণ বলেন, এগুলোর নির্দেশ মুস্তাহাব পর্যায়ের অথবা এসব হাদীসে 'উযু' শব্দটি আভিধানিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে অর্থাৎ হাত-মুখ ধোয়া ও মুখের অভ্যন্তরভাগ পরিষ্কার করা। তাদের মতে এখানে শব্দটি পারিভাষিক অর্থে ব্যবহৃত হয়নি। যেমন এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ দুধ পান করে কুলি করেছেন এবং বলেছেনঃ هذا وضوء مما مست النار (এটাই হলো আগুনে পাকানো জিনিস আহার করার পরের উযু)। এ ছাড়াও তাদের মতের সমর্থনে অনেক মারফূ হাদীস বিদ্যমান রয়েছে (অনুবাদক)।
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ بَشِيرِ بْنِ يَسَارٍ مَوْلَى بَنِي حَارِثَةَ، أَنَّ سُوَيْدَ بْنَ نُعْمَانَ أَخْبَرَهُ , أَنَّهُ خَرَجَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ خَيْبَرَ حَتَّى إِذَا كَانُوا بِالصَّهْبَاءِ وَهِيَ أَدْنَى خَيْبَرَ، صَلَّوُا الْعَصْرَ، ثُمَّ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالأَزْوَادِ، فَلَمْ يُؤْتَ إِلا بِالسَّوِيقِ، فَأَمَرَ بِهِ فَثُرِّيَ لَهُمْ بِالْمَاءِ، «فَأَكَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَكَلْنَا، ثُمَّ قَامَ إِلَى الْمَغْرِبِ، فَمَضْمَضَ وَمَضْمَضْنَا، ثُمَّ صَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ» ، قَالَ مُحَمَّدٌ: وَبِهَذَا نَأْخُذُ، لا وُضُوءَ مِمَّا مَسَّتْهُ النَّارُ وَلا مِمَّا دَخَلَ، إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ مِنَ الْحَدَثِ، فَأَمَّا مَا دَخَلَ مِنَ الطَّعَامِ مِمَّا مَسَّتْهُ النَّارُ، أَوْ لَمْ تَمَسَسْهُ فَلا وُضُوءَ فِيهِ، وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ رَحِمَهُ اللَّهُ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ - হাদীস নং ৩০ | মুসলিম বাংলা