শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২১. মাকরুহ বিষয়াদির বর্ণনা
হাদীস নং: ৬৯০২
আন্তর্জাতিক নং: ৬৯০৮
পায়ের উপর পা রাখা।
৬৯০২-০৮। ইউনুস (রাহঃ) ..... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে দেখলাম মসজিদে এক পা তাঁর অপর পায়ের উপর রেখে শুয়ে আছেন।
রাওহ ইব্নুল ফারাজ (রাহঃ):... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা আব্দুল্লাহ্ ইব্ন যায়দ (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ)
থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ইয়াযীদ ইব্ন সিনান (রাহঃ) ......... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ইউনুস (রাহঃ) ......... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে অনরুপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ..... ইব্ন শিহাব (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। অতঃপর তিনি নিজস্ব সনদে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (রাহঃ) ও আলী ইব্ন আব্দুর রহমান (রাহঃ) ..... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
বস্তুত এঁরা বলেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণিত এই সমস্ত রিওয়ায়াতে ঐ বিষয়ের বৈধতা ব্যক্ত হয়েছে যা থেকে প্রথমােক্ত রিওয়ায়াতসমূহে তিনি নিষেধ করেছেন। পক্ষান্তরে তাদের উল্লেখিত প্রামাণ্য রিওয়ায়াত কা'ব ইব্ন উযরা (রাযিঃ)-এর বক্তব্য। যেহেতু সাহাবাদের একদল থেকে এর বিপরীত বর্ণিত আছে :
রাওহ ইব্নুল ফারাজ (রাহঃ):... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা আব্দুল্লাহ্ ইব্ন যায়দ (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ)
থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ইয়াযীদ ইব্ন সিনান (রাহঃ) ......... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ইউনুস (রাহঃ) ......... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে অনরুপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ..... ইব্ন শিহাব (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। অতঃপর তিনি নিজস্ব সনদে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (রাহঃ) ও আলী ইব্ন আব্দুর রহমান (রাহঃ) ..... আব্বাদ ইব্ন তামীম (রাহঃ) তার চাচা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
বস্তুত এঁরা বলেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণিত এই সমস্ত রিওয়ায়াতে ঐ বিষয়ের বৈধতা ব্যক্ত হয়েছে যা থেকে প্রথমােক্ত রিওয়ায়াতসমূহে তিনি নিষেধ করেছেন। পক্ষান্তরে তাদের উল্লেখিত প্রামাণ্য রিওয়ায়াত কা'ব ইব্ন উযরা (রাযিঃ)-এর বক্তব্য। যেহেতু সাহাবাদের একদল থেকে এর বিপরীত বর্ণিত আছে :
08 - 6902 - حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: ثنا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: «رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُسْتَلْقِيًا فِي الْمَسْجِدِ , وَاضِعًا إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى» [ص:278]
حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ الْفَرَجِ قَالَ: ثنا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ يَعْقُوبَ بْنِ أَبِي عَبَّادٍ , قَالَ: ثنا سُفْيَانُ , قَالَ: حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ , قَالَ: حَدَّثَنِي عَبَّادُ بْنُ تَمِيمٍ , عَنْ عَمِّهِ , عَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدٍ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ سِنَانٍ: قَالَ: ثنا أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ، قَالَ: ثنا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ: ثنا الزُّهْرِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبَّادُ بْنُ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ
حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، وَيُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ
حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ، قَالَ: ثنا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , قَالَ: ثنا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ، قَالَ: ثنا حَجَّاجٌ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْمَاجِشُونِ ح
وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَحْمُودُ بْنُ لَبِيدٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ. قَالُوا: فَهَذِهِ الْآثَارُ قَدْ جَاءَتْ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِإِبَاحَةِ مَا مَنَعَتْ مِنْهُ الْآثَارُ الْأُوَلُ. وَأَمَّا مَا ذَكَرُوهُ , مِمَّا احْتَجُّوا بِهِ مِنْ قَوْلِ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ , فَإِنَّهُ قَدْ رُوِيَ عَنْ جَمَاعَةٍ , مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خِلَافُ ذَلِكَ
حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ الْفَرَجِ قَالَ: ثنا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ يَعْقُوبَ بْنِ أَبِي عَبَّادٍ , قَالَ: ثنا سُفْيَانُ , قَالَ: حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ , قَالَ: حَدَّثَنِي عَبَّادُ بْنُ تَمِيمٍ , عَنْ عَمِّهِ , عَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدٍ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ سِنَانٍ: قَالَ: ثنا أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ، قَالَ: ثنا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ: ثنا الزُّهْرِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبَّادُ بْنُ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ
حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، وَيُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ
حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ، قَالَ: ثنا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , قَالَ: ثنا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ، قَالَ: ثنا حَجَّاجٌ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْمَاجِشُونِ ح
وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَحْمُودُ بْنُ لَبِيدٍ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ. قَالُوا: فَهَذِهِ الْآثَارُ قَدْ جَاءَتْ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِإِبَاحَةِ مَا مَنَعَتْ مِنْهُ الْآثَارُ الْأُوَلُ. وَأَمَّا مَا ذَكَرُوهُ , مِمَّا احْتَجُّوا بِهِ مِنْ قَوْلِ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ , فَإِنَّهُ قَدْ رُوِيَ عَنْ جَمَاعَةٍ , مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خِلَافُ ذَلِكَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে দেখা যাচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে এভাবে চিত হয়ে শুয়েছিলেন যে, তাঁর এক পা অন্য পায়ের উপর রাখা ছিল। এর দ্বারা বোঝা যায় এভাবে শোওয়ায় কোনও দোষ নেই। কিন্তু অপর এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লাম এভাবে শুইতে নিষেধ করেছেন। যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَسْتَلْقِيَنَّ أَحَدُكُمْ ثُمَّ يَضَعُ إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى
'তোমাদের কেউ যেন চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা না রাখে’।
(সহীহ মুসলিম : ২০৯৯; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৮৬৫; জামে' তিরমিযী : ২৭৬৬; মুসনাদুল বাযযার: ৪৬৮৪; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ২১৮১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৯০৫৯; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৭৭০১)
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা যাবে না। সুতরাং উভয় হাদীছকে পরস্পরবিরোধী মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই। কেননা চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ তখন, যখন হাঁটু খাড়া থাকে। কারণ হাঁটু দাঁড় করিয়ে এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে উভয় পা যদি সোজা করে বিছানো থাকে, তবে সে অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার কোনও আশঙ্কা থাকে না। তাই সে অবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ নয়। মোটকথা দুই হাদীছের সম্পর্ক দুই অবস্থার সঙ্গে। সে হিসেবে উভয়ের মধ্যে কোনও বিরোধ থাকে না। উল্লেখ্য, হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে তখন, যখন পরিধানে লুঙ্গি থাকে। পক্ষান্তরে পরিধানে যদি পায়জামা থাকে, তবে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে না। সে ক্ষেত্রে হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায়ও এক পায়ের উপর আরেক পা রাখা নিষেধ হবে না।
বোঝা গেল অন্যের সামনে সতর ঢেকে রাখা জরুরি। পোশাক পরিধানের মূল উদ্দেশ্যই সতর ঢাকা। তাই শয়ন, জাগরণ, চলাফেরা, ওঠাবসা সর্বাবস্থায় এদিকে লক্ষ রাখা চাই। এমন কোনওভাবে পোশাক পরতে নেই বা এমন কোনও অঙ্গভঙ্গি অবলম্বন করতে নেই, যাতে অন্যের সামনে সতর বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ইসলামে সতর ঢাকার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনও অবস্থায়ই যাতে অন্যের সামনে সতর উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখা একান্ত কর্তব্য।
খ. শোওয়া ও ঘুমন্ত অবস্থায় সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সতরের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন খুব বেশি।
لَا يَسْتَلْقِيَنَّ أَحَدُكُمْ ثُمَّ يَضَعُ إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى
'তোমাদের কেউ যেন চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা না রাখে’।
(সহীহ মুসলিম : ২০৯৯; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৮৬৫; জামে' তিরমিযী : ২৭৬৬; মুসনাদুল বাযযার: ৪৬৮৪; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ২১৮১; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৯০৫৯; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৭৭০১)
এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যাচ্ছে চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা যাবে না। সুতরাং উভয় হাদীছকে পরস্পরবিরোধী মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই। কেননা চিত হয়ে শোওয়া অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ তখন, যখন হাঁটু খাড়া থাকে। কারণ হাঁটু দাঁড় করিয়ে এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ অবস্থায় এক পায়ের উপর অন্য পা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে উভয় পা যদি সোজা করে বিছানো থাকে, তবে সে অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার কোনও আশঙ্কা থাকে না। তাই সে অবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে এক পায়ের উপর অন্য পা রাখা নিষেধ নয়। মোটকথা দুই হাদীছের সম্পর্ক দুই অবস্থার সঙ্গে। সে হিসেবে উভয়ের মধ্যে কোনও বিরোধ থাকে না। উল্লেখ্য, হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায় এক পায়ের উপর আরেক পা রাখলে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে তখন, যখন পরিধানে লুঙ্গি থাকে। পক্ষান্তরে পরিধানে যদি পায়জামা থাকে, তবে সতর খোলার আশঙ্কা থাকে না। সে ক্ষেত্রে হাঁটু দাঁড় করানো অবস্থায়ও এক পায়ের উপর আরেক পা রাখা নিষেধ হবে না।
বোঝা গেল অন্যের সামনে সতর ঢেকে রাখা জরুরি। পোশাক পরিধানের মূল উদ্দেশ্যই সতর ঢাকা। তাই শয়ন, জাগরণ, চলাফেরা, ওঠাবসা সর্বাবস্থায় এদিকে লক্ষ রাখা চাই। এমন কোনওভাবে পোশাক পরতে নেই বা এমন কোনও অঙ্গভঙ্গি অবলম্বন করতে নেই, যাতে অন্যের সামনে সতর বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ইসলামে সতর ঢাকার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনও অবস্থায়ই যাতে অন্যের সামনে সতর উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখা একান্ত কর্তব্য।
খ. শোওয়া ও ঘুমন্ত অবস্থায় সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সতরের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন খুব বেশি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
