শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২১. মাকরুহ বিষয়াদির বর্ণনা
হাদীস নং: ৬৬৭৪
রেশমী পোশাক পরিধান প্রসঙ্গে
৬৬৭৪। ইবন আবু দাউদ (রাহঃ) ...... ইয়াহ্ইয়া ইবন আবু ইসহাক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে সালিম ইবন আব্দুল্লাহ (রাহঃ) জিজ্ঞেস করেছেন যে, 'ইসতাবরাক' কি বস্তু? আমি বললাম, যে রেশমের কাপড় শক্ত এবং মোটা হয় । তিনি বললেন, আমি আব্দুল্লাহ্ ইবন উমর (রাযিঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন যে, উমর ইবন খাত্তাব (রাযিঃ) এক ব্যক্তির পরিধানে রেশমের একটি জোড়া দেখলেন এবং সেটি নিয়ে আসা হল । অনন্তর তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! এটি খরিদ করে নিন এবং তা আপনার নিকট লোকদের প্রতিনিধি দল আগমনে পরিধান করুন। তিনি বললেন, রেশমী কাপড় সে-ই পরে যার আখিরাতে কোন অংশ নেই। তিনি বলেন, ঘটনা বিগত হয়ে গেল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁর কাছে একটি রেশমী কাপড়ের জোড়া পাঠালেন। তিনি তা নিয়ে তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে এটি (জোড়াটি) প্রেরণ করেছেন অথচ আপনি এ ব্যাপারে যা বলার বলেছেন। তিনি বললেন, আমি এটি তোমার কাছে এ জন্য পাঠিয়েছি যেন এর দ্বারা তুমি সম্পদ অর্জন করতে পার। বস্তুত আব্দুল্লাহ্ ইবন উমর (রাযিঃ) এই হাদীসের কারণে কাপড়ে রেশমী কারুকার্যকে অপছন্দ করতেন।
6674 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ: قَالَ لِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ: مَا الْإِسْتَبْرَقُ؟ . قُلْتُ: مَا غَلُظَ مِنَ الدِّيبَاجِ , وَخَشُنَ مِنْهُ. فَقَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ يَقُولُ: رَأَى عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ عَلَى رَجُلٍ حُلَّةً مِنْ إِسْتَبْرَقٍ , فَأَتَى بِهَا فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ , اشْتَرِ هَذِهِ , فَالْبَسْهَا لِوَفْدِ النَّاسِ , إِذَا قَدِمَ عَلَيْكَ. فَقَالَ: «إِنَّمَا يَلْبَسُ الْحَرِيرَ , مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ» ، قَالَ: فَمَضَى لِذَلِكَ مَا مَضَى. ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ إِلَيْهِ بِحُلَّةٍ فَأَتَاهُ بِهَا فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ , بَعَثْتَ إِلَيَّ بِهَذِهِ , وَقَدْ قُلْتَ فِي مِثْلِ هَذَا مَا قُلْتَ؟ . فَقَالَ: «إِنَّمَا بَعَثْتُ إِلَيْكَ بِهَا لِتُصِيبَ بِهَا مَالًا» وَكَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ يَكْرَهُ الْعَلَمَ فِي الثَّوْبِ مِنْ أَجْلِ هَذَا الْحَدِيثِ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীছে জানানো হয়েছে, রেশমী পোশাক পরে এমন ব্যক্তি, আখিরাতে যার কোনও অংশ নেই। অর্থাৎ যে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না। তার মানে এটা অমুসলিমদের পোশাক। অন্য হাদীছে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরে, সে আখিরাতে রেশমী পোশাক পরবে না। আর এ কারণে মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক পরতে নিষেধ করা হয়েছে। সারমর্ম হল- রেশমি পোশাক দুনিয়ায় অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিম ব্যক্তির জন্য দুনিয়ায়। এটা পরা জায়েয নয়। তা সত্ত্বেও কোনও মুসলিম ব্যক্তি যদি রেশমী পোশাক পরে, তবে আখিরাতে সে এ পোশাক পরতে পারবে না। অর্থাৎ এ হুকুম অমান্য করার কারণে সে শুরুতে জান্নাতে যেতে পারবে না। জান্নাতের পোশাক রেশমী পোশাক। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
‘সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের’ (সূরা ফাতির, আয়াত ৩৩)
কাজেই 'দুনিয়ায় যে মুমিন রেশমী পোশাক পরে, আখিরাতে সে তা পরবে না' দ্বারা বোঝানো হয়েছে সে প্রথমে জান্নাতে যেতে পারবে না। প্রথমে তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঈমানের বদৌলতে সে জান্নাত লাভ করবে। জান্নাত লাভ করার পর জান্নাতের অপরাপর নি'আমতের মতো রেশমী পোশাকও সে পাবে। কেউ কেউ বলেন, দুনিয়ায় যে মুমিন ব্যক্তি রেশমী পোশাক পরবে, সে জান্নাত লাভ করলেও জান্নাতের অন্যান্য নি'আমত ঠিকই পাবে, কিন্তু রেশমী পোশাক পাবে না।
প্রশ্ন দাঁড়ায়, তবে তো তার মনে রেশমী পোশাক না পাওয়ার কষ্ট থেকে যাবে, অথচ জান্নাত কষ্টের জায়গা নয়?
এর উত্তর হল, জান্নাতে এমন ব্যক্তির অন্তর থেকে রেশমী পোশাকের চাহিদাই দূর করে দেওয়া হবে। অন্তরে যখন এ পোশাকের চাহিদা থাকবে না, তখন না পাওয়ার দরুন কোনও কষ্টও সে পাবে না, যেমন সাধারণ স্তরের জান্নাতীগণ উচ্চস্তরের জান্নাতবাসীগণের মতো মর্যাদা না পাওয়ার কারণে কোনও কষ্ট বোধ করবে না।
হাদীছের মূল বার্তা হল মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক সম্পর্কে সতর্ক করা, যাতে তারা এটা না পরে। কেননা এটা পরলে শরী'আতের হুকুম অমান্য করা হবে। পরিণামে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, যদি না আল্লাহ তা'আলা মাফ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিমদেরকে অবশ্যই এ পোশাক পরিধান করা হতে বিরত থাকতে হবে।
খ. রেশমী পোশাক পরিধান করলে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
গ. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরিধান করলে জান্নাতে এ নি'আমত থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।
وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
‘সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের’ (সূরা ফাতির, আয়াত ৩৩)
কাজেই 'দুনিয়ায় যে মুমিন রেশমী পোশাক পরে, আখিরাতে সে তা পরবে না' দ্বারা বোঝানো হয়েছে সে প্রথমে জান্নাতে যেতে পারবে না। প্রথমে তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঈমানের বদৌলতে সে জান্নাত লাভ করবে। জান্নাত লাভ করার পর জান্নাতের অপরাপর নি'আমতের মতো রেশমী পোশাকও সে পাবে। কেউ কেউ বলেন, দুনিয়ায় যে মুমিন ব্যক্তি রেশমী পোশাক পরবে, সে জান্নাত লাভ করলেও জান্নাতের অন্যান্য নি'আমত ঠিকই পাবে, কিন্তু রেশমী পোশাক পাবে না।
প্রশ্ন দাঁড়ায়, তবে তো তার মনে রেশমী পোশাক না পাওয়ার কষ্ট থেকে যাবে, অথচ জান্নাত কষ্টের জায়গা নয়?
এর উত্তর হল, জান্নাতে এমন ব্যক্তির অন্তর থেকে রেশমী পোশাকের চাহিদাই দূর করে দেওয়া হবে। অন্তরে যখন এ পোশাকের চাহিদা থাকবে না, তখন না পাওয়ার দরুন কোনও কষ্টও সে পাবে না, যেমন সাধারণ স্তরের জান্নাতীগণ উচ্চস্তরের জান্নাতবাসীগণের মতো মর্যাদা না পাওয়ার কারণে কোনও কষ্ট বোধ করবে না।
হাদীছের মূল বার্তা হল মুমিনদেরকে রেশমী পোশাক সম্পর্কে সতর্ক করা, যাতে তারা এটা না পরে। কেননা এটা পরলে শরী'আতের হুকুম অমান্য করা হবে। পরিণামে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, যদি না আল্লাহ তা'আলা মাফ করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক অমুসলিমদের পোশাক। তাই মুসলিমদেরকে অবশ্যই এ পোশাক পরিধান করা হতে বিরত থাকতে হবে।
খ. রেশমী পোশাক পরিধান করলে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
গ. দুনিয়ায় রেশমী পোশাক পরিধান করলে জান্নাতে এ নি'আমত থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
