শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২১. মাকরুহ বিষয়াদির বর্ণনা

হাদীস নং: ৬৫৯২
আন্তর্জাতিক নং: ৬৫৯৪
পায়খানা ও পেশাবের জন্য কিবলামুখী হওয়া প্রসঙ্গ
৬৫৯২-৯৪। ইউনুস ..... আতা ইবন ইয়াযীদ আল-লায়সী বলেন, তিনি হযরত আবু আইয়্যূব আনসারী (রাযিঃ)-কে বলতে শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, তোমরা পায়খানা ও পেশাবের জন্য কিবলামুখী হয়ো না। বরং তোমরা পূর্ব কিংবা পশ্চিমমুখী হয়ে পেশাব-পায়খানা কর। অতঃপর আমরা শামদেশে গমন করে দেখতে পেলাম, পায়খানাসমূহ কিবলামুখী করে নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা তখন (যথাসম্ভব) অন্যদিকে ঘুরে বসতাম এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতাম।

ইউনুস …… ইবন শিহাব হতে বর্ণনা করেন, অতঃপর তিনি নিজস্ব সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি হযরত আবু আইয়্যূব (রাযিঃ)-এর বক্তব্য "فَقَدِمْنَا الشَّامَ " হাদীসের শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেননি।

রাওহ ইবনুল ফারজ ....... ইবন শিহাব আব্দুর রহমান ইবন ইয়াযীদ ইবন জারিয়া হতে বর্ণনা করেন, যে হযরত আবু আইয়্যূব আনসারী (রাযিঃ), অতঃপর তিনি অনুরূপ বর্ণনা করেন এবং তিনি হযরত আবু আইয়্যুব (রাযিঃ)-এর বক্তব্যও উল্লেখ করেন।
بَابُ اسْتِقْبَالِ الْقِبْلَةِ بِالْفُرُوجِ لِلْغَائِطِ وَالْبَوْلِ
94 - 6592 - حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: ثنا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، سَمِعَ أَبَا أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيَّ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَسْتَقْبِلُوا الْقِبْلَةَ لِغَائِطٍ , وَلَا لِبَوْلٍ , وَلَكِنْ شَرِّقُوا أَوْ غَرِّبُوا» . فَقَدِمْنَا الشَّامَ , فَوَجَدْنَا مَرَاحِيضَ قَدْ بُنِيَتْ نَحْوَ الْقِبْلَةِ , فَنَنْحَرِفُ عَنْهَا , وَنَسْتَغْفِرُ اللهَ

حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: ثنا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ , غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ قَوْلَ أَبِي أَيُّوبَ فَقَدِمْنَا الشَّامَ إِلَى آخِرِ الْحَدِيثِ

حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ الْفَرَجِ، قَالَ: ثنا أَبُو مُصْعَبٍ، قَالَ: ثنا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ حَارِثَةَ، أَنَّ أَبَا أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيَّ، ثُمَّ ذَكَرَ مِثْلَهُ , وَذَكَرَ كَلَامَ أَبِي أَيُّوبَ أَيْضًا

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রা. হাদীসের শেষাংশে উল্লেখ করেছেন যে, সিরিয়ার ইসিত্মঞ্জাখানাগুলো কিবলার দিকে ফিরিয়ে নির্মিত ছিল। তাঁরা তা ব্যবহারের সময় শরীর ঘুরিয়ে বসতেন, তার পরও আল্লাহ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। এ থেকে বুঝা গেলো যে, খোলা ময়দানের মত ইসিত্মঞ্জাখানার ভেতরেও কিবলার প্রতি সম্মান দেখানো জরম্নরী এবং ওযর ব্যতীত কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ দিয়ে ইসিত্মঞ্জা করা মাকরূহ। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (আলমগিরী: ১/৫০)
এর বিপরীতে হযরত ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি হযরত হাফসার ঘরের ছাদে উঠে রসূল স.কে ইসিত্মঞ্জাখানার মধ্যে কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে ইসিত্মঞ্জা করতে দেখেছেন। (বুখারী-১৪৭) এ হাদীসের তুলনায় আমরা পূর্ববর্ণিত হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রা.-এর হাদীসকে এ কারণে প্রাধান্য দিয়ে থাকি যে, কা’বার দিকে মুখ বা পিঠ দিয়ে ইসিত্মঞ্জা করার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সকলের জন্য ব্যাপক। আর হযরত ইবনে উমার রা. কর্তৃক বর্ণিত রসূল স.-এর উক্ত কাজটি তাঁর ব্যক্তিগত। সুতরাং হতে পারে এটা রসূল স.-এর বৈশিষ্ট্য যা অন্যদের জন্য বৈধ নয়। অথবা এটা তিনি কোন ওযরের কারণে করেছেন। উপরন্তু হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রা.-এর হাদীস অনুসরণ করলে কা’বার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পায়।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৬৫৯২ | মুসলিম বাংলা