শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
১১. শরীআত বিধিত দন্ডের অধ্যায়
হাদীস নং: ৫০৫৮
৮. কাসামা (কসম) কিভাবে নেয়া হবে
৫০৫৮। ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ যদি কোন কওমের মহল্লায় নিহত পাওয়া যায় তাহলে সেখানে ওয়াজিব কাসামা বা কসমের ধরন কি হবে। একদল আলিম বলেন যে, বিবাদীগণ এভাবে কসম করবে যে, আল্লাহর কসম! আমরা হত্যা করিনি। যদি তারা কসম করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে তাহলে বাদীদের থেকে কসম নেয়া হবে এবং তারা যা দাবি করেছে তার হকদার হয়ে যাবে। তারা এ বিষয়ে সাহল ইব্ন আবী হাসমা (রাযিঃ)-এর হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন, যা আমরা পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছি। পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ বলেন যে, বিবাদীদের থেকেই কসম নেয়া হবে। যখন তারা কসম করে নিবে তখন দিয়াত আদায় করবে। তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) কর্তৃক আনসারদেরকে, এটা বলা যে, তােমরা কি কসম করবে এবং স্বীয় নিহতের অধিকার প্রাপ্ত হবে? বস্তুত এটা তাঁর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ছিল। যেন তিনি বলেছেন যে, তােমরা শুধু কি দাবি করবে আর নিয়ে নিবে?
আর এটা এভাবে যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাদেরকে বলেছেন ইয়াহুদীরা কি পঞ্চাশজন কসম করে তােমাদেরকে (কসম) করা থেকে মুক্ত করে দিবে ? তারা বলবে, আল্লাহর কসম! আমরা হত্যা করিনি। তাঁরা বলল, আমরা কাফির কওমের কসম কিভাবে গ্রহণ করব? রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাদেরকে বললেন, তােমরা কি কসম করে আমি তােমাদের সঙ্গীর হত্যাকারীর অধিকার প্রাপ্ত হবে? অর্থাৎ ইয়াহুদীরা যদিও কাফির কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দাবির ব্যাপারে তােমরা শুধু তাদেরকে কসম দিতে পারবে। তােমরা মুসলমান হওয়ায় সত্বেও যেভাবে তােমরা শুধু কসম দ্বারা দিয়াতের হকদার হতে পার না, ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে তােমাদের দাবি দ্বারাও কসম ব্যতীত তাদের উপর কোন কিছু ওয়াজিব হয় না।
এই বিশ্লেষণ ও দাবির বিশুদ্ধতার দলীল হচ্ছে রাসূলুল্লাহ(ﷺ) -এর (ইন্তিকালের) পরে সাহাবাদের উপস্থিতিতে উমার ইব্ন খাত্তাব (রাযিঃ) এর ফয়সালা এবং সাহাবা কেরামের প্রতিবাদ না করা। আর এটা অসম্ভব ব্যাপার যে, আনসারদের এ বিষয়ে জ্ঞান লাভ হবে, বিশেষত মুহায়্যিসা (রাযিঃ)-এর ন্যায় ব্যক্তি যিনি তখন জীবিত ছিলেন এবং সাহল ইব্ন আবী হাসামা (রাযিঃ) ও বিদ্যমান ছিলেন। আর তাঁরা এ ব্যাপারে উমার (রাযিঃ)-কে সংবাদ দিবে না যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষে ফয়সালা প্রদান করেছেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উমার (রাযিঃ) থেকে নিম্নরূপ বর্ণিতঃ
ইবরাহীম ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ….. হারিস ইব্ন আযমা' (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উমার (রাযিঃ)-কে বললেন, আমাদের সম্পদ কি আমাদের কসমসমূহকে দূর করে না এবং আমাদের কসমসমূহ কি আমাদের সম্পদের কারণে প্রতিরুদ্ধ হয় না? তিনি বললেন, না, তিনি তার উপর দিয়াত আবশ্যক করে দিলেন।
আর এটা এভাবে যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাদেরকে বলেছেন ইয়াহুদীরা কি পঞ্চাশজন কসম করে তােমাদেরকে (কসম) করা থেকে মুক্ত করে দিবে ? তারা বলবে, আল্লাহর কসম! আমরা হত্যা করিনি। তাঁরা বলল, আমরা কাফির কওমের কসম কিভাবে গ্রহণ করব? রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাদেরকে বললেন, তােমরা কি কসম করে আমি তােমাদের সঙ্গীর হত্যাকারীর অধিকার প্রাপ্ত হবে? অর্থাৎ ইয়াহুদীরা যদিও কাফির কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দাবির ব্যাপারে তােমরা শুধু তাদেরকে কসম দিতে পারবে। তােমরা মুসলমান হওয়ায় সত্বেও যেভাবে তােমরা শুধু কসম দ্বারা দিয়াতের হকদার হতে পার না, ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে তােমাদের দাবি দ্বারাও কসম ব্যতীত তাদের উপর কোন কিছু ওয়াজিব হয় না।
এই বিশ্লেষণ ও দাবির বিশুদ্ধতার দলীল হচ্ছে রাসূলুল্লাহ(ﷺ) -এর (ইন্তিকালের) পরে সাহাবাদের উপস্থিতিতে উমার ইব্ন খাত্তাব (রাযিঃ) এর ফয়সালা এবং সাহাবা কেরামের প্রতিবাদ না করা। আর এটা অসম্ভব ব্যাপার যে, আনসারদের এ বিষয়ে জ্ঞান লাভ হবে, বিশেষত মুহায়্যিসা (রাযিঃ)-এর ন্যায় ব্যক্তি যিনি তখন জীবিত ছিলেন এবং সাহল ইব্ন আবী হাসামা (রাযিঃ) ও বিদ্যমান ছিলেন। আর তাঁরা এ ব্যাপারে উমার (রাযিঃ)-কে সংবাদ দিবে না যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষে ফয়সালা প্রদান করেছেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উমার (রাযিঃ) থেকে নিম্নরূপ বর্ণিতঃ
ইবরাহীম ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ….. হারিস ইব্ন আযমা' (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উমার (রাযিঃ)-কে বললেন, আমাদের সম্পদ কি আমাদের কসমসমূহকে দূর করে না এবং আমাদের কসমসমূহ কি আমাদের সম্পদের কারণে প্রতিরুদ্ধ হয় না? তিনি বললেন, না, তিনি তার উপর দিয়াত আবশ্যক করে দিলেন।
بَابُ الْقَسَامَةِ كَيْفَ هِيَ
قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: اخْتَلَفَ النَّاسُ فِي الْقَتِيلِ الْمَوْجُودِ فِي مَحَلَّةِ قَوْمٍ كَيْفَ الْقَسَامَةُ الْوَاجِبَةُ فِيهِ؟ فَقَالَ قَوْمٌ: يَحْلِفُ الْمُدَّعَى عَلَيْهِمْ بِاللهِ مَا قَتَلْنَا فَإِنْ أَبَوْا أَنْ يَحْلِفُوا اسْتُحْلِفَ الْمُدَّعُونَ وَاسْتَحَقُّوا مَا ادَّعَوْا. وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِحَدِيثِ سَهْلِ بْنِ أَبِي حَثْمَةَ الَّذِي ذَكَرْنَا فِي الْبَابِ الَّذِي قَبْلَ هَذَا الْبَابِ. وَقَالَ آخَرُونَ: بَلْ يُسْتَحْلَفُ الْمُدَّعَى عَلَيْهِمْ فَإِذَا حَلَفُوا غَرِمُوا الدِّيَةَ. وَقَالُوا: قَوْلُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلْأَنْصَارِ «أَتَحْلِفُونَ وَتَسْتَحِقُّونَ؟» إِنَّمَا كَانَ عَلَى النَّكِيرِ مِنْهُ عَلَيْهِمْ كَأَنَّهُ قَالَ «أَتَدَّعُونَ وَتَأْخُذُونَ؟» وَذَلِكَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُمْ " أَفَتُبَرِّئُكُمْ يَهُودُ بِخَمْسِينَ يَمِينًا بِاللهِ مَا قَتَلْنَا. فَقَالُوا: كَيْفَ نَقْبَلُ أَيْمَانَ قَوْمٍ كُفَّارٍ؟ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَحْلِفُونَ وَتَسْتَحِقُّونَ؟ ". أَيْ: إِنَّ الْيَهُودَ وَإِنْ كَانُوا كُفَّارًا فَلَيْسَ عَلَيْهِمْ فِيمَا تَدَّعُونَ عَلَيْهِمْ غَيْرَ أَيْمَانِهِمْ. وَكَمَا لَا يُقْبَلُ مِنْكُمْ - وَإِنْ كُنْتُمْ مُسْلِمِينَ - أَيْمَانُكُمْ فَتَسْتَحِقُّونَ بِهَا كَذَلِكَ لَا يَجِبُ عَلَى الْيَهُودِ بِدَعْوَاكُمْ عَلَيْهِمْ غَيْرُ أَيْمَانِهِمْ. وَالدَّلِيلُ عَلَى صِحَّةِ هَذَا التَّأْوِيلِ مَا قَدْ حَكَمَ بِهِ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحَضْرَةِ أَصْحَابِهِ فَلَمْ يُنْكِرْهُ عَلَيْهِ مِنْهُمْ مُنْكِرٌ. وَمُحَالٌ أَنْ يَكُونَ عِنْدَ الْأَنْصَارِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ مِنْ ذَلِكَ عِلْمٌ وَلَا سِيَّمَا مِثْلُ مُحَيِّصَةَ وَقَدْ كَانَ حَيًّا يَوْمَئِذٍ وَسَهْلُ بْنُ أَبِي حَثْمَةَ وَلَا يُخْبِرُونَهُ بِهِ وَيَقُولُونَ: لَيْسَ هَكَذَا قَضَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَنَا عَلَى الْيَهُودِ. فَمِمَّا رُوِيَ عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي ذَلِكَ مَا
5058 - قَدْ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ قَالَ: ثنا شُعْبَةُ عَنِ الْحَكَمِ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ الْأَزْمَعِ أَنَّهُ قَالَ لِعُمَرَ: أَمَا تَدْفَعُ أَمْوَالُنَا أَيْمَانَنَا وَلَا أَيْمَانُنَا عَنْ أَمْوَالِنَا قَالَ: لَا وَعَقَلَهُ
5058 - قَدْ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ قَالَ: ثنا شُعْبَةُ عَنِ الْحَكَمِ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ الْأَزْمَعِ أَنَّهُ قَالَ لِعُمَرَ: أَمَا تَدْفَعُ أَمْوَالُنَا أَيْمَانَنَا وَلَا أَيْمَانُنَا عَنْ أَمْوَالِنَا قَالَ: لَا وَعَقَلَهُ
