শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

৬. হজ্বের অধ্যায়

হাদীস নং: ৪১৫১
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৫৫
৩৩. ইহরাম ব্যতীত হারাম শরীফে প্রবেশ করা
৪১৫১-৫৫। আলী ইব্‌ন মা’বাদ (রাহঃ), আলী ইব্‌ন আব্দুর রহমান (রাহঃ) ও ফাহাদ (রাহঃ) ….. জাবির ইব্‌ন আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) মক্কা বিজয়ের দিন মক্কাতে প্রবেশ করেছেন। তখন তাঁর পবিত্র মাথায় কাল পাগড়ি ছিল।


ফাহাদ (রাহঃ) ও আবু বাকরা (রাহঃ) ….. জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী(ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
بَابُ دُخُولِ الْحَرَمِ , هَلْ يَصْلُحُ بِغَيْرِ إِحْرَامٍ؟
4151 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ , قَالَ: ثنا مُعَلَّى بْنُ مَنْصُورٍ ح

4152 - وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ , قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ حَكِيمٍ الْأَوْدِيُّ ح

4153 - وَحَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ , قَالُوا: ثنا شَرِيكٌ , عَنْ عَمَّارٍ الدُّهْنِيِّ , عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ , عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , دَخَلَ مَكَّةَ يَوْمَ الْفَتْحِ , وَعَلَى رَأْسِهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ»

4154 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا أَبُو نُعَيْمٍ , ح

4155 - وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ , قَالَ: ثنا أَبُو دَاوُدَ , قَالَا: ثنا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ , عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ , عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مِثْلَهُ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাবিজয়ের দিন যখন মক্কা মুকাররামায় প্রবেশ করেন, তখন তাঁর মাথায় ছিল কালো পাগড়ি। অন্য বর্ণনায় আছে, তিনি মক্কা মুকাররামায় প্রবেশ করেছিলেন শিরস্ত্রাণ পরিহিত অবস্থায়। উভয় বর্ণনার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। কেননা এটা সম্ভব যে, তাঁর মাথায় পাগড়িও ছিল এবং শিরস্ত্রাণও ছিল। তিনি শিরস্ত্রাণ পরেছিলেন পাগড়ির উপর। আবার এমনও হতে পারে যে, একবার তাঁর মাথায় পাগড়ি ছিল এবং আরেকবার শিরস্ত্রাণ। কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, তিনি কালো পাগড়ি পরিধান করে ভাষণ দিয়েছিলেন। কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, তিনি সে ভাষণ দিয়েছিলেন জুমু'আর দিন মিম্বর থেকে। হাদীছ দ্বারা আরও জানা যায়, তিনি পাগড়ির এক প্রান্ত পেছন দিকে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। এর দ্বারা পাগড়ি পরার নিয়ম জানা গেল। অর্থাৎ পাগড়ির এক প্রান্ত পেছন দিকে ঝুলিয়ে রাখা মুস্তাহাব। হাদীছ দ্বারা আরও জানা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাগড়ি ব্যবহার করেছেন এবং তাঁর পাগড়ির রং ছিল কালো। সুতরাং পাগড়ি ব্যবহার করা সুন্নত এবং পাগড়ির রং কালো হওয়াই উত্তম। কোনও কোনও হাদীছ দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদা পাগড়ি পরেছেন বলেও জানা যায়। হাদীছ দ্বারা আরও জানা যায়, সাধারণভাবে পোশাকের ক্ষেত্রে তিনি সাদা রংকে প্রাধান্য দিয়েছেন।

পাগড়ির যে অংশ পেছনে বুলিয়ে রাখা হয় তাকে শামলা বলে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও শামলা রেখে পাগড়ি বাঁধতেন আবার কখনও শামলা রাখতেনও না। কখনও শামলা পেছনে ও সামনে দু'দিকেই রাখতেন। অর্থাৎ পাগড়ির এক প্রান্ত পেছনে ঝুলিয়ে দিতেন, অপর প্রান্ত ডান কাঁধের সামনে। আবার কখনও এমনও হত যে, শামলা একটাই হত এবং তা সামনের দিকে রাখতেন। মোটকথা পাগড়ি সব রকমেই বাঁধার অবকাশ আছে। তবে এর মধ্যে উত্তম হল শামলা রাখা এবং তা পেছন দিকে ঝোলানো।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. পাগড়ি পরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত।

খ. পাগড়ির এক প্রান্ত পেছন দিকে ঝুলিয়ে রাখা মুস্তাহাব।

গ. যুদ্ধকালে মাথায় লোহার বর্ম পরা জায়েয।

ঘ. পাগড়ি কালো রঙের হওয়া উত্তম। যদিও অন্য যে-কোনও রঙের পাগড়ি পরাও জায়েয।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৪১৫১ | মুসলিম বাংলা