শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
৬. হজ্বের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৯৬৪
মুযদালিফায় দুই সালাতকে একত্রে আদায় করার পদ্ধতি
৩৯৬৪। ইউনুস (রাহঃ) ..... উসামা ইব্ন যায়দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি তাকে বলতে শুনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ আরাফাত থেকে প্রত্যাবর্তনকালে উপত্যকায় পৌঁছে সেখানে অবতরণ করলেন এবং পেশাব করলেন। তারপর উযূ করলেন কিন্তু উযূকে পূর্ণাঙ্গ করলেন। আমি তাকে বললাম, সালাত আদায় করবেন ? তিনি বললেন, সালাত সম্মুখে আদায় করব। তারপর তিনি বাহনে আরােহণ করে মুযদালিফায় পৌঁছলেন। সেখানে নেমে পূর্ণাঙ্গ উযু করলেন। তারপর সালাতের ইকামত বলা হল, তিনি মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। এরপর প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের উট তার অবস্থান স্থলে নিয়ে গিয়ে বসাল। এরপর ইশা’র সালাতের জন্য ইকামত বলা হল, তিনি তা আদায় করলেন এবং এই দুই সালাতের মাঝে কোন (সুন্নত) সালাত আদায় করেননি। নবী (ﷺ) থেকে মুযদালিফায় দুই সালাত পড়ার ব্যাপারে বিভিন্ন রকম রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে যে, তিনি কি তা একত্রে মিলিত করে পড়েছেন না উভয়ের মাঝে কোন আমল করেছেন ? এ বিষয়ে সেই মর্মেও হাদীস বর্ণিত আছে যা আমরা ইবন উমর (রাযিঃ) ও উসামা (ইবন যায়দ রা)-এর রিওয়ায়াতে উল্লেখ করেছি। এই সালাতগুলাে আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কেও তার থেকে বিভিন্নরূপ বর্ণিত আছে। কেউ কেউ বলেন যে, এক আযান ও এক ইকামতে, কেউ কেউ বলেন যে, এক আযান ও দুই ইকামতে। পক্ষান্তরে অন্য একদল বলেন,শুধু এক ইকামতে এবং কোন এক সালাতের সঙ্গেও আযান নেই। তারা এ বিষয়ে বিরোেধ করেছেন যা আমরা উল্লেখ করেছি। আর মুযদালিফায় যে দুই সালাতকে একত্রিত করা হয় তা হল মাগরিব এবং ইশা। যেমনিভাবে আরাফাতে দুই সালাতকে একত্রিত করা হয়, আর তা হল যুহর ও আসর। বস্তুত এই দুই জায়গায় সালাতের এই একত্রীকরণ সেই ব্যক্তির জন্য যে কি-না হজ্জের ইহরাম বেঁধেছে। ইহরাম ছাড়া হালাল ব্যক্তি এবং এমন ব্যক্তি যে, হজ্জ ব্যতীত উমরা পালন করছে তার জন্য নয়। আরাফাতে এক সালাত অন্যটির পরে আদায় করা হয় এবং উভয়ের মাঝে অন্য কোন আমল করা হয় না । ঐ দুটির জন্য এক আযান এবং দুই ইকামত বলা হয়। তাই যুক্তির দাবি হল যে, মুযদালিফার সালাতগুলােও অনুরূপ হবে যে, একটির পরে অপরটিকে এভাবে আদায় করা হবে যে, উভয়ের মাঝে অন্য কোন আমল হবে না। এগুলাের জন্য এক আযান এবং দুই ইকামত বলা হবে, যেমনিভাবে অভিন্নরূপে আরাফাতে করা হয়ে থাকে। বস্তুত এই অনুচ্ছেদে যুক্তি হল এটাই। আর এটা ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত পরিপন্থী কেননা তাঁদের মতে আরাফাতে সালাতগুলােকে সেই রূপে একত্রিত করা হবে যেমনিভাবে আমরা উল্লেখ করেছি। কিন্তু মুযদালিফায় এক আযান ও এক ইকামতে একত্রিত করা হবে। তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইবন উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত রিওয়ায়াত দ্বারা প্রমাণ পেশ করেন। এ বিষয়ে সুফিয়ান সাওরী (রাহঃ)-এর মতাদর্শ হল যে, ঐ দু’টি সালাতকে এক ইকামতে পড়া হবে, উভয়ের জন্য আযান হবে না। যেমনিভাবে আমরা ইব্ন উমর (রাযিঃ)-এর বরাতে নবী (ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করেছি। আর যা কিছু আমরা জাবির (রাযিঃ) থেকে রিওয়ায়াত করেছি তা আমাদের কাছে অধিক পসন্দনীয়। কেননা এর স্বপক্ষে যুক্তি সাক্ষ্যবহন করে। তারপর এরপরে আমরা লক্ষ্য করছি যে, ইবন উমর (রাযিঃ)-এর হাদীস এবং জাবির (রাযিঃ)-এর হাদীসের বিষয়বস্তু এক ও অভিন্ন ঃ
3964 - حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: أنا ابْنُ وَهْبٍ , قَالَ: أَخْبَرَنِي مَالِكٌ , عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ , عَنْ كُرَيْبٍ مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا , عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ , أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ: " دَفَعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ عَرَفَةَ , حَتَّى إِذَا كَانَ بِالشِّعْبِ نَزَلَ فَبَالَ , ثُمَّ تَوَضَّأَ , فَلَمْ يُسْبِغِ الْوُضُوءَ , فَقُلْتُ لَهُ: الصَّلَاةَ , فَقَالَ: الصَّلَاةُ أَمَامَكَ. فَرَكِبَ حَتَّى جَاءَ بِالْمُزْدَلِفَةِ , فَنَزَلَ فَتَوَضَّأَ فَأَسْبَغَ الْوُضُوءَ , ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَصَلَّى الْمَغْرِبَ , ثُمَّ أَنَاخَ كُلُّ إِنْسَانٍ بَعِيرَهُ فِي مَنْزِلِهِ , ثُمَّ أُقِيمَتِ الْعِشَاءُ , فَصَلَّاهَا , وَلَمْ يُصَلِّ بَيْنَهُمَا شَيْئًا " فَقَدِ اخْتُلِفَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الصَّلَاتَيْنِ بِمُزْدَلِفَةَ , هَلْ صَلَّاهُمَا مَعًا؟ أَوْ عَمِلَ بَيْنَهُمَا عَمَلًا؟ فَرُوِيَ فِي ذَلِكَ مَا قَدْ ذَكَرْنَا فِي حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا وَأُسَامَةَ. وَاخْتُلِفَ عَنْهُ كَيْفَ صَلَّاهُمَا؟ فَقَالَ بَعْضُهُمْ: بِأَذَانٍ وَإِقَامَةٍ , وَقَالَ بَعْضُهُمْ: بِأَذَانٍ وَإِقَامَتَيْنِ , وَقَالَ بَعْضُهُمْ: بِإِقَامَةٍ وَاحِدَةٍ لَيْسَ مَعَهُمَا أَذَانٌ فَلَمَّا اخْتَلَفُوا فِي ذَلِكَ عَلَى مَا ذَكَرْنَا , وَكَانَتِ الصَّلَاتَانِ يُجْمَعُ بَيْنَهُمَا بِمُزْدَلِفَةَ , وَهُمَا الْمَغْرِبُ وَالْعِشَاءُ , كَمَا يُجْمَعُ بَيْنَ الصَّلَاتَيْنِ بِعَرَفَةَ , وَهُمَا الظُّهْرُ وَالْعَصْرُ , فَكَانَ هَذَا الْجَمْعُ فِي هَذَيْنِ الْمَوْطِنَيْنِ جَمِيعًا لَا يَكُونُ إِلَّا لِمُحْرِمٍ فِي حُرْمَةِ الْحَجِّ , فَلَا يَكُونُ لِحَلَالٍ وَلَا لِمُعْتَمِرٍ غَيْرِ حَاجٍّ , وَكَانَتِ الصَّلَاتَانِ بِعَرَفَةَ تُصَلَّى أَحَدُهُمَا فِي إِثْرِ صَاحِبَتِهَا , وَلَا يُعْمَلُ بَيْنَهُمَا عَمَلٌ , وَكَانَتَا يُؤَذَّنُ لَهُمَا أَذَانًا وَاحِدًا , وَيُقَامُ لَهُمَا إِقَامَتَيْنِ كَمَا يُفْعَلُ بِعَرَفَةَ سَوَاءً. هَذَا هُوَ النَّظَرُ فِي هَذَا الْبَابِ وَهُوَ خِلَافُ قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ وَذَلِكَ أَنَّهُمْ كَانُوا يَذْهَبُونَ فِي الْجَمْعِ بَيْنَ الصَّلَاتَيْنِ بِعَرَفَةَ إِلَى مَا ذَكَرْنَا , وَيَذْهَبُونَ فِي الْجَمْعِ بَيْنَ الصَّلَاتَيْنِ بِمُزْدَلِفَةَ إِلَى أَنْ يَجْعَلُوا ذَلِكَ بِأَذَانٍ وَإِقَامَةٍ وَاحِدَةٍ , وَيَحْتَجُّونَ فِي ذَلِكَ بِمَا رُوِيَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ. وَكَانَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ يَذْهَبُ فِي ذَلِكَ إِلَى أَنْ يُصَلِّيَهُمَا بِإِقَامَةٍ وَاحِدَةٍ لَا أَذَانَ مَعَهُمَا , عَلَى مَا رَوَيْنَا عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالَّذِي رَوَيْنَاهُ عَنْ جَابِرٍ مِنْ هَذَا , أَحَبُّ إِلَيْنَا , لِمَا شَهِدَ لَهُ النَّظَرُ , ثُمَّ وَجَدْنَا بَعْدَ ذَلِكَ حَدِيثَ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا , قَدْ عَادَ إِلَى مَعْنَى حَدِيثِ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
وَذَلِكَ أَنَّ هَارُونَ بْنَ كَامِلٍ وَفَهْدًا , حَدَّثَانَا قَالَا:
وَذَلِكَ أَنَّ هَارُونَ بْنَ كَامِلٍ وَفَهْدًا , حَدَّثَانَا قَالَا:
