শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
৪. যাকাতের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৯৪৬
১- বনু হাশিমকে যাকাত প্রদান প্রসঙ্গে।
২৯৪৬। ইবরাহীম ইবন দাউদ (রাহঃ) ..... ইবন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, (একবার) মদীনার ব্যবসায়ী কাফেলা আগমন করলে নবী করীম (ﷺ) তাদের থেকে কিছু সামগ্রী খরিদ করে তা তিনি কয়েক উকিয়া রৌপ্যের মুনাফা গ্রহণ করে বিক্রি করে দিলেন। তারপর তা (মুনাফা ও পুঁজি) বনু আব্দুল মুত্তালিবের অভাবীদের উপর সাদাকা করে দিলেন। এরপর তিনি বললেন, আগামীতে আর আমি কখনাে কোন বস্তুই খরিদ করব না যার মূল্য আমার নিকট থাকবে না।
আবু জা'ফর (তাহাবী র) বলেনঃ একদল 'আলিম এই হাদীসের মর্ম গ্রহণ করেছেন এবং তারা বনু হাশিমের উপর সাদাকা প্রদানকে বৈধ বলেছেন। পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাঁদের বিরােধিতা করে বলেছেন ও ফরয যাকাত ও নফল সাদাকা ইত্যাদি বনু হাশিম-এর জন্য জায়িয নয়। বস্তুত তারা ধনীদের ন্যায়, ধনীদের উপরে যে সমস্ত সাদাকা হারাম তা বনু হাশিমের উপরেও হারাম, তাঁরা ধনী হােন কিংবা গরীব (অসহায়) হোন। পক্ষান্তরে বনু হাশিম ব্যতীত অন্য ধনীদের জন্য যা হালাল তা বনু হাশিমের ধনী কিংবা ফকীরদের জন্যও হালাল বলে গণ্য।
বস্তুত আমাদের মতে প্রথম হাদীসে প্রথম দল আলিমদের জন্য দলীল বহন করে না। যেহেতু হতে পারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বনু আব্দুল মুত্তালিবের অসহায় (ও বিধবা) দের যে সাদাকা দান করেছেন ওটি এরপ (ওয়াজিব) সাদাকা ছিল না যা বনু হাশিমের উপর হারাম, তাদের মতে যারা তা তাদের জন্য হারাম মনে করেন। বরং তিনি তা এরূপ (নফল দান, হিবা, হাদিয়া) সাদাকা হিসাবে দান করেছেন যা তাদের জন্য হালাল। যেহেতু আমরা লক্ষ্য করছি যে, বনু হাশিম ব্যতীত অন্য ধনীগণের মধ্যে কোন ব্যক্তি যদি তাদের অন্য কাউকে নিজ বাড়ি অথবা গোলাম (হিবা, হাদিয়া রূপে) প্রদান করে তাহলে তা জায়িয ও হালাল বিবেচিত হয় এবং তার জন্য তার সম্পদ (গ্রহণ করা) হারাম হয় না। বস্তুত তার জন্য ওই ধনী ব্যক্তির যে সমস্ত সম্পদ হারাম বিবেচিত তা হচ্ছে, যাকাত, কাফ্ফারা ও (ওয়াজিব) সাদাকা সমূহ, যার দ্বারা আল্লাহ্ তা'আলার নৈকট্যতা অর্জন করা হয়।
পক্ষান্তরে যে সমস্ত সাদাকা হিবা (অনুদান) করার উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়; যদিও তাকে সাদাকা নামে আখ্যায়িত করা হয়, তা হারাম বিবেচিত হবে না। অনুরূপ ভাবে বনু হাশিম-এর উপর তাঁদের আত্মীয়তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে সাদাকা হারাম যেমনিভাবে ধনীদের উপর তাদের সম্পদের কারণে (সাদাকা) হারাম। অতএব ধনীদের উপর তাঁদের সম্পদের কারণে যা হারাম নয়, তা বনু হাশিমের উপর তাঁদের আত্মীয়তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে হারাম হবে না।
এ জন্যই আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক তাদের বিধবা ও অসহায়দেরকে প্রদত্ত সাদাকাকে আমরা হিবা (অনুদান) হিসাবে সাব্যস্ত করেছি, যদিও তাকে 'সাদাকা' বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর প্রথমোক্ত ওই হাদীস-এর এরূপ ব্যাখ্যাই শ্রেয়।
আবু জা'ফর (তাহাবী র) বলেনঃ একদল 'আলিম এই হাদীসের মর্ম গ্রহণ করেছেন এবং তারা বনু হাশিমের উপর সাদাকা প্রদানকে বৈধ বলেছেন। পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাঁদের বিরােধিতা করে বলেছেন ও ফরয যাকাত ও নফল সাদাকা ইত্যাদি বনু হাশিম-এর জন্য জায়িয নয়। বস্তুত তারা ধনীদের ন্যায়, ধনীদের উপরে যে সমস্ত সাদাকা হারাম তা বনু হাশিমের উপরেও হারাম, তাঁরা ধনী হােন কিংবা গরীব (অসহায়) হোন। পক্ষান্তরে বনু হাশিম ব্যতীত অন্য ধনীদের জন্য যা হালাল তা বনু হাশিমের ধনী কিংবা ফকীরদের জন্যও হালাল বলে গণ্য।
বস্তুত আমাদের মতে প্রথম হাদীসে প্রথম দল আলিমদের জন্য দলীল বহন করে না। যেহেতু হতে পারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বনু আব্দুল মুত্তালিবের অসহায় (ও বিধবা) দের যে সাদাকা দান করেছেন ওটি এরপ (ওয়াজিব) সাদাকা ছিল না যা বনু হাশিমের উপর হারাম, তাদের মতে যারা তা তাদের জন্য হারাম মনে করেন। বরং তিনি তা এরূপ (নফল দান, হিবা, হাদিয়া) সাদাকা হিসাবে দান করেছেন যা তাদের জন্য হালাল। যেহেতু আমরা লক্ষ্য করছি যে, বনু হাশিম ব্যতীত অন্য ধনীগণের মধ্যে কোন ব্যক্তি যদি তাদের অন্য কাউকে নিজ বাড়ি অথবা গোলাম (হিবা, হাদিয়া রূপে) প্রদান করে তাহলে তা জায়িয ও হালাল বিবেচিত হয় এবং তার জন্য তার সম্পদ (গ্রহণ করা) হারাম হয় না। বস্তুত তার জন্য ওই ধনী ব্যক্তির যে সমস্ত সম্পদ হারাম বিবেচিত তা হচ্ছে, যাকাত, কাফ্ফারা ও (ওয়াজিব) সাদাকা সমূহ, যার দ্বারা আল্লাহ্ তা'আলার নৈকট্যতা অর্জন করা হয়।
পক্ষান্তরে যে সমস্ত সাদাকা হিবা (অনুদান) করার উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়; যদিও তাকে সাদাকা নামে আখ্যায়িত করা হয়, তা হারাম বিবেচিত হবে না। অনুরূপ ভাবে বনু হাশিম-এর উপর তাঁদের আত্মীয়তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে সাদাকা হারাম যেমনিভাবে ধনীদের উপর তাদের সম্পদের কারণে (সাদাকা) হারাম। অতএব ধনীদের উপর তাঁদের সম্পদের কারণে যা হারাম নয়, তা বনু হাশিমের উপর তাঁদের আত্মীয়তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে হারাম হবে না।
এ জন্যই আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কর্তৃক তাদের বিধবা ও অসহায়দেরকে প্রদত্ত সাদাকাকে আমরা হিবা (অনুদান) হিসাবে সাব্যস্ত করেছি, যদিও তাকে 'সাদাকা' বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর প্রথমোক্ত ওই হাদীস-এর এরূপ ব্যাখ্যাই শ্রেয়।
كِتَابُ الزَّكَاةِ بَابُ الصَّدَقَةِ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ
2946 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ أَبِي دَاوُدَ , قَالَ: ثنا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الْوَاسِطِيُّ , قَالَ: ثنا شَرِيكٌ , عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ , عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ: " قَدِمَتْ عِيرٌ الْمَدِينَةَ , فَاشْتَرَى مِنْهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَتَاعًا فَبَاعَهُ بِرِبْحِ أَوَاقٍ فِضَّةً، فَتَصَدَّقَ بِهَا عَلَى أَرَامِلِ بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، ثُمَّ قَالَ: «لَا أَعُودُ أَنْ أَشْتَرِيَ بَعْدَهَا شَيْئًا أَبَدًا وَلَيْسَ ثَمَنُهُ عِنْدِي» . قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ وَأَبَاحُوا الصَّدَقَةَ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: لَا يَجُوزُ الصَّدَقَةُ مِنَ الزَّكَوَاتِ وَالتَّطَوُّعِ وَغَيْرِ ذَلِكَ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ , وَهُمْ كَالْأَغْنِيَاءِ، فَمَا حَرُمَ عَلَى الْأَغْنِيَاءِ مِنَ الصَّدَقَةِ فَهِيَ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ حَرَامٌ , فُقَرَاءَ كَانُوا أَوْ أَغْنِيَاءَ. وَكُلُّ مَا يَحِلُّ لِلْأَغْنِيَاءِ مِنْ غَيْرِ بَنِي هَاشِمٍ , فَهُوَ حَلَالٌ لِبَنِي هَاشِمٍ فُقَرَائِهِمْ وَأَغْنِيَائِهِمْ. وَلَيْسَ عَلَى أَهْلِ هَذِهِ الْمَقَالَةِ عِنْدَنَا حُجَّةٌ فِي الْحَدِيثِ الْأَوَّلِ , لِأَنَّهُ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ مَا تَصَدَّقَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ ذَلِكَ عَلَى أَرَامِلِ بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لَمْ يَجْعَلْهُ مِنْ جِهَةِ الصَّدَقَةِ الَّتِي تَحْرُمُ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ فِي قَوْلِ مَنْ يُحَرِّمُهَا عَلَيْهِمْ وَلَكِنْ جَعَلَهَا مِنْ جِهَةِ الصَّدَقَةِ الَّتِي تَحِلُّ لَهُمْ. فَإِنَّا قَدْ رَأَيْنَا الْأَغْنِيَاءَ مِنْ غَيْرِ بَنِي هَاشِمٍ قَدْ يَتَصَدَّقُ الرَّجُلُ عَلَى أَحَدِهِمْ بِدَارِهِ أَوْ بِعَبْدِهِ , فَيَكُونُ ذَلِكَ جَائِزًا حَلَالًا , وَلَا يُحَرِّمُهُ عَلَيْهِ مَالُهُ. فَكَانَ مَا يَحْرُمُ عَلَيْهِ بِمَالِهِ مِنَ الصَّدَقَاتِ , هُوَ الزَّكَوَاتُ وَالْكَفَّارَاتُ وَالصَّدَقَاتُ الَّتِي يُتَقَرَّبُ بِهَا إِلَى اللهِ تَعَالَى. فَأَمَّا الصَّدَقَاتُ الَّتِي يُرَادُ بِهَا طَرِيقُ الْهِبَاتِ وَإِنْ سُمِّيَتْ صَدَقَاتٍ فَلَا , فَكَذَلِكَ بَنُو هَاشِمٍ حَرُمَ عَلَيْهِمْ لِقَرَابَتِهِمْ مِنَ الصَّدَقَاتِ مِثْلُ مَا حَرُمَ عَلَى الْأَغْنِيَاءِ بِأَمْوَالِهِمْ. فَأَمَّا مَا كَانَ لَا يَحْرُمُ عَلَى الْأَغْنِيَاءِ بِأَمْوَالِهِمْ , فَإِنَّهُ لَا يَحْرُمُ عَلَى بَنِي هَاشِمٍ بِقَرَابَتِهِمْ. فَلِهَذَا جَعَلْنَا مَا كَانَ تَصَدَّقَ بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى أَرَامِلِهِمْ مِنْ جِهَةِ الْهِبَاتِ وَإِنْ سُمِّيَ ذَلِكَ صَدَقَةً , وَهَذَا الَّذِي يَنْبَغِي أَنْ يُحْمَلَ تَأْوِيلُ ذَلِكَ الْحَدِيثِ الْأَوَّلِ عَلَيْهِ
