শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ২৬৮২
নামাযের অধ্যায়
সালাত ভুলে ঘুমিয়ে পড়লে অথবা আদায় করতে ভুলে গেলে তা কিভাবে কাযা করবে?
২৬৮২। আলী ইবন মা'বাদ (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম ﷺ বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি সালাত আদায় করতে ভুলে গেলে অথবা ঘুমিয়ে পড়লে এর কাফফারা হচ্ছে, যখনই তা স্মরণ হবে তা আদায় করে নিবে।
বস্তুত যখন তিনি বলেছেনঃ "এটি ব্যতীত এর অন্য কোন কাফফারা নেই" তার অতিরিক্ত এর সাথে অন্য কিছু যোগ হওয়া অসম্ভব। কেননা এর সাথে তার উপর যদি অন্য কিছু যোগ হয় তাহলে এটি তার জন্য কাফফারা হতে পারে না।
হাসান (বসরী র) ইমরান ইবন হুসায়ন (রাযিঃ) থেকে সালাত ভুলে ঘুমিয়ে থাকায় সূর্যোদয় হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত হাদীসে বর্ননা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁদেরকে নিয়ে তা (ফজরের সালাত) আদায় করেছেন। রাবী বলেন, এতে আমরা বললাম, "হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি তা আগামী দিন এটি তার ওয়াক্তে কাযা পড়বেন না? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আল্লাহ তা'আলা কি তোমাদেরকে (নির্দিষ্ট কর্জের উপর) বর্ধিত বস্তু (সূদ) থেকে নিষেধ করেননি, আর তিনি কি তোমাদের থেকে তা গ্রহন করবেন? বস্তুত আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে সনদসমূহ দ্বারা এই গ্রন্থের অন্যস্থানে উল্লেখ করেছি। পক্ষান্তরে তাঁরা যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ কে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলেন, তখন তিনি তাঁদেরকে সে উত্তরই দিলেন যা আমরা উল্লেখ করেছি।
অতএব এটি অসম্ভব ব্যাপার যে, তাঁরা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে ইতিপূর্বে তা করতে না দেখে নিজেরা তা আগামী দিন কাযা করবেন কিংবা তাঁদেরকে তিনি এ ব্যাপারে নির্দেশ করেছেন। এতে প্রমাণিত হলো যু-মিখমার (রাযিঃ) ও সামুরা (রাযিঃ) কর্তৃক বর্নিত রিওয়ায়াত রহিত হয়ে গেছে এবং এটি তা অপেক্ষা পরবর্তীকালের, তাই এটি তার থেকে উত্তম বিবেচিত হবে। যেহেতু এটি তার (পূর্বের হাদীসের) জন্য রহিতকারী হিসাবে সাব্যস্ত। এটি-ই হচ্ছে রিওয়ায়াতের দিক থেকে এই অনুচ্ছেদের হাদীস সমূহের বিশ্লেষণের যথার্থ পন্থা।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ) এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
বস্তুত আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আল্লাহ তা'আলা সালাত সমূহকে নির্দিষ্ট ওয়াক্তে (সময়ে) ফরজ করেছেন, (এমনভাবে) সিয়াম পালনকে তার নির্ধারিত সময়ে রামাদান মাসে ফরয করেছেন। তারপর কোন ব্যক্তি রামাদান মাসে সিয়াম পালন করতে না পারলে তার জন্য অন্য মাসে ততদিনের সিয়াম পালনকে জরুরী করেছেন। এর কাযা করাকে এর বিপরীত অন্য মাসে জরুরী করেছেন। এই কাযা করার পরে পরবর্তীতে পুনর্বার (উক্ত নিয়মে) ততদিনের কাযা জরুরী করেননি।
অতএব আমাদের উল্লিখিত বর্ননার ভিত্তিতে যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, সালাতও অনুরূপ হবে। কোন ব্যক্তি যদি সালাত আদায় করতে ভুলে যায় অথবা তার সালাত ছুটে যায় তাহলে পরবর্তীতে (যখনই তা স্মরণ হবে) এর কাযা করা ওয়াজিব। যদিও অনুরূপ ওয়াক্ত না আসে এবং একবার এটি কাযা করার পর দ্বিতীয় বার কাযা করাও ওয়াজিব নয়। এটিই হচ্ছে সিয়ামের ব্যাপারে কিয়াস ও যুক্তির দাবী, যার বর্ননা আমরা করে এসেছি। আর এটি-ই হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) -এর অভিমত।
পূর্ববর্তী একদল আলিম থেকে এটি বর্নিত আছেঃ
বস্তুত যখন তিনি বলেছেনঃ "এটি ব্যতীত এর অন্য কোন কাফফারা নেই" তার অতিরিক্ত এর সাথে অন্য কিছু যোগ হওয়া অসম্ভব। কেননা এর সাথে তার উপর যদি অন্য কিছু যোগ হয় তাহলে এটি তার জন্য কাফফারা হতে পারে না।
হাসান (বসরী র) ইমরান ইবন হুসায়ন (রাযিঃ) থেকে সালাত ভুলে ঘুমিয়ে থাকায় সূর্যোদয় হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত হাদীসে বর্ননা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁদেরকে নিয়ে তা (ফজরের সালাত) আদায় করেছেন। রাবী বলেন, এতে আমরা বললাম, "হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি তা আগামী দিন এটি তার ওয়াক্তে কাযা পড়বেন না? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আল্লাহ তা'আলা কি তোমাদেরকে (নির্দিষ্ট কর্জের উপর) বর্ধিত বস্তু (সূদ) থেকে নিষেধ করেননি, আর তিনি কি তোমাদের থেকে তা গ্রহন করবেন? বস্তুত আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে সনদসমূহ দ্বারা এই গ্রন্থের অন্যস্থানে উল্লেখ করেছি। পক্ষান্তরে তাঁরা যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ কে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলেন, তখন তিনি তাঁদেরকে সে উত্তরই দিলেন যা আমরা উল্লেখ করেছি।
অতএব এটি অসম্ভব ব্যাপার যে, তাঁরা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে ইতিপূর্বে তা করতে না দেখে নিজেরা তা আগামী দিন কাযা করবেন কিংবা তাঁদেরকে তিনি এ ব্যাপারে নির্দেশ করেছেন। এতে প্রমাণিত হলো যু-মিখমার (রাযিঃ) ও সামুরা (রাযিঃ) কর্তৃক বর্নিত রিওয়ায়াত রহিত হয়ে গেছে এবং এটি তা অপেক্ষা পরবর্তীকালের, তাই এটি তার থেকে উত্তম বিবেচিত হবে। যেহেতু এটি তার (পূর্বের হাদীসের) জন্য রহিতকারী হিসাবে সাব্যস্ত। এটি-ই হচ্ছে রিওয়ায়াতের দিক থেকে এই অনুচ্ছেদের হাদীস সমূহের বিশ্লেষণের যথার্থ পন্থা।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ) এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
বস্তুত আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আল্লাহ তা'আলা সালাত সমূহকে নির্দিষ্ট ওয়াক্তে (সময়ে) ফরজ করেছেন, (এমনভাবে) সিয়াম পালনকে তার নির্ধারিত সময়ে রামাদান মাসে ফরয করেছেন। তারপর কোন ব্যক্তি রামাদান মাসে সিয়াম পালন করতে না পারলে তার জন্য অন্য মাসে ততদিনের সিয়াম পালনকে জরুরী করেছেন। এর কাযা করাকে এর বিপরীত অন্য মাসে জরুরী করেছেন। এই কাযা করার পরে পরবর্তীতে পুনর্বার (উক্ত নিয়মে) ততদিনের কাযা জরুরী করেননি।
অতএব আমাদের উল্লিখিত বর্ননার ভিত্তিতে যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, সালাতও অনুরূপ হবে। কোন ব্যক্তি যদি সালাত আদায় করতে ভুলে যায় অথবা তার সালাত ছুটে যায় তাহলে পরবর্তীতে (যখনই তা স্মরণ হবে) এর কাযা করা ওয়াজিব। যদিও অনুরূপ ওয়াক্ত না আসে এবং একবার এটি কাযা করার পর দ্বিতীয় বার কাযা করাও ওয়াজিব নয়। এটিই হচ্ছে সিয়ামের ব্যাপারে কিয়াস ও যুক্তির দাবী, যার বর্ননা আমরা করে এসেছি। আর এটি-ই হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) -এর অভিমত।
পূর্ববর্তী একদল আলিম থেকে এটি বর্নিত আছেঃ
كتاب الصلاة
2682 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ، قَالَ: أنا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ نَسِيَ صَلَاةً أَوْ نَامَ عَنْهَا , فَإِنَّ كَفَّارَتَهَا أَنْ يُصَلِّيَهَا إِذَا ذَكَرَهَا» فَلَمَّا قَالَ: «لَا كَفَّارَةَ لَهَا إِلَّا ذَلِكَ» اسْتَحَالَ أَنْ يَكُونَ عَلَيْهِ مَعَ ذَلِكَ , غَيْرُهُ لِأَنَّهُ لَوْ كَانَ عَلَيْهِ مَعَ ذَلِكَ غَيْرُهُ إِذًا لَمَا كَانَ ذَلِكَ كَفَّارَةً لَهَا. وَقَدْ رَوَى الْحَسَنُ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ فِي حَدِيثِ النَّوْمِ عَنِ الصَّلَاةِ حَتَّى طَلَعَتِ الشَّمْسُ , أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّاهَا بِهِمْ. قَالَ: فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ، أَلَا نَقْضِيهَا لِوَقْتِهَا مِنَ الْغَدِ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَيَنْهَاكُمُ اللهُ عَنِ الرِّبَا وَيَقْبَلُهُ مِنْكُمْ؟» وَقَدْ ذَكَرْنَا ذَلِكَ بِإِسْنَادِهِ فِي غَيْرِ هَذَا الْمَوْضِعِ مِنْ هَذَا الْكِتَابِ. فَلَمَّا سَأَلُوا النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ , فَأَجَابَهُمْ بِمَا ذَكَرْنَا , اسْتَحَالَ أَنْ يَكُونُوا عَرَفُوا أَنْ يَقْضُوهَا مِنَ الْغَدِ إِلَّا بِمُعَايَنَتِهِمْ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَلَ ذَلِكَ فِيمَا تَقَدَّمَ , أَوْ أَمَرَهُمْ بِهِ أَمْرًا دَلَّ ذَلِكَ عَلَى نَسْخِ مَا رَوَى ذُو مِخْبَرٍ وَسَمُرَةُ , وَأَنَّ هَذَا كَانَ مُتَأَخِّرًا عَنْهُ , فَهُوَ أَوْلَى مِنْهُ , لِأَنَّهُ نَاسِخٌ لَهُ. فَهَذَا وَجْهُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ الْآثَارِ. وَأَمَّا مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ فَإِنَّا رَأَيْنَا اللهَ عَزَّ وَجَلَّ , أَوْجَبَ الصَّلَاةَ لِمَوَاقِيتِهَا , وَأَوْجَبَ الصِّيَامَ لِمِيقَاتِهِ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ ثُمَّ جَعَلَ عَلَى مَنْ لَمْ يَصُمْ شَهْرَ رَمَضَانَ , عِدَّةً مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ , فَجَعَلَ قَضَاءَهُ فِي خِلَافِهِ مِنَ الشُّهُورِ , وَلَمْ يَجْعَلْ مَعَ قَضَائِهِ بِعَدَدِ أَيَّامِهِ قَضَاءً مِثْلَهَا فِيمَا بَعْدَ ذَلِكَ. فَالنَّظَرُ عَلَى مَا ذَكَرْنَا , أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ الصَّلَاةُ إِذَا نُسِيَتْ , أَوْ فَاتَتْ , أَنْ يَكُونَ قَضَاؤُهَا يَجِبُ فِيمَا بَعْدَهَا , وَإِنْ لَمْ يَكُنْ دَخَلَ وَقْتُ مِثْلِهَا. وَلَا يَجِبُ مَعَ قَضَائِهَا مَرَّةً قَضَاؤُهَا ثَانِيَةً قِيَاسًا وَنَظَرًا عَلَى مَا ذَكَرْنَا مِنَ الصِّيَامِ الَّذِي وَصَفْنَا. وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ , رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى. وَقَدْ رُوِيَ ذَلِكَ عَنْ جَمَاعَةٍ مِنَ الْمُتَقَدِّمِينَ