শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৬১৯
সালাতে ইশারা করা প্রসঙ্গে
২৬১৯। আলী ইবন আব্দুর রহমান (রাহঃ) ..... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক ব্যক্তি নবী করীম ﷺ কে সালাম করলে, তিনি ইশারায় তাঁর উত্তর প্রদান করেন। আর তিনি বলেন আমরা সালাতরত অবস্থায় সালাম করতাম। তারপর এর থেকে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ (উল্লিখিত) এই সমস্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, ইশারা সালাতকে বিনষ্ট করে না। বস্তুত এই সমস্ত হাদীস মুতাওয়াতির হিসাবে বর্নিত হয়েছে। পক্ষান্তরে এগুলোর বিরোধী হাদীসটি এরূপ নয়। অতএব এগুলো সেটি অপেক্ষা উত্তম হিসাবে বিবেচিত হবে। আর ইশারা যুক্তির দিক দিয়ে (সালাতে) কিছুতেই কথা বলার মত নয়। যেহেতু ইশারা হচ্ছে এক অঙ্গের নড়া-চড়া, অথচ আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সালাতে হাত ব্যতীত অপরাপর সমস্ত অঙ্গের নড়া-চড়া সালাতকে বিনষ্ট করে না, অনুরূপ ভাবে হাতের নড়া-চড়া (সালাতকে বিনষ্ট করবে না)।
প্রশ্নঃ যদি কোন প্রশ্নকারী প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন যে, যখন তোমাদের নিকট সালাতে ইশারা করা কথা বলার মত নয় এবং তা সালাতকে বিনষ্ট করে না,যেমনিভাবে সালাতকে কথা বলা বিনষ্ট করে দেয়। আর তোমরা এই বিষয়ে এই সমস্ত হাদীস দ্বারা দলীল দিয়ে থাক যা তোমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে রিওয়ায়াত করেছ, তাহলে তোমরা মুসল্লীর ইশারার দ্বারা সালামের জওয়াব দেয়াকে কেন মাকরূহ বলো? অথচ তোমাদের বর্নাকৃত এই সমস্ত হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ তা করেছেন। যদি ইশারা করা সালাতকে বিনষ্ট করে না বিষয়ে এটি তোমাদের স্বপক্ষে দলীল সাব্যস্ত হয়, তাহলে সালাতকে ইশারা করা দূষনীয় না হওয়ার ব্যাপারে এটি তোমাদের বিপক্ষে দলীল সাব্যস্ত হবে।
উত্তরঃ তাঁকে বলা হবে যে, এই সমস্ত হাদীসের কারনে আমরা যে জিনিসটি প্রমান করেছি সেটি হচ্ছে, ইশারা করা সালাতকে বিনষ্ট করে না। আর এটি এই সমস্ত হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত হয়ে গেছে। আর সালামের জওয়াব দেয়ার ব্যাপারে সালাতে ইশারা করার বৈধতা নিয়ে আপনি যা উল্লেখ করেছেন, তাতে কিন্তু এই বিষয়টির প্রমান বহন করে না। তা এভাবেঃ যে জিনিসটি তাতে এসেছে তা হচ্ছে, "রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁদের দিকে ইশারা করেছেন"। যদি কিনা রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে বলতেন যে, উক্ত ইশারার দ্বারা আমি সেই ব্যক্তির সালামের জওয়াব দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছি, যে ব্যক্তি আমাকে সালাম দিয়েছে। এতে প্রমানিত হলো যে, অনুরূপভাবে যখন সালাতে মুসল্লীকে সালাম দেয়া হবে; কিন্তু তিনি এই বিষয়ে কিছু বলেন নি। অতএব এতে সম্ভাবনা আছে যে, উক্ত ইশারা তিনি সালামের জওয়াব প্রদান করেছেন, যেমনিভাবে আপনারা উল্লেখ করেছেন। আবার এটিরও সম্ভাবনা আছে যে, সালাতরত অবস্থায় তাঁকে সালাম দেয়ার প্রতি তাদেরকে ইশারার দ্বারা নিষেধ করাই উদ্দেশ্য। যখন এই সমস্ত হাদীসে এসব কিছুর উল্লেখ নেই এবং হাদীসের সেই ব্যাখ্যার অবকাশ রয়েছে, যার দিকে উভয় দলের প্রত্যেকে গিয়েছেন। আর কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমা'র দলীল বিরোধীদের উপরে প্রতিষ্ঠা করা ব্যতীত এক দলের ব্যাখ্যা অপর দলের ব্যাখ্যা অপেক্ষা প্রাধান্য পেতে পারে না।

প্রশ্নঃ কেউ যদি বলেন যে, এর (সালাতে ইশারায় সালামের জওয়াব দেয়া) মাকরূহ হওয়ার ব্যাপারে তোমাদের দলীল কি?
2619 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ صَالِحٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ عَجْلَانَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ: أَنَّ رَجُلًا، سَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَدَّ عَلَيْهِ بِإِشَارَةٍ وَقَالَ: «كُنَّا نَرُدُّ السَّلَامَ فِي الصَّلَاةِ , فَنُهِينَا عَنْ ذَلِكَ» قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَفِي هَذِهِ الْآثَارِ مَا قَدْ دَلَّ أَنَّ الْإِشَارَةَ لَا تَقْطَعُ الصَّلَاةَ , وَقَدْ جَاءَتْ مَجِيئًا مُتَوَاتِرًا , غَيْرَ مَجِيءِ الْحَدِيثِ الَّذِي خَالَفَهَا , فَهِيَ أَوْلَى مِنْهُ. وَلَيْسَتِ الْإِشَارَةُ فِي النَّظَرِ مِنَ الْكَلَامِ فِي شَيْءٍ لِأَنَّ الْإِشَارَةَ , إِنَّمَا هِيَ حَرَكَةُ عُضْوٍ , وَقَدْ رَأَيْنَا حَرَكَةَ سَائِرِ الْأَعْضَاءِ غَيْرَ الْيَدِ فِي الصَّلَاةِ , لَا تَقْطَعُ الصَّلَاةَ , فَكَذَلِكَ حَرَكَةُ الْيَدِ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَإِذَا كَانَتِ الْإِشَارَةُ فِي الصَّلَاةِ عِنْدَكُمْ , قَدْ ثَبَتَ أَنَّهَا بِخِلَافِ الْكَلَامِ وَأَنَّهَا لَا تَقْطَعُ الصَّلَاةَ كَمَا يَقْطَعُهَا الْكَلَامُ , وَاحْتَجَجْتُمْ فِي ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآثَارِ الَّتِي رَوَيْتُمُوهَا عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَلِمَ كَرِهْتُمْ رَدَّ السَّلَامِ مِنَ الْمُصَلِّي بِالْإِشَارَةِ , وَقَدْ فَعَلَ ذَلِكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا رَوَيْتُمُوهُ فِي هَذِهِ الْآثَارِ؟ وَلَئِنْ كَانَ ذَلِكَ حُجَّةً لَكُمْ فِي أَنَّ الْإِشَارَةَ لَا تَقْطَعُ الصَّلَاةَ , فَإِنَّهُ حُجَّةٌ عَلَيْكُمْ فِي أَنَّ الْإِشَارَةَ لَا بَأْسَ بِهَا فِي الصَّلَاةِ. قِيلَ لَهُ: أَمَّا مَا احْتَجَجْنَا بِهَذِهِ الْآثَارِ مِنْ أَجْلِهِ , وَهُوَ أَنَّ الْإِشَارَةَ لَا تَقْطَعُ الصَّلَاةَ , فَقَدْ ثَبَتَ ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآثَارِ عَلَى مَا احْتَجَجْنَا بِهِ مِنْهَا. وَأَمَّا مَا ذَكَرْتُ مِنْ إِبَاحَةِ الْإِشَارَةِ فِي الصَّلَاةِ فِي رَدِّ السَّلَامِ؟ فَلَيْسَ فِيهَا دَلِيلٌ عَلَى ذَلِكَ. وَذَلِكَ أَنَّ الَّذِي فِيهَا هُوَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشَارَ إِلَيْهِمْ. فَلَوْ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ تِلْكَ الْإِشَارَةَ أَرَدْتُ بِهَا رَدَّ السَّلَامِ عَلَى مَنْ سَلَّمَ عَلَيَّ , ثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ كَذَلِكَ حُكْمَ الْمُصَلِّي إِذَا سُلِّمَ عَلَيْهِ فِي الصَّلَاةِ. وَلَكِنَّهُ لَمْ يَقُلْ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا , فَاحْتَمَلَ أَنْ تَكُونَ تِلْكَ الْإِشَارَةُ كَانَتْ رَدًّا مِنْهُ لِلسَّلَامِ كَمَا ذَكَرْتُمْ. وَاحْتَمَلَ أَنْ يَكُونَ كَانَتْ مِنْهُ لَهْيًا لَهُمْ عَنِ السَّلَامِ عَلَيْهِ , وَهُوَ يُصَلِّي , فَلَمَّا لَمْ يَكُنْ فِي هَذِهِ الْآثَارِ مِنْ هَذَا شَيْءٌ , وَاحْتَمَلَتْ مِنَ التَّأْوِيلِ مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ كُلُّ وَاحِدٍ مِنَ الْفَرِيقَيْنِ , لَمْ يَكُنْ مَا تَأَوَّلَ أَحَدُ الْفَرِيقَيْنِ أَوْلَى مِنْهَا , مِمَّا تَأَوَّلَ الْآخَرُ إِلَّا بِحُجَّةٍ يُقِيمُهَا عَلَى مُخَالِفِهِ , إِمَّا مِنْ كِتَابٍ , وَإِمَّا مِنْ سُنَّةٍ , وَإِمَّا مِنْ إِجْمَاعٍ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَمَا دَلِيلُكُمْ عَلَى كَرَاهَةِ ذَلِكَ؟
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ২৬১৯ | মুসলিম বাংলা