শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৪২৯
মুসাফিরের সালাত
২৪২৯। ইয়াযিদ ইব্‌ন সিনান (রাহঃ).....আয্‌রাক ইব্‌ন কায়স (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি আবু বারযা আসলামী (রাযিঃ)-কে আহওয়ায নামক স্থানে দেখলাম, তিনি আসরের সালাত আদায় করেছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কত রাক’আত আদায় করেছেন ? তিনি বললেন, দু’রাক’আত।
আবু জা’ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর এ সমস্ত সাহাবায়ে কিরাম সফরে (সালাত) কসর করতেন এবং যে সালাত পূর্ণ করত তাঁরা তার প্রতিবাদ করতেন। লক্ষণীয় যখন সা’দ (রাযিঃ)-কে বলা হলো যে, মিস্‌ওয়ার (রাযিঃ) এবং আব্দুর রহমান ইব্‌ন আব্‌দে ইয়াগুস (রাযিঃ) সালাত পুরো করেন, তখন তিনি বললেন, এ বিষয়ে আমরা (তাঁদের অপেক্ষা) অধিক জ্ঞাত। তিনি কিন্তু পূর্ণ করার ব্যাপারে তাদের কোন উযর গ্রহণ করেন নি। আর যে ব্যক্তিকে সালমান (রাযিঃ) ইমামতির জন্য সম্মুখে অগ্রসর করে ছিলেন এবং তাঁর সাথে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর তেরজন সাহাবী ছিলেন, সে ব্যক্তি যখন চার রাক’আত আদায় করেছিলো তখন সালমান (রাযিঃ) তাঁকে বললেন, আমরা চার রাক’আত আদায় করলাম কেন ? আমাদের জন্য তো চারের অর্ধেক (দু’রাক’আত) যথেষ্ট ছিলো। বস্তুত উপস্থিত সাহাবাদের থেকে কেউ এ বিষয়ে তাঁর প্রতিবাদ করেননি। এতে বুঝা যায় যে, সফরে পুরো সালাত আদায় করার বৈধতা তাঁদের মায্হাব ছিলো না।
কেউ যদি প্রশ্ন করে যে, যে ব্যক্তিকে সালমান (রাযিঃ) ইমামতির জন্য সম্মুখে অগ্রসর করেছিলেন, তিনি এবং মিসওয়ার (রাযিঃ) তাঁরা-তো উভয়ে সাহাবী এবং (সালাত) পূর্ণ করেছেন। সুতরাং এটি এবং সালমান (রাযিঃ) ও তাঁর অনুসারী কর্তৃক সফরে পূর্ণ সালাত পরিত্যাগ করার ব্যাপারে যে রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন উভয়ের মধ্যে অবশ্যই ভিন্নতা ও বৈপরীত্য পরিলক্ষিত হয়।
উত্তরে তাকে বলা হবে যে, এতে তোমাদের স্বপক্ষে কোন দলীল নেই। যেহেতু হতে পারে মিস্‌ওয়ার (রাযিঃ) ও উক্ত ব্যক্তি এরূপ সফরে কসরকে বৈধ মনে করতেন না। তাঁদের উভয়ের মাযহাব ছিলোঃ হজ্জ, উমরা ও জিহাদের সফর ব্যতীত অন্য কোনরূপ সফরে সালাতকে কসর করা হবে না। তাঁরা দু’জন ব্যতীত অন্যরা (সাহাবীরা) ও এ মত গ্রহণ করেছেন।
তাঁদের উভয় থেকে বর্ণিত রিওয়ায়াতে যখন আমাদের উল্লিখিত বিশ্লেষণের সম্ভাবনা রয়েছে এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর অধিকাংশ সাহাবীগণের থেকে কসর করা প্রমাণিত রয়েছে তখন এটিকে তাঁদের থেকে বর্ণিত রিওয়ায়াতের পরিপন্থী সাব্যস্ত করা যাবে না।
আর এ উসমান ইব্‌ন আফ্ফান (রাযিঃ) অবশ্যই মিনাতে চার রাক’আত (সালাত) আদায় করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ্ ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ) প্রতিবাদ করেছেন এবং তাঁর সাথে উপস্থিত সাহাবীগণও প্রতিবাদ করেছেন। উসমান (রাযিঃ) সালাত পূর্ণ পড়েছেন, নিজ ইজতিহাদের ভিত্তিতে যা আমরা এ অনুচ্ছেদের যথাস্থানে বর্ণনা করব ইনশাআল্লাহ্। বস্তুত যখন আমাদের পক্ষে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এবং তাঁর সাহাবীগণ থেকে সফরে সালাত পূর্ণ করার নয়, কসর করার রিওয়ায়াত রয়েছে, তখন আমাদের জন্য এর বিরোধিতা করে অন্য মত পোষণ করা জায়িয হবে না।
কেউ যদি বলে যে, তোমার কি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে এরূপ কোন রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছ, যাতে বুঝা যায় যে, সফরে ফরয সালাত দু’রাক’আত। তাহলে এটি তোমাদের বিরোধীদের মায্হাবের বিপক্ষে অকার্য হিসাবে বিবেচিত হবে। উত্তরে আমরা বলব, হ্যাঁ, আমাদের নিকট এরূপ রিওয়ায়াত রয়েছেঃ
2429 - حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ سِنَانٍ، قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: ثنا شُعْبَةُ، قَالَ: ثنا الْأَزْرَقُ بْنُ قَيْسٍ، قَالَ: " رَأَيْتُ أَبَا بَرْزَةَ الْأَسْلَمِيَّ بِالْأَهْوَازِ , صَلَّى الْعَصْرَ , قُلْتُ: فَكَمْ صَلَّى؟ قَالَ: رَكْعَتَيْنِ " قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَهَؤُلَاءِ أَصْحَابُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانُوا يَقْصُرُونَ فِي السَّفَرِ , وَيُنْكِرُونَ عَلَى مَنْ أَتَمَّ. أَلَا تَرَى أَنَّ سَعْدًا لَمَّا قِيلَ لَهُ. إِنَّ الْمِسْوَرَ , وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَبْدِ يَغُوثَ يُتِمَّانِ قَالَ: نَحْنُ أَعْلَمُ وَلَمْ يَعْذُرْهُمَا فِي إِتْمَامِهِمَا. وَأَنَّ الرَّجُلَ الَّذِي قَدَّمَهُ سَلْمَانُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَمَعَهُ ثَلَاثَةَ عَشَرَ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَصَلَّى أَرْبَعًا فَقَالَ لَهُ سَلْمَانُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: مَا لَنَا وَلِلْمُرَبَّعَةِ إِنَّمَا يَكْفِينَا نِصْفُ الْمُرَبَّعَةِ , وَلَمْ يُنْكِرْ ذَلِكَ عَلَيْهِ مَنْ كَانَ بِحَضْرَتِهِ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَدَلَّ ذَلِكَ أَنَّ مَذَاهِبَهُمْ , لَمْ تَكُنْ إِبَاحَةَ الْإِتْمَامِ فِي السَّفَرِ. فَإِنْ قَالَ قَائِلُ: فَقَدْ أَتَمَّ ذَلِكَ الرَّجُلُ الَّذِي قَدَّمَهُ سَلْمَانُ وَالْمِسْوَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , وَهُمَا صَحَابِيَّانِ , فَقَدْ ضَادَّ ذَلِكَ مَا رَوَاهُ سَلْمَانُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , وَمَنْ تَابَعَهُ عَلَى تَرْكِ الْإِتْمَامِ فِي السَّفَرِ. قِيلَ لَهُ: مَا فِي هَذَا دَلِيلٌ عَلَى مَا ذَكَرْتُمْ , لِأَنَّهُ قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ الْمِسْوَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , وَذَلِكَ الرَّجُلُ أَتَمَّا لِأَنَّهُمَا لَمْ يَكُونَا يَرَيَانِ فِي ذَلِكَ السَّفَرِ قَصْرًا , لِأَنَّ مَذْهَبَهُمَا أَنْ لَا تُقْصَرَ الصَّلَاةُ إِلَّا فِي حَجٍّ , أَوْ عَمْرَةٍ , أَوْ غَزَاةٍ , فَإِنَّهُ قَدْ ذَهَبَ إِلَى ذَلِكَ أَيْضًا غَيْرُهُمَا. فَلَمَّا احْتَمَلَ مَا رُوِيَ عَنْهُمَا مَا ذَكَرْنَا , وَقَدْ ثَبَتَ التَّقْصِيرُ عَنْ أَكْثَرِ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَمْ يُجْعَلْ ذَلِكَ مُضَادًّا لَمَا قَدْ رُوِيَ عَنْهُمْ. إِذْ كَانَ قَدْ يَجُوزُ , أَنْ يَكُونَ عَلَى خِلَافِ ذَلِكَ , وَهَذَا عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ فَقَدْ صَلَّى بِ مِنًى أَرْبَعًا فَأَنْكَرَ ذَلِكَ عَلَيْهِ عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَمَنْ أَنْكَرَ مَعَهُ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَإِنْ كَانَ عُثْمَانُ إِنَّمَا فَعَلَهُ لِمَعْنًى رَأَى بِهِ إِتْمَامَ الصَّلَاةِ , مِمَّا سَنَصِفُهُ فِي مَوْضِعِهِ مِنْ هَذَا الْبَابِ , إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى. فَلَمَّا كَانَ الَّذِي ثَبَتَ لَنَا عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَعَنْ أَصْحَابِهِ , هُوَ تَقْصِيرُ الصَّلَاةِ فِي السَّفَرِ لَا إِتْمَامُهَا , لَمْ يَجُزْ لَنَا أَنْ نُخَالِفَ ذَلِكَ إِلَى غَيْرِهِ فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَهَلْ رَوَيْتُمْ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا يَدُلُّكُمْ عَلَى أَنَّ فَرَائِضَ الصَّلَاةِ رَكْعَتَانِ فِي السَّفَرِ , فَيَكُونُ ذَلِكَ قَاطِعًا لَمَا ذَهَبَ إِلَيْهِ مُخَالِفُكُمْ؟ . قُلْنَا: نَعَمْ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ২৪২৯ | মুসলিম বাংলা