শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২১৬৪
আন্তর্জাতিক নং: ২১৬৫
জুমু'আর দিন ইমামের খুতবা দানকালে কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে সালাত পড়বে কিনা?
২১৬৪-২১৬৫। ইবন আবু দাউদ (রাহঃ) …… আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমু'আর দিন গোসল করল, দাঁত পরিষ্কার (মিসওয়াক) করল, আর নিজের কাছে সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করল, নিজের সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করল তারপর বেরিয়ে মসজিদে আসল, তারপর মানুষের গর্দান টপকাল না, তারপর আল্লাহর ইচ্ছায় যা পারে সালাত আদায় করল এবং ইমাম যখন বেরিয়ে আসেন, তখন চুপ থাকল, তার এই আমল এই জুমু'আ থেকে পরবর্তী জুমু'আ পর্যন্ত (গোনাহের) কাফ্ফারা হবে।

আহমদ ইবন দাউদ (রাহঃ) ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) ও আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
2164 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا الْوَهْبِيُّ، قَالَ: ثنا ابْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ، أَنَّهُمَا حَدَّثَاهُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاسْتَنَّ , وَمَسَّ مِنْ طِيبٍ إِنْ كَانَ عِنْدَهُ , وَلَبِسَ مِنْ أَحْسَنِ ثِيَابِهِ , ثُمَّ خَرَجَ حَتَّى يَأْتِيَ الْمَسْجِدَ , فَلَمْ يَتَخَطَّ رِقَابَ النَّاسَ , ثُمَّ رَكَعَ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَرْكَعَ , وَأَنْصَتَ حَتَّى إِذَا خَرَجَ الْإِمَامُ , كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الَّتِي قَبْلَهَا»

2165 - حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ دَاوُدَ، قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: ثنا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , وَأَبِي سَعِيدٍ , عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَهُ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস থেকে জুমআর দিনে গোসল করা এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা ছুন্নাত ও ফযীলতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (বাদায়েউস সানায়ে’: ১/২৬৯) জুমআর দিন গোসল করা জরুরী বলে যদিও কোন কোন ইমাম মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ইসলামের শুরু যুগে সাহাবায়ে কিরামের আর্থিক দৈন্যতা ছিল চরমে। নিজেরা ক্ষেতে খামারে কাজ করতেন, মোটা কাপড় পরিধান করতেন এবং ঘর্মাক্ত শরীরে জুমার নামাযে আসতেন। ঘামের দুর্গন্ধে মানুষের কষ্ট হতো। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাঁদের অনটন দূর করে আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করেছেন। তাঁরা উন্নতমানের পাতলা কাপড় পরিধান করেন। কাজের মানুষে তাঁদের কাজ করে। তখন গোসল করার ঐ প্রয়োজনীয়তা থাকেনি যা শুরু যুগে ছিলো। (তহাবী শরীফ-৭০৭) এ হাদীসের আলোকে বলা যেতে পারে যে, রসূল স.-এর বাণী الغُسْلُ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ জুমআর দিনের গোসল করা সকল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ওয়াজিব’ (বুখারী-৮১৬) এটা ইসলামের শুরু দিকের কথা। এর আরো একটি প্রমাণ মেলে مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَة ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে অযু করে জুমআর নামাযে যায় এবং চুপ করে মনোযোগ সহকারে (ইমামের খুৎবা) শোনে তার এই জুমআ থেকে পরের জুমআ এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (মুসলিম-১৮৬১) এ হাদীসে জুমআর ফযীলত পাওয়ার জন্য তিনটি আমলের কথা বলা হয়েছে যার মধ্যে গোসলের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ থেকেও বুঝা যায় যে, জুমআর জন্য গোসল করা জরুরী নয়। তবে বুখারী: ৮৬৪ নং হাদীস থেকে গোসলের ফযীলত প্রমাণিত হয়েছে। অতএব এটা ছুন্নাত।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ২১৬৪ | মুসলিম বাংলা