শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬৮১
নামাযের অধ্যায়
বিতর প্রসঙ্গ
১৬৮১। ইউনুস (রাহঃ) ..... আবু সালামা ইব্‌ন আব্দুর রহমান (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আয়েশা (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, রামাযানে রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ)-এর সালাত কিরূপ ছিলো? উত্তরে তিনি বললেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) রামাযান এবং অন্যান্য মাসে এগার রাক'আত অপেক্ষা বেশী সালাত আদায় করতেন না। (আর তা পড়তেন এভাবে) (প্রথমে) চার রাক'আত সালাত আদায় করতেন। এটা যে কত সুন্দর ছিলো এবং কত দীর্ঘ হতো সে সম্পর্কে আমাকে তোমরা জিজ্ঞাসা করো না। এরপর আরো চার রাক'আত আদায় করতেন। এটা যে কত সুন্দর ছিলো এবং কত যে দীর্ঘ হতো, সে সম্পর্কে তোমরা আমাকে জিজ্ঞাসা করো না। তারপর তিনি তিন রাক'আত (বিতর) আদায় করতেন। আয়েশা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ)-কে বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি বিতর আদায় না করে শুয়ে পড়েন? তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! আমার দু'চোখ ঘুমায়; আমার হৃদয় ঘুমায় না।
বস্তুত এ হাদীসের শেষে আয়েশা (রাযিঃ)-এর উক্তি “তারপর তিনি (ﷺ) তিন রাক'আত সালাত আদায় করতেন” এতে দু'টি সম্ভাবনা রয়েছেঃ
(ক) পূর্বের আট রাক'আত থেকে দু'রাক'আতের সাথে এক রাক'আত মিলিয়ে বিতর (তিন রাক'আত) আদায় করতেন। তারপর অবশিষ্ট দু'রাক'আত আদায় করতেন, যে দু'রাক'আতের কথা পূর্বে আবু সালামা (রাহঃ) উল্লেখ করছেন, যা আমরা তাঁর থেকে রিওয়ায়াত করেছি যে, তিনি (ﷺ) -এ দু'রাক'আত বসা অবস্থায় আদায় করতেন। এভাবে এ হাদীস এবং তাঁর পূর্ববর্তী হাদীসগুলোর বিষয় বস্তু অভিন্ন হয়ে যায়।
(খ) এটিরও সম্ভাবনা রয়েছে যে, তিন রাক'আত সবই (পৃথকভাবে) বিতর। আর এটি হচ্ছে দু'অর্থের অধিকতর সন্তাব্য অর্থ। যেহেতু এ তিন রাক'আত তাঁর সালাতকে পৃথক করে দিয়েছে। আয়েশা (রাযিঃ) বলেনঃ তিনি (ﷺ) চার রাক'আত আদায় করতেন। তারপর চার রাক'আত। আর এ সমস্তকে সুন্দর এবং দীর্ঘ ছিল বলে আখ্যায়িত করেছেন। এরপর রিওয়ায়াতঃ তারপর তিনি তিন রাক'আত আদায় করেছেন। পক্ষান্তরে এ তিন রাক"আতকে দীর্ঘতার গুণে আখ্যায়িত করেননি। আর তিন রাক'আতকে এক সাথে উল্লেখ করেছেন। অতএব এটি আমাদের নিকট বিতর হিসাবে গণ্য হবে। তাহলে তাঁর আদায়কৃত সালাত হবে সাদ ইব্‌ন হিশাম এর হাদীসে বর্ণিত সংক্ষিপ্ত দু'রাকআতসহ মোট এগার রাক'আত অথবা বিতর-এর পরে বসা অবস্থায় যে দু'রাক'আত আদায় করতেন তা সহ।
বস্তুত এ হাদীসটি হচ্ছে আবু সালামা (রাহঃ)-এর সমস্ত রিওয়ায়াতগুলোর সর্বোৎকৃষ্ট রিওয়ায়াত। যেহেতু তাঁর (সূত্রে বর্ণিত) সমস্ত রিওয়ায়াতে রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ)-এর শরীর ভারী হয়ে যাওয়ার পরে আদায়কৃত সালাতের বর্ণনা রয়েছে। পক্ষান্তরে সা'দ ইবন হিশাম রে)-এর (সূত্রে বর্ণিত) হাদীসে তাঁর শরীর ভারী হয়ে যাওয়ার পূর্বাপর আদায়কৃত সালাতের বর্ণনা রয়েছে।
এ বিষয়ে উরওয়া ইব্‌ন যুবায়র (রাহঃ) আয়েশা (রাযিঃ) সূত্রে নিম্নোক্ত হাদীস রিওয়ায়াত করেছেনঃ
كتاب الصلاة
1681 - حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: أنا ابْنُ وَهْبٍ، أَنَّ مَالِكًا، حَدَّثَهُ , عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ كَيْفَ كَانَ صَلَاةُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَمَضَانَ فَقَالَتْ: مَا كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَزِيدُ فِي رَمَضَانَ وَلَا فِي غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّي أَرْبَعًا فَلَا تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ , وَطُولِهِنَّ , ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا , فَلَا تَسْأَلْ , عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ , ثُمَّ يُصَلِّي ثَلَاثًا قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ , قَالَ: «يَا عَائِشَةُ إِنَّ عَيْنَيَّ تَنَامَانِ وَلَا يَنَامُ قَلْبِي» فَيَحْتَمِلُ هَذَا الْحَدِيثُ أَنْ يَكُونَ قَوْلُهَا ثُمَّ يُصَلِّي ثَلَاثًا تُرِيدُ يُوتِرُ بِإِحْدَاهُنَّ اثْنَتَيْنِ مِنَ الثَّمَانِ ثُمَّ يُصَلِّي الرَّكْعَتَيْنِ الْبَاقِيَتَيْنِ. وَهُمَا الرَّكْعَتَانِ اللَّتَانِ ذَكَرَهُمَا أَبُو سَلَمَةَ فِيمَا تَقَدَّمَ مِمَّا رَوَيْنَا عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّيهِمَا وَهُوَ جَالِسٌ حَتَّى يَتَّفِقَ هَذَا الْحَدِيثُ وَمَا تَقَدَّمَهُ مِنْ أَحَادِيثِهِ. وَيَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ الثَّلَاثُ وِتْرًا كُلُّهَا وَهُوَ أَغْلَبُ الْمَعْنَيَيْنِ ; لِأَنَّهَا قَدْ فَصَّلَتْ صَلَاتَهُ فَقَالَتْ: كَانَ يُصَلِّي أَرْبَعًا ثُمَّ أَرْبَعًا وَوَصَفَتْ ذَلِكَ كُلَّهُ بِالْحُسْنِ وَالطُّولِ , ثُمَّ قَالَتْ: ثُمَّ يُصَلِّي ثَلَاثًا وَلَمْ تَصِفْ ذَلِكَ بِطُولٍ وَجَمَعَتِ الثَّلَاثَ بِالذِّكْرِ. فَذَلِكَ عِنْدَنَا عَلَى الْوِتْرِ فَيَكُونُ جَمِيعُ مَا كَانَ يُصَلِّيهِ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً مَعَ الرَّكْعَتَيْنِ الْخَفِيفَتَيْنِ اللَّتَيْنِ فِي حَدِيثِ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ أَوْ مَعَ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ كَانَ يُصَلِّيهِمَا وَهُوَ جَالِسٌ بَعْدَ الْوِتْرِ. وَهَذَا أَشْبَهُ بِرِوَايَاتِ أَبِي سَلَمَةَ لِأَنَّ جَمِيعَهَا تُخْبِرُ عَنْ صَلَاتِهِ بَعْدَمَا بَدَّنَ , وَحَدِيثُ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ يُخْبِرُ عَنْ صَلَاتِهِ بَعْدَمَا بَدَّنَ , وَعَنْ صَلَاتِهِ قَبْلَ ذَلِكَ وَقَدْ رَوَى عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ , عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فِي ذَلِكَ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)