শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬৩৫
সালাতে সালাম ফরয না সুন্নত ?
১৬৩৫। আবু বাকরা (রাহঃ) ..... আলী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ “সালাত
আদায়কারী যখন শেষ সিজ্দা থেকে মাথা উত্তোলন করবে অবশ্যই তখন তার সালাত পূর্ণ হয়ে
যাবে।
বস্তুত আলী (রাযিঃ) যিনি বাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করেছেনঃ “সালাতের হালালকরণ (বের হওয়ার মাধামে) হচ্ছে সালাম ফিরানো । তাঁর নিকট এর এ অর্থ নয় যে,সালাম ব্যতীত সালাত পূর্ণ হবে না। যেহেতু তাঁর নিকট সালামের পূর্বের বস্তু (সিজদা)দ্বারা সালাত পূর্ণ হয়ে যায়। আর তার নিকট “সালাতের হালালকরণ হচ্ছে সালাম"-এর অর্থ হলো সালাম দিয়ে সালাত থেকে বের হওয়া বাঞ্ছনীয়, অন্য কিছু দিয়ে নয়। আর সেই পূর্ণতা যার পরে হাদাস হলে সালাত পুন আদায় করা
ওয়াজিব নয়।

কোন প্রশ্নকারী যদি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলে যে, রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) বলেছেন, সালাতের তাহরিমা হলো তাকবীর, অতএব তাকবীর হলো এরূপ বস্তু, যা ব্যতীত সালাতে প্রবেশ করা যাবে না। অনুরূপভাব রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) বলেছেন, সালাত থেকে তাহলীল (বের হওয়া) একমাত্র সালামই । অতএব বুঝা গেল যে সালামও তাকবীর-এর ন্যায় অপরিহার্য, যা ব্যতীত সালাত থেকে বের হওয়া যায় না।
উত্তরে তাকে বলা হবে যে, অনেক বস্তু এরূপ রয়েছে, যেগুলোতে প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট শর্তাবলী ও
পদ্ধতি রয়েছে, যেগুলো ব্যতীত তাতে প্রবেশ করা যায় না । অথচ এগুলো থেকে বের হওয়ার জন্য যে
উপকরণ ও শর্তাবলী নির্দিষ্ট রয়েছে, সেগুলো পূরণ করে বা না করে উভয়ভাবে বের হওয়া শুদ্ধ হয়।
বস্তুত সেগুলোর মধ্যে আমরা বিবাহের ক্ষেত্রে দেখতে পাই যে, কোন নারীকে ইন্দতের অবস্থায় বিবাহ
করা নিষিদ্ধ এবং নাজায়িয । আর যে ব্যক্তি এরূপ অবস্থায় বিবাহ করবে, সে এ বিবাহ দ্বারা নারীর
যোনির অধিকারী হবে না এবং নারীর উপর বিবাহকারীর জন্য বিবাহের হকসমূহ কার্যকর হবে না।
বস্তুত এর অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে, যার উল্লেখ গ্রস্থের কলেবর বৃদ্ধি করবে । আর স্বামীকে নির্দেশ দেয়া
হয়েছে যে, এমন তালাক দ্বারা বিবাহ থেকে বের হবে যার মধ্যে কোনরূপ গোনাহ হয় নাই এবং
এরূপ (পবিত্রতা) কালে তালাক যার মধ্যে স্ত্রী সহবাস করা হয়নি। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আদিষ্ট পন্থা
পরিপন্থী স্ত্রীকে এক (পবিত্রতায়) তিন তালাক অথবা এক বাক্যে তিন তালাক অথবা ঋতুবতী অবস্থায়
তালাক দেয়, তাহলে স্বামী গুনাহগার তো হবে, কিন্তু নিষিদ্ধ তালাক হওয়া সত্ত্বেও তালাক কার্যকর
হয়ে যাবে এবং বিবাহ থেকে বেরিয়ে আসবে । অতএব সাব্যস্ত হলো যে, যে সমস্ত উপকরণ দ্বারা নারী
যোনির অধিকারী হতে পারা যায় তা কিরূপ এবং যেগুলোর দ্বারা নারী যোনির অধিকার ছুটে যায়, তা কেমন। এগুলোর বিপরীত কিছু করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। অতএব যে ব্যক্তি
নিষিদ্ধ পন্থায় বিবাহে প্রবেশ করতে চায় প্রবেশ করতে পারবে না। পক্ষান্তরে যখন নিষিদ্ধ পন্থায়
বিবাহ থেকে বের হয়ে যেতে চায় তাহলে বের হয়ে যেতে পারবে । তাই যেহেতু নিষিদ্ধ -পন্থায় প্রবেশ
করা যায় না এবং আদিষ্ট ও নিষিদ্ধ উভয় পন্থায় বের হওয়াটা বিশুদ্ধ হয়, অতএব এর উপর ভিত্তি
করে সালাতের ব্যাপারকে বুঝতে হবে যে, আদিষ্টের পরিপন্থী (তাকবীরে তাহরিমা ব্যতীত) সালাতে
প্রবেশ করা বৈধ হতে পারে না এবং আদিষ্ট (সালামের সাথে) ও আদিষ্টের পরিপন্থী (সালাম ব্যতীত)
উভয় অবস্থায় সালাত থেকে বের হওয়া বৈধ হবে। যারা একথা বলে যে, সালাত আদায়কারী যখন -
তার সালাতের শেষ সিজ্দা থেকে মাথা উত্তোলন করবে তার সালাত পূর্ণ হয়ে যাবে, তাদের দলীলঃ
1635 - مَا قَدْ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ , قَالَ: ثنا أَبُو عَاصِمٍ , عَنْ أَبِي عَوَانَةَ , عَنِ الْحَكَمِ , عَنْ عَاصِمِ بْنِ ضَمْرَةَ , عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: «إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ آخِرِ سَجْدَةٍ فَقَدْ تَمَّتْ صَلَاتُهُ» فَهَذَا عَلِيٌّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَدْ رَوَى عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «تَحْلِيلُهَا التَّسْلِيمُ» وَلَمْ يَكُنْ ذَلِكَ عِنْدَهُ عَلَى أَنَّ الصَّلَاةَ لَا تَتِمُّ إِلَّا بِالتَّسْلِيمِ ; إِذْ كَانَتْ تَتِمُّ عِنْدَهُ بِمَا هُوَ قَبْلَ التَّسْلِيمِ , وَكَانَ مَعْنَى «تَحْلِيلُهَا التَّسْلِيمُ» عِنْدَهُ أَيْضًا هُوَ التَّحْلِيلُ الَّذِي يَنْبَغِي أَنْ يَحِلَّ بِهِ لَا بِغَيْرِهِ , وَالتَّمَامُ الَّذِي لَا يَجِبُ بِمَا يَحْدُثُ بَعْدَهُ إِعَادَةُ الصَّلَاةِ غَيْرُهُ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: قَدْ قَالَ: «تَحْرِيمُهَا التَّكْبِيرُ» , فَكَانَ هُوَ الَّذِي لَا يُدْخَلُ فِيهَا إِلَّا بِهِ , فَكَذَلِكَ لَمَّا قَالَ: «وَتَحْلِيلُهَا التَّسْلِيمُ» كَانَ كَهُوَ أَيْضًا لَا يُخْرَجُ مِنْهَا إِلَّا بِهِ. قِيلَ لَهُ: إِنَّهُ لَا يَجُوزُ الدُّخُولُ فِي الْأَشْيَاءِ إِلَّا مِنْ حَيْثُ أُمِرَ بِهِ مِنَ الدُّخُولِ فِيهَا , وَقَدْ يُخْرَجُ مِنَ الْأَشْيَاءِ مِنْ حَيْثُ أُمِرَ أَنْ يُخْرَجَ بِهِ مِنْهَا وَمِنْ غَيْرِ ذَلِكَ. مِنْ ذَلِكَ أَنَّا قَدْ رَأَيْنَا النِّكَاحَ قَدْ نُهِيَ أَنْ يُعْقَدَ عَلَى الْمَرْأَةِ , وَهِيَ فِي عِدَّةٍ , وَكَانَ مَنْ عَقَدَهُ عَلَيْهَا , وَهِيَ كَذَلِكَ لَمْ يَكُنْ بِذَلِكَ مَالِكًا لِبُضْعِهَا , وَلَا وَجَبَ لَهُ عَلَيْهَا نِكَاحٌ. فِي أَشْبَاهٍ لِذَلِكَ كَثِيرَةٍ يَطُولُ بِذِكْرِهَا الْكِتَابُ. وَأَمَرَ أَنْ لَا يُخْرَجَ مِنْهُ إِلَّا بِالطَّلَاقِ الَّذِي لَا إِثْمَ فِيهِ , وَأَنْ تَكُونَ الْمُطَلَّقَةُ طَاهِرًا مِنْ غَيْرِ جِمَاعٍ فَكَانَ مَنْ طَلَّقَ عَلَى غَيْرِ مَا أُمِرَ بِهِ مِنْ ذَلِكَ فَطَلَّقَ ثَلَاثًا أَوْ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ حَائِضًا يَلْزَمُهُ ذَلِكَ وَإِنْ كَانَ إِثْمًا , وَيَخْرُجُ بِذَلِكَ الطَّلَاقِ الْمَنْهِيِّ عَنْهُ مِنَ النِّكَاحِ الصَّحِيحِ. فَكَانَ قَدْ تَثْبُتُ الْأَسْبَابُ الَّتِي تُمْلَكُ بِهَا الْأَبْضَاعُ كَيْفَ هِيَ؟ وَالْأَسْبَابُ الَّتِي تَزُولُ بِهَا الْإِمْلَاكُ عَنْهَا كَيْفَ هِيَ؟ وَنُهُوا عَمَّا خَالَفَ ذَلِكَ , أَوْ شَيْئًا مِنْهُ. فَكَانَ مَنْ فَعَلَ مَا نُهِيَ عَنْهُ مِنْ ذَلِكَ لِيَدْخُلَ بِهِ فِي النِّكَاحِ , لَمْ يَدْخُلْ بِهِ فِيهِ , وَإِذَا فَعَلَ شَيْئًا مِنْهُ لِيَخْرُجَ بِهِ مِنَ النِّكَاحِ , خَرَجَ بِهِ مِنْهُ. فَلَمَّا كَانَ لَا يَدْخُلُ فِي الْأَشْيَاءِ إِلَّا مِنْ حَيْثُ أُمِرَ بِهِ. وَالْخُرُوجُ مِنْهَا قَدْ يَكُونُ مِنْ حَيْثُ أُمِرَ بِهِ , وَقَدْ يَكُونُ بِغَيْرِ ذَلِكَ. كَانَ كَذَلِكَ فِي النَّظَرِ فِي الصَّلَاةِ أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ , فَيَكُونُ الدُّخُولُ فِيهَا غَيْرَ وَاجِبٍ إِلَّا بِمَا أُمِرَ بِهِ مِنَ الدُّخُولِ فِيهَا , وَيَكُونُ الْخُرُوجُ مِنْهَا بِمَا أُمِرَ بِهِ مِمَّا يُخْرَجُ بِهِ مِنْهَا , وَمِنْ غَيْرِ ذَلِكَ. وَكَانَ مِمَّا احْتَجَّ بِهِ مَنْ ذَهَبَ إِلَى أَنَّهُ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ آخِرِ سَجْدَةٍ مِنْ صَلَاتِهِ فَقَدْ تَمَّتْ صَلَاتُهُ "
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান