শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৫৪৮
সালাতে বসার বিবরণ, কিভাবে বসবে?
১৫৪৮। আবুল হুসায়ন আল-ইস্ফাহানী (রাহঃ) আবু হুমায়দ আস-সাইদী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন
যে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সাহাবীগণকে বলতেন ঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সালাত সম্পর্কে তােমাদের অপেক্ষা অধিক অবহিত। তাঁরা বললেন, (তা) কিভাবে ? তিনি বললেন, আমি তার প্রতি লক্ষ্য করেছি এবং তাঁর সালাতকে সংরক্ষণ করেছি। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং মুখমণ্ডল বরাবর উভয় হাত উত্তোলন করতেন। যখন রুকূর জন্য তাকবীর বলতেন, অনুরূপ করতেন। আর যখন রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন তখন 'সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ' বলে অনুরূপ করতেন। আর বলতেন, “রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদ"। আর যখন সিজদা করতেন তখন পেটকে উভয় উরুর উপর ভর না দিয়ে সরিয়ে রাখতেন এবং উভয় হাতকে (যমীনের উপর) বিছিয়ে রাখতেন না। যখন তাশাহ্হুদের জন্য বসতেন তখন বাম পাকে বিছিয়ে দিয়ে ডান পা-কে এর অগ্রভাগের (আঙ্গুলের) উপর খাড়া করে রাখতেন এবং তাশাহহুদ পড়তেন।
পক্ষান্তরে এটি-ই হচ্ছে আবু হুমায়দ আস্-সাইদী (রাযিঃ)-এর মূল এবং বিস্তারিত হাদীস। এতে বৈঠকের
উল্লেখ ওয়াইল ইবনে হুজর (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। বস্তুত যে হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনে
আমর (রাহঃ) রিওয়ায়াত করেছেন এটি সুপরিচিত (মা'রূফ) নয় এবং আমাদের নিকট আবু হুমায়দ (রাযিঃ)
থেকে অবিচ্ছিন্ন সনদযুক্ত (মুত্তাসিল)ও নয়। যেহেতু তার হাদীসে উল্লেখ রয়েছে যে, তিনি আবু
হুমায়দ (রাযিঃ) এবং আবু কাতাদা (রাযিঃ)-এর সাথে ছিলেন। অথচ আবু কাতাদা (রাযিঃ)-এর দীর্ঘকাল পূর্বে
ইন্তেকাল করেছেন। যেহেতু তিনি আলী (রাযিঃ)-এর যুগে শহীদ হয়েছেন এবং আলী (রাযিঃ) তাঁর
জানাযার সালাত পড়েছেন। তাই কোথায় আবু কাতাদা (রাযিঃ) আর কোথায় মুহাম্মাদ ইবনে আমর ইবনে
আতা (রাহঃ)-এর বয়স।

অতএব আবু হুমায়দ (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত মুত্তাসিল-হাদীস-ই দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে,
যা ওয়াইল (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই এর ভিত্তিতেই উক্তি করা সঠিক, এর
বিপরীত দ্বারা বৈধ নয়।

তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল

বস্তুত সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে যুক্তি ভিত্তিক দলীল আরাে সুদৃঢ় করে। আর সেটি হচ্ছে, আমরা দেখতে পাই
যে, সালাতের মধ্যে প্রথম বৈঠক এবং প্রতি রাক'আতে দু’সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকের অবস্থা হচ্ছে,
বাম পা বিছিয়ে দিয়ে এর উপর বসে যাওয়া। তারপর আলিমগণের মধ্যে শেষ বৈঠকের ব্যাপারে -
মতবিরােধ রয়েছে। শেষ বৈঠকের দুটি হুকুম হয়তাে সুন্নত অন্যথায় ফরয। যদি তা সুন্নত হয়।
তাহলে-এর উপর প্রথম বৈঠকের বিধান প্রযােজ্য হবে। (অর্থাৎ নিতম্বের উপর না বসে বাম পা
বিছিয়ে এর উপর বসা প্রমাণিত হবে) আর যদি তা ফরয হয় তাহলে এর উপর উভয় সিজদার
মধ্যবর্তী বৈঠকের বিধান প্রযােজ্য হবে। অর্থাৎ নিতম্বের উপর না বসে বাম পা বিছিয়ে দিয়ে এর উপর
বসা প্রমাণিত হবে। এর দ্বারা ওয়াইল ইবন হুজুর (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের বিষয়বস্তু প্রমাণিত হলো। আর এটিই হচ্ছে আবু হানীফা (রাহঃ), আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত। ইবরাহীম নাখ্ঈ (রাহঃ) ও উক্ত মত পোষণ করেছেন। যেমন-
1548 - حَدَّثَنِي أَبُو الْحُسَيْنِ الْأَصْبَهَانِيُّ , قَالَ: ثنا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ , قَالَ: ثنا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ , قَالَ: ثنا عُتْبَةُ بْنُ حَكِيمٍ , عَنْ عِيسَى بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْعَدَوِيِّ , عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ سَهْلٍ , عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ لِأَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. قَالُوا: مِنْ أَيْنَ؟ قَالَ: رَقَبْتُ ذَلِكَ مِنْهُ حَتَّى حَفِظْتُ صَلَاتَهُ. قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حِذَاءَ وَجْهِهِ , فَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ , وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَالَ: «سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ» , فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ فَقَالَ: «رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ» , وَإِذَا سَجَدَ فَرَّجَ بَيْنَ فَخِذَيْهِ غَيْرَ حَامِلٍ بَطْنَهُ عَلَى شَيْءٍ مِنْ فَخِذَيْهِ , وَلَا مُفْتَرِشٍ ذِرَاعَيْهِ , فَإِذَا قَعَدَ لِلتَّشَهُّدِ , أَضْجَعَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الْيُمْنَى عَلَى صَدْرِهَا وَيَتَشَهَّدُ " فَهَذَا أَصْلُ حَدِيثِ أَبِي حُمَيْدٍ هَذَا لَيْسَ فِيهِ ذِكْرُ الْقُعُودِ إِلَّا عَلَى مِثْلِ مَا فِي حَدِيثِ وَائِلٍ وَالَّذِي رَوَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو , فَغَيْرُ مَعْرُوفٍ وَلَا مُتَّصِلٍ عِنْدَنَا عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ ; لِأَنَّ فِي حَدِيثِهِ أَنَّهُ حَضَرَ أَبَا حُمَيْدٍ وَأَبَا قَتَادَةَ , وَوَفَاةُ أَبِي قَتَادَةَ قَبْلَ ذَلِكَ بِدَهْرٍ طَوِيلٍ ; لِأَنَّهُ قُتِلَ مَعَ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا وَصَلَّى عَلَيْهِ عَلِيٌّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَأَيْنَ سِنُّ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ مِنْ هَذَا. فَلَمَّا كَانَ الْمُتَّصِلُ , عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ مُوَافِقًا لَمَا رَوَى وَائِلٌ , ثَبَتَ الْقَوْلُ بِذَلِكَ وَلَمْ يَجُزْ خِلَافُهُ مَعَ مَا شَدَّهُ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ وَذَلِكَ أَنَّا رَأَيْنَا الْقُعُودَ الْأَوَّلَ فِي الصَّلَاةِ وَفِيمَا بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ , هُوَ أَنْ يَفْتَرِشَ الْيُسْرَى فَيَقْعُدَ عَلَيْهَا. ثُمَّ اخْتَلَفُوا فِي الْقُعُودِ الْأَخِيرِ , فَلَمْ يَخْلُ مِنْ أَحَدِ وَجْهَيْنِ , أَنْ يَكُونَ سُنَّةً أَوْ فَرِيضَةً. فَإِنْ كَانَ سُنَّةً , فَحُكْمُهُ حُكْمُ الْقُعُودِ الْأَوَّلِ , وَإِنْ كَانَ فَرِيضَةً , فَحُكْمُهُ حُكْمُ الْقُعُودِ فِيمَا بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ. فَثَبَتَ بِذَلِكَ مَا رَوَى وَائِلُ بْنُ حُجْرٍ وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمُ اللهُ. وَقَدْ قَالَ بِذَلِكَ أَيْضًا: إِبْرَاهِيمُ النَّخَعِيُّ رَحِمَهُ اللهُ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ১৫৪৮ | মুসলিম বাংলা