শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১২৭৮
আন্তর্জাতিক নং: ১২৭৯
মাগরিবের সালাতে কিরাআত
১২৭৮-১২৭৯। রাওহ ইবনুল ফারাজ (রাহঃ) ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সালাতের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ অমুকের সালাত অপেক্ষা কারো সালাত দেখিনি (রাবী) বুকায়র (রাহঃ) বলেন, আমি (বর্ণনাকারী) সুলায়মান (রাহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেছি এবং তিনি সেই ব্যক্তিকে পেয়েছেন । তিনি বলেছেন, তিনি মাগরিবের সালাতে 'কিসার মুফাসসাল' থেকে তিলাওয়াত করতেন।
আলী ইবন আব্দির রহমান (রাহঃ) ….. যাহ্হাক (রাহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর মূল্যায়ন
বস্তুত ইনি হলেন আবু হুরায়রা (রাযিঃ), যিনি নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করছেন যে, তিনি মাগরিবের সালাতে 'কিসার মুফাসসাল' তিলাওয়াত করতেন। যদি আমরা যুবায়র (রাহঃ)-এর হাদীস এবং এর সাথে অন্য যে সব রিওয়ায়াত উল্লেখ করেছি এগুলোকে সেই মর্মে প্রয়োগ করি, যে মর্মে আমাদের বিরোধীগণ প্রয়োগ করেছেন, তাহলে সেই সমস্ত হাদীস এবং আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর এই হাদীসের মাঝে বৈপরিত্য সৃষ্টি হবে। আর যদি আমরা তা সেই মর্মে প্রয়োগ করি যা উল্লেখ করেছি তাহলে সেই সমস্ত রিওয়ায়াত এবং এই হাদীসের মাঝে সমন্বয় হয়ে যাবে। আর আমাদের জন্য উপযোগী হল যে হাদীসসমূহের মাঝে বৈপরিত্য ত্যাগ করে ঐক্যের মর্মে প্রয়োগ করা। সুতরাং যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি এতে সাব্যস্ত হল যে, মাগরিবের সালাতে 'কিসার মুফাসসাল থেকে তিলাওয়াত করা বাঞ্ছনীয়। আর এটাই হল ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত। উমার ইবন খাত্তাব (রাযিঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
আলী ইবন আব্দির রহমান (রাহঃ) ….. যাহ্হাক (রাহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর মূল্যায়ন
বস্তুত ইনি হলেন আবু হুরায়রা (রাযিঃ), যিনি নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করছেন যে, তিনি মাগরিবের সালাতে 'কিসার মুফাসসাল' তিলাওয়াত করতেন। যদি আমরা যুবায়র (রাহঃ)-এর হাদীস এবং এর সাথে অন্য যে সব রিওয়ায়াত উল্লেখ করেছি এগুলোকে সেই মর্মে প্রয়োগ করি, যে মর্মে আমাদের বিরোধীগণ প্রয়োগ করেছেন, তাহলে সেই সমস্ত হাদীস এবং আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর এই হাদীসের মাঝে বৈপরিত্য সৃষ্টি হবে। আর যদি আমরা তা সেই মর্মে প্রয়োগ করি যা উল্লেখ করেছি তাহলে সেই সমস্ত রিওয়ায়াত এবং এই হাদীসের মাঝে সমন্বয় হয়ে যাবে। আর আমাদের জন্য উপযোগী হল যে হাদীসসমূহের মাঝে বৈপরিত্য ত্যাগ করে ঐক্যের মর্মে প্রয়োগ করা। সুতরাং যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি এতে সাব্যস্ত হল যে, মাগরিবের সালাতে 'কিসার মুফাসসাল থেকে তিলাওয়াত করা বাঞ্ছনীয়। আর এটাই হল ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত। উমার ইবন খাত্তাব (রাযিঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
1278 - حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ الْفَرَجِ، قَالَ: ثنا أَبُو مُصْعَبٍ، قَالَ: ثنا الْمُغِيرَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، عَنِ الضَّحَّاكِ، عَنْ بُكَيْرٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَشْبَهَ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مِنْ فُلَانٍ. قَالَ بُكَيْرٌ: فَسَأَلْتُ سُلَيْمَانَ , وَقَدْ كَانَ أَدْرَكَ ذَلِكَ الرَّجُلَ فَقَالَ: «كَانَ يَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ بِقِصَارِ الْمُفَصَّلِ»
1279 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ: ثنا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: أنا عُثْمَانُ بْنُ مِكْتَلٍ، عَنِ الضَّحَّاكِ، ثُمَّ ذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ فَهَذَا أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَدْ أَخْبَرَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يَقْرَأُ فِي صَلَاةِ الْمَغْرِبِ بِقِصَارِ الْمُفَصَّلِ. فَإِنْ حَمَلْنَا حَدِيثَ جُبَيْرٍ وَمَا رَوَيْنَا مَعَهُ مِنَ الْآثَارِ , عَلَى مَا حَمَلَهُ عَلَيْهِ الْمُخَالِفُ لَنَا , تَضَادَّتْ تِلْكَ الْآثَارُ وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ هَذَا , وَإِنْ حَمَلْنَاهَا عَلَى مَا ذَكَرْنَا اتَّفَقَتْ هِيَ وَهَذَا الْحَدِيثُ. وَأَوْلَى بِنَا أَنْ نَحْمِلَ الْآثَارَ عَلَى الِاتِّفَاقِ لَا عَلَى التَّضَادِّ. فَثَبَتَ بِمَا ذَكَرْنَا أَنَّ مَا يَنْبَغِي أَنْ يُقْرَأَ بِهِ فِي صَلَاةِ الْمَغْرِبِ هُوَ قِصَارُ الْمُفَصَّلِ وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ، رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى، وَقَدْ رُوِيَ مِثْلُ ذَلِكَ , عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
1279 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ: ثنا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ: أنا عُثْمَانُ بْنُ مِكْتَلٍ، عَنِ الضَّحَّاكِ، ثُمَّ ذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ فَهَذَا أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَدْ أَخْبَرَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يَقْرَأُ فِي صَلَاةِ الْمَغْرِبِ بِقِصَارِ الْمُفَصَّلِ. فَإِنْ حَمَلْنَا حَدِيثَ جُبَيْرٍ وَمَا رَوَيْنَا مَعَهُ مِنَ الْآثَارِ , عَلَى مَا حَمَلَهُ عَلَيْهِ الْمُخَالِفُ لَنَا , تَضَادَّتْ تِلْكَ الْآثَارُ وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ هَذَا , وَإِنْ حَمَلْنَاهَا عَلَى مَا ذَكَرْنَا اتَّفَقَتْ هِيَ وَهَذَا الْحَدِيثُ. وَأَوْلَى بِنَا أَنْ نَحْمِلَ الْآثَارَ عَلَى الِاتِّفَاقِ لَا عَلَى التَّضَادِّ. فَثَبَتَ بِمَا ذَكَرْنَا أَنَّ مَا يَنْبَغِي أَنْ يُقْرَأَ بِهِ فِي صَلَاةِ الْمَغْرِبِ هُوَ قِصَارُ الْمُفَصَّلِ وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ، رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى، وَقَدْ رُوِيَ مِثْلُ ذَلِكَ , عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, মাগরিবের নামাযে কিসারে মুফাছ্ছাল (ঝিলঝাল থেকে নাছ পর্যনত্ম), ইশার নামাযে আওয়াছতে মুফাছ্ছাল (ছূরা ত্বরিক থেকে বায়্যিনাহ পর্যনত্ম) এবং ফজরে নামাযে তিওয়ালে মুফাছ্ছাল (হুজুরাত থেকে বুরম্নজ পর্যনত্ম) পড়তেন। আর পূর্বে বর্ণিত হয়েছে যে, রসূল স. যোহরের নামাযে তিওয়ালে মুফাছ্ছাল আর আসরের নামাযে আওসাতে মুফাছ্ছাল (ছূরা ত্বরিক থেকে বায়্যিনাহ পর্যনত্ম) পড়তেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে উপরিউক্ত নিয়মে কুরআন পাঠ করা উত্তম, তবে আবশ্যকীয় নয়। এ নিয়মের বিপরীতে রসূলুলস্নাহ স. এবং সাহাবায়ে কিরাম কুরআনের বিভিন্ন অংশ থেকে পাঠ করতেন মর্মে অনেক সহীহ হাদীসের বর্ণনা রয়েছে। ইমামের তিলাওয়াতের প্রতি মুসলিস্নদের আগ্রহ ও একাগ্রতা দেখা গেলে এবং দুর্বল, অসুস্থ্য বা ব্যসত্ম মানুষ না থাকলে ইমাম সাহেব কিরাত লম্বা করতে পারেন। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় উপরিউক্ত নিয়ম বা তার কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করা উত্তম হবে।
