শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১১৫৪
আসরের সালাত তাড়াতাড়ি আদায় করা হবে, না বিলম্বে ?
১১৫৪। ইবন মারযূক (রাহঃ) ..... . ইবরাহীম (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা [সাহাবী (রাযিঃ)] যুহরের ক্ষেত্রে তোমাদের তুলনায় বেশী জলদি করতেন এবং আসরের ক্ষেত্রে বেশী বিলম্ব করতেন।

বিশ্লেষণ
এদিকে উমার ইব্ন খাত্তাব (রাযিঃ), তাঁর গভর্ণরদের উদ্দেশ্যে লিখছেন। আর তাঁরা হলেন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবা। তিনি (ﷺ) তাঁদেরকে আসরের সালাত এমন সময় আদায় করতে নির্দেশ দিতেন যখন সূর্য উর্ধ্বাকাশে উজ্জ্বল থাকত। তারপর আবু হুরায়রা (রাযিঃ) তা এমন বিলম্ব করে আদায় করেছেন যে, ইকরামা (রাযিঃ) সূর্যকে মদীনার সর্বাপ্রেক্ষা উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় দেখেছেন। তারপর ইবরাহীম (রাহঃ) তাঁর পূর্ববর্তী মনীষীদের অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবীগণ এবং আব্দুল্লাহ্ [ইবন মাসউদ (রাযিঃ)]-এর শিষ্যদের ব্যাপারে বলছেন যে, তাঁরা আসরের ক্ষেত্রে পরবর্তীদের তুলনায় বেশী বিলম্ব করে আদায় করতেন। বস্তুত যখন সাহাবীগণের আমল ও বক্তব্য এভাবে এসেছে যেমনটি আমরা উল্লেখ করেছি। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকেও বর্ণিত আছে যে, তিনি এমন সময় তা আদায় করতেন যে, তখনও সূর্য উর্ধ্বাকাশে থাকত। কতেক রিওয়ায়াতে 'মুহাল্লিকা' (উর্ধ্বাকাশে) শব্দ এসেছে। সুতরাং এই সমস্ত হাদীসকে গ্রহণ করা এবং এর পরিপন্থীকে পরিত্যাগ করা ওয়াজিব। আর লোকজন আসরের সালাতকে বিলম্ব করবে, কিন্তু এতটুকু বিলম্ব না হয় যে, বিলম্বকারী সেই ওয়াক্ত পর্যন্ত পৌঁছে যায় যার ব্যাপারে আলী (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াতে আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, এতো মুনাফিকদের সালাত। এটাই সেই ওয়াক্ত, যে পর্যন্ত আসরের সালাতকে বিলম্ব করা মাকরূহ। কিন্তু এর পূর্বের ওয়াক্ত যতক্ষণ পর্যন্ত সূর্যের রং হলদে হয়ে না যায়, যে কোন লোকের জন্য সেই ওয়াক্তে আসরের সালাত আদায় করা সম্ভবপর এবং নিশ্চিন্ত মনে তাতে আল্লাহর যিকির করতে সক্ষম হয়; সূর্য অনুরূপ থাকা অবস্থায় সালাত থেকে বের হতে ( শেষ করতে) সক্ষম হয়, তাহলে সেই ওয়াক্ত পর্যন্ত আসরের সালাতকে বিলম্ব করাতে কোন অসুবিধা নেই। আর এটা সেই সমস্ত মুতাওয়াতির রিওয়ায়াত মুতাবিক উত্তম, যা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এবং তাঁর পরবর্তী সাহাবা থেকে বর্ণিত আছে।

আবু কিলাবা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, 'আসর'কে বিলম্বের কারণে 'আসর' বলা হয়:
1154 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ، قَالَ: ثنا أَبُو عَامِرٍ، قَالَ: ثنا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: «كَانَ مَنْ قَبْلَكُمْ أَشَدَّ تَعْجِيلًا لِلظُّهْرِ وَأَشَدَّ تَأْخِيرًا لِلْعَصْرِ مِنْكُمْ» فَهَذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَكْتُبُ إِلَى عُمَّالِهِ , وَهُمْ أَصْحَابُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُهُمْ , بِأَنْ يُصَلُّوا الْعَصْرَ وَالشَّمْسُ بَيْضَاءُ مُرْتَفِعَةٌ. ثُمَّ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَدْ أَخَّرَهَا , حَتَّى رَآهَا عِكْرِمَةُ عَلَى رَأْسِ أَطْوَلِ جَبَلٍ بِالْمَدِينَةِ ثُمَّ إِبْرَاهِيمُ يُخْبِرُ عَمَّنْ كَانَ قَبْلَهُ يَعْنِي مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَأَصْحَابِ عَبْدِ اللهِ , أَنَّهُمْ كَانُوا أَشَدَّ تَأْخِيرًا لِلْعَصْرِ مِمَّنْ بَعْدَهُمْ. فَلَمَّا جَاءَ هَذَا مِنْ أَفْعَالِهِمْ , وَمِنْ أَقْوَالِهِمْ مُؤْتَلِفًا عَلَى مَا ذَكَرْنَا , وَرُوِيَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّيهَا وَالشَّمْسُ مُرْتَفِعَةٌ وَفِي بَعْضِ الْآثَارِ مُحَلِّقَةٌ , وَجَبَ التَّمَسُّكُ بِهَذِهِ الْآثَارِ , وَتَرْكُ خِلَافِهَا , وَأَنْ يُؤَخِّرُوا الْعَصْرَ , حَتَّى لَا يَكُونَ تَأْخِيرُهَا يُدْخِلُ مُؤَخِّرَهَا فِي الْوَقْتِ الَّذِي أَخْبَرَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي حَدِيثِ الْعَلَاءِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «تِلْكَ صَلَاةُ الْمُنَافِقِينَ» فَإِنَّ ذَلِكَ الْوَقْتَ , هُوَ الْوَقْتُ الْمَكْرُوهُ تَأْخِيرُ صَلَاةِ الْعَصْرِ إِلَيْهِ " فَأَمَّا مَا قَبْلَهُ مِنْ وَقْتِهَا , مِمَّا لَمْ تَدْخُلِ الشَّمْسُ فِيهِ صُفْرَةٌ , وَكَانَ الرَّجُلُ يُمْكِنُهُ أَنْ يُصَلِّيَ فِيهِ صَلَاةَ الْعَصْرِ وَيَذْكُرَ اللهَ فِيهَا مُتَمَكِّنًا , وَيَخْرُجُ مِنَ الصَّلَاةِ وَالشَّمْسُ كَذَلِكَ , فَلَا بَأْسَ بِتَأْخِيرِ الْعَصْرِ إِلَى ذَلِكَ الْوَقْتِ وَذَلِكَ أَفْضَلُ لِمَا قَدْ تَوَاتَرَتْ بِهِ الْآثَارُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابِهِ مِنْ بَعْدِهِ. وَلَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي قِلَابَةَ , أَنَّهُ قَالَ: إِنَّمَا سُمِّيَتِ الْعَصْرَ لِتَعَصُّرٍ أَيْ تَأَخُّرٍ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ১১৫৪ | মুসলিম বাংলা