শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১১৪৬
আসরের সালাত তাড়াতাড়ি আদায় করা হবে, না বিলম্বে ?
১১৪৬। ইউনুস (রাহঃ)..... আলা ইব্‌ন আব্দির রহমান (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি একবার যুহরের সালাতের পরে আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ)-এর নিকট গেলাম। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে আসরের সালাত আদায় করা আরম্ভ করে দিলেন। যখন সালাত শেষ করলেন তখন আমরা সালাত জলদি আদায় করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করলাম অথবা তিনি নিজেই তা উল্লেখ পূর্বক বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি: “এতো মুনাফিকদের সালাত” কথাটি তিনি তিনবার বলেছেন। তাদের কেউ (সূর্যের প্রতীক্ষায়) বসে থাকে। অবশেষে যখন সূর্য হলদে হয়ে যায় এবং তা শয়তানের দুই শিংয়ের মাঝে পৌঁছে যায় (আর অস্তগমনের নিকটবর্তী হয়ে যায়) তখন সে উঠে দাঁড়ায় আর চারটি ঠোকর দিয়ে দেয়। এতে সে আল্লাহর স্মরণ খুব কমই করে থাকে।

উত্তরে তাকে বলা হবে : বস্তুত আনাস (রাযিঃ) এই হাদীসে কোন্ ধরনের বিলম্বকরণ মাকরূহ, তা বর্ণনা করেছেন। আর এটা সেই বিলম্বকরণ, যার পরে আসরের সালাত শুধু মাত্র চার রাক'আত আদায় করা সম্ভবপর হয় এবং আল্লাহর স্মরণ খুব কমই হয়ে থাকে। কিন্তু সেই সালাত যা নিশ্চিন্ত মনে, সুস্থিরভাবে আদায় করা যায় এবং তাতে নিশ্চিন্তমনে আল্লাহর স্মরণ করা যায় সূর্যের রং পরিবর্তন হওয়ার পূর্বে, তার সাথে ওই প্রথমোক্ত বিষয়ের কোন সম্পর্ক নেই। আমাদের জন্য এই সমস্ত হাদীসের বিষয়ে সর্বোত্তম পন্থা হল, ওই রিওয়ায়াতগুলোর ঐকমত্যের মর্মকে বের করা এবং প্রয়োগ করা, বৈপরিত্য ও ভিন্নতা পরিহার করা। সুতরাং যা কিছু আলা (রাযিঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন তাকে এরূপ বিলম্বকরণ সাব্যস্ত করব যা মাকরূহ। আর তা আদায় করার মুস্তাহাব ওয়াক্ত সাব্যস্ত করব ওই সময়কে, যা আবুল আবইয়ায (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। আবু মাসউদ (রাযিঃ) ও এ বিষয়ে তার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

যদি কোন প্রশ্নকারী বলে যে, আয়েশা (রাযিঃ) থেকেও তো তা জলদি আদায় করার স্বপক্ষে প্রমাণ বহনকারী রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে ? যেমন প্রশ্নকারী নিম্নোক্ত রিওয়ায়াত উল্লেখ করেছে :
1146 - مَا حَدَّثَنَا يُونُسُ قَالَ: أنا ابْنُ وَهْبٍ أَنَّ مَالِكًا حَدَّثَهُ , عَنِ الْعَلَاءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعْدَ الظُّهْرِ فَقَامَ يُصَلِّي الْعَصْرَ. فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ , ذَكَرْنَا تَعْجِيلَ الصَّلَاةِ , أَوْ ذَكَرَهَا فَقَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «تِلْكَ صَلَاةُ الْمُنَافِقِينَ قَالَهَا ثَلَاثًا يَجْلِسُ أَحَدُهُمْ حَتَّى إِذَا اصْفَرَّتِ الشَّمْسُ , وَكَانَتْ بَيْنَ قَرْنَيِ الشَّيْطَانِ قَامَ , فَنَقْرَ أَرْبَعًا لَا يَذْكُرُ اللهَ فِيهِنَّ إِلَّا قَلِيلًا» قِيلَ لَهُ فَقَدْ بَيَّنَ أَنَسٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ التَّأْخِيرَ الْمَكْرُوهَ مَا هُوَ؟ وَإِنَّمَا هُوَ التَّأْخِيرُ الَّذِي لَا يُمْكِنُ بَعْدَهُ أَنْ يُصَلِّيَ الْعَصْرَ إِلَّا أَرْبَعًا لَا يَذْكُرُ اللهَ إِلَّا قَلِيلًا. فَأَمَّا صَلَاةٌ يُصَلِّيهَا مُتَمَكِّنًا , وَيَذْكُرُ اللهَ تَعَالَى فِيهَا مُتَمَكِّنًا قَبْلَ تَغَيُّرِ الشَّمْسِ , فَلَيْسَ ذَلِكَ مِنَ الْأَوَّلِ فِي شَيْءٍ. وَالْأَوْلَى بِنَا فِي هَذِهِ الْآثَارِ لَمَّا جَاءَتْ هَذَا الْمَجِيءَ أَنْ نَحْمِلَهَا وَنُخَرِّجَ وُجُوهَهَا عَلَى الِاتِّفَاقِ , لَا عَلَى الْخِلَافِ وَالتَّضَادِّ. فَنَجْعَلَ التَّأْخِيرَ الْمَكْرُوهَ فِيهَا هُوَ مَا بَيَّنَهُ الْعَلَاءُ , عَنْ أَنَسٍ , وَنَجْعَلَ الْوَقْتَ الْمُسْتَحَبَّ مِنْ وَقْتِهَا أَنْ يُصَلِّيَ فِيهِ هُوَ مَا بَيَّنَهُ أَبُو الْأَبْيَضِ , عَنْ أَنَسٍ , وَوَافَقَهُ عَلَى ذَلِكَ أَبُو مَسْعُودٍ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا مَا يَدُلُّ عَلَى التَّعْجِيلِ بِهَا , فَذَكَرَ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ১১৪৬ | মুসলিম বাংলা