শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১১২৯
যুহরের সালাতের মুস্তাহাব ওয়াক্ত
১১২৯। ইবরাহীম ইবন মারযূক (রাহঃ)..... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) শীতকালে যুহরের সালাতকে জলদি এবং গ্রীষ্মকালে ঠাণ্ডা করে আদায় করতেন।

ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন, আমাদের মতে যুহরের সালাতে সুন্নত তরীকা এটাই। যেমনটি আবু মাসউদ (রাযিঃ) ও আনাস (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ -এর সালাত সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। অনুচ্ছেদের প্রথম অংশে আমরা যা কিছু বর্ণনা করেছি, তাতে এরূপ কোন কথা নেই, যাতে এর পরিপন্থী আমল ওয়াজিব হয়। কারণ, উসামা (রাযিঃ), আয়েশা (রাযিঃ), খাব্বাব (রাযিঃ) ও আবু বারযা (রাযিঃ) সকলের রিওয়ায়াত আমাদের মতে মুগীরা (রাযিঃ)-এর ওই হাদীস দ্বারা রহিত হয়ে গিয়েছে, যা আমরা অনুচ্ছেদের দ্বিতীয় অংশে বর্ণনা করেছি। রইল (আব্দুল্লাহ্) ইবন মাসউদ (রাযিঃ)-এর হাদীস যে, তিনি সূর্য ঢলে পড়াকে যুহরের সালাতের ওয়াক্ত বলেছেন এবং তা তার ওয়াক্ত হওয়ার ব্যাপারে তিনি কসমও করেছেন। বস্তুত ওই হাদীসে এ বিষয় উল্লেখ নেই যে, এটা গ্রীষ্মকালের না শীতকালের ওয়াক্ত, এবং এটা অন্যদের বর্ণনার পরিপন্থী হওয়ার কোন প্রমাণও নেই।
আর এই আনাস ইব্‌ন মালিক (রাযিঃ), থেকে ইমাম যুহরী (রাহঃ) রিওয়ায়াত করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যুহরের সালাত সেই সময় আদায় করেছেন, যখন সূর্য ঢলে পড়েছে। তারপর আবু খালিদা (রাহঃ) এসে এর ব্যাখ্যা করে বলেছেন, তিনি তা শীতকালে তাড়াতাড়ি এবং গ্রীষ্মকালে বিলম্বে আদায় করতেন। সুতরাং ইবন মাসউদ (রাযিঃ) যা রিওয়ায়াত করেছেন তাতেও এর সম্ভাবনা রয়েছে। যদি যুহরের সালাত ‘জলদি আদায়ের ব্যাপারে কোন প্রমাণ পেশকারী নিম্নোক্ত রিওয়ায়াত দ্বারা প্রমাণ পেশ করে :
1129 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ، قَالَ: ثنا بِشْرُ بْنُ ثَابِتٍ، قَالَ: ثنا أَبُو خَالِدَةَ، عَنْ أَنَسٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَانَ الشِّتَاءُ , بَكَّرَ بِالظُّهْرِ , وَإِذَا كَانَ الصَّيْفُ أَبْرَدَ بِهَا» قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَهَكَذَا السُّنَّةُ عِنْدَنَا , فِي صَلَاةِ الظُّهْرِ , عَلَى مَا يَذْكُرُ أَبُو مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ وَأَنَسٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ مِنْ صَلَاةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَلَيْسَ فِيمَا قَدَّمْنَا ذِكْرَهُ فِي الْفَصْلِ الْأَوَّلِ مَا يَجِبُ بِهِ خِلَافُ شَيْءٍ مِنْ هَذَا ; لِأَنَّ حَدِيثَ أُسَامَةَ , وَعَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا , وَخَبَّابٍ , وَأَبِي بَرْزَةَ , كُلُّهَا عِنْدَنَا , مَنْسُوخَةٌ بِحَدِيثِ الْمُغِيرَةِ الَّذِي رَوَيْنَاهُ فِي الْفَصْلِ الْآخِرِ. وَأَمَّا حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ فِي صَلَاةِ الظُّهْرِ , حِينَ زَالَتِ الشَّمْسُ وَحَلِفُهُ أَنَّ ذَلِكَ وَقْتَهَا , فَلَيْسَ فِي ذَلِكَ الْحَدِيثِ أَنَّ ذَلِكَ كَانَ مِنْهُ فِي الصَّيْفِ , وَلَا أَنَّهُ كَانَ مِنْهُ فِي الشِّتَاءِ , وَلَا دَلَالَةَ فِي ذَلِكَ عَلَى خِلَافِ غَيْرِهِ. وَهَذَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَدْ رَوَى عَنْهُ الزُّهْرِيُّ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى الظُّهْرَ حِينَ زَالَتِ الشَّمْسُ» , ثُمَّ جَاءَ أَبُو خَالِدَةَ فَفَسَّرَ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّيهَا فِي الشِّتَاءِ , مُعَجِّلًا , وَفِي الصَّيْفِ مُؤَخِّرًا , فَاحْتَمَلَ أَنْ يَكُونَ مَا رَوَى ابْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , هُوَ كَذَلِكَ أَيْضًا. فَإِنِ احْتَجَّ مُحْتَجٌّ فِي تَعْجِيلِ الظُّهْرِ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, গরমের প্রচন্ডতা বেশী হলে যোহরের নামায এতটুকু দেরি করে পড়তে হয় যেন সূর্যের তাপ কিছুটা কমে আসে। আর শীত থাকলে নামায শুরু ওয়াক্তে পড়ে নিতে হয়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৩৬৬)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ১১২৯ | মুসলিম বাংলা