শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ৯৯৮
' সালাতুল উস্তা ' (মধ্যবর্তী সালাত) কোনটি?
৯৯৮। রাওহ ইব্নুল ফারাজ (রাহঃ)..... আব্দুর রহমান ইব্ন আফলাহ্ (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার তাঁর কিছু সংখ্যক সাথী তাঁকে ‘সালাতুল উস্তা' (মধ্যবর্তী সালাত) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য ইবন উমার (রাযিঃ)-এর নিকট পাঠাল। তিনি বললেন, তাদেরকে সালাম দিয়ে বলবে যে, আমরা পারস্পরিক আলোচনা করতাম যে, সেই সালাত যা চাশত (পূর্বাহ্নের)-এর পরে আসে। তিনি বললেন, তারা আমাকে পুনঃ তাঁর নিকট পাঠাল। আমি বললাম, তারা আপনাকে সালাম বলছে এবং বলছে যে, আমাদেরকে স্পষ্টরূপে বলে দিন যে, সেটি কোন্ সালাত। তিনি [ইবন উমার (রাযিঃ)] বললেন, তাদেরকে সালাম দিয়ে বলবে, আমরা পারস্পরিক আলোচনা করতাম যে, এটা সেই সালাত, যাতে রাসূলুল্লাহ্((ﷺ)) কে কা'বা অভিমুখে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিল। রাবী বলেন, আমরা আগে থেকেই জানতাম যে, তা ছিল যুহরের সালাত।
বিশ্লেষণ
ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন, একদল আলিম এই মত গ্রহণ করেছেন, যা আমরা উল্লেখ করেছি। তাঁরা বলেন, তা হল যুহরের সালাত। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সেই রিওয়ায়াত দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন, যা দিয়ে যায়দ ইবন সাবিত (রাযিঃ) দলীল দিয়েছেন এবং আমরা তা তাঁরই সূত্রে রবীউল মুআযিনের হাদীসে উল্লেখ করেছি। উপরন্তু তাঁরা এ বিষয়ে ইব্ন উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস দ্বারাও প্রমাণ দিয়েছেন, যা আমরা উল্লেখ করেছি।
পক্ষান্তরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাঁদের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলেছেন, যায়দ ইব্ন সাবিত (রাযিঃ)-এর হাদীসে নবী (ﷺ) থেকে শুধু তাঁর উক্তি এতটুকু বর্ণিত আছে : “হয় লোকেরা (সালাত পরিত্যাগ করা থেকে) বিরত থাকবে, নতুবা আমি তাদের উপর তাদের গৃহ জ্বালিয়ে দিব”। নবী((ﷺ)) যুহরের সালাত দ্বিপ্রহরের সময় (সূর্য ঢলে যাওয়ার পর) আদায় করতেন এবং তাঁর সঙ্গে মুসল্লীদের এক কাতার বা দুই কাতার থাকত। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা'আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন। এর দ্বারা তিনি (যায়দ রা) প্রমাণ পেশ করেছেন যে, তা হল যুহরের সালাত। বস্তুত এটা তাঁর নিজস্ব অভিমত, রাসূলুল্লাহ্((ﷺ)) থেকে তিনি তা রিওয়ায়াত করেননি। আর আমাদের মতে এই আয়াতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর কোন দলীল নেই। যেহেতু এতে সম্ভাবনা রয়েছে যে, এই আয়াত সালাতুল উস্তাসহ অপরাপর সমস্ত সালাতের প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য অবতীর্ণ হয়েছে। তাতে যুহরের সালাতও উদ্দেশ্য; কিন্তু তা যে সালাতুল উস্তা' (মধ্যবর্তী সালাত) তা নয়। সুতরাং এই আয়াত দ্বারা সমস্ত সালাতের হিফাযত করা ওয়াজিব হয়ে গেল। আর তার হিফাযত হলঃ যখন ওই সালাতগুলো পড়া হবে তখন তাতে উপস্থিত হওয়া। নবী((ﷺ)) তাদেরকে সেই সালাত সম্পর্কে যাতে তারা উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি বা অবহেলা করত বলেছেন: হয় তারা বিরত থাকবে, নয়ত আমি তাদের উপর তাদের গৃহ জ্বালিয়ে দিব। এর দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, সেই সমস্ত লোকেরা এই সালাতকে বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকবে, যার হিফাযতের নির্দেশ আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে দিয়েছেন, নতুবা আমি তাদের উপর তাদের গৃহ জ্বালিয়ে দিব। বস্তুত এর কিছুতেই ‘মধ্যবর্তী সালাত' কোনটি, এ ব্যাপারে কোনরূপ প্রমাণ নেই। একদল আলিম বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্((ﷺ))-এর এই উক্তি যুহরের সালাতের ব্যাপারে ছিল না, বরং তা ছিল জুমু'আর সালাতের ব্যাপারে।
বিশ্লেষণ
ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন, একদল আলিম এই মত গ্রহণ করেছেন, যা আমরা উল্লেখ করেছি। তাঁরা বলেন, তা হল যুহরের সালাত। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সেই রিওয়ায়াত দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন, যা দিয়ে যায়দ ইবন সাবিত (রাযিঃ) দলীল দিয়েছেন এবং আমরা তা তাঁরই সূত্রে রবীউল মুআযিনের হাদীসে উল্লেখ করেছি। উপরন্তু তাঁরা এ বিষয়ে ইব্ন উমার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস দ্বারাও প্রমাণ দিয়েছেন, যা আমরা উল্লেখ করেছি।
পক্ষান্তরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাঁদের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলেছেন, যায়দ ইব্ন সাবিত (রাযিঃ)-এর হাদীসে নবী (ﷺ) থেকে শুধু তাঁর উক্তি এতটুকু বর্ণিত আছে : “হয় লোকেরা (সালাত পরিত্যাগ করা থেকে) বিরত থাকবে, নতুবা আমি তাদের উপর তাদের গৃহ জ্বালিয়ে দিব”। নবী((ﷺ)) যুহরের সালাত দ্বিপ্রহরের সময় (সূর্য ঢলে যাওয়ার পর) আদায় করতেন এবং তাঁর সঙ্গে মুসল্লীদের এক কাতার বা দুই কাতার থাকত। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ তা'আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন। এর দ্বারা তিনি (যায়দ রা) প্রমাণ পেশ করেছেন যে, তা হল যুহরের সালাত। বস্তুত এটা তাঁর নিজস্ব অভিমত, রাসূলুল্লাহ্((ﷺ)) থেকে তিনি তা রিওয়ায়াত করেননি। আর আমাদের মতে এই আয়াতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর কোন দলীল নেই। যেহেতু এতে সম্ভাবনা রয়েছে যে, এই আয়াত সালাতুল উস্তাসহ অপরাপর সমস্ত সালাতের প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য অবতীর্ণ হয়েছে। তাতে যুহরের সালাতও উদ্দেশ্য; কিন্তু তা যে সালাতুল উস্তা' (মধ্যবর্তী সালাত) তা নয়। সুতরাং এই আয়াত দ্বারা সমস্ত সালাতের হিফাযত করা ওয়াজিব হয়ে গেল। আর তার হিফাযত হলঃ যখন ওই সালাতগুলো পড়া হবে তখন তাতে উপস্থিত হওয়া। নবী((ﷺ)) তাদেরকে সেই সালাত সম্পর্কে যাতে তারা উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি বা অবহেলা করত বলেছেন: হয় তারা বিরত থাকবে, নয়ত আমি তাদের উপর তাদের গৃহ জ্বালিয়ে দিব। এর দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, সেই সমস্ত লোকেরা এই সালাতকে বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকবে, যার হিফাযতের নির্দেশ আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে দিয়েছেন, নতুবা আমি তাদের উপর তাদের গৃহ জ্বালিয়ে দিব। বস্তুত এর কিছুতেই ‘মধ্যবর্তী সালাত' কোনটি, এ ব্যাপারে কোনরূপ প্রমাণ নেই। একদল আলিম বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্((ﷺ))-এর এই উক্তি যুহরের সালাতের ব্যাপারে ছিল না, বরং তা ছিল জুমু'আর সালাতের ব্যাপারে।
998 - حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ الْفَرَجِ، قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ، قَالَ: ثنا مُوسَى بْنُ رَبِيعَةَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ أَبِي الْوَلِيدِ الْمَدِينِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَفْلَحَ: أَنَّ نَفَرًا مِنْ أَصْحَابِهِ أَرْسَلُوهُ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ يَسْأَلُهُ عَنِ الصَّلَاةِ الْوُسْطَى , فَقَالَ: " اقْرَأْ عَلَيْهِمُ السَّلَامَ , وَأَخْبِرْهُمْ أَنَّا كُنَّا نَتَحَدَّثُ أَنَّهَا الَّتِي فِي إِثْرِ الضُّحَى. قَالَ: فَرَدُّونِي إِلَيْهِ الثَّانِيَةَ , فَقُلْتُ: يَقْرَءُونَ عَلَيْكَ السَّلَامَ وَيَقُولُونَ بَيِّنِ لَنَا أَيُّ صَلَاةٍ هِيَ؟ فَقَالَ: اقْرَأْ عَلَيْهِمُ السَّلَامَ وَأَخْبِرْهُمْ أَنَّا كُنَّا نَتَحَدَّثُ أَنَّهَا الصَّلَاةُ الَّتِي وُجِّهَ فِيهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْكَعْبَةَ قَالَ: وَقَدْ عَرَفْنَاهَا هِيَ الظُّهْرُ " قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى مَا ذَكَرْنَا , فَقَالُوا هِيَ الظُّهْرُ , وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِمَا احْتَجَّ بِهِ زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ , عَلَى مَا ذَكَرْنَاهُ عَنْهُ , فِي حَدِيثِ رَبِيعٍ الْمُؤَذِّنِ , وَبِمَا رَوَيْنَاهُ فِي ذَلِكَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: أَمَّا حَدِيثُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ , فَلَيْسَ فِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا قَوْلُهُ «لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ أَوْ لَأُحَرِّقَنَّ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ» وَإِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي الظُّهْرَ بِالْهَجِيرِ , وَلَا يَجْتَمِعُ مَعَهُ إِلَّا الصَّفُّ وَالصَّفَّانِ , فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى هَذِهِ الْآيَةَ. فَاسْتَدَلَّ هُوَ بِذَلِكَ عَلَى أَنَّهَا الظُّهْرُ , فَهَذَا قَوْلٌ مِنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ , وَلَمْ يَرْوِهِ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَلَيْسَ فِي هَذِهِ الْآيَةِ عِنْدَنَا دَلِيلٌ عَلَى ذَلِكَ , لِأَنَّهُ قَدْ يَجُوزُ أَنْ تَكُونَ هَذِهِ الْآيَةُ أُنْزِلَتْ لِلْمُحَافَظَةِ عَلَى الصَّلَوَاتِ كُلِّهَا , الْوُسْطَى وَغَيْرِهَا. فَكَانَتِ الظُّهْرُ فِيمَا أُرِيدَ وَلَيْسَتْ هِيَ الْوُسْطَى , فَوَجَبَ بِهَذِهِ الْآيَةِ الْمُحَافَظَةُ عَلَى الصَّلَوَاتِ كُلِّهَا , وَمِنَ الْمُحَافَظَةِ عَلَيْهَا حُضُورُهَا حَيْثُ تُصَلَّى. فَقَالَ لَهُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الصَّلَاةِ الَّتِي يُفَرِّطُونَ فِي حُضُورِهَا «لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ أَوْ لَأُحَرِّقَنَّ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ» يُرِيدُ لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ تَضْيِيعِ هَذِهِ الصَّلَاةِ الَّتِي قَدْ أَمَرَهُمُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ بِالْمُحَافَظَةِ عَلَيْهَا أَوْ لَأُحَرِّقَنَّ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ وَلَيْسَ فِي شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ دَلِيلٌ عَلَى الصَّلَاةِ الْوُسْطَى أَيُّ صَلَاةٍ هِيَ مِنْهُنَّ. وَقَدْ قَالَ قَوْمٌ: إِنَّ قَوْلَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَذَا , لَمْ يَكُنْ لِصَلَاةِ الظُّهْرِ وَإِنَّمَا كَانَ لِصَلَاةِ الْجُمُعَةِ
