শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৯৫
দুগ্ধ পোষ্য ছেলে এবং মেয়ের পেশাবের বিধান
৫৯৫. ইবন খুযায়মা (রাহঃ)...... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার নবী (ﷺ)-এর নিকটে একটি শিশুকে নিয়ে আসা হয়, যেন তিনি তাকে 'তাহনীক' (খেজুর ইত্যাদি চিবিয়ে শিশুর মুখে দেয়া) এবং দু'আ করেন। সে তাঁর গায়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি চেয়ে এনে তাতে ছিটিয়ে দিলেন। কিন্তু তা ধৌত করেন নি।

ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর বিশ্লেষণ
ইমাম আবু জা'ফর তাহাবীর (রাহঃ) বলেনঃ একদল আলিম দুগ্ধপোষ্য ছেলে এবং মেয়ের পেশাবের মাঝে পার্থক্য করে বলেছেনঃ ছেলের পেশাব পাক এবং মেয়ের পেশাব নাপাক।
পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ এ বিষয়ে তাঁদের বিরোধিতা করে তাদের উভয়ের (ছেলে-মেয়ে) পেশারকে অভিন্নভাবে নাপাক সাব্যস্ত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, নবী (ﷺ)-এর উক্তি "দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবে পানি ছিটিয়ে দাও" এতে সম্ভাবনা আছে যে, তিনি ছিটানো দ্বারা তাতে পানি প্রবাহিত করা বুঝিয়েছেন। আরবগণ একে ছিটানো দ্বারা ব্যক্ত করে। এ থেকেই নবী (ﷺ)-এর উক্তি এসেছেঃ “আমি এরূপ একটি নগরী সম্পর্কে অবহিত আছি, সমুদ্রের ঢেউ যার তীরে আছড়িয়ে পড়ে।” বস্তুত এখানে النفح দ্বারা ছিটানো বুঝানো হয়নি, বরং পানি এর তীরে মিলিত হয়ে যায়, একথা বুঝিয়েছেন।

ফকীহদের মত
ফকীহ আলিমগণ বলেছেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উভয়ের মাঝে পার্থক্য এজন্য করেছেন যে, দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাব নির্গত হওয়ার স্থান সংকীর্ণ হওয়ার কারণে একস্থানে পতিত হয়; পক্ষান্তরে মেয়ের পেশাব নির্গত হওয়ার স্থান প্রশস্ত হওয়ার কারণে বিক্ষিপ্তভাবে পতিত হয়। সুতরাং তিনি (ﷺ) দুগ্ধপোষ্য ছেলের পেশাবের ব্যাপারে পানি ছিটানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং এতে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল এক স্থানে পানি ঢালা। আর দুগ্ধপোষ্য মেয়ের পেশাবকে ধৌত করার দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য ধারাবাহিক পানি ঢালা। যেহেতু তা বিভিন্ন স্থানে পতিত হয়। এতে এমন সম্ভাবনা রয়েছে যা আমরা উল্লেখ করেছি।
কতেক পূর্ববর্তী মনীষীদের এরূপ উক্তি বর্ণিত আছে, যা এর সপক্ষে প্রমাণ বহন করে তা থেকে কিছু নিম্নরূপঃ
595 - حَدَّثَنَا ابْنُ خُزَيْمَةَ، قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ، قَالَ: أنا زَائِدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِصَبِيٍّ يُحَنِّكُهُ وَيَدْعُو لَهُ , فَبَالَ عَلَيْهِ , فَدَعَا بِمَاءٍ , فَنَضَحَهُ وَلَمْ يَغْسِلْهُ» قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى التَّفْرِيقِ بَيْنَ حُكْمِ بَوْلِ الْغُلَامِ , وَبَوْلِ الْجَارِيَةِ قَبْلَ أَنْ يَأْكُلَا الطَّعَامَ. فَقَالُوا: بَوْلُ الْغُلَامِ طَاهِرٌ , وَبَوْلُ الْجَارِيَةِ نَجِسٌ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَسَوَّوْا بَيْنَ بَوْلَيْهِمَا جَمِيعًا , وَجَعَلُوهُمَا نَجِسَيْنِ. وَقَالُوا: قَدْ يَحْتَمِلُ قَوْلُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «بَوْلُ الْغُلَامِ يُنْضَحُ» إِنَّمَا أَرَادَ بِالنَّضْحِ صَبَّ الْمَاءِ عَلَيْهِ. فَقَدْ تُسَمِّي الْعَرَبُ ذَلِكَ نَضْحًا وَمِنْهُ قَوْلُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنِّي لَأَعْرِفُ مَدِينَةً يَنْضَحُ الْبَحْرُ بِجَانِبِهَا , فَلَمْ يَعْنِ بِذَلِكَ النَّضْحِ الرَّشَّ. وَلَكِنَّهُ أَرَادَ يَلْزَقُ بِجَانِبِهَا قَالُوا: وَإِنَّمَا فَرَّقَ بَيْنَهُمَا , لِأَنَّ بَوْلَ الْغُلَامِ يَكُونُ فِي مَوْضِعٍ وَاحِدٍ , لِضِيقِ مَخْرَجِهِ , وَبَوْلُ الْجَارِيَةِ يَتَفَرَّقُ , لِسَعَةِ مَخْرَجِهِ. فَأَمَرَ فِي بَوْلِ الْغُلَامِ بِالنَّضْحِ: يُرِيدُ صَبَّ الْمَاءِ فِي مَوْضِعٍ وَاحِدٍ , وَأَرَادَ بِغَسْلِ بَوْلِ الْجَارِيَةِ أَنْ يُتَتَبَّعَ بِالْمَاءِ , لِأَنَّهُ يَقَعُ فِي مَوَاضِعَ مُتَفَرِّقَةٍ , وَهَذَا مُحْتَمَلٌ لِمَا ذَكَرْنَاهُ
وَقَدْ رُوِيَ عَنْ بَعْضِ الْمُتَقَدِّمِينَ , مَا يَدُلُّ عَلَى ذَلِكَ. فَمِنْ ذَلِكَ
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৫৯৫ | মুসলিম বাংলা