শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৪৮
অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সহবাস করে; কিন্তু বীর্যপাত হয় না
৩৪৮। ফাহাদ (রাহঃ)...... আবু সালিহ (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি উমার ইব্‌ন খাত্তাব (রাযিঃ)-কে খুত্‌বা (ভাষণ) দিতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আনসারী নারীগণ এ মর্মে ফাতওয়া দিচ্ছে যে, কোন ব্যক্তি যদি স্ত্রী সঙ্গম করে এবং তার বীর্যপাত না ঘটে তাহলে এ অবস্থায় নারীর উপর গোসল করা ফরয, পুরুষের উপর গোসল ফরয নয়। অথচ বিষয়টি এরূপ নয়, যেমনটি তারা ফাতওয়া দিচ্ছে। বরং যখন মিলনকালে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের খাত্‌নার স্থানটুকু অতিক্রম করলেই গোসল করা ফরয হয়ে যাবে।

ইমাম আবু জাফর (তাহাবী র) বলেনঃ এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, আনসারগণ বীর্যপাতের কারণে গোসলকে আবশ্যক মনে করতেন, তা সহবাসকারী পুরুষদের ব্যাপারে ছিল। সেই সমস্ত নারীদের ব্যাপারে নয়, যাদের সঙ্গে সহবাস করা হয়। আর পরস্পরে মেলামেশার কারণে নারীর উপর গোসল করা ফরয হয়, যদিও সেখানে বীর্যপাত না ঘটে। অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি বীর্যপাতের অবস্থায় গোসল ফরয হওয়ার ব্যাপারে পুরুষ এবং নারীর বিধান অভিন্ন। অতএব যুক্তির দাবি হচ্ছে। যে, পরস্পরের মেলামেশার কারণে বীর্যপাত না ঘটে থাকলেও গোসল ফরয হওয়ার ব্যাপারে পুরুষ ও নারীর বিধান অভিন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়।
باب الذي يجامع ولا ينزل
348 - أَنَّ فَهْدًا حَدَّثَنَا قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ قَالَ: ثنا عُبَيْدِ اللهِ , عَنْ زَيْدٍ , عَنْ جَابِرٍ هُوَ ابْنُ يَزِيدَ , عَنْ أَبِي صَالِحٍ قَالَ: سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَخْطُبُ فَقَالَ: «إِنَّ نِسَاءَ الْأَنْصَارِ تُفْتِينَ أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا جَامَعَ فَلَمْ يُنْزِلْ , فَإِنَّ عَلَى الْمَرْأَةِ الْغُسْلَ , وَلَا غُسْلَ عَلَيْهِ , وَإِنَّهُ لَيْسَ كَمَا أَفْتَيْنَ , وَإِذَا جَاوَزَ الْخِتَانُ الْخِتَانَ فَقَدْ وَجَبَ الْغُسْلُ» قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَفِي هَذَا الْأَثَرِ أَنَّ الْأَنْصَارَ كَانُوا يَرَوْنَ أَنَّ الْمَاءَ مِنَ الْمَاءِ , إِنَّمَا هُوَ فِي الرِّجَالِ الْمُجَامِعِينَ , لَا فِي النِّسَاءِ الْمُجَامِعَاتِ , وَأَنَّ الْمُخَالَطَةَ تُوجِبُ عَلَى النِّسَاءِ الْغُسْلَ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهَا إِنْزَالٌ. وَقَدْ رَأَيْنَا الْإِنْزَالَ يَسْتَوِي فِيهِ حُكْمُ النِّسَاءِ وَالرِّجَالِ , فِي وُجُوبِ الْغُسْلِ عَلَيْهِمْ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ حُكْمُ الْمُخَالَطَةِ الَّتِي لَا إِنْزَالَ مَعَهَا , يَسْتَوِي فِيهَا حُكْمُ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ , فِي وُجُوبِ الْغُسْلِ عَلَيْهِمْ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসেও গোসল ফরয হয়। মুসলিম শরীফে হযরত আবু মুসা আশআ’রী রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসে গোসল ফরয হওয়া বা না হওয়ার বিষয়ে মুহাজির এবং আনসারদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বিষয়টি জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে তিনি বললেন যে, শুধু সহবাস হলেই গোসল ফরয হবে। (মুসলিম-৬৭৮) এ থেকে বুঝা যায় যে, এ বিষয়টি নিয়ে সাহাবায়ে কিরামের শুরু যুগে মতবিরোধ থাকলেও তাঁদের সর্বশেষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো গোসল করতে হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/১৬১) সুতরাং হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যিনি এ বিষয়ে অন্য যে কারো চেয়ে ভালো জানতেন। সুতরাং কোন সাহাবার ভিন্ন মত থাকলেও হযরত আয়েশা রা.-এর মত ও বর্ণনা অগ্রাধিকারের জোর দাবী রাখে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৩৪৮ | মুসলিম বাংলা